Skip to content
Home » ঈসা আল মসীহ ‘জীবন্ত জল’ প্রদান করেন

ঈসা আল মসীহ ‘জীবন্ত জল’ প্রদান করেন

  • by

সুরাহ সূরা আত-তাতফীফ মধ্যে (সুরা ৮৩ – প্রতারণা) আল্লাহর নিকটবর্তী তাদের জন্য স্বর্গে তাজা পানীয়ের একটি ঝরনা প্রত্যাশিত I   

আল্লাহর নৈকট্যপ্রাপ্ত (ফেরেশতারা) তার তত্ত্বাবধান করে। পুণ্যবান লোকেরা থাকবে অফুরন্ত নি‘মাতের মাঝে। উচ্চ আসনে বসে তারা (চারদিকের সবকিছু) দেখতে থাকবে।

(সূরা আত-তাতফীফ৮৩: ২১-২৩)

তাদেরকে পান করানো হবে সীল-আঁটা উৎকৃষ্ট পানীয়। ওটা একটা ঝর্ণা, যাত্থেকে (আল্লাহর) নৈকট্যপ্রাপ্তরা পান করবে।

সূরা আত-তাতফীফ ৮৩: ২৫,২৮

সূরা আদ-দাহর (সুরা ৭৬ – মানুষটি) অনুরূপভাবে বিদেশী পানীয়ের ঝরনার বর্ননা করে তাদের জন্য যারা স্বর্গে প্রবেশ করে I

(অপরদিকে) নেককার লোকেরা এমন পানপাত্র থেকে পান করবে যাতে কর্পুরের সংমিশ্রণ থাকবে। আল্লাহর বান্দারা একটি ঝর্ণা থেকে পান করবে। তারা এই ঝর্ণাকে (তাদের) ইচ্ছেমত প্রবাহিত করবে।

সূরা আদ-দাহর৭৬:৫-৬

তাদেরকে পান করানোর জন্য এমন পাত্র পরিবেশন করা হবে যাতে আদার মিশ্রণ থাকবে। সেখানে আছে একটা ঝর্ণা, যার নাম সালসাবীল।

সূরা আদ-দাহর ৭৬:১৭-১৮

তবে এখন এই জীবনে তৃষ্ণার সম্বন্ধে কি ব্যাপার? একটি পাপপূর্ণ ও লজ্জাজনক অতীতের কারণে আমাদের মধ্যে যারা ‘আল্লাহর নিকটবর্তী’ নয় তাদের সম্বন্ধে কি ব্যাপার? হযরত ঈসা আল মসীহ (আঃ) এক প্রত্যাখ্যাত স্ত্রীর সাথে তার সাক্ষাৎকারের মধ্যে এই সম্বন্ধে শিখিয়েছিলেন I  

পূর্বে আমরা শিখলাম কিভাবে ঈসা আল মসীহ (আঃ) শিক্ষা দিলেন আমাদের শত্রুদের সঙ্গে কিভাবে ব্যবহার করা উচিত i I আমাদের বর্তমান সময়ের জগতে এত অনেকের মধ্যে দ্বন্দ সমূহ আছে এবং এটি আমাদের জগতকে নারকীয় দুর্দশায় পরিণত করেছে I এই দৃষ্টান্তের মধ্যে ঈসা আল মসীহ (আঃ) শেখালেন যে কিভাবে আমরা আমাদের শত্রুদের সঙ্গে ব্যবহার করেছি তার উপরে স্বর্গে প্রবেশ নির্ভরশীল ছিল I

কোনো বিষয়ে শেখানো সহজ, যদিও কাজ করা একেবারে ভিন্ন I অনেক ইমামরা এবং অন্যান্য ধর্মীয় নেতারা একটি বিষয় শিখিয়েছেন কিন্তু একেবারে অন্যভাবে জীবন যাপন করেছেন I ঈসা আল মসীহর (আঃ) সম্বন্ধে কি খবর? একটি ঘটনায় একজন শমরিয়র (সেই সময়ে ইহূদিদের শত্রু) সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হ’ল I ইঞ্জিল সাক্ষাৎকারটি লিপিবদ্ধ করে I 

1যীশু জানতে পারলেন যে ফরিশীরা শুনেছে, যীশুর শিষ্যসংখ্যা যোহনের চেয়েও বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং তিনি তাদের বাপ্তিষ্ম দিচ্ছেন— 2অবশ্য যীশু নিজে বাপ্তিষ্ম দিতেন না, তাঁর শিষ্যেরাই দিতেন। 3তিনি যিহূদিয়া ত্যাগ করে আর একবার গালীলে ফিরে গেলেন।

4কিন্তু শমরিয়ার মধ্য দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছিল। 5যেতে যেতে তিনি শমরিয়ার শুখর নামক একটি গ্রামে এসে উপস্থিত হলেন। যাকোব তাঁর পুত্র যোষেফকে যে জমি দান করেছিলেন, সেই স্থানটি তারই নিকটবর্তী। 6সেই স্থানে যাকোবের কুয়ো ছিল। পথশ্রান্ত যীশু কুয়োর পাশে বসলেন। তখন প্রায় দুপুরবেলা।

7এক শমরীয় নারী জল তুলতে এলে, যীশু তাকে বললেন, “আমাকে একটু জল খেতে করতে দেবে?” 8(তাঁর শিষ্যেরা তখন খাবার কিনতে নগরে গিয়েছিলেন।)

9শমরীয় নারী তাঁকে বলল, “আপনি একজন ইহুদি, আর আমি এক শমরীয় নারী। আপনি কী করে আমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন?” (কারণ ইহুদিদের সঙ্গে শমরীয়দের সামাজিক সম্পর্ক ছিল না।)

10উত্তরে যীশু তাকে বললেন, “তুমি যদি ঈশ্বরের দানের কথা জানতে, আর জানতে, কে তোমার কাছে খাওয়ার জন্য জল চাইছেন, তাহলে তুমিই তাঁর কাছে চাইতে আর তিনি তোমাকে জীবন্ত জল দিতেন।”

11সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আপনার কাছে জল তোলার কোনো পাত্র নেই, কুয়োটিও গভীর। এই জীবন্ত জল আপনি কোথায় পাবেন? 12আমাদের পিতৃপুরুষ যাকোবের চেয়েও কি আপনি মহান? তিনি আমাদের এই কুয়ো দান করেছিলেন। তিনি নিজেও এর থেকে জল খেতেন, আর তার পুত্রেরা ও তার পশুপাল এই জলই খেতো।”

13যীশু উত্তর দিলেন, “যে এই জল খাবে, সে আবার তৃষ্ণার্ত হবে, 14কিন্তু আমি যে জল দান করি, তা যে খাবে, সে কোনোদিনই তৃষ্ণার্ত হবে না। প্রকৃতপক্ষে, আমার দেওয়া জল তার অন্তরে এক জলের উৎসে পরিণত হবে, যা অনন্ত জীবন পর্যন্ত উথলে উঠবে।”

15সেই নারী তাঁকে বলল, “মহাশয়, আমাকে সেই জল দিন, যেন আমার পিপাসা না পায় এবং জল তোলার জন্য আমাকে এখানে আর আসতে না হয়।”

16তিনি তাকে বললেন, “যাও, তোমার স্বামীকে ডেকে নিয়ে এসো।”

17সে উত্তর দিল, “আমার স্বামী নেই।”

যীশু তাকে বললেন, “তুমি ঠিকই বলেছ যে, তোমার স্বামী নেই। 18প্রকৃত সত্য হল, তোমার পাঁচজন স্বামী ছিল আর এখন যে পুরুষটি তোমার সঙ্গে আছে, সে তোমার স্বামী নয়। তুমি যা বলেছ তা সম্পূর্ণ সত্য।”

19সেই নারী বলল, “মহাশয়, আমি দেখছি, আপনি একজন ভাববাদী। 20আমাদের পূর্বপুরুষেরা এই পর্বতে উপাসনা করতেন, কিন্তু আপনারা, যাঁরা ইহুদি, দাবি করেন যে, জেরুশালেমেই আমাদের উপাসনা করতে হবে।”

21যীশু তাকে বললেন, “নারী, আমার কথায় বিশ্বাস করো, এমন সময় আসছে যখন তোমরা এই পর্বতে অথবা জেরুশালেমে পিতার উপাসনা করবে না। 22তোমরা শমরীয়েরা জানো না, তোমরা কী উপাসনা করছ; আমরা জানি, আমরা কী উপাসনা করি, কারণ ইহুদিদের মধ্য থেকেই পরিত্রাণ উপলব্ধ হবে। 23কিন্তু এখন সময় আসছে বরং এসে পড়েছে, যখন প্রকৃত উপাসকেরা আত্মায় ও সত্যে পিতার উপাসনা করবে, কারণ পিতা এরকম উপাসকদেরই খোঁজ করেন। 24ঈশ্বর আত্মা, তাই যারা তাঁর উপাসনা করে, তাদেরকে আত্মায় ও সত্যে উপাসনা করতে হবে।”

25তখন সেই নারী তাঁকে বলল, “আমি জানি মশীহ” (যাঁকে খ্রীষ্ট বলা হয়), “আসছেন। তিনি এসে আমাদের কাছে সবকিছু ব্যাখ্যা করবেন।”

26যীশু তাকে বললেন, “তোমার সঙ্গে কথা বলছি যে আমি, আমিই সেই খ্রীষ্ট।”

27ঠিক এসময় শিষ্যেরা ফিরে এসে যীশুকে এক নারীর সঙ্গে কথা বলতে দেখে বিস্মিত হলেন। কিন্তু একথা কেউ জিজ্ঞাসা করলেন না, “আপনি কী চাইছেন?” বা “আপনি ওর সঙ্গে কেন কথা বলছেন?”

28তখন জলের পাত্র ফেলে রেখে সেই নারী নগরে ফিরে গিয়ে লোকদের বলল, 29“একজন মানুষকে দেখবে এসো। আমি এতদিন যা করেছি, তিনি সবকিছু বলে দিয়েছেন। তিনিই কি সেই খ্রীষ্ট নন?” 30নগর থেকে বেরিয়ে তারা যীশুর কাছে আসতে লাগল।

31এই অবসরে তাঁর শিষ্যেরা তাঁকে মিনতি করলেন, “রব্বি, কিছু খেয়ে নিন।”

32কিন্তু তিনি তাঁদের বললেন, “আমার এমন খাবার আছে, যার কথা তোমরা কিছুই জানো না।”

33তাঁর শিষ্যেরা তখন পরস্পর বলাবলি করলেন, “কেউ কি তাঁকে কিছু খাবার এনে দিয়েছে?”

34যীশু বললেন, “যিনি আমাকে পাঠিয়েছেন তাঁর ইচ্ছা পালন করা ও তাঁর কাজ শেষ করাই আমার খাবার। 35তোমরা কি বলো না, ‘আর চার মাস পরেই ফসল কাটার সময় আসবে?’ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা চোখ মেলে মাঠের দিকে তাকিয়ে দেখো। ফসল কাটার উপযুক্ত হয়ে উঠেছে। 36এমনকি, যে ফসল কাটছে, সে এখনই তার পারিশ্রমিক পাচ্ছে এবং এখনই সে অনন্ত জীবনের ফসল সংগ্রহ করছে, যেন যে কাটছে, আর যে বুনছে—দুজনেই উল্লসিত হতে পারে। 37তাই ‘একজন বোনে, অপরজন কাটে,’ এই কথাটি সত্য। 38আমি তোমাদের এমন ফসল সংগ্রহ করতে পাঠিয়েছি, যার জন্য তোমরা পরিশ্রম করোনি। অন্যেরা কঠোর পরিশ্রম করেছে, আর তোমরা তাদের শ্রমের ফসল সংগ্রহ করেছ।”

39“আমি এতদিন যা করেছি, তিনি তার সবকিছু বলে দিয়েছেন,” নারীটির এই সাক্ষ্যের ফলে সেই নগরের বহু শমরীয় যীশুকে বিশ্বাস করল। 40তাই শমরীয়েরা তাঁর কাছে এসে তাদের সঙ্গে থাকার জন্য তাঁকে মিনতি করলে, তিনি সেখানে দু-দিন থাকলেন। 41তাঁর বাণী শুনে আরও অনেকেই তাঁকে বিশ্বাস করল।

42তারা সেই নারীকে বলল, “শুধু তোমার কথা শুনে এখন আর আমরা বিশ্বাস করছি না, আমরা এখন নিজেরা শুনেছি এবং আমরা জানি যে, এই ব্যক্তিই প্রকৃতপক্ষে জগতের উদ্ধারকর্তা।”

যোহন ৪ :১-৪২

শমরিয় স্ত্রীলোকটি বিস্মিত হল যে ভাববাদী ঈসা আল মসীহ (আঃ) এমনকি তার সঙ্গে কথা বলবে – সেই দিনে যিহূদি এবং শমরিয়দের মধ্যে এই ধরণের শত্রুতা ছিল I দুটি কারণের জন্য ভাববাদী জল চেয়ে কথোপকথন শুরু করলেন I প্রথম, যেমন এটি বলে, তিনি তৃষ্ণার্ত ছিলেনI তবে (তিনি একজন ভাববাদী হওয়ায়) আবারও জানতেন যে সে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে তৃষ্ণার্ত ছিলI সে তার জীবনে আনন্দ এবং সন্তুষ্টির জন্য তৃষ্ণার্ত ছিল I সে ভেবেছিল পুরুষদের সাথে অবৈধ সম্পর্ক রেখে সে এই তৃষ্ণাকে সতুষ্ট করতে পারবে I তাই তার কাছে বিভিন্ন স্বামী ছিল এবং এমনকি যখন সে ভাববাদীর সঙ্গে কথা বলছিল সে একজন পুরুষের সঙ্গে বাস করছিল যে তার স্বামী ছিল না I প্রত্যেকে তাকে একজন অনৈতিক হিসাবে দেখত I এই কারণেই সম্ভবত সে একা দুপুরে জল আনতে গিয়েছিল যেহেতু গ্রামের অন্যান্য স্ত্রীরা তাদের সাথে তাকে চাইত না যখন তারা সকালের ঠান্ডায় কুয়ো থেকে জল আনতে যেত I এই স্ত্রীলোকটির অনেক পুরষ ছিল, আর তার লজ্জা তাকে গ্রামের অন্যান্য স্ত্রীদের থেকে বিচ্ছিন্ন করেছিল I  

যাবুর দেখিয়েছে আমাদের জীবনে এক গভীর তৃষ্ণা থেকে পাপ কিভাবে আসে – এক তৃষ্ণা যাকে অবশ্যই মেটানো উচিত I আজকে অনেকে, তাদের ধর্ম যাই হোক না কেন, তাদের এই তৃষ্ণার কারণে পাপপূর্ণ উপায়ে জীবন যাপন করে I 

ভাববাদী ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) এই পাপপূর্ণ স্ত্রীটিকে এড়িয়ে যান   নি I পরিবর্তে তিনি তাকে বললেন যে তিনি তাকে ‘জীবন্ত জল’ দিতে পারেন যা তার তৃষ্ণা মেটাবে I তবে তিনি শারীরিক জলের (যা একবার পান করলে পরে আবার আপনি তৃষ্ণার্ত হবেন) সম্বন্ধে বলছিলেন না তবে তার হৃদয়ে এক পরিবর্তনের কথা, ভেতর থেকে এক পরিবর্তন I যাবুরের ভাববাদীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে এক নতুন হৃদয়ের এই নিয়ম আসছিল I ঈসা আল মসীহ (পিবিইউএইচ) তাকে এক পরিবর্তিত হৃদয়ের এই নতুন নিয়ম ‘অনন্ত জীবনের প্রতি উথলে ওঠা’ দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন I     

বিশ্বাস করা – সত্যে স্বীকারোক্তি

তবে ‘জীবন্ত জলের’ এই প্রস্তাব স্ত্রীটিকে এক সংকটের মধ্যে ফেলে দিল I যখন ঈসা তাকে তার স্বামীকে নিয়ে আসতে বলল তাকে উদ্দেশ্যপূর্ণ ভাবে চেনাতে এবং তার পাপকে স্বীকার করতে বাধ্য করছিল I আদম এবং হবা উদ্যানের  মধ্যে এটি করেছিল এবং এখনও আজকের দিনে আমরা আমাদের পাপ লুকোতে  এবং অজুহাত দিতে পছন্দ করি I তবে যদি আমরা ‘অনন্ত জীবনের’ দিকে চালনা করা ঈশ্বরের করুণার অভিজ্ঞতা লাভ করতে চাই তাহলে আমাদের অবশ্যই সৎ হতে হবে এবং আমাদের পাস স্বীকার করতে হবে, কেননা ইঞ্জিল প্রতিশ্রুতি দেয় যে:

9আমরা যদি আমাদের পাপস্বীকার করি, তিনি বিশ্বস্ত ও ন্যায়পরায়ণ, তাই তিনি আমাদের সব পাপ ক্ষমা করে সমস্ত অধার্মিকতা থেকে শুচিশুদ্ধ করবেন।

১ যোহন ১:

এই কারণের জন্য, যখন হযরত ঈসা আল মসীহ (পিবিউএইচ) শমরিয় স্ত্রীটিকে বললেন যে

ঈশ্বর হচ্ছে আত্মা, এবং তার অরাধনাকারীরা অবশ্যই আত্মা এবং সত্যে অরাধনা করবে…

‘সত্যের’ দ্বারা তিনি আমাদের সম্বন্ধে সত্যবাদী এবং প্রামানিক হওয়াকে বুঝিয়ে ছিলেন, আমাদের অন্যায়কে লুকোতে চেষ্টা না করা বা অজুহাত দেওয়া I আশ্চর্যজনক সংবাদ হ’ল যে আল্লাহ ‘চান’ এবং আরাধনাকারীদের থেকে মুখ ফেরাবেন না যারা সততার সঙ্গে এই ভাবে আসে I

তবে তার পক্ষে পাপ স্বীকার করা কঠিন ছিল I আমাদের লজ্জা লুকোবার একটি সাধারণ উপায় বিষয়টিকে আমাদের পাপের থেকে ধর্মীয় দ্বন্দের দিকে পরিবর্তন করা I আজ জগত ধর্মীয় দ্বন্দে পরিপূর্ণ I ওই দিনে সেখানে আরাধনার উপযুক্ত স্থান নিয়ে শমরিয় এবং যিহূদিদের মধ্যে একটি ধর্মীয় দ্বন্দ ছিল I ইহূদিরা বলত যে আরাধনা যিরূশালেমে করা উচিত আর শমরিয়রা ধরে রাখে যে এটি গেরিজিম পর্বত বলে পরিচিত এক পর্বতের উপরে হওয়া উচিত I এই ধর্মীয় দ্বন্দের দিকে ফিরিয়ে সে কথোপকথনকে তার পাপের থেকে বিমুখ করতে আশা করছিল I সে তার পাপকে এখন ধর্মের পেছনে লুকোতে পারত I  

কত সহজ এবং স্বাভাবিকভাবে আমরা একই জিনিস করি – বিশেষ করে আমরা যদি ধার্মিক হই I তখন আমরা বিচার করতে পারি কিভাবে অন্যরা ভুল আর আমরা সঠিক – অথচ আমাদের পাপকে স্বীকার করার আমাদের প্রয়োজনীয়তাকে উপেক্ষা করি I 

ভাববাদী ঈসা আল মসীহ (আঃ) তার সঙ্গে এই দ্বন্দের মধ্যে প্রবেশ করেন নি I তিনি জোর দিলেন যে আরাধনার স্থান অত বেশি কিছু নয়, তবে আরাধনার মধ্যে তার নিজের সম্বন্ধে তার সততা মানে রাখে I তবে আল্লাহর সামনে যে কোনো স্থানে (যেহেতু তিনি আত্মা) আসতে পারে, কিন্তু এই ‘জীবন্ত জল’ গ্রহণ করতে পারার আগে তার নিজের সম্পর্কে সত্যে আসা প্রয়োজন I    

অতএব তাকে একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করার ছিল I সে এক ধর্মীয় দ্বন্দের পেছনে লুকোতে বা হয়ত কেবল ছেড়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে যেতে পারত I তবে সে অবশেষে তার পাপ স্বীকার করতে পছন্দ করল – স্বীকার করতে – খুব বেশি খুব যে সে অন্যদের বলতে গ্রামে ফিরে গেল কিভাবে এই নবি তাকে জানত এবং সে কি করেছিল I সে আর কিছু লুকালো না I এই করার দ্বারা সে একজন ‘বিশ্বাসী’ হল I সে আগে ধার্মিক ছিল, আমাদের মধ্যে অনেকের মতন, কিন্তু এখন সে – এবং তার গ্রামের অনেকে – ‘বিশ্বাসী সমূহ’ হয়ে উঠলো I 

একজন বিশ্বাসী হওয়া মানসিকভাবে সঠিক শিক্ষাকে জাহির করার সম্বন্ধে কেবল নয় – গুরুত্বপূর্ণ যদিও তা হয় I এছাড়াও এটিকে বিশ্বাস করার সম্বন্ধে যে তার করুণার প্রতিশ্রুতিকে ভরসা করা যায়, এবং তাই পাপকে আচ্ছাদন করার আর কোনো প্রয়োজন নেই I এটাই যা হযরত ইব্রাহিম (আঃ) দীর্ঘ সময় পূর্বে ধার্মিকতা পেতে করেছিলেন – তিনি একটি প্রতিশ্রুতির উপরে ভরসা করেছিলেন I

আপনি কি অজুহাত করেন বা আপনার পাপকে লুকোন? আপনি কি ধর্মপ্রাণ ধর্মীয় অনুশীলন বা ধর্মীয় দ্বন্দের সাহায্যে এটিকে লুকোন? বা আপনি আপনার পাপ স্বীকার করেন? কেন আমাদের সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর কাছে আসেন না এবং সত্যবাদীভাবে দোষ এবং লজ্জা সৃষ্টিকারী পাপকে স্বীকার করেন? তখন আপনি আনন্দ করতে পারেন যে তিনি আপনার আরাধনা ‘চান’ এবং সমস্ত অধার্মিকতা থেকে তিনি আপনাকে শুদ্ধ করবেন I 

আমরা কথপোকথন থেকে দেখি যে এই ভাববাদী ঈসা (আঃ) সম্পর্কে স্ত্রীটির ‘মেসিয়াহ’ (=খ্রীষ্ট – ‘মসীহ’) হিসাবে উপলব্ধি গুরুত্বপূর্ণ ছিল এবং দুই দিন ধরে ঈসা আল মসীহর থাকা এবং তাদেরকে শেখানোর পরে তারা তাকে ‘জগতের উদ্ধারকর্তা’ রূপে বুঝল I আমরা হয়ত পুরোপুরি এইসবের মানে কি বুঝি না I তবে যেমনভাবে হযরত ইয়াহিয়া (আঃ) লোকেদের প্রস্তুত  করেছিলেন বুঝতে, আমাদের পাপ স্বীকার করতে তেমনি তার কাছে থেকে করুণা পেতে আমাদের প্রস্তুত করবেন I সোজা পথের উপরে এটি প্রথম  পদক্ষেপ I      

‘ঈশ্বর, আমার উপরে, একজন পাপীর উপরে করুণা করুন I’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *