Skip to content
Home » ইউসুফ কে ছিলেন? তার চিহ্ন কি ছিল?

ইউসুফ কে ছিলেন? তার চিহ্ন কি ছিল?

  • by

সুরা ইউসুফ (সুরা ১২ – যোষেফ) হজরত ইউসুফ/ জোসেফের কাহিনী বলে I ইউসুফ হজরত ইয়াকুবের (যেকব) পুত্র, যে হজরত ইসহাকের (আইসাক) পুত্র, যে হজরত ইব্রাহিমের (আব্রাহাম) পুত্র ছিল I ইয়াকুবের বারো সন্তানের মধ্যে একজন ছিল ইউসুফ I ইউসুফের এগারো ভাই তার বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্র করেছিল, আর তাদের পরিকল্পনা ইউসুফের বিবরণকে গঠন করে I এই কাহিনীটি প্রথমে নথিভুক্ত হয়েছিল ৩৫০০ বছর পূর্বে মুসার তাওরাতেI তাওরাতের পূর্ণ বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ (সুরা ১২ – যোষেফ) বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ আমাদের বলে যে এটি কেবলমাত্র একটি  কাহিনী নয় বরং    

ইউসুফ আর তার ভাইদের ঘটনায় সত্য সন্ধানীদের জন্য অবশ্যই নিদর্শনাবলী আছে।

সুরা ইউসুফ ১২ঃ৭

ইউসুফ এবং তার ভাইদের কাহিনীর মধ্যে কি রয়েছে যা অন্বেষনকারীদের জন্য ‘লক্ষণসমূহ’ হয়? এই ‘লক্ষণগুলো’ বোঝার জন্য আমরা তাওরাত এবং সুরা ইউসুফ উভয় কাহিনীকে পর্যালোচনা করি I  

সামনে সেজদা করা … ?

একটি স্পষ্ট লক্ষণ হলো একটি স্বপ্ন যা ইউসুফ তার পিতা ইয়াকুবকে বলেন, যেখানে  

স্মরণ কর, ইউসুফ যখন তার পিতাকে বলেছিল, ‘হে আব্বাজান! আমি (স্বপ্নে) দেখেছি এগারটি তারকা আর সূর্য ও চন্দ্র; দেখলাম তারা আমাকে সাজদাহ করছে।’

সুরা ইউসুফ ১২:৪

কাহিনীর শেষে, আমরা বাস্তবিকই দেখি যে

সে তার পিতা-মাতাকে সিংহাসনে উঠিয়ে নিল আর সকলে তার সম্মানে সাজদাহয় ঝুঁকে পড়ল। ইউসুফ বলল, ‘হে পিতা! এ-ই হচ্ছে আমার সে আগের দেখা স্বপ্নের ব্যাখ্যা। আমার রব্ব একে সত্যে পরিণত করেছেন, তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন যে, তিনি আমাকে কয়েদখানা থেকে বের করে এনেছেন। আর শাইত্বান আমার আর আমার ভাইদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করার পরও তিনি আপনাদেরকে মরু অঞ্চল থেকে এখানে (মিসরে) এনে দিয়েছেন। আমার রব্ব যা করতে ইচ্ছে করেন তা সূক্ষ্ণ উপায়ে বাস্তবায়িত করে থাকেন, তিনি বড়ই বিজ্ঞ, বড়ই প্রজ্ঞাময়।

সুরা ইউসুফ ১২:১০০

সম্পূর্ণ কুরআনের মধ্যে ‘সেজদা’ কে বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে I তবে তারা সকলে সর্বশক্তিমান আল্লাহর সামনে প্রার্থনার মধ্যে সেজদা হওয়ার কথা উল্লেখ করে, বা কাবার মধ্যে, বা আল্লাহর অলৌকিক কার্য সমূহের সামনে (মুসার সাথে মিশরের জাদুকরের মতন) I এখানের বিষয়টি ব্যতিক্রম কারণ এখানে ‘সেজদা হওয়া’ একজন মানুষের (ইউসুফ) সামনে I আর একটি অনুরূপ ঘটনা কেবলমাত্র তখন হয় যখন ফেরেশতাদের আদমের সামনে ‘সেজদা’ করতে আজ্ঞা দেওয়া হয় (তা-হা ১১৬ এবং আল-আরাফ ১১)I তবে ফেরেশতাদের মানুষ নয়, সাধারণ নিয়ম হলো কেবলমাত্র প্রভুর সামনে সেজদা দিতে হয় I    

হে মু’মিনগণ! তোমরা রুকূ‘ কর, সেজদা কর আর তোমাদের প্রতিপালকের ‘ইবাদাত কর ও সৎকাজ কর যাতে তোমরা সাফল্য লাভ করতে পার। [সাজদাহ]

আল-হাজ্জ ২২:৭৭

ইউসুফের ক্ষেত্রে কি এমন হলো যা ব্যতিক্রম করল যাতে তার পিতা ইয়াকুব এবং তার ভাইরা তার সামনে সেজদা করলো?

মনুষ্য পুত্র

ঐতিহাসিক কালপঞ্জি দেখায় নবী দানিয়েল এবং যাবুরের অন্যান্য নবীদের

অনুরূপভাবে বাইবেলের মধ্যে আমাদেরকে কেবলমাত্র সদাপ্রভুর সামনে মাথা নত করতে, বা আরাধনা করতে আজ্ঞা দেওয়া হয়, তবে সেখানেও একটি ব্যতিক্রম আছে I নবী দানিয়েল একটি দর্শন পেয়েছিল যা অনেক দুরের সময়কে দেখিয়েছিল যখন ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তার দর্শনে তিনি এক ‘মনুষ্য পুত্র’ কে দেখেছিলেন I  

13“রাতের দর্শনে আমি মনুষ্যপুত্রের মতো একজনকে দেখলাম যিনি স্বর্গের মেঘের সঙ্গে আসছিলেন। তিনি অতি প্রাচীন ব্যক্তির দিকে এগিয়ে গেলেন এবং তাঁর উপস্থিতিতে আনীত হলেন। 14তাঁকে কর্তৃত্ব, গৌরব ও সার্বভৌম ক্ষমতা দেওয়া হল; এবং প্রত্যেক জাতি ও ভাষার মানুষ তাঁর আরাধনা করল। তাঁর আধিপত্য চিরস্থায়ী আধিপত্য যা কোনোদিন শেষ হবে না এবং তাঁর রাজ্য কোনোদিন বিনষ্ট হবে না।

দানিয়েল 7

দর্শনের মধ্যে লোকেরা ‘মনুষ্য পুত্রের’ সামনে সেজদা করে, যেমনভাবে ইউসুফের পরিবার ইউসুফের সামনে সেজদা করেছিলI

‘মনুষ্য পুত্র’ খেতাবটি ঈসা আল মসীহ (আঃ) প্রায়ই নিজের জন্য ব্যবহার করতেন I পৃথিবীতে চলার সময় তিনি শিক্ষাদান, নিরাময়ের ক্ষেত্রে এবং প্রকৃতির উপরে মহান কর্ত্তৃত্বের প্রদর্শন করেছিলেন I তবে তিনি ‘আকাশের মেঘে চড়ে’ আসেন নি যেমনটি দানিয়েলের দর্শন অনুসারে ভবিষ্যদবানি করেছিল I এটি এই কারণে যে দর্শনটি আরও ভবিষ্যতের দিকে দেখছিল, তার প্রথম আগমনকে ছাড়িয়ে গিয়ে তার দ্বিতীয় আগমনকে – তার পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তন দজ্জালকে ধ্বংস করতে (যেমন হজরত আদমকে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল) এবং ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করতে I    

কুমারী মরিয়মের মাধ্যমে জন্ম গ্রহণ করে তার প্রথম আগমন, ঈশ্বরের রাজ্যে হতে নাগরিকদের উদ্ধার করতে হয়েছিল উনার প্রথম আগমন I তবে এমনকি তবুও, তিনি, মনুষ্য পুত্র, মেঘের উপরে তার প্রত্যাবর্তনের পরে কিভাবে লোকেদের পৃথক করবেন তার সম্বন্ধে বলেছিলেন I তিনি সমস্ত জাতি সমূহকে তার সামনে প্রণত অবস্থায় আগে থেকেই দেখেছিলেন ঠিক যেমন ভাবে ইউসুফের ভাইরা মিজেদেরকে ইউসুফের সামনে প্রণত করেছিল I মসীহ যা শিখিয়েছিলেন তা এখানে রয়েছে I  

31“মনুষ্যপুত্র যখন তাঁর মহিমায়, তাঁর সমস্ত দূতদের সঙ্গে নিয়ে আসবেন, তিনি স্বর্গীয় মহিমায় তাঁর সিংহাসনে উপবেশন করবেন। 32সমস্ত জাতিকে তাঁর সামনে উপস্থিত করা হবে। তিনি লোকেদের, একজন থেকে অপরজনকে পৃথক করবেন, যেভাবে মেষপালক ছাগদের মধ্য থেকে মেষদের পৃথক করে। 33তিনি মেষদের তাঁর ডানদিকে ও ছাগদের তাঁর বাঁদিকে রাখবেন।

34“তখন রাজা তাঁর ডানদিকের লোকদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশিস ধন্য তোমরা এসো; জগৎ সৃষ্টির সময় থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তোমরা তার অধিকারী হও। 35কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে খাবার দিয়েছিলে; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে পান করতে দিয়েছিলে; আমি অপরিচিত ছিলাম, তোমরা আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলে; 36আমার পোশাকের প্রয়োজন ছিল, তোমরা পোশাক দিয়েছিলে; আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার দেখাশোনা করেছিলে; আমি কারাগারে ছিলাম, তোমরা আমাকে দেখতে গিয়েছিলে।’

37“ধার্মিক ব্যক্তিরা তখন তাঁকে উত্তর দেবে, ‘প্রভু, আমরা কখন আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে আহার দিয়েছিলাম, বা তৃষ্ণার্ত দেখে পান করতে দিয়েছিলাম? 38কখনই-বা আপনাকে অপরিচিত দেখে ভিতরে নিয়ে গিয়ে আশ্রয় দিয়েছিলাম, বা পোশাকহীন দেখে পোশাক দিয়েছিলাম? 39কখনই-বা আপনাকে অসুস্থ বা কারাগারে দেখে আপনার কাছে গিয়েছিলাম?’

40“রাজা উত্তর দেবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, যখন তোমরা আমার এই ভাইবোনদের মধ্যে নগণ্যতম কারও প্রতি এরকম করেছিলে, তখন তা আমারই প্রতি করেছিলে।’

41“তারপরে তিনি তাঁর বাঁদিকের লোকদের বলবেন, ‘অভিশপ্ত তোমরা, আমার কাছ থেকে দূর হয়ে অনন্ত অগ্নিতে নিক্ষিপ্ত হও, যা দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য তৈরি করা হয়েছে। 42কারণ আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে কিছুই খেতে দাওনি; আমি তৃষ্ণার্ত ছিলাম, তোমরা আমাকে পান করার জন্য কিছু দাওনি; 43আমি অপরিচিত ছিলাম, তোমরা আমাকে আশ্রয় দাওনি; আমার পোশাকের প্রয়োজন দেখেও আমাকে পোশাক দাওনি; আমি অসুস্থ ও কারাগারে ছিলাম, তোমরা আমার দেখাশোনা করোনি।’

44“তারাও উত্তর দেবে, ‘প্রভু, আমরা কখন আপনাকে ক্ষুধার্ত বা তৃষ্ণার্ত, অপরিচিত বা পোশাকহীন, অসুস্থ বা কারাগারে দেখে সাহায্য করিনি?’

45“তিনি উত্তর দেবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমার এই নগণ্যতম জনেদের কোনো একজনের প্রতি যখন তা করোনি তখন তা তোমরা আমার প্রতিই করোনি।’

46“তারপর তারা চিরন্তন শাস্তির উদ্দেশ্যে যাবে, কিন্তু ধার্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।”

মথি 25

হজরত ইউসুফ (আঃ) এবং ঈসা আল মসীহ (আঃ)

অন্যান্য মানুষরা ছাড়া সহকারে নিজেদেরকে তাদের সামনে প্রণত করবে, হজরত ইউসুফ এবং ঈসা আল মসীহ ঘটনা সমূহের এক অনুরূপ নমুনার মধ্য দিয়ে গেলেন I লক্ষ্য করুন কতগুলো উপায়ে তাদের জীবন সাদৃশ্যপূর্ণ I 

হজরত ইউসুফের জীবনের ঘটনাবলী   ঈসা আল মসীহর জীবনের ঘটনাবলী

উনার ভাইয়েরা ইস্রায়েলের
১২  উপজাতি হয়ে গেলো এবং ইউসুফকে ঘৃণা এবং
প্রত্যাহ্যান করল।

উপজাতির একটি জাতি হিসাবে ইহুদিরা ঈসা আল মাসীহকে ঘৃণা করে এবং তাকে মাসীহ হিসাবে প্রত্যাখ্যান করে।

ইউসুফ ইস্রায়েলের (ঈশ্বরের দ্বারা ইয়াকুবেব্র নাম) প্রতি তার ভাইদের ভবিষ্যত প্রণতকে ঘোষণা করে।

ঈসা আল মসীহ ইস্রায়েলের প্রতি তার ভাইদের (সাথী যিহূদিগণ) ভবিষ্যত প্রণতের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন (মার্ক ১৪:৬২) 

ইউসুফ তার পিতার দ্বারা তার ভাইদের কাছে প্রেরিত হয়েছিল তবে তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং তার প্রাণ হরণ করতে ষড়যন্ত্র করল।

ঈসা আল মসীহ তার পিতার দ্বারা ইহুদিদের কাছে পাথিয়েছেন, “তবে তার নিজের লোকেরা তাকে
গ্রহণ করল না I” (যোহন ১:১১) এবং তারা “তার প্রাণ হরণ করতে ষড়যন্ত্র করল” (যোহন ১১:৫৩)
তারা তাকে পৃথিবীর এক কুপের  মধ্যে নিক্ষেপ করে   ঈসা আল মসীহ পৃথিবীর কবরে অবতরণ  করেন
ইউসুফকে বিক্রি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হ’ল ঈসা আল মসীহকে বিক্রি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হল  

তাকে অনেক দুরে নিয়ে যাওয়া হয়  যাতে তার ভাইরা এবং পিতা ভাবে  যে উনি মারা গেছেন

ইস্রায়েল এবং তার ভাই
ইহুদিরা ভাবে যে ঈসা আল মসীহ এখনও মৃত আছেন
  ইউসুফ একজন দাসের মতন নম্র ঈসা আল মসীহ “একজন দাসের বিশেষ প্রকৃতিকে” অবলম্বন করেছিলেন এবং মৃত্যুর কাছে ‘নিজেকে নত করেছিলেন’ (ফিলিপীয় 2:7) 
ইউসুফকে মিথ্যাভাবে পাপের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল
ইহুদিরা মিথ্যাভাবে “তাকে
বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে অভিযুক্ত করেছিল’ (মার্ক ১৫:৩)

ইউসুফকে এক দাস হিসাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে সে অন্ধকূপের (রুটির কারখানা) অন্ধকার থেকে কিছু বন্দীদের মুক্ত করার পূর্বাভাষ পেয়েছিলেন

ঈসা আল মসীহকে পাঠানো হয়েছিল” … ভগ্নান্ত:করণদের ক্ষত বেঁধে দিতে, বন্দীদের জন্য স্বাধীনতা ঘোষণা করতে এবং বন্দিদের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে…” (যিশাইয় ৬১:১)
ইউসুফ মিশরের সিংহাসনে আরোহন করে, সমস্ত শক্তির উপরে, কেবল ফরৌণের নিজের অধীনে I যে লোকেরা তার কাছে আসে তার সামনে প্রণত হয় I   “ঈশ্বর তাকে মহিমান্বিত করলেন সর্বোচ্চ স্থানে এবং তাকে সেই নাম দান করলে যা প্রত্যেক নামের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, যেন যীশুর নামে প্রত্যেকটি জানু নত হয়, স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালে…” (ফিলিপীয় 2:10-11)
যখন তার ভাইদের দ্বারা তখনও প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ইউসুফের কাছে রুটির জন্য আসে যা তাদের জন্য সে সরবরাহ করতে পারত    যখন তার সাথী ভাইদের দ্বারা তখনও প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ঈসা আল মসীহর কাছে জীবনের রুটির জন্য আসে যা একমাত্র তিনিই তাদেরকে দিতে পারেন 

ইউসুফ তার ভাইদের বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলে (আদিপুস্তক ৫০:২০)

ঈসা আল মসীহ তার ভাই ইহুদিদের দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলেন যা ঈশ্বরের অভীষ্ট ছিল এবং অনেক জীবনকে রক্ষা করবে (যোহন ৫:২৪)

তার ভাইরা এবং জাতিগণ ইউসুফের সামনে প্রণত করে

দানিয়েল মনুষ্য পুত্রের সম্বন্ধে ভবিষ্যতবাণী করেন যে “সমস্ত জাতিগণ এবং প্রত্যেক ভাষাভাষী লোকেরা তাঁর
আরাধনা করবে”

অনেক নিদর্শন সমূহ – অনেক লক্ষণ সমূহ

তাওরাতের প্রায় সমস্ত প্রাচীন নবীরা তাদের জীবনকে ঈসা আল মসীহর প্রতিরূপ করেছিলেন – তাঁর আগমনের কয়েক শত বছর পূর্বে নিদর্শনগুলো রচনা করা হয়েছিল I এটি করা হয়েছিল আমাদের দেখাতে যে মসীহর আগমন বাস্তবিকই ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিল I, কোনো মানবীয় ধারণা নয়, যেহেতু মানুষেরা এত আগে থেকে ভবিষ্যতকে জানে না I  

হজরত আদম থেকে আরম্ভ করে, মসীহর সম্বন্ধে কোনো না কোনো ভবিষ্যদ্বাণী ছিল I বাইবেল বলে যে হজরত আদম

14তবুও, আদমের সময় থেকে মোশির সময় পর্যন্ত মৃত্যু কর্তৃত্ব করেছিল, এমনকি তাদের উপরেও করেছিল যারা বিধান অমান্য করে কোনো পাপ করেনি, যেমন সেই আদম করেছিলেন, যিনি ছিলেন ভবিষ্যতে আগত ব্যক্তির প্রতিরূপ।

রোমীয় 5

মসীহের কুরবানীর উপর এই তাগিদও হযরত ইব্রাহিমের কুরবানীর আদলে। ইউসুফের পরে, ইয়াকুবের বারো পুত্র ইসরায়েলের বারোটি গোত্রে পরিণত হয়েছিল যেগুলিকে হযরত মুসা (আঃ) মিশর থেকে বের করে এনেছিলেন। তিনি যেভাবে তা করেছিলেন তা ছিল মসীহের ত্যাগের বিবরণের একটি নমুনা। প্রকৃতপক্ষে, মাসীহের আগমনের হাজার হাজার বছর আগে তাওরাতের অনেক বিস্তারিত নিদর্শন লিপিবদ্ধ ছিল। জাবুর এবং অন্যান্য নবীরা আরও বিশদ বিবরণ লিখেছিলেন মাসীহের কয়েকশ বছর আগে, যা প্রত্যাখ্যানের সাথে যন্ত্রণাদায়ক বান্দার ভবিষ্যদ্বাণীতে জোর দেওয়া হয়েছিলI যেহেতু কোনো মানুষ কয়েক শত বছরের আগের ভবিষ্যতকে জানে না, তাহলে এই নবীগণ কিভাবে এই বিবরণগুলো জানতে পেরে ছিল যদি না তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে থাকে? যদি তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে থাকে তাহলে ঈসা আল মসীহর প্রত্যাখ্যান এবং বলিদান অবশ্যই ঈশ্বরের পরিকল্পনা হয়ে থাকবে I          

এই নিদর্শনগুলো বা ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর বেশিরভাগই মসীহর প্রথম আগমন নিয়ে আলোচনা করেছিল যেখানে তিনি নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন যাতে আমরা উদ্ধারিত হতে পারি এবং ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হই I

তবে ইউসুফের নিদর্শনটি কখন রাজ্য শুরু হবে তার আরও আগের দিকে তাকায় এবং সমস্ত জাতিগণ পৃথিবীতে ঈসা আল মসীহর প্রত্যাবর্তনে নিজেদেরকে প্রণত করবে I যেহেতু আমরা এমন সময়ে বেঁচে আছি যখন আমাদেরকে ঈশ্বের রাজ্যে আমন্ত্রণ করা হয়েছে, আসুন আমরা আল-মাআরিজের সেই বোকা লোকের মতো না হই যে একজন মুক্তিদাতা খুঁজে পেতে দিন পর্যন্ত বিলম্ব করেছিল – এবং এটি অনেক দেরি হয়ে গেছে। মসীহর জীবনের উপহার সম্পর্কে এখন আরও জানুন I      

মসীহ শিখিয়েছিলেন যে তার প্রত্যাবর্তন এইরকম হবে

1“সেই সময়ে স্বর্গরাজ্য হবে এমন দশজন কুমারীর মতো, যারা তাদের প্রদীপ হাতে নিয়ে বরের সঙ্গে মিলিত হতে গেল। 2তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ ও পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী। 3নির্বোধ কুমারীরা তাদের প্রদীপ নিল, কিন্তু তাদের সঙ্গে কোনো তেল নিল না। 4কিন্তু বুদ্ধিমতী কুমারীরা প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে করে তেলও নিল। 5বর আসতে দেরি করল, ফলে তারা সকলে ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়ল।

6“মধ্যরাত্রে এক উচ্চ রব শোনা গেল: ‘দেখো, বর এসেছেন! তোমরা তার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য বেরিয়ে এসো!’

7“তখন সব কুমারী উঠে তাদের প্রদীপ সাজিয়ে নিল। 8নির্বোধ কুমারীরা বুদ্ধিমতীদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু দাও; আমাদের প্রদীপগুলি নিভে যাচ্ছে।’

9“তারা উত্তর দিল, ‘না, তোমাদের ও আমাদের জন্য হয়তো পর্যাপ্ত হবে না। বরং যারা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে তোমরা নিজেদের জন্য কিছু তেল কিনে আনো।’

10“তারা তেল কেনার জন্য যখন পথে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে পৌঁছালেন। যে কুমারীরা প্রস্তুত ছিল, তারা তাঁর সঙ্গে বিবাহ আসরে প্রবেশ করল। আর দরজা বন্ধ করে দেওয়া হল।

11“পরে অন্য কুমারীরাও এসে পৌঁছাল। তারা বলল, ‘প্রভু! প্রভু! আমাদের জন্যও দরজা খুলে দিন!’

12“কিন্তু তিনি উত্তর দিলেন, ‘আমি তোমাদের সত্যিই বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।’

13“সেই কারণে সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সে দিন বা ক্ষণ জানো না।

তালন্তের রূপক

14“আবার, এ হবে এমন এক ব্যক্তির মতো, যিনি বিদেশ ভ্রমণে বের হলেন। তিনি তার দাসদের ডেকে তাদের হাতে তার সম্পত্তির ভার দিলেন। 15একজনকে তিনি পাঁচ তালন্ত অর্থ দিলেন, অপর একজনকে দুই তালন্ত ও আরও একজনকে এক তালন্ত, যার যেমন ক্ষমতা, সেই অনুযায়ী দিলেন। তারপর তিনি ভ্রমণে চলে গেলেন। 16যে মানুষটি পাঁচ তালন্ত নিয়েছিল, সে তক্ষুনি গিয়ে তার অর্থ বিনিয়োগ করল ও আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করল। 17একইভাবে, যে দুই তালন্ত নিয়েছিল, সে আরও দুই তালন্ত লাভ করল। 18কিন্তু যে এক তালন্ত নিয়েছিল, সে ফিরে গেল, মাটিতে গর্ত খুঁড়ল ও তার মনিবের অর্থ লুকিয়ে রাখল।

19“দীর্ঘ সময় পরে, ওই দাসদের মনিব ফিরে এলেন ও তাদের সঙ্গে হিসেব নিকেশ করতে চাইলেন। 20যে পাঁচ তালন্ত নিয়েছিল, সে আরও পাঁচ তালন্ত নিয়ে এসে বলল, ‘প্রভু, আপনি আমার হাতে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন। দেখুন, আমি আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করেছি।’

21“তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘বেশ করেছ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস! তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত থেকেছ; আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করব। এসো, তোমার মনিবের আনন্দের অংশীদার হও!’

22“যে দুই তালন্ত নিয়েছিল, সেও এসে বলল, ‘প্রভু, আপনি আমাকে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন; দেখুন, আমি আরও দুই তালন্ত লাভ করেছি।’

23“তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘বেশ করেছ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস! তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত থেকেছ; আমি তোমাকে বহু বিষয়ের উপরে তত্ত্বাবধায়ক নিযুক্ত করব। এসো, তোমার মনিবের আনন্দের অংশীদার হও!’

24“তখন যে এক তালন্ত অর্থ নিয়েছিল, সে এসে উপস্থিত হল। সে বলল, ‘প্রভু, আমি জানি, আপনি এক কঠোর প্রকৃতির মানুষ, যেখানে বীজ বোনেননি, সেখানে কাটেন এবং যেখানে বীজ ছড়াননি, সেখানেই সংগ্রহ করেন। 25তাই আমি ভীত হয়ে, আপনার তালন্ত মাটিতে লুকিয়ে রেখেছিলাম। এই দেখুন, আপনার যা, তা ফিরে পেলেন।’

26“তার মনিব উত্তর দিলেন, ‘দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে যে, আমি যেখানে বুনিনি, সেখানেই কাটি ও যেখানে বীজ ছড়াইনি, সেখানেই সংগ্রহ করি? 27তাহলে মহাজনদের কাছে তুমি আমার অর্থ গচ্ছিত রাখতে পারতে, যেন আমি ফিরে এসে তা সুদসমেত ফেরত পেতাম।

28“ ‘অতএব, তোমরা ওই তালন্তটি তার কাছ থেকে নিয়ে নাও এবং যার দশ তালন্ত আছে তাকে দিয়ে দাও। 29কারণ যার কাছে আছে, তাকে আরও দেওয়া হবে ও তার অনেক হবে। যার কাছে নেই, তার কাছে যা আছে, তাও তার কাছ থেকে কেড়ে নেওয়া হবে। 30আর তোমরা সেই অকর্মণ্য দাসকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও, যেখানে কেবলই রোদন ও দন্তঘর্ষণ হবে।’

মথি 25

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *