সূরা আল-হাজ্জ (সূরা 22 – তীর্থযাত্রা) আমাদের বলে যে
বিভিন্ন রীতি এবং অনুষ্ঠান সমূহ বিভিন্ন সময়ে দেওয়া হয়েছে I তবে এটি নির্দিষ্ট
মাংস বলিদান নয়, বরং যা আমাদের মধ্যে আছে সেটি সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ I
আমি প্রতিটি সম্প্রদায়ের জন্য (কুরবানীর) নিয়ম করে দিয়েছি। তাদেরকে চতুষ্পদ জন্তু হতে যে রিযক্ দেয়া হয়েছে সেগুলোর উপর তারা যেন আল্লাহর নাম উচ্চারণ করে, (এই বিভিন্ন নিয়ম-পদ্ধতির মূল লক্ষ্য কিন্তু এক- আল্লাহর নির্দেশ পালন), কারণ তোমাদের উপাস্য একমাত্র উপাস্য, কাজেই তাঁর কাছেই আত্মসমর্পণ কর আর সুসংবাদ দাও সেই বিনীতদেরকে- আল্লাহর কাছে ওগুলোর না গোশত পৌঁছে, আর না রক্ত পৌঁছে বরং তাঁর কাছে পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া। এভাবে তিনি ওগুলোকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তোমরা আল্লাহর শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করতে পার এজন্য যে, তিনি তোমাদেরকে সঠিক পথ দেখিয়েছেন, কাজেই সৎকর্মশীলদেরকে তুমি সুসংবাদ দাও।
সুরাহ আল-হাজ্জ ২২:৩৪,৩৭
জল হাজ্জের বিধি এবং অনুষ্ঠান সমূহের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ কারণ তীর্থযাত্রীরা জ্যাম জ্যাম কুয়োর জল পান করতে চায় I তবে সূরা আল-মূলক (সূরা ৬৭ – সার্বভৌমত্ব) আমাদেরকে একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করতে চায় I
বল, ‘‘তোমরা ভেবে দেখেছ কি যদি তোমাদের পানি ভূগর্ভের তলদেশে চলে যায়, তাহলে তোমাদেরকে কে এনে দেবে প্রবহমান পানি?’’
সুরাহ আল-মূলক ৬৭:৩০
.নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) নবী মুসা আঃ দ্বারা অভিষিক্ত এক যিহূদিদের তীর্থযাত্রায় এই প্রশ্নটিকে সম্বোধন করেছিলেন I আমরা এটিকে হাজ্জের চশমা দিয়ে এখানে একবার দেখব I
হাজ্জ তীর্থযাত্রী সু-পরিচিত I যা কম পরিচিত যে 3500 বছর আগে পাওয়া মুসা আঃ এর শারিয়া আইনে ইহূদি বিশ্বাসীদেরকেও প্রতি বছর যিরূশালেমে (আল কুদস) পবিত্র তীর্থযাত্রায় যাওয়ার প্রয়োজন হত I এক তীর্থযাত্রাকে বলা হত ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ (বা সুকোট) I এই তীর্থযাত্রার সঙ্গে আজকের হাজ্জের অনেক সাদৃশ্য আছে I উদাহরণস্বরূপ, এই তীর্থযাত্রা সমূহের উভয়ই ক্যালেন্ডারের একটি নির্দিষ্ট সপ্তাহে ছিল, উভয়ই পশু বলিদানকে জড়িত করত, উভয়ই বিশেষ জল প্রাপ্তিকে জড়িত করত (যেমন জ্যামজ্যাম), উভয়ই ঘুমন্ত বহির্দ্বারগুলোকে জড়িত করত, এবং উভয়ই সাতবার একটি পবিত্র কাঠামোকে প্রদক্ষিন করাকে জড়িত করত I ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ ইহূদিদের জন্য একটি হাজ্জের ন্যায় ছিল I আজ, যিহূদিরা এখনও ঈশ্বরীয় তাঁবুর ভোজ উদযাপন করে তবে এটিকে একটি অল্প ভিন্নভাবে করে যেহেতু তাদের মন্দিরকে ৭০ খ্রীষ্টাব্দে রোমীয়দের দ্বারা যিরূশালেমে ধ্বংস করা হয়েছিল I
ইঞ্জিল বর্ণনা করে কিভাবে নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) সম্পন্ন করেছিলেন – তাঁর হাজ্জকে I বিবরণটিকে কিছু ব্যাখ্যার দ্বারা লিপিবদ্ধ করা হয় I
যীশু ঈশ্বরীয় তাঁবুর উৎসবে যান (যোহন ৭)
১ এই সবের পরে যীশু গালীলের মধ্যে ঘোরাফেরা করতে লাগলেন, কারণ ইহূদিরা তাঁকে মেরে ফেলবার চেষ্টা করেছিল বলে তিনি যিহূদিয়াতে যেতে চাইলেন না।
যোহন ৭:১-৫
২ তখন ইহূদিদের কুটিরবাস পর্বের দিন প্রায় এসে গিয়েছিল।
৩ অতএব তাঁর ভাইয়েরা তাঁকে বলল, এই জায়গা ছেড়ে যিহূদিয়াতে চলে যাও; যেন তুমি যে সব কাজ করছ তা তোমার শিষ্যেরাও দেখতে পায়।
৪ কেউ গোপনে কাজ করে না যদি সে নিজেকে অপরের কাছে খোলাখুলি জানাতে চায়। যদি তুমি এই সব কাজ কর তবে নিজেকে জগতের মানুষের কাছে দেখাও।
৫ কারণ এমনকি তাঁর ভাইয়েরাও তাঁকে বিশ্বাস করত না।
ঈসা আল মসীহর ভাইরা কটুক্তি করে নবীর সঙ্গে আচরণ করছিল যেহেতু তারা তাকে বিশ্বাস করে নি I তবে পরে কিছু ঘটেছিল যা তাদের মন পরিবর্তন করেছিল কারণ তার ভাইদের মধ্যে দুজন, যাকোব এবং ইহূদা, পরবর্তী সময়ে পত্র লিখেছিল (যাকোব এবং ইহূদা নামে) যা নতুন নিয়মের (ইঞ্জিল) অঙ্গ I কি তাদেরকে পরিবর্তন করেছিল? ঈসা আল মসীহর পুনরুথান I
6 তখন যীশু তাদের বললেন, আমার দিন এখনও আসেনি, কিন্তু তোমাদের দিন সবদিন প্রস্তুত।
যোহন ৭:৬-২৭
৭ পৃথিবীর মানুষ তোমাদেরকে ঘৃণা করতে পারে না কিন্তু আমাকে ঘৃণা করে কারণ আমি তার সম্বন্ধে এই সাক্ষ্য দিই যে তার সব কাজ অসৎ।
৮ তোমরাই তো উত্সবে যাও; আমি এখন এই উত্সবে যাব না, কারণ আমার দিন এখনও সম্পূর্ণ হয়নি।
৯ তাদেরকে এই কথা বলার পর তিনি গালীলে থাকলেন।
১০ যদিও তাঁর ভাইয়েরা উত্সবে যাবার পর তিনিও গেলেন, খোলাখুলি ভাবে নয় কিন্তু গোপনে গেলেন।
১১ ইহূদিরা উত্সবের মধ্যে তাঁর খোঁজ করল এবং বলল, তিনি কোথায়?
১২ ভিড়ের মধ্যে মানুষেরা তাঁর সম্পর্কে অনেক আলোচনা করতে লাগলো। অনেকে বলল, তিনি একজন ভাল লোক; আবার কেউ বলল, না, তিনি মানুষদেরকে বিপথে নিয়ে যাচ্ছে।
১৩ কিন্তু ইহূদিদের ভয়ে কেউ তাঁর সম্পর্কে খোলাখুলি কিছু বলল না।
১৪ যখন উত্সবের অর্ধেক দিন পার হয়ে গেল তখন যীশু উপাসনা ঘরে গিয়ে শিক্ষা দিতে লাগলেন।
১৫ ইহূদিরা আশ্চর্য্য হয়ে গেল এবং বলতে লাগলো, এই মানুষটি শিক্ষা না নিয়ে কিভাবে এই রকম শাস্ত্র জ্ঞানী হয়ে উঠল?
১৬ যীশু তাদেরকে উত্তর দিয়ে বললেন, আমার শিক্ষা আমার নয় কিন্তু তাঁর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন।
১৭ যদি কেউ তাঁর ইচ্ছা পালন করবে মনে করে, সে এই শিক্ষার বিষয় জানতে পারবে, এই সকল ঈশ্বর থেকে এসেছে কিনা, না আমি নিজের থেকে বলি।
১৮ যারা নিজের থেকে বলে তারা নিজেদেরই গৌরব খোঁজ করে কিন্তু যারা তাঁর সম্মান খোঁজ করে যিনি তাদের পাঠিয়েছেন তিনিই সত্য এবং তাঁতে কোন অধর্ম্ম নেই।
১৯ মোশি কি তোমাদেরকে কোনো নিয়ম কানুন দেননি? যদিও তোমাদের মধ্যে কেউই এখনো সেই নিয়ম পালন করে না। কেন তোমরা আমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছ?
২০ ই মানুষের দল উত্তর দিল, তোমাকে ভূতে ধরেছে, কে তোমাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করছে? ’
২১ যীশু উত্তর দিয়ে তাদেরকে বললেন, আমি একটা কাজ করেছি, আর সেজন্য তোমরা সকলে আশ্চর্য্য হচ্ছ।
২২ মোশি তোমাদেরকে ত্বকছেদ করার নিয়ম দিয়েছেন, তা যে মোশি থেকে নয় কিন্তু পূর্বপুরুষদের থেকে হয়েছে এবং তোমরা বিশ্রামবারে শিশুদের ত্বকছেদ করে থাক।
২৩ মোশির নিয়ম যেন না ভাঙে সেইজন্য যদি বিশ্রামবারে মানুষের ত্বকছেদ করা হয়, তবে আমি বিশ্রামবারে একজন মানুষকে সম্পূর্ণভাবে সুস্থ করেছি বলে আমার উপরে কেন রাগ করছ?
২৪ বাইরের চেহারা দেখে বিচার করো না কিন্তু ন্যায়ভাবে বিচার কর।
২৫ যিরূশালেম বসবাসকারীদের মধ্যে থেকে কয়েক জন বলল, এই কি সে নয় যাকে তারা মেরে ফেলার চেষ্টা করছিল?
২৬ আর দেখ, সে তো খোলাখুলি ভাবে কথা বলছে আর তারা ওনাকে কিছুই বলছে না। কারণ এটা হতে পারে না যে শাসকেরা জানত যে ইনিই সেই খ্রীষ্ট, তাই নয় কি?
২৭ কিন্তু আমরা জানি এই মানুষটি কোথা থেকে এলো; কিন্তু খ্রীষ্ট যখন আসেন তখন তিনি কোথা থেকে আসেন তা কেউ জানে না।
সেই সময়ে ইহূদিদের মধ্যে বিতর্ক ছিল নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) মসীহ ছিলেন কি না I কতিপয় ইহূদি বিশ্বাস করতেন যে জায়গা থেকে মসীহ আসবেন তা অজানা হবে I যেহেতু তারা জানত তিনি কোথা থেকে এসেছিলেন তারা ভাবল যে অতএব তিনি মসীহ হতে পারেন না I সুতরাং কোথা থেকে তারা এই বিশ্বাস পেল যে মসীহর উৎপত্তি জানা যাবে না? তাউরাত থেকে? নবীদের লেখা থেকে? আদৌ নয়! নবীরা স্পষ্টভাবে বলেছিলেন মসীহ কোথা থেকে আসবেন I ৭০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নবী মীখা (আঃ) লিখেছিলেন যে,
2“কিন্তু তুমি, হে বেথলেহেম ইফ্রাথা, যদিও তুমি যিহূদার শাসকদের মধ্যে ছোটো, তোমার মধ্যে দিয়ে আমার জন্যে ইস্রায়েলের এক শাসক বেরিয়ে আসবে, যাঁর শুরু প্রাচীনকাল থেকে অনাদিকাল থেকে।”
মীখা ৫:২
এই ভবিষ্যদ্বাণীটি (আরও বিস্তৃত বিবরণের জন্য এখানে দেখুন) বলেছিলেন যে শাসক (= মসীহ) বেৎলেহেম থেকে আসবেন I আমরা মসীহর জন্মের মধ্যে দেখলাম যে ৭০০ বছর আগে তাঁর জন্মের ভবিষ্যদ্বাণী অনুসারে তিনি বাস্তবিকই বেৎলেহেমে জন্ম গ্রহণ করলেন I
এটি শুধুমাত্র সেই সময়ের ধার্মিক পরম্পরা ছিল যা বলল যে মসীহর আগমনের স্থানটি অজানা হবে I তারা একটি ভুল করল কারণ তারা নবীদের লেখা বিচার না করে পরিবর্তে রাস্তার মতামত দিয়ে, তাদের সময়ের ধারণা দিয়ে – এমনকি ধার্মিক পন্ডিতদের ধারণা সমূহ দিয়ে বিচার করল I আমরা সেই একই ভুল করতে সাহস করব না I
বিবরণটি চলতে থাকে…
২৭ কিন্তু আমরা জানি এই মানুষটি কোথা থেকে এলো; কিন্তু খ্রীষ্ট যখন আসেন তখন তিনি কোথা থেকে আসেন তা কেউ জানে না।
যোহন ৭:২৭-৩৯
২৮ যীশু মন্দিরে খুব চিত্কার করে উপদেশ দিলেন এবং বললেন, তোমরা আমাকে চেন এবং আমি কোথা থেকে এসেছি তাও জান। আমি নিজে থেকে আসিনি কিন্তু আমাকে পাঠিয়েছেন তিনি সত্য যাকে তোমরা চেন না।
২৯ আমি তাঁকে জানি কারণ আমি তাঁর কাছ থেকে এসেছি এবং তিনিই আমাকে পাঠিয়েছেন।
৩০ তারা তাঁকে ধরার জন্য চেষ্টা করছিল কিন্তু কেউ তাঁর গায়ে হাত দিল না কারণ তখনও তাঁর সেই দিন আসেনি।
৩১ যদিও মানুষের দলের মধ্যে থেকে অনেকে তাঁতে বিশ্বাস করল এবং বলল, খ্রীষ্ট যখন আসবেন তখন এই মানুষটির করা কাজ থেকে কি তিনি বেশি আশ্চর্য্য কাজ করবেন?
৩২ রীশীরা তাঁর সম্পর্কে জনগনের মধ্যে এই সব কথা ফিসফিস করে বলতে শুনল এবং প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা তাঁকে ধরে আনবার জন্য কয়েক জন আধিকারিককে পাঠিয়ে দিল।
৩৩ তখন যীশু বললেন, আমি এখন অল্প দিনের জন্য তোমাদের সঙ্গে আছি এবং তারপর যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর কাছে চলে যাব।
৩৪ তোমরা আমাকে খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবে না; আমি যেখানে যাব সেখানে তোমরা আসতে পারবে না।
৩৫ তখন ইহূদিরা একে অপরকে বলতে লাগল, এই মানুষটি কোথায় যাবে যে আমরা তাকে খুঁজে পাব না? তিনি কি গ্রীকদের মধ্যে ছিন্নভিন্ন ইহূদি মানুষের কাছে যাবে এবং সেই সকল মানুষদের শিক্ষা দেবেন?
৩৬ তিনি যে কথা বললেন, “আমার খোঁজ করবে কিন্তু আমাকে পাবে না এবং আমি যেখানে যাই সেখানে তোমরা আসতে পারবে না” এটা কি কথা?
৩৭ এখন শেষ দিন, উত্সবের মহান দিন, যীশু দাঁড়িয়ে চিত্কার করে বললেন, কারুর যদি পিপাসা পায় তবে আমার কাছে এসে পান করুক।
৩৮ যে কেউ আমাতে বিশ্বাস করে, যেমন শাস্ত্রে বলা আছে, তার হৃদয়ের মধ্য থেকে জীবন জলের নদী বইবে।
৩৯ কিন্তু তিনি পবিত্র আত্মার সমন্ধে এই কথা বললেন, যারা তাঁতে বিশ্বাস করত তারা সেই আত্মাকে পাবে, তখনও সেই আত্মা দেওয়া হয়নি কারণ সেই দিন পর্যন্ত যীশুকে মহিমান্বিত করা হয়নি’
উৎসবের এই দিনে ইহূদিরা দক্ষিন যিরূশালেমের একটি বিশেষ ঝর্না থেকে জল নেয় এবং ‘জল দ্বারের’ মধ্য দিয়ে নগরে প্রবেশ করে এবং জলকে মন্দিরের বেদিতে নিয়ে যায় I এটি ছিল যখন তারা তাদের এই পবিত্র জলের অনুষ্ঠানটি করছিলেন তখন ঈসা আল মসীহ (আঃ) চীৎকার করে বললেন, যেমন তিনি আগে বলেছিলেন, যে তিনি জীবন্ত জলের উৎস I এটি বলার দ্বারা তিনি তাদের স্মরণ করাচ্ছেন আমাদের হৃদয়ের মধ্যে তৃষ্ণা পাপের দিকে নিয়ে যায় যার সম্বন্ধে নবীরা লিখেছিলেন I
৪০ যখন জনগনের মধ্য থেকে অনেকে এই কথা শুনল তখন তারা বলল ইনি সত্যিই সেই ভাববাদী।
যোহন ৭:৪০-৪৪
৪১ অনেকে বলল, ইনি হলেন সেই খ্রীষ্ট। কিন্তু কেউ কেউ বলল, কেন? খ্রীষ্ট কি গালীল থেকে আসবেন?
৪২ শাস্ত্রের বাক্যে কি বলে নি, খ্রীষ্ট দায়ূদের বংশ থেকে এবং দায়ূদ যেখানে ছিলেন সেই বৈৎলেহম গ্রাম থেকে আসবেন?
৪৩ এই ভাবে জনগনের মধ্যে যীশুর বিষয় নিয়ে মতভেদ হলো।
৪৪ তাদের মধ্যে কিছু লোক তাঁকে ধরবে বলে ঠিক করলো কিন্তু তার গায়ে কেউই হাত দিল না।
পিছনে তখন, ‘ঠিক আগের মতন, লোকেরা নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) সম্বন্ধে বিভক্ত ছিল I যেমন আমরা উপরে দেখলাম, নবীরা মসীহর বেৎলেহেমে (যেখানে ঈসা জন্মগ্রহণ করেছিলেন) জন্ম হওয়ার সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন I তবে গালীলি থেকে মসীহর না আসার এই প্রশ্নটি সম্বন্ধে কি? ৭০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে নবী যিশাইয় (আঃ) লিখেছিলেন যে
1তবুও, যারা বিপর্যস্ত হয়েছিল, তাদের মধ্যে বিষাদ আর থাকবে না। অতীতকালে তিনি সবূলূনের ভূমি ও নপ্তালির ভূমিকে অবনত করেছিলেন; কিন্তু পরবর্তীকালে তিনি সমুদ্রের নিকটবর্তী সেই পথ থেকে, জর্ডন নদীর তীরে স্থিত পরজাতিদের গালীলকে সম্মানিত করবেন। 2যে জাতি অন্ধকারে বসবাস করত, তারা এক মহাজ্যোতি দেখতে পেয়েছে; যারা মৃত্যুচ্ছায়ার দেশে বসবাস করত, তাদের উপরে এক জ্যোতির উদয় হয়েছে।
যিশাইয় 9
নবীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে মসীহ তাঁর শিক্ষাদান (একটি আলোর উন্মেষ হয়েছে) ‘গালীলিতে’ শুরু করবেন – সেই বিশেষ স্থান যেখানে ঈসা বাস্তবিকই তাঁর শিক্ষাদান আরম্ভ করেছিলেন এবং তাঁর অলৌকিক কার্যের বেশির ভাগ সম্পন্ন করেছিলেন I আবার লোকেদের ভুল হল কারণ তারা সতর্কভাবে নবীদের অধ্যয়ন করল না এবং পরিবর্তে যা সাধারণভাবে স্বীকৃত হয়েছিল তার উপর বিশ্বাস করল I
৪৫ তখন আধিকারিকরা প্রধান যাজকদের ও ফরীশীদের কাছে ফিরে আসলে তাঁরা তাদের বললেন তাকে নিয়ে আসনি কেন
যোহন ৭:৪৫-৫২
৪৬ আধিকারিকরা উত্তর দিয়ে বলল, এই মানুষটি যেভাবে কথা বলেন অন্য কোন মানুষ কখনও এই রকম কথা বলেননি
৪৭ ফরীশীরা তাদেরকে উত্তর দিল, তোমরাও কি বিপথে চালিত হলে?
৪৮ কোনো শাসকেরা অথবা কোনো ফরীশী কি তাঁতে বিশ্বাস করেছেন?
৪৯ কিন্তু এই যে মানুষের দল কোনো নিয়ম জানে না এরা অভিশাপ গ্রস্থ।
৫০ নীকদীম ফরীশীদের মধ্যে একজন, যিনি আগে যীশুর কাছে এসেছিলেন, তিনি তাদেরকে বললেন,
৫১ আগে কোনো মানুষের তার নিজের কথা না শুনে এবং সে কি করে তা না জেনে, আমাদের আইন কানুন কি কাহারও বিচার করে?
৫২ তারা উত্তর দিয়ে তাঁকে বলল, তুমিও কি গালীল থেকে এসেছ? খোঁজ নিয়ে দেখ গালীল থেকে কোন ভাববাদী আসে না ৷’
ব্যবস্থার বিশেষজ্ঞরা সম্পূর্ণরূপে ভুল ছিলেন যেহেতু যিশাইয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে আলোকিতকরণ ‘গালীলি’ থেকে আসবে I
এই বিবরণ থেকে দুটি পাঠ মনে আসে I প্রথমত অত্যন্ত আগ্রহের সাথে আমাদের ধার্মিক কার্যকলাপ অনুষ্ঠিত করা খুব সহজ তবে অল্প জ্ঞানের সাথে I এই রায়টি কি আমাদের সম্বদ্ধে সত্য?
2কারণ তাদের বিষয়ে আমি সাক্ষ্য দিতে পারি যে, তারা ঈশ্বরের জন্য প্রবল উদ্যমী, কিন্তু তাদের উদ্যম জ্ঞানের উপরে ভিত্তি করে গড়ে ওঠেনি।
রোমীয় 10
যথোচিতভাবে জ্ঞাত হতে নবীদের লেখাগুলোকে আমাদের শেখা দরকার I
দ্বিতীয়ত, নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) একটি প্রস্তাব দেন I তিনি তাদের হাজ্জে বললেন যে
37পর্বের শেষ ও প্রধান দিনটিতে যীশু দাঁড়িয়ে উচ্চকণ্ঠে বললেন, “কেউ যদি তৃষ্ণার্ত হয়, সে আমার কাছে এসে পান করুক। 38আমাকে যে বিশ্বাস করে, শাস্ত্রের বচন অনুসারে, তার অন্তর থেকে জীবন্ত জলের স্রোতোধারা প্রবাহিত হবে।”
যোহন 7
এই প্রস্তাবটি ‘যে কোনো কাউকে’ (এইরূপে না কেবল যিহূদিদের, বা খ্রীষ্টানদের ইত্যাদি) দেওয়া হয় যারা ‘তৃষ্ণার্ত হয়’ I আপনি কি তৃষ্ণার্ত? (এখানে) I জ্যামজ্যাম কুয়ো থেকে জল পান করা ভাল I মসীহর থেকেও জল পান করা কেন নয় যিনি আমাদের অন্তরের তৃষ্ণাকে তৃপ্ত করতে পারেন?