Skip to content
Home » নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) করুণা প্রসার করেন

নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) করুণা প্রসার করেন

  • by

আপন কি কখনও শরিয়া আইনের কোনো আজ্ঞা  ভঙ্গ  করেছেন? আমাদের মধ্যে কেউই এটি করতে চায় না, কিন্তু বাস্তবতা হ’ল যে আমাদের মধ্যে অনেকে আমাদের ব্যর্থতাকে লুকোচ্ছে, এই আশায় যে অন্যরা আমাদের পাপ আবিষ্কার করবে না এবং আমাদের লজ্জাকে প্রকাশ করবে না I কিন্তু কি হয় যদি আপনার ব্যর্থতা আবিষ্কৃত হয়, তখন আপনি কি আশা করেন? 

যেমন সূরা লোকমান (সূরা ৩১ – লোকমান আমাদের মনে করিয়ে দেয়

এগুলো হিকমাতে ভরপুর কিতাবের আয়াত। সৎকর্মশীলদের জন্য পথ নির্দেশ ও রহমত।

সূরা লোকমান ৩১:২-৩

এগুলো প্রজ্ঞাময় কিতাবের আয়াত। হেদায়েত ও রহমত সৎকর্মপরায়ণদের জন্য।

সূরা লোকমান ঘোষনা করে যে ‘মঙ্গলকারী’ ‘করুণার’ জন্য আশা করতে  পারে I আর তাই (সূরা আল-হিজর ১৫ – শিলা পাথর) একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে  

সে বলল, ‘পথভ্রষ্টরা ছাড়া আর কে তার প্রতিপালকের রহমাত থেকে নিরাশ হয়?’

সুরা আল-হিজর ১৫:৫৬

যারা বিপথগামী হয়েছে তাদের কি হবে? ঈসা আল মসীহর মিশন তাদের জন্য ছিল যারা বিপথগামী হয়েছে এবং অপ্রাপ্য করুণার প্রয়োজন আছে I নবী সাঃ এর এটিকে কারোর কাছে প্রদর্শন করার সুযোগ ছিল যে লজ্জাজনকভাবে প্রকাশিত হয়েছিল I

এটি নবী ঈসা আল মসীহর (আঃ) শিক্ষাদানের সময়ে এক যুবতী মহিলার ক্ষেত্রে ঘটেছিল I ইঞ্জিল এটিকে এইভাবে লিপিবদ্ধ করে I    

2ভোরবেলায় যীশু আবার মন্দির-প্রাঙ্গণে উপস্থিত হলেন। সেখানে সমস্ত লোক তাঁর চারপাশে সমবেত হলে তিনি বসলেন ও তাদের শিক্ষাদান করলেন। 3তখন শাস্ত্রবিদ এবং ফরিশীরা ব্যভিচারের দায়ে অভিযুক্ত এক নারীকে নিয়ে এল। তারা সকলের সামনে তাকে দাঁড় করিয়ে দিয়ে 4তারা যীশুকে বলল, “গুরুমহাশয়, এই স্ত্রীলোকটি ব্যভিচার করার মুহূর্তে ধরা পড়েছে। 5মোশি তাঁর বিধানে এই ধরনের স্ত্রীলোককে পাথর মারার আদেশ দিয়েছেন। এখন এ বিষয়ে আপনার অভিমত কী?” 6তারা এই প্রশ্নটি ফাঁদ হিসেবে প্রয়োগ করল, যেন যীশুকে অভিযুক্ত করার মতো কোনো সূত্র পেতে পারে।

কিন্তু যীশু নত হয়ে তাঁর আঙুল দিয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন। 7কিন্তু তারা যখন তাঁকে বারবার প্রশ্ন করল, তিনি সোজা হয়ে তাদের বললেন, “তোমাদের মধ্যে কেউ যদি নিষ্পাপ থাকে, তাহলে প্রথমে সেই তাকে পাথর মারুক,” 8বলে তিনি আবার নত হয়ে মাটিতে লিখতে লাগলেন।

9যারা একথা শুনল তারা, প্রবীণ থেকে শুরু করে শেষ ব্যক্তি পর্যন্ত একে একে সরে পড়তে লাগল। সেখানে শুধু যীশু রইলেন, আর দাঁড়িয়ে থাকল সেই নারী। 10যীশু সোজা হয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “নারী, ওরা সব গেল কোথায়? কেউ কি তোমাকে দোষী সাব্যস্ত করেনি?”

11সে বলল, “একজনও নয়, প্রভু।”

যীশু বললেন, “তাহলে আমিও তোমাকে দোষী সাব্যস্ত করি না। এখন যাও, আর কখনও পাপ কোরো না।”

যোহন 8

ব্যাভিচারের বিশেষ ক্রিয়ার মধ্যে এই মহিলাকে ধরা হয়েছিল এবং নবী মুসা (আঃ) শারিয়া আইনের শিক্ষকরা চাইলেন তাকে পাথর মারা হোক, তবে তারা তাকে প্রথমে নবী ঈসা আল মসীহর কাছে নিয়ে গেলেন দেখতে যে তিনি কি নির্ণয় নেবেন I তিনি কি আইনের সত্যতাকে তুলে ধরবেন? ঘটনাচক্রে আইন অনুসারে পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই প্রস্তরাঘাতের অধীনে ছিল, কিন্তু কেবলমাত্র মহিলাটিকে শাস্তির জন্য নিয়ে আসা হয়েছিল I     

আল্লাহর বিচার এবং মানবজাতির পাপ

ঈসা আল মসীহ (আঃ) আইনের উল্লংঘন করেন নি – এটি একটি মাপদণ্ড যাকে আল্লাহর দ্বারা দেওয়া হয়েছিল এবং নিখুঁত বিচারকে প্রতিফলিত করেছিল I তবে তিনি বললেন একমাত্র তারাই প্রথমে পাথর ছুঁড়তে পারবে যাদের মধ্যে কোনো পাপ নেই I শিক্ষকরা যখন এই বিষয়টি চিন্তা করছিলেন তখন তাদের উপরে যাবুরের নিম্নলিখিত বিবৃতিটির বাস্তবতা স্থির হয়েছিল I 

2সদাপ্রভু স্বর্গ থেকে মানবজাতির দিকে চেয়ে দেখেন, তিনি দেখেন সুবিবেচক কেউ আছে কি না, ঈশ্বরের অন্বেষণ করে এমন কেউ আছে কি না! 3সকলেই বিপথগামী হয়েছে, সকলেই দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে; সৎকর্ম করে এমন কেউই নেই, একজনও নেই।

গীত 14

এর অর্থ যে এটি কেবল অবিশ্বাসী, কাফের এবং বহুদেববাদীরা নয় যারা পাপ করে – এমনকি যারা আল্লাহ এবং তার দুতের উপরে বিশ্বাস করে তারাও পাপ করে I আসলে, এই আয়াতগুলো অনুসারে, আল্লাহ যখন মানবজাতির উপরে দেখেন তিনি এমনকি ‘একজনকেও’ ভাল করতে দেখেন না I    

মুসা (আঃ) শরিয়া আইন পরম বিচারের উপরে ভিত্তিশীল মানবজাতির সঙ্গে ঈশ্বরের ব্যবস্থা ছিল, এবং তারা এটিকে অনুসরণ করেছিল যাতে ধার্মিকতা পেতে পারে I তবে মানদণ্ড নিখুঁত ছিল, এমনকি একটি বিচ্যুতিও অনুমোদিত নয় I     

আল্লাহর করুণা

তবে যেহেতু ‘সবাই দুষিত হয়ে গেছে’, অন্য একটি ব্যবস্থার প্রয়োজন ছিল I এই ব্যবস্থা যোগ্যতার উপর ভিত্তি করে বিচার হবে না – কারণ লোকেরা তাদের আইনানুগ বাধ্যতাকে উপরে তুলে ধরতে পারে নি – সুতরাং এটিকে আল্লাহর আর একটি চরিত্রের উপরে প্রতিষ্ঠিত হতে ছিল – করুণার উপরে I তিনি বাধ্যতার স্থানে করুণাকে বাড়িয়ে তুলবেন I নবী মুসা (আঃ) ব্যবস্থার মধ্যে এটিকে প্রত্যাশিত করা হয়েছিল যখন নিস্তারপর্বের মেষ তাদের প্রতি করুণা এবং জীবন অনুমোদন করল যারা তাদের চৌকাঠের উপরে রক্ত এঁকেছিল এবং হারুণ (আঃ) এর গরুর সাথে (যেটিকে সুরা ২ –বাকরার – এর নামানুসারে নামকরণ করা হয়েছে) I এটিকে এমনকি তার পূর্বে আদমের প্রতি বস্ত্রের করুণা, হাবিলের (আঃ) বলিদান, এবং নবী নোহকে (আঃ) প্রদত্ত করুণার মধ্যে প্রত্যাশিত করা হয়েছিল I এছাড়াও এটিকে যাবুরের মধ্যে প্রত্যাশিত করা হয়েছিল যখন আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিলেন যে   

9দেখো, আমি যিহোশূয়ের সামনে এই পাথর স্থাপন করেছি! সেই পাথরের উপরে সাতটা চোখ আছে, আর আমি তার উপরে একটি কথা খোদাই করব, এবং এই দেশের পাপ একদিনেই দূর করব,’ সর্বশক্তিমান সদাপ্রভু এই কথা বলেন।

সখরিয় 3

এখন নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) এটিকে এমন কারোর কাছে প্রসারিত করলেন যার কাছে আর কোনো আশা ছিল না কেবল করুনা ছাড়া I এটি চিত্তাকর্ষক যে এই মহিলাটির ধর্ম সম্পর্কে কোনো উল্লেখ বা প্রয়োজনীয়তা তৈরী করা হয় নি I আমরা জানি নবী ঈসা আল মসীহ পাহাড়ের উপরে উপদেশ দিয়েছিলেন যে     

7ধন্য তারা, যারা দয়াবান, কারণ তাদের প্রতি দয়া প্রদর্শিত হবে।

মথি 5

এবং

1“তোমরা অপরকে বিচার কোরো না, নইলে তোমাদেরও বিচার করা হবে। 2কারণ যেভাবে তোমরা অপরের বিচার করবে, সেভাবেই তোমাদের বিচার করা হবে এবং যে মানদণ্ডে তোমরা পরিমাপ করবে, সেই একই মানদণ্ডে তোমাদের পরিমাপ করা হবে।

মথি 7

করুণা পেতে করুণা প্রসারিত করুন

আপনি এবং আমিও বিচারের দিনে আমাদের প্রতি প্রসারিত করুণার প্রয়োজন  বোধ করি I নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) এটিকে এমন কারোর প্রতি প্রসারিত করতে ইচ্ছুক ছিলেন যে স্পষ্টভাবে আজ্ঞা সমূহের উল্লঙ্ঘন করেছিল – যার এটিকে পাওয়ার যোগ্যতা ছিল না I তবে তার যা প্রয়োজন ছিল তা হ’ল আমাদের চারপাশে যারা আছে আমরা তাদের প্রতি করুণা প্রসার করি I নবীর কথা অনুসারে, আমাদের দ্বারা প্রসারিত করুণার স্তর আমাদের দ্বারা প্রাপ্য করুণাকে নির্ধারণ করবে I এই কারণে আমরা অন্যদের পাপের এত দ্রুত বিচার করি যে আমাদের চারপাশে এত বেশি দ্বন্দের সৃষ্টি হয় I যারা আমাদের আহত করেছে তাদের প্রতি করুণা প্রসার করা আমাদের পক্ষে বুদ্ধিমানের কাজ হবে I আসুন আমরা ঈশ্বরকে বলি আমাদের সাহায্য করতে সেই রকম লোক হতে, যারা ঈসা আল মসীহ (আঃ) এর ন্যায়, তাদের প্রতি করুণা প্রসার করেছিলেন যারা এর যোগ্য ছিল না, যাতে আমরাও, যারা অযোগ্য, আমাদের এটির প্রয়োজনে, করুণা পেতে পারি I তখন আমরা ইঞ্জিলের সুসমাচারের মধ্যে আমাদের প্রদত্ত করুণাকে বুঝতে প্রস্তুত হব I     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *