Skip to content
Home » কাবিল ও হাবিলের চিহ্ন

কাবিল ও হাবিলের চিহ্ন

  • by

আগে আমরা আদম ও হাওয়ার চিহ্ন দেখেছিলাম। তাদের দুটি পুত্র ছিল যারা সহিংসভাবে একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল। এটি মানব ইতিহাসের প্রথম হত্যাকাণ্ডের গল্প। কিন্তু আমরা তাদের সাইন সম্পর্কে বোঝার জন্য এই গল্প থেকে সর্বজনীন নীতিগুলিও শিখতে চাই। তাই আসুন আমরা পড়ি এবং শিখি। (অন্য উইন্ডোতে প্যাসেজ খুলতে এখানে ক্লিক করুন)।

কেইন ও আবেল (কাবিল ও হাবিল): দুটো কোরবানীর সাথে দুটো পুত্র

তাওরাত শরীফে হযরত আদম ও বিবি হাওয়ার দুটো পুত্রের নাম হল কেইন ও আবেল (কাবিল ও হাবিল)। কুরআনে তাদের নাম দেওয়া হয়নি, কিন্তু তারা ইসলামী রীতিতে কাবিল ও হাবিল রূপে পরিচিত৷  তারা প্রত্যেকে আল্লাহ্‌র জন্য কোরবানী নিয়ে এসেছিল কিন্তু হাবিলের কোরবানীটিকে কবুল করা হয়েছিল কিন্তু কাবিলের কোরবানীটিকে কবুল করা হয়নি৷ কিন্তু ঈর্ষা বশত কয়িন তার ভাইকে হত্যা করেছিল কিন্তু আল্লাহ্‌র কাছ থেকে সে তার গুনাহ্ লুকাতে পারেনি৷  এই ঘটনাটি থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নটি হল কেন হাবিলের কোরবানী কবুল হয়েছিল কাবিলেরটি হয়নি৷  অনেকে অনুমান করে যে দুই ভাইয়ের মধ্যের ভিন্নতার কারণে এমনটি ঘটেছিল৷ কিন্তু যত্ন সহকারে পড়লে আমরা অন্যভাবে বিষয়টিকে দেখতে পারব৷ তাওরাত শরীফ স্পষ্ট করে যে দুটো ভিন্ন কোরবানী আনা হয়েছিল৷ কাবিলের ‘জমির ফসল’ (ফল ও সবজি) এনেছিল অন্যদিকে হেবল ‘তার পাল থেকে প্রথমে জন্মেছে এমন পশুর চর্বি’ এনেছিল৷ এর অর্থটি হল হেবল একটি পশুকে কোরবান করেছিল যেমন একটি ভেড়া বা ছাগল৷

এখানে আমরা হযরত আদমের চিহ্নের একটি সমান্তরাল দেখি৷ হযরত আদম তার নগ্নতা পাতা দিয়ে আচ্ছাদিত করার চেষ্টা করেছিলেন, কিন্তু প্রভাবশালী পোশাক দিতে একটি পশুর চামড়ার (এবং এটির মৃত্যুর) প্রয়োজন হয়েছিল৷ পাতা, ফল ও সবজির রক্ত থাকে না এবং তাই মানুষ ও পশুদের মত জীবনওর রক্তহীন ফল ও সবজির কোরবানী কবুল করা হয়নি৷ হাবিলের ‘চর্বির অংশটির’ অর্থটি হল যে পশুর রক্ত ক্ষরণ ও ঢালা হয়েছিল, ঠিক যেমন হযরত আদম ও বিবি হাওয়ার পোশাকটির জন্য পশুটির সাথে ঘটেছিল৷

অতএব, একটি অল্পবয়স্ক ছেলে রূপে আমার শেখা তালিমটি দিয়ে এই নির্দেশটিকে আমরা সমাপ্ত করতে পারি: ‘ভালো অভিপ্রায়ের সাথে জাহান্নামের রাস্তাটিকে বাঁধানো হয়েছে’৷ কয়িনের অভিব্যক্তিটি উপযুক্ত মনে হয়৷ সে আল্লাহ্‌র উপর ঈমান রাখতো এবং তার ইবাদতের জন্য একটি কোরবানী সাথে নিয়ে তার কাছে এসেছিল৷  কিন্তু আল্লাহ্ কোরবানীটিকে কবুল করেননি এবং তাই তাকেও কবুল করেননি৷ কিন্তু কেন?  তার কি খারাপ মনোবৃত্তি ছিল? পূর্বে সে কি করেছিল তার বর্ণনাটি এখানে দেওয়া নেই৷ হতে পারে যে তার অভিপ্রায় ও মনোবৃত্তিটি সবচাইতে ভালো ছিল৷  হযরত আদম-এর চিহ্নটি, আমাদেরকে একটি সূত্র দেয়৷ যখন আল্লাহ্‌তা’লা হযরত আদম ও বিবি হাওয়ার বিচার করেছিলেন তখন তিনি তাদেরকে মরণশীল করে দিয়েছিলেন৷ তাই মৃত্যু ছিল তাদের গুনাহের দাম৷ তারপর আল্লাহ্ তাদেরকে চিহ্ন দিয়েছিলেন- যা হল পশুর চামড়া (পোশাক) যা তাদের নগ্নতা আচ্ছাদিত করেছিল৷ এর অর্থ হল যে সেই পশুটিকে প্রাণ হারাতে হয়েছিল৷  হযরত আদম ও বিবি হাওয়ার আচ্ছাদনের জন্য একটি পশুকে মরতে ও রক্ত ক্ষরণ করতে হয়েছিল৷  আর এখন তাদের ছেলেরা কোরবানী এনেছিল কিন্তু হেবলের কোরবানীটির (পাল থেকে চর্বির অংশ) জন্য মৃত্যু ও রক্তের ক্ষরণের প্রয়োজন ছিল৷ ‘জমির ফসল’ মরতে পারে না যেহেতু এগুলো পশু বা মানুষের মত ‘জীবিত’ নয় এবং এগুলোর রক্তও ক্ষরণ হয় না৷

আমাদের জন্য চিহ্ন: রক্ত ক্ষরণ ও ঢালা

আল্লাহ্ এখানে আমাদেরকে একটি তালিম দিচ্ছেন৷ আমাদের নির্ণয় বা ইচ্ছার উপর নির্ভরশীল নয় যে কিভাবে আমরা আল্লাহ্‌র কাছে উপস্থিত হব৷ তিনি নির্ধারিত করেছেন এবং আমাদেরকে তার ইচ্ছার অধীনে হতে হবে৷  এখানে তিনি নির্ধারণ করেছেন যে কোরবানীটিকে মরতে হবে, তার রক্ত ক্ষরণ করতে ও ঢালতে হবে৷ আমি হলে অন্য কোনো কিছু নির্ধারিত করতাম কেননা তাহলে আমি আমার ইচ্ছানুযায়ী কোরবানী আনতাম৷ আমি সময়, অর্থ, মুনাজাত বা ইবাদত আনতাম ‘জীবিত’ কোনো কিছুর তুলনায়৷ কিন্তু­-রক্তের কোরবানী- আল্লাহ্ নির্ধারিত করেছেন৷  অন্য কিছু যথেষ্ট হবে না৷   কোরবানীর এই বিষয়টিকে যদি আমরা বহাল রাখি তবে আগামী নবীদের চিহ্নগুলো রুচিকর হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *