সম্প্রতি আমি মস্কোতে একটি মসজিদে ইমামের শিক্ষা শুনছিলাম I তিনি এমন কিছু বললেন যেটি সম্পূর্ণ ভুল ছিল I তিনি যা বললেন তা আমি পূর্বে বহুবার শুনেছি – আমার ভাল বন্ধুদের থেকে I আপনিও হয়ত এটি শুনেছেন এবং এটি আপনার মনে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে I তাই আসুন আমাদের এটিকে বিবেচনা করা যাক I
ইমাম বললেন যে বাইবেলের (আল কিতাব) অনেক ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণ সমূহ আছে I ইংরেজী ভাষাতে আপনি পেতে পারেন (আর তিনি সেগুলোর নাম উচ্চারণ করলেন) দি কিং জেমস সংস্করণ, দি নিউ ইন্টারন্যাশনাল সংস্করণ, দি নিউ আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণ, দি নিউ ইংলিশ সংস্করণ এবং ইত্যাদি ইত্যাদি I তখন ইমাম বললেন যেহেতু বাইবেলের অনেক বিভিন্ন সংস্করণ আছে সেইহেতু এটি দেখায় যে বাইবেল (আল কিতাব) বিকৃত হয়েছে, বা আমরা কমপক্ষে ‘সত্য’ একটিকে জানি না I হ্যাঁ বাস্তবিকই এই বিভিন্ন সংস্করণগুলো আছে – কিন্তু এর সাথে বাইবেলের বিকৃতির কোনো সম্পর্ক নেই বা এইগুলো সত্যই ভিন্ন ভিন্ন বাইবেল কি না I প্রকৃতপক্ষে সেখানে কেবলমাত্র একটি বাইবেল/কিতাব আছে I
উদাহরণস্বরূপ, যখন আমরা দি নিউ ইন্টারন্যাশনাল সংস্করণের কথা বলি, আমরা তখন মূল গ্রীক (ইঞ্জিল) এবং হিব্রু (তাওরাত এবং যাবুর) থেকে ইংরেজিতে এক নির্দিষ্ট অনুবাদের কথা বলছি I দি নিউ আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজির আর একটি অনুবাদ কিন্তু সেই একই গ্রীক এবং হিব্রু পাঠ্য থেকে I
কোরানের ক্ষেত্রেও সেই একই পরিস্থিতি I আমি সাধারণতঃ ইউসুফ আলির অনুবাদ ব্যবহার করি, কিন্তু এছাড়াও আমি মাঝে মাঝে পিকথালের অনুবাদও ব্যবহার করি I পিকথাল সেই একই আরবীয় কোরান থেকে অনুবাদ করেছেন যাকে ইউসুফ আলি ব্যবহার করতেন, কিন্তু তার অনুবাদে ইংরেজি শব্দের বাছাই সর্বদা এক হয় না I এইরূপে সেগুলো ভিন্ন অনুবাদ সমূহ I কিন্তু কেউ না – না একজন খ্রীষ্টান, একজন ইহূদি, বা এমনকি একজন নাস্তিক বলে যে কোরানের দুটি ভিন্ন ইংরেজি (পিকথালের এবং ইউসুফ আলির) অনুবাদ সমূহের কারণে এটি দেখায় যে সেখানে ‘বিভিন্ন’ কোরান আছে বা পবিত্র কোরানটি বিকৃত হয়েছে I ঠিক সেই ভাবে, সেখানে তাওরাত এবং যাবুরের (এটিকে এখানে দেখুন)জন্য ইঞ্জিলের (এটিকে এখানে দেখুন) একটি গ্রীক পাঠ্য এবং একটি হিব্রু পাঠ্য আছে I কিন্তু অধিকাংশ লোকেরা এই ভাষাগুলো পড়ে না তাই নানান অনুবাদগুলো ইংরেজিতে (এবং অন্যান্য ভাষা সমূহে) উপলব্ধ যে তারা তাদের মাতৃ ভাষায় বার্তাটি বুঝতে পারে I সংস্করণগুলো শুধুমাত্র বিভিন্ন অনুবাদ সমূহ হয় যাতে বার্তাটিকে ভালোভাবে বুঝতে পারা যায় I
কিন্তু অনুবাদের মধ্যে ত্রুটিগুলোর কি? এটি কি ঘটনা যে বিভিন্ন অনুবাদগুলো দেখায় যে মূল রচয়িতাদের লেখাকে নির্ভুলভাবে অনুবাদ করা অসম্ভব? গ্রীক ভাষায় লিখিত বিশাল সনাতন সাহিত্য সম্ভারের কারণে মূল চিন্তাধারা এবং মূল রচয়িতাদের বাক্য সমূহকে হুবহু অনুবাদ করা সম্ভব হয়েছে I প্রকৃতপক্ষে বিভিন্ন আধুনিক সংস্করণ সমূহ এটিকে দেখায় I উদাহরণস্বরূপ, এখানে নতুন নিয়মের একটি পদকে, মূল গ্রীকের ১ তীমথিয় ২:৫ থেকে নেওয়া হয়েছে I
5কারণ ঈশ্বর যেমন এক তেমন ঈশ্বর ও মানুষের মধ্যে একজন মধ্যস্থতাকারী আছেন, তিনি মানুষ খ্রীষ্ট যীশু।
১ তীমথিয় ২:৫
এখানে এই পদের কিছু পরিচিত অনুবাদ সমূহ I
৫ কারণ একমাত্র ঈশ্বর আছেন আর ঈশ্বরের ও মানুষের মধ্যে কেবল একমাত্র পথ আছে, যার মাধ্যমে মানুষ ঈশ্বরের কাছে পৌঁছতে পারে৷ সেই পথ যীশু খ্রীষ্ট, যিনি নিজেও একজন মানুষ ছিলেন৷
১ তীমথিয় ২:৫ সংস্করণের মধ্যে
আপনি নিজের জন্য দেখতে পারেন তারা তাদের অনুবাদের খুব কাছাকাছি – কেবলমাত্র কয়েকটি শব্দের পার্থক্য I কিন্তু আরও গুরুত্বপূর্ণভাবে তাদের অর্থ কেবল অল্পভাবে ভিন্ন শব্দের ব্যবহারের সাথে হুবহু এক I এটি এই কারণে সেখানে কেবলমাত্র একটি আল কিতাব/বাইবেল হয় এবং তাই এর থেকে অনুবাদ একেবারে অনুরূপ হবে I ‘ভিন্ন ভিন্ন’ বাইবেল নেই I যেমন আমি শুরুতে লিখেছি, যে কোনো কারোর পক্ষে বলা এটি সম্পূর্ণরূপে ভুল যে বিভিন্ন সংস্করণ হওয়ার মানে হ’ল যে সেখানে ভিন্ন ভিন্ন বাইবেল আছে I
আমি প্রত্যেকের কাছে তাদের নিজের মাতৃভাষায় আল-কিতাব/বাইবেলের একটি সংস্করণকে বেছে নিয়ে পড়তে আগ্রহ করি I এটি উত্তম প্রচেষ্টা যোগ্য হয় I