Skip to content

কুরআন বাইবেলের পরিবর্তে প্রতিস্থাপিত। এসম্পর্কে কুরআন কি বলে?

আমরা দেখেছি যে কুরআন ও সুন্নাহ উভয়ই নিশ্চিত করে যে বাইবেল (তওরাত,  জবুর এবং ইঞ্জিল যা একত্রে আল কিতাব) পরিবর্তন করা হয়নি বা বিকৃত হয়নি (এখানে এবং এখানে দেখুন)  । তবে প্রশ্নটি এখনও  রয়ে যায় যে বাইবেল / আল কিতাব কুরআন দ্বারা রহিত, বাতিল বা প্রতিস্থাপন হয়েছে কিনা। কুরআন নিজেই এই ধারণা সম্পর্কে কি বলে?  

আমি আপনার প্রতি অবতীর্ণ করেছি সত্যগ্রন্থ, যা পূর্ববতী গ্রন্থ সমূহের সত্যায়নকারী এবং সেগুলোর বিষয়বস্তুর রক্ষণাবেক্ষণকারী। অতএব, আপনি তাদের পারস্পারিক ব্যাপারাদিতে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করুন এবং আপনার কাছে যে সৎপথ এসেছে, তা ছেড়ে তাদের প্রবৃত্তির অনুসরণ করবেন না। আমি তোমাদের প্রত্যেককে একটি আইন ও পথ দিয়েছি। যদি আল্লাহ চাইতেন, তবে তোমাদের সবাইকে এক উম্মত করে দিতেন, কিন্তু এরূপ করেননি-যাতে তোমাদেরকে যে ধর্ম দিয়েছেন, তাতে তোমাদের পরীক্ষা নেন। অতএব, দৌড়ে কল্যাণকর বিষয়াদি অর্জন কর। তোমাদের সবাইকে আল্লাহর কাছে প্রত্যাবর্তন করতে হবে। অতঃপর তিনি অবহিত করবেন সে বিষয়, যাতে তোমরা মতবিরোধ করতে।

সূরা ৫:৪৮  আল মায়েদাহ

এর আগে মূসার কিতাব ছিল পথপ্রদর্শক ও রহমতস্বরূপ। আর এই কিতাব তার সমর্থক আরবী ভাষায়, যাতে যালেমদেরকে সতর্ক করে এবং সৎকর্মপরায়ণদেরকে সুসংবাদ দেয

সূরা ৪৬:১২ আল আক্বাফ

এ কোরআন এমন গ্রন্থ, যা আমি অবতীর্ন করেছি; বরকতময়, পূর্ববর্তী গ্রন্থের সত্যতা প্রমাণকারী এবং যাতে আপনি মক্কাবাসী ও পাশ্ববর্তীদেরকে ভয় প্রদর্শন করেন। যারা পরকালে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তার স্বীয় নামায সংরক্ষণ করে।

সূরা ৬:৯২ আল  আন-আম 

আমি আপনার প্রতি যে কিতাব প্রত্যাদেশ করেছি, তা সত্য-পূর্ববর্তী কিতাবের সত্যায়ন কারী নিশ্চয় আল্লাহ তাঁর বান্দাদের ব্যাপারে সব জানেন, দেখেন।

সূরা ৩৫:৩১

এই আয়াতগুলো কুরআন বাইবেলের (আল কিতাব)পূর্ববর্তী বার্তা সমূহ নিশ্চিত (না রহিত করন, না বাতিল করন অথবা না প্রতিস্থাপন) করার কথা বলে । অন্য কথায়, এই আয়াত বলছে না যে বিশ্বাসীদের প্রথম প্রকাশিত প্রত্যাদেশ বাদ দেওয়া  উচিত এবং কেবল পরবর্তী প্রত্যাদেশ অধ্যয়ন করা উচিত। বিশ্বাসীদের  উচিত পূর্ববর্তী প্রত্যাদেশ অধ্যয়ন করা এবং সে সম্পর্কে জানা। 

এটি আয়াত দ্বারা আরোও নিশ্চিত করা হয়েছে যে বিভিন্ন প্রত্যাদেশ সমূহের মধ্যে “কোনও পার্থক্য নে“। এখানে এমন দুটি আয়াত আমি লক্ষ্য করেছি:

রসূল বিশ্বাস রাখেন ঐ সমস্ত বিষয় সম্পর্কে যা তাঁর পালনকর্তার পক্ষ থেকে তাঁর কাছে অবতীর্ণ হয়েছে এবং মুসলমানরাও সবাই বিশ্বাস রাখে আল্লাহর প্রতি, তাঁর ফেরেশতাদের প্রতি, তাঁর গ্রন্থসমুহের প্রতি এবং তাঁর পয়গম্বরগণের প্রতি। তারা বলে আমরা তাঁর পয়গম্বরদের মধ্যে কোন তারতম্য করিনা। তারা বলে, আমরা শুনেছি এবং কবুল করেছি। আমরা তোমার ক্ষমা চাই, হে আমাদের পালনকর্তা। তোমারই দিকে প্রত্যাবর্তন করতে হবে।

সূরা ২:২৮৫

তোমরা বল, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের প্রতি এবং যা অবতীর্ণ হয়েছে ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তদীয় বংশধরের প্রতি এবং মূসা, ঈসা, অন্যান্য নবীকে পালনকর্তার পক্ষ থেকে যা দান করা হয়েছে, তৎসমুদয়ের উপর। আমরা তাদের মধ্যে পার্থক্য করি না। আমরা তাঁরই আনুগত্যকারী।

সূরা ২:১৩৬

প্রথম আয়াতে  বলা হয়েছে  যে পয়গম্বদের মধ্যে কোন পার্থক্য নেই – তাদের সকলের কথা শোনা উচিত এবং ২য়টি বলে যে বিভিন্ন নবীদের দেওয়া প্রত্যাদেশ সমূহের মধ্যে কোনও পার্থক্য নেই – তাদের সব গ্রহণ করা উচিত। এ আয়াতের কোনটিতেই পূর্ববর্তী প্রত্যাদেশসমূহ অবহেলা করা উচিত বলে কোন পরামর্শ নেই কারণ পরবর্তী আয়াতটি তা বাতিল করে দিয়েছে।

এবং এই নিদর্শনটি ঈসা আল মাসিহ ( আ: ) এর দৃষ্টান্ত এবং শিক্ষার সাথে খাপ খায়। তিনি নিজেই বলেননি তৌরাত এবং তারপর জবুরের প্রথম দিকের প্রত্যাদেশসমূহ বাতিল করা হয়েছিল। আসলে তিনি বিপরীতটি শিখিয়েছিলেন। তিনি ইঞ্জিলের নিজস্ব শিক্ষায় মুসার তৌরাতকে যে সন্মান এবং ক্রমাগত এবং নিরবচ্ছিন্ন গুরুত্ব দিয়েছেন তা লক্ষ করুন।  

নিশ্চয় তারা কাফের, যারা বলে, মসীহ ইবনে মরিয়মই আল্লাহ। আপনি জিজ্ঞেস করুন, যদি তাই হয়, তবে বল যদি আল্লাহ মসীহ ইবনে মরিয়ম, তাঁর জননী এবং ভূমন্ডলে যারা আছে, তাদের সবাইকে ধ্বংস করতে চান, তবে এমন কারও সাধ্য আছে কি যে আল্লাহর কাছ থেকে তাদেরকে বিন্দুমাত্রও বাঁচাতে পারে? নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যে যা আছে, সবকিছুর উপর আল্লাহ তা’আলার আধিপত্য। তিনি যা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান। 18 ইহুদী ও খ্রীষ্টানরা বলে, আমরা আল্লাহর সন্তান ও তাঁর প্রিয়জন। আপনি বলুন, তবে তিনি তোমাদেরকে পাপের বিনিময়ে কেন শাস্তি দান করবেন? বরং তোমারও অন্যান্য সৃষ্ট মানবের অন্তর্ভুক্ত সাধারণ মানুষ। তিনি যাকে ইচ্ছা ক্ষমা করেন এবং যাকে ইচ্ছা শাস্তি প্রদান করেন। নভোমন্ডল, ভুমন্ডল ও এতদুভয়ের মধ্যে যা কিছু আছে, তাতে আল্লাহরই আধিপত্য রয়েছে এবং তাঁর দিকেই প্রত্যাবর্তন করতে হবে। 19 হে আহলে-কিতাবগণ! তোমাদের কাছে আমার রসূল আগমণ করেছেন, যিনি পয়গম্বরদের বিরতির পর তোমাদের কাছে পুঙ্খানুপুঙ্খ বর্ণনা করেন-যাতে তোমরা একথা বলতে না পার যে, আমাদের কাছে কোন সুসংবাদদাতা ও ভীতিপ্রদর্শক আগমন করে নি। অতএব, তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভীতি প্রদর্শক আগমন করেননি। অতএব, তোমাদের কাছে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শক এসে গেছেন। আল্লাহ সবকিছুর উপর শক্তিমান। 20 যখন মূসা স্বীয় সম্প্রদায়কে বললেনঃ হে আমার সম্প্রদায়, তোমাদের প্রতি আল্লাহর নেয়ামত স্মরণ কর, যখন তিনি তোমাদের মধ্যে পয়গম্বর সৃষ্টি করেছেন, তোমাদেরকে রাজ্যাধিপতি করেছেন এবং তোমাদেরকে এমন জিনিস দিয়েছেন, যা বিশ্বজগতের কাউকে দেননি।

মথি ৫:১৭-২০

আসলে, তার শিক্ষাকে সঠিকভাবে বুঝতে হলে তিনি শিখিয়েছিলেন যে প্রথমে কাউকে তৌরাত এবং পরে জবুর এ যেতে হবে। এখানে আছে তিনি তার নিজের সাহাবীদের কিভাবে শিখিয়েছিলেন :

হে মুমিনগণ, তোমরা নিজেদের গৃহ ব্যতীত অন্য গৃহে প্রবেশ করো না, যে পর্যন্ত আলাপ-পরিচয় না কর এবং গৃহবাসীদেরকে সালাম না কর। এটাই তোমাদের জন্যে উত্তম, যাতে তোমরা স্মরণ রাখ

লূক ২৪:২৭

আল্লাহ দিন ও রাত্রির পরিবর্তন ঘটান। এতে অর্ন্তদৃষ্টি-সম্পন্নগণের জন্যে চিন্তার উপকরণ রয়েছে।

লূক ২৪:৪৪

ঈসা আল মসীহ ( আ:)  পূর্ববরতী প্রত্যাদেশগুলো উপেক্ষা করেননি। বাস্তবে তিনি সেখান থেকেই তার শিক্ষাদান এবং নির্দেশনা শুরু করেছিলেন। এই কারনেই ইঞ্জিলকে বুঝতে পারার ভিত্তি হিসেবে তৌরাতের শুরু থেকে আরম্ভ করার মধ্যে দিয়ে

আমরা তার দৃষ্টান্ত অনুসরণ করি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *