Skip to content
Home » লাজারাসকে উত্থাপনের ক্ষেত্রে ঈসা আল মসীহ (আঃ) এর মিশন

লাজারাসকে উত্থাপনের ক্ষেত্রে ঈসা আল মসীহ (আঃ) এর মিশন

  • by

সূরা আদ দোখান (সুরা ৪৪ – ধোঁয়া) আমাদের বলে যে কুরাইশ গোত্র হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে নিম্নোক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে প্রত্যাখ্যান করেছিল

এই কাফিররা বলে, আমাদের প্রথম মৃত্যুর পর আর কিছু নাই আর আমরা পুনরুত্থিত হব না। (মৃত্যুর পর মানুষকে পুনরুত্থিত করা হবে- তোমাদের এ কথায়) তোমরা যদি সত্য হও, তাহলে আমাদের পূর্বপুরুষদেরকে হাজির কর।

সুর: আদি-দুখন ৪৪:৩৪-৩৮

তারা তার বার্তার সত্যতাকে প্রমাণ করতে মৃতদের মধ্যে থেকে কাউকে উত্থাপন করতে তাকে চ্যালেঞ্জ করল I সূরা আল-আহকাফ (সূরা ৪৬ – বায়ু-বাঁকা বালুচর) একজন বিশ্বাসীর থেকে তার অবিশাসী পিতা-মাতাকে একটি অনুরূপ চ্যালেঞ্জের বিবরণ দেয় I   

আর যে নিজ পিতামাতাকে বলে, ‘তোমাদের জন্য আফসোস! তোমরা কি আমাকে ভয় দেখাও যে, (মৃতুর পর) আমাকে উঠানো হবে অথচ আমার পূর্বে বহু মানব গোষ্ঠী অতীত হয়ে গেছে (কই, কেউ তো উঠে আসল না)। বাপ-মা আল্লাহর কাছে প্রার্থনা জানিয়ে (সন্তানকে তিরস্কার করে) বলে- দুর্ভোগ তোমার জন্য, তুমি ঈমান আন, আল্লাহর ও‘য়াদা সত্য।’ তখন সে বলে- ‘এ সব পুরান কালের কাহিনী ছাড়া আর কিছুই না।’

সূরা আল আহক্বাফ  ৪৬:১৭

অবিশ্বাসী পুনরুত্থানকে একটি কল্পনা বলে খারিজ করল যেহেতু এটি এখনও অবধি কখনও ঘটেনি I সুরা আদ-দোখান এবং সুরা আল-আহকাফ উভয়ই নবী সাঃ এবং সমস্ত একেশ্বরবাদীদের প্রাথমিক বিশাস যাচাই করার জন্য মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থানের পরীক্ষা ব্যবহার করে অবিশ্বাসীদের উল্লেখ করেছেন I নবী ঈসা আল মসীহ তার বিরোধীদের দ্বারা সেই একই ধরণের পরীক্ষার সম্মুখীন হয়েছিলেন I তিনি এই পরীক্ষাকে তার কর্তৃত্বের একটি চিহ্ন এবং এবং তার মিশনের উদ্দেশ্য উভয়কে প্রকাশ করতে ব্যবহার করেছিলেন I        

ঈসা আল মসীহর মিশন কি ছিল?

ঈসা আল মসীহ (আঃ) শিক্ষা দিলেন, সুস্থ করলেন, এবং অনেক অলৌকিক কার্য সমূহ অনুষ্ঠিত করলেন I তবে এখনও শিষ্যদের, তার অনুগামীদের, এবং এমনকি তার শত্রুদের মনে প্রশ্ন থেকে যায়: কেন তিনি এসেছিলেন? এছাড়াও পূর্ববর্তী নবীদের মধ্যে, নবী মুসা (আঃ) সহ অনেকে শক্তিশালী অলোকিক কার্য সম্পন্ন করেছিলেন I অথচ মুসা আগেই ব্যবস্থা দিয়েছিলেন, এবং ঈসা স্বয়ং বললেন তিনি “ব্যবস্থা লুপ্ত করতে আসেন নি”, তবে কেন তাঁকে পাঠানো হয়েছিল? 

নবী (আঃ) এর বন্ধু অত্যন্ত অসুস্থ হয়ে পড়ল I তার শিষ্যরা আশা করল যে নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) তার বন্ধুকে সুস্থ করবেন, যেমন তিনি অন্য অনেককে সুস্থ করেছেন I কিন্তু ঈসা আল মসীহ (আঃ) উদ্দেশ্যপূর্ণভাবে তার বন্ধুকে সুস্থ করলেন না যাতে তিনি তার মিশনকে প্রকাশ করতে পারেন I ইঞ্জিল এটিকে এইভাবে লিপিবদ্ধ করে:  

ঈসা আল মসীহ মৃত্যুর মুখোমুখি হন

 

1লাসার নামে এক ব্যক্তি পীড়িত ছিলেন। তিনি ছিলেন বেথানি গ্রামের অধিবাসী, যেখানে মরিয়ম ও তার বোন মার্থা বসবাস করতেন। 2এই মরিয়মই প্রভুর উপরে সুগন্ধিদ্রব্য ঢেলে তাঁর চুল দিয়ে প্রভুর পা-দুটি মুছিয়ে দিয়েছিলেন। তাঁরই ভাই লাসার সেই সময় অসুস্থ হয়ে পড়েছিলেন। 3দুই বোন তাই যীশুর কাছে সংবাদ পাঠালেন, “প্রভু আপনি যাকে প্রেম করেন, সে অসুস্থ হয়ে পড়ছে।”

4একথা শুনে যীশু বললেন, “এই অসুস্থতা মৃত্যুর জন্য হয়নি, কিন্তু ঈশ্বরের মহিমা প্রকাশের জন্য এরকম হয়েছে, যেন ঈশ্বরের পুত্র এর মাধ্যমে গৌরবান্বিত হন।” 5মার্থা, তাঁর বোন ও লাসারকে যীশু প্রেম করতেন। 6তবুও লাসারের অসুস্থতার কথা শুনে তিনি যেখানে ছিলেন, সেখানেই আরও দু-দিন রইলেন। 7এরপর তিনি তাঁর শিষ্যদের বললেন, “চলো, আমরা যিহূদিয়ায় ফিরে যাই।”

8তাঁর শিষ্যেরা বললেন, “কিন্তু রব্বি, কিছু সময় আগেই তো ইহুদিরা আপনাকে পাথর মারার চেষ্টা করেছিল, তবুও আপনি সেখানে ফিরে যেতে চাইছেন?”

9যীশু উত্তর দিলেন, “দিনের আলোর স্থায়িত্ব কি বারো ঘণ্টা নয়? যে মানুষ দিনের আলোয় পথ চলে, সে হোঁচট খাবে না। কারণ এই জগতের আলোতেই সে দেখতে পায়। 10কিন্তু রাতে যখন সে পথ চলে, তখন সে হোঁচট খায়, কারণ তার কাছে আলো থাকে না।”

11একথা বলার পর তিনি তাঁদের বললেন, “আমাদের বন্ধু লাসার ঘুমিয়ে পড়েছে। কিন্তু তাকে জাগিয়ে তুলতে আমি সেখানে যাচ্ছি।”

12তাঁর শিষ্যেরা বললেন, “প্রভু, সে যদি ঘুমিয়ে পড়েছে, তাহলে সে সুস্থ হয়ে উঠবে।” 13যীশু তাঁর মৃত্যুর বিষয়ে বলছিলেন, কিন্তু তাঁর শিষ্যেরা ভাবলেন, তিনি স্বাভাবিক ঘুমের কথা বলছেন।

14তাই তিনি তাঁদের স্পষ্টভাবে বললেন, “লাসারের মৃত্যু হয়েছে। 15তোমাদের কথা ভেবে আমি আনন্দিত যে, আমি তখন সেখানে ছিলাম না, যেন তোমরা বিশ্বাস করতে পারো। চলো, আমরা তার কাছে যাই।”

16তখন থোমা, যিনি দিদুমঃ (যমজ) নামে আখ্যাত, অন্যান্য শিষ্যদের বললেন, “চলো, আমরাও যাই, যেন তাঁর সঙ্গে মৃত্যুবরণ করতে পারি।”

যীশু দুই বোনকে সান্ত্বনা দিলেন

17সেখানে এসে যীশু দেখলেন যে, চারদিন যাবৎ লাসার সমাধির মধ্যে আছেন। 18বেথানি থেকে জেরুশালেমের দূরত্ব প্রায় তিন কিলোমিটার। 19আর মার্থা ও মরিয়মের ভাইয়ের মৃত্যু হওয়ায় তাঁদের সান্ত্বনা দেওয়ার জন্য জেরুশালেম থেকে অনেক ইহুদি তাঁদের কাছে এসেছিল। 20যীশুর আসার কথা শুনতে পেয়ে মার্থা তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেলেন, কিন্তু মরিয়ম ঘরেই রইলেন।

21মার্থা যীশুকে বললেন, “প্রভু, আপনি এখানে উপস্থিত থাকলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হত না। 22কিন্তু আমি জানি, আপনি ঈশ্বরের কাছে যা চাইবেন, তিনি আপনাকে এখনও তাই দেবেন।”

23যীশু তাঁকে বললেন, “তোমার ভাই আবার জীবিত হবে।”

24মার্থা উত্তর দিলেন, “আমি জানি, শেষের দিনে, পুনরুত্থানের সময়, সে আবার জীবিত হবে।”

25যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পুনরুত্থান ও জীবন। যে আমাকে বিশ্বাস করে, তার মৃত্যু হলেও সে জীবিত থাকবে। 26আর যে জীবিত এবং আমাকে বিশ্বাস করে, তার মৃত্যু কখনও হবে না। তুমি কি একথা বিশ্বাস করো?”

27তিনি তাঁকে বললেন, “হ্যাঁ প্রভু, আমি বিশ্বাস করি যে, জগতে যাঁর আগমনের সময় হয়েছিল, আপনিই সেই মশীহ, ঈশ্বরের পুত্র।”

28একথা বলে তিনি ফিরে গিয়ে তাঁর বোন মরিয়মকে একান্তে ডেকে বললেন, “গুরুমহাশয় এখানে এসেছেন, তিনি তোমাকে ডাকছেন।” 29একথা শুনে মরিয়ম তাড়াতাড়ি উঠে তাঁর কাছে গেলেন। 30যীশু তখনও গ্রামে প্রবেশ করেননি, মার্থার সঙ্গে তাঁর যেখানে দেখা হয়েছিল, তিনি তখনও সেখানেই ছিলেন। 31যে ইহুদিরা মরিয়মকে তাঁর বাড়িতে এসে সান্ত্বনা দিচ্ছিল, তাঁকে তাড়াতাড়ি উঠে বাইরে যেতে দেখে তারা মনে করল, তিনি বোধহয় সমাধিস্থানে দুঃখে কাঁদতে যাচ্ছেন। তাই তারা তাকে অনুসরণ করল।

32যীশু যেখানে ছিলেন, মরিয়ম সেখানে পৌঁছে তাঁকে দেখতে পেলেন। তিনি তাঁর পায়ে লুটিয়ে পড়ে বললেন, “প্রভু, আপনি এখানে উপস্থিত থাকলে আমার ভাইয়ের মৃত্যু হত না।”

33মরিয়মকে এবং তাঁর অনুসরণকারী ইহুদিদের কাঁদতে দেখে, যীশু আত্মায় গভীরভাবে বিচলিত ও উদ্বিগ্ন হলেন। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, 34“তোমরা তাকে কোথায় রেখেছ?”

তাঁরা উত্তর দিল, “প্রভু, দেখবেন আসুন।”

35যীশু কাঁদলেন।

36তখন ইহুদিরা বলল, “দেখো, তিনি তাঁকে কত ভালোবাসতেন!”

37কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন বলল, “যিনি সেই অন্ধ ব্যক্তির চোখ খুলে দিয়েছিলেন, তিনি কি সেই ব্যক্তিকে মৃত্যু থেকে রক্ষা করতে পারতেন না?”

মৃত লাসারকে জীবন দান

38যীশু আবার গভীরভাবে বিচলিত হয়ে সমাধির কাছে উপস্থিত হলেন। সেটি ছিল একটি গুহা, তার প্রবেশপথে একটি পাথর রাখা ছিল। 39তিনি বললেন, “পাথরটি সরিয়ে দাও।”

মৃত ব্যক্তির বোন মার্থা বললেন, “কিন্তু প্রভু, চারদিন হল সে সেখানে আছে। এখন সেখানে দুর্গন্ধ হবে।”

40যীশু তখন বললেন, “আমি কি তোমাকে বলিনি যে, যদি তুমি বিশ্বাস করো, তাহলে ঈশ্বরের মহিমা দেখতে পাবে?”

41তারা তখন পাথরটি সরিয়ে দিল। যীশু তারপর আকাশের দিকে দৃষ্টি দিয়ে বললেন, “পিতা, আমার প্রার্থনা শুনেছ বলে তোমায় ধন্যবাদ দিই। 42আমি জানতাম, তুমি নিয়ত আমার কথা শোনো, কিন্তু এখানে যারা দাঁড়িয়ে আছে, তাদের উপকারের জন্য একথা বলছি। তারা যেন বিশ্বাস করে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছ,”

43একথা বলে যীশু উচ্চকণ্ঠে ডাক দিলেন, “লাসার, বেরিয়ে এসো!” 44সেই মৃত ব্যক্তি বেরিয়ে এলেন। তাঁর হাত ও পা লিনেন কাপড়ের ফালিতে জড়ানো ছিল, তার মুখ ছিল কাপড়ে ঢাকা।

যীশু তাদের বললেন, “ওর বাঁধন খুলে ওকে যেতে দাও।”

যোহন 11

বোনেরা আশা করেছিল যে ঈসা আল মসীহ তাদের ভাইকে সুস্থ করতে দ্রুত আসবেন I ঈসা আল মসীহ লাজারাসকে মরতে দিতে তার যাত্রা বিলম্ব করেলেন, আর কেউ বুঝতে পারল না কেন I তবে এই দৃষ্টান্তে আমরা তার হৃদয়ের মধ্যে দেখতে পারি এবং আমরা পড়ি যে তিনি রেগে ছিলেন I কিন্তু কার উপরে রাগ? বোনেদের? জনতার? শিষ্যদের? লাজারাসের উপরে? না, তিনি মৃত্যুর নিজের উপরে রেগেছিলেন I এছাড়াও, দুবারের মধ্যে এটি একবার  লিপিবদ্ধ করা হয় যেখানে ঈসা আল মসীহ কান্না করেছিলেনI কেন তিনি রোদন করলেন? এই কারণে যে তিনি দেখলেন যে তার বন্ধুর মৃত্যুর কবলে রয়েছে I মৃত্যু নবীর মধ্যে ক্রোধ তথা রোদনকে আলোড়িত করল I    

অসুস্থতা থেকে সুস্থতা, ভালো যেহেতু সেটাই একমাত্র যা মৃত্যুকে স্থগিত করে I সুস্থ হোক বা নাহক মৃত্যু অবশেষে লোকেদের হরণ করে I ভাল বা মন্দ, পুরুষ বা মহিলা, বৃদ্ধ বা যুবক, ধার্মিক্ব বা না I এটি আদমের সময় থেকে সত্য হয়েছে, যে তার অবাধ্যতার কারণে মরশীল হয়েছে I আপনি এবং আমি সহ তার সমস্ত বংশধরদেরকে, একটি শত্রু – মৃত্যুর প্রতিভূর দ্বারা বন্ধক  করে রাখা হয়েছে I আমরা অনুভব করি যে মৃতুর বিরুদ্ধে কোনো উত্তর নেই, কোনো আশা নেই I যেখানে কেবলমাত্র অসুস্থতা থাকে সেখানে আশা টিকে থাকে, সেই জন্যই লাজারাসের বোনদের সুস্থতার মধ্যে আশা ছিল I তবে মৃত্যুর  সঙ্গে তারা কোনো আশা অনুভব করল না I এটি আমাদের পক্ষেও সত্য I হাসপাতালে কিছু আশা থেকে কিন্তু অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ায় কিছুই থাকে না I মৃত্যু আমাদের চূড়ান্ত শত্রু I আমাদের জন্য এই শত্রুকেই ঈসা আল মসীহ পরাজিত  করতে এসেছিলেন আর এইজন্যই তিনি বোনেদের কাছে ঘোষণা করলেন যে:   

25যীশু তাঁকে বললেন, “আমিই পুনরুত্থান ও জীবন। যে আমাকে বিশ্বাস করে, তার মৃত্যু হলেও সে জীবিত থাকবে।

যোহন 11

ঈসা আল মসীহ (আঃ) মৃত্যুকে ধ্বংস করতে এবং সকলকে জীবন দিতে এসেছিলেন যারা এটিকে চায় I এই মিশনের জন্য তিনি মৃত্যু থেকে লাজারাসকে উত্থাপন করে তার কর্তৃত্বকে দেখালেন I

নবীদের প্রতি প্রতিক্রিয়া

মৃত্যু যদিও সমস্ত লোকেদের চূড়ান্ত শত্রু, আমাদের মধ্যে অনেকে দ্বন্দ সমূহের (রাজনৈতিক, ধার্মিক, জাতিগত, ইত্যাদি) ফলে ক্ষুদ্রতর ‘শত্রুদের’ দ্বারা ধরা পরি যা সর্বদা আমাদের চারিদিকে অন্যদের সঙ্গে চলতে থাকে I ঈসা আল মসীহর সময়েও এটি সত্য ছিল I এই আশ্চর্য ঘটনার প্রতি স্বাক্ষীদের প্রতিক্রিয়াগুলো থেকে আমরা দেখতে পারি সেই সময়ে বসবাসকারী বিভিন্ন লোকেদের প্রধান চিন্তা কি ছিল I এখানে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াগুলোকে লিপিবদ্ধ করা হয়েছে I  

45তখন ইহুদিদের অনেকে যারা মরিয়মের সঙ্গে দেখা করতে এসেছিল, তারা যীশুকে এই কাজ করতে দেখে তাঁকে বিশ্বাস করল। 46কিন্তু তাদের মধ্যে কয়েকজন ফরিশীদের কাছে গিয়ে যীশুর সেই অলৌকিক কাজের কথা জানাল। 47তখন প্রধান যাজকবর্গ ও ফরিশীরা মহাসভার এক অধিবেশন আহ্বান করল। তারা জিজ্ঞাসা করল,

“আমরা কী করছি? এই লোকটি তো বহু চিহ্নকাজ করে যাচ্ছে। 48আমরা যদি ওকে এভাবে চলতে দিই, তাহলে প্রত্যেকেই ওকে বিশ্বাস করবে। তখন রোমীয়রা এসে আমাদের স্থান ও জাতি উভয়ই ধ্বংস করবে।”

49তখন তাদের মধ্যে কায়াফা নামে এক ব্যক্তি, যিনি সে বছরের মহাযাজক ছিলেন, বললেন, “তোমরা কিছুই জানো না, 50তোমরা বুঝতে পারছ না যে, সমগ্র জাতি বিনষ্ট হওয়ার চেয়ে বরং প্রজাদের মধ্যে একজন মানুষের মৃত্যু শ্রেয়।”

51তিনি নিজের থেকে একথা বলেননি, কিন্তু সেই বছরের মহাযাজকরূপে ভবিষ্যদ্‌বাণী করলেন যে, ইহুদি জাতির জন্য যীশু মৃত্যুবরণ করবেন 52এবং শুধুমাত্র সেই জাতির জন্য নয়, কিন্তু ঈশ্বরের যেসব সন্তান ছিন্নভিন্ন হয়েছিল, তাদের সংগ্রহ করে এক করার জন্যও তিনি মৃত্যুবরণ করবেন। 53তাই সেদিন থেকে তারা যীশুকে হত্যা করার জন্য ষড়যন্ত্র করতে লাগল।

54সেই কারণে যীশু এরপর ইহুদিদের মধ্যে আর প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করলেন না। পরিবর্তে, তিনি মরু-অঞ্চলের নিকটবর্তী ইফ্রয়িম নামক এক গ্রামে চলে গেলেন। সেখানে তিনি তাঁর শিষ্যদের সঙ্গে থাকলেন।

55ইহুদিদের নিস্তারপর্বের সময় প্রায় এসে গেল; নিস্তারপর্বের আগে আনুষ্ঠানিক শুদ্ধকরণের জন্য বহু লোক গ্রামাঞ্চল থেকে জেরুশালেমে গেল। 56তারা যীশুর সন্ধান করতে লাগল এবং মন্দির চত্বরে দাঁড়িয়ে পরস্পরকে জিজ্ঞাসা করতে লাগল, “তোমাদের কী মনে হয়, তিনি কি পর্বে আসবেন না?” 57কিন্তু প্রধান যাজকবর্গ ও ফরিশীরা আদেশ জারি করেছিল যে, কেউ যদি কোথাও যীশুর সন্ধান পায়, তাহলে যেন সেই সংবাদ জানায়, যেন তারা যীশুকে গ্রেপ্তার করতে পারে।

যোহন 11

তাই উত্তেজনা বেড়ে গেল I নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) ঘোষণা করলেন যে তিনি ‘জীবন’ ও ‘পুনরুত্থান’ এবং মৃত্যুকেই পরাজিত করবেন I নেতারা তাকে হত্যা করার ষড়যন্ত্র করে সাড়া দিয়েছিল I লোকেদের মধ্যে অনেকে তাকে বিশ্বাস করত, তবে অন্যান্য অনেকে কি বিশ্বাস করতে হবে জানত না I এটি হয়ত আমাদের পক্ষে যোগ্য হত আমাদের নিজেদেরকে প্রশ্ন করা যদি আমরা লাজারাসের উত্থাপনকে প্রত্যক্ষ করতাম তবে আমরা কি করতে পচ্ছন্দ করতাম I আমরা কি ফারিসীদের মতন হতাম, যারা কয়েকটি দ্বন্দের উপরে মনোনিবেশ করত যাকে ইতিহাসে শীঘ্র ভুলে যাওয়া হবে এবং মৃত্যু থেকে জীবনের প্রস্তাবকে হারাতাম? বা আমরা কি তাকে ‘বিশ্বাস’ করতাম এবং তার পুনরুত্থানের প্রস্তাবের উপরে আমাদের আশা রাখতাম, এমনকি আমরা যদি এটিকে আদৌ না বুঝতাম? বিভিন্ন প্রতিক্রিয়াগুলো যা ইঞ্জিল তখনকার দিনে লিপিবদ্ধ করে তার প্রস্তাবের প্রতি সেই একই প্রতিক্রিয়া যা আজকের দিনে আমরা করি I    

নিস্তারপর্বের উৎসব নিকটে আসার সাথে সাথে এই বিতর্কগুলো বাড়ছিল – সেই বিশেষ একই উৎসব যা 1500 বছর পূর্বে নবী মশি (আঃ) মৃত্যুকে উপেক্ষা করার এক চিহ্ন হিসাবে আরম্ভ করেছিলেন I  ইঞ্জিল চলতে থাকে দেখানোর দ্বারা কিভাবে ঈসা আল মসীহ (আঃ) মৃত্যুকে পরাজিত করার তার মিশনকে সম্পন্ন করতে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করলেন – ‘বিশ্বাসঘাতক’ হিসাবে অন্যের দ্বারা পরিহার করা কাউকে সাহায্য করার দ্বারা I       

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *