Skip to content
Home » তাওরাত থেকে: নবী ইসমাঈল (আঃ) এর বিবরণ কি?

তাওরাত থেকে: নবী ইসমাঈল (আঃ) এর বিবরণ কি?

  • by

ইসমাঈলের প্রতি কি হয়েছিলে সেই বিষয়ে বিভ্রান্তি আছে প্রচুর I ৩৫০০ বছর আগে নবী মুসা (আঃ) দ্বারা লিখিত তাওরাত আমাদের জন্য এটি পরিষ্কার করতে সহায়তা করে।আল্লাহ ইব্রাহিম (আঃ) কে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে তিনি তাকে আশীর্বাদ করবেন এবং সমুদ্রতীরের বালুরাশির ন্যায় বংশধর দেবেন (এখানে দেখুন) ইব্রাহিম (আঃ) অবশেষে তাঁর দুই স্ত্রীর কাছ থেকে দুটি পুত্র লাভ করেন, কিন্তু তাদের মধ্যে এক দ্বন্দের জন্য হাজেরা এবং ইসমাঈলকে দুরে পাঠিয়ে দিতে তাকে বাধ্য করল I এই দ্বন্দ দুই পর্যায়ে ঘটল I প্রথম অধ্যায়টি ইসমাঈলের জন্মের পরে এবং ইসহাকের জন্মের আগে ঘটল  I এখানে যেটা তাওরাত এই দ্বন্দর সম্বন্ধে বলে এবং কিভাবে আল্লাহ হাজেরাকে রক্ষা করলো, তার সামনে আবির্ভূত হলেন এবং ইসমাঈল (আঃ) কে তাঁর আশীর্বাদ দিলেন ।

হাজেরা এবং ইসমাঈল (আঃ)- আদিপুস্তক ১৬

এখন অব্রামের স্ত্রী সারাহ তার কোন সন্তান ধারণ করেননি। কিন্তু তার একজন মিশরীয় দাস ছিল যা হাজেরা নামে ছিলো; ২ তাই সে অব্রামকে বলল, “প্রভু আমাকে সন্তান ধারণ থেকে বিরত রেখেছেন। যাও, আমার দাসের সাথে ঘুমো; সম্ভবত আমি তার মাধ্যমে একটি পরিবার বানাতে পারি। “

আব্রাম সারাহ যা বলেছিল তাতে রাজি হয়েছিল। ৩ ইব্রাম দশ বছর কনান দেশে বাস করার পরে তাঁর স্ত্রী সারাহ তার মিশরীয় দাস হাজেরাকে নিয়ে তাঁর স্বামীকে তাঁর স্ত্রী হিসাবে দিয়েছিলেন। ৪ তিনি হাজারের সাথে শয়ন করলেন এবং সে গর্ভবতী হল।

তিনি যখন জানতেন যে তিনি গর্ভবতী, তিনি তার উপপত্নীকে ঘৃণা করতে শুরু করলেন। ৫ তখন সারাহ অব্রামকে কহিল, আমি যে অন্যায় ভোগ করিতেছিলে তার জন্য তুমিই দায়ী। আমি আমার গোলামকে তোমার বাহুতে রেখেছি এবং এখন সে জানে যে সে গর্ভবতী, সে আমাকে তুচ্ছ করে। প্রভু আপনার এবং আমার মধ্যে বিচার করতে পারেন ””

৬ অব্রাম বললেন, “তোমার গোলাম তোমার হাতে আছে। “আপনি যা ভাল মনে করেন তার সাথে করুন” ” তারপরে সারাহ হাজেরার প্রতি দুর্ব্যবহার করেছিল; তাই সে তার কাছ থেকে পালিয়ে গেল।

সদাপ্রভুর ফেরেশতা হাজেরাকে মরুভূমির এক ঝর্ণার কাছে পেয়েছিলেন; শূরের রাস্তার পাশেই বসন্ত ছিল। ৮ তিনি বললেন, “সারাহর দাস হাজেরা, তুমি কোথা থেকে এসেছ আর কোথায় যাচ্ছ?”

“আমি আমার উপপত্নী সারাহ থেকে পালাচ্ছি,” তিনি উত্তর দিলেন।

৯ তখন সদাপ্রভুর দেবদূত তাকে বললেন, “তুমি তোমার স্ত্রীলোকটির কাছে ফিরে যাও এবং তার কাছে দাও।” ১০ স্বর্গদূত আরও বললেন, “আমি তোমার বংশধরদের এত বাড়িয়ে দেব যে তারা গণনা করার মতো অসংখ্য হবে।”

১১ মাবুদের ফেরেশতা তাকে বললেন,

“আপনি এখন গর্ভবতী
    আর তুমি পুত্রের জন্ম দেবে।
তুমি তার নাম রাখবে ইসমাelল, [এ]
    কারণ প্রভু আপনার দুর্দশার কথা শুনেছেন।
১২ সে একজন মানুষের বুনো গাধা হবে;
    তার হাত সবার বিরুদ্ধে থাকবে
    এবং সবার হাত তার বিরুদ্ধে,
এবং সে শত্রুতা মধ্যে বাস করবে
    তাঁর ভাইদের দিকে [খ।]

১৩ তিনি সদাপ্রভুর কাছে এই নাম রেখেছিলেন, যে তাঁকে বলেছিল: “তুমিই Godশ্বর যিনি আমাকে দেখেন,” কারণ তিনি বলেছিলেন, “যিনি আমাকে দেখেন আমি এখন তাকে দেখেছি।” 14 সেই কারণেই এই কূপটিকে বিয়ার লাহাই রই বলা হত [d]; কাদেশ ও বেরেদের মধ্যে এখনও আছে।

১৫ সুতরাং হাগর অব্রামের এক পুত্রসন্তান জন্মালেন এবং অব্রাম তাঁর জন্মের পুত্রের নাম রাখলেন ইসমাelল। 16 যখন অব্রাহামের জন্ম হলেন ইশ্মায়েল, তখন অব্রাম ছষট্টি বছর বয়সে।

আদিপুস্তক ১৬:১-১৫

আমরা দেখি যে হাজেরা একজন ভাববাদিনি ছিলেন যেহেতু তিনি প্রভুর সঙ্গে কথা বলতেন I তিনি তাকে বললেন যে তার পুত্রের নাম ইসমাঈল হবে এবং তাকে এক প্রতিশ্রুতি দিলেন যে ইসমাঈল ‘গণনাতে অনেক হবে’ I সুতরাং এই সাক্ষাত্কার এবং প্রতিশ্রুতির সাথে সে তার উপপত্নীর কাছে ফিরে গেল এবং দ্বন্দ সাময়িকভাবে বিরাম পেল I

দ্বন্দ বাড়তে থাকে

কিন্তু যখন ১৪ বছর পরে সারাহ এর কাছে ইসহাক জন্ম নিল দ্বন্দ পুনরায় আরম্ভ হল I তাওরাত ব্যাখ্যা করে কিভাবে এটি ঘটল I 

আদিপুস্তক 21:8:21

 ৮ পরে বালকটি বড় হইয়া স্তন্য পান ত্যাগ করিল; আর যে দিন ইস্‌হাক স্তন্য পান ত্যাগ করিল, সেই দিন অব্রাহাম মহাভোজ প্রস্তুত করিলেন। ৯ আর মিসরীয়া হাগার অব্রাহামের নিমিত্ত যে পুত্র প্রসব করিয়াছিল, সারা তাহাকে পরিহাস করিতে দেখিলেন। ১০ তাহাতে তিনি অব্রাহামকে কহিলেন, তুমি ঐ দাসীকে ও উহার পুত্রকে দূর করিয়া দেও; কেননা আমার পুত্র ইস্‌হাকের সহিত ঐ দাসীর পুত্র উত্তরাধিকারী হইবে না। ১১ এই কথায় অব্রাহাম আপন পুত্রের বিষয়ে অতি অসন্তুষ্ট হইলেন। ১২ আর ঈশ্বর অব্রাহামকে কহিলেন, ঐ বালকের বিষয়ে ও তোমার ঐ দাসীর বিষয়ে অসন্তুষ্ট হইও না; সারা তোমাকে যাহা বলিতেছে, তাহার সেই কথা শুন; কেননা ইস্‌হাকেই তোমার বংশ আখ্যাত হইবে। ১৩ আর ঐ দাসীপুত্র হইতেও আমি এক জাতি উৎপন্ন করিব, কারণ সে তোমার বংশীয়।১৪ পরে অব্রাহাম প্রত্যুষে উঠিয়া রুটি ও জলপূর্ণ কুপা লইয়া হাগারের স্কন্ধে দিয়া বালকটিকে সমর্পণ করিয়া তাহাকে বিদায় করিলেন। তাহাতে সে প্রস্থান করিয়া বের্‌-শেবা প্রান্তরে ঘুরিয়া বেড়াইল। ১৫ পরে কুপার জল শেষ হইল, তাহাতে সে এক ঝোপের নিচে বালকটিকে ফেলিয়া রাখিল; ১৬ আর আপনি তাহার সম্মুখ হইতে অনেকটা দূরে, অনুমান এক তীর দূরে গিয়া বসিল, কারণ সে কহিল, বালকটির মৃত্যু আমি দেখিব না। আর সে তাহার সম্মুখ হইতে দূরে বসিয়া উচ্চৈঃস্বরে রোদন করিতে লাগিল। 

 ১৭ তখন ঈশ্বর বালকটির রব শুনিলেন; আর ঈশ্বরের দূত আকাশ হইতে ডাকিয়া হাগারকে কহিলেন, হাগার, তোমার কি হইল? ভয় করিও না, বালকটি যেখানে আছে, ঈশ্বর তথা হইতে উহার রব শুনিলেন; ১৮ তুমি উঠিয়া বালকটিকে তুলিয়া তোমার হাতে ধর; কারণ আমি উহাকে এক মহাজাতি করিব। ১৯ তখন ঈশ্বর তাহার চক্ষু খুলিয়া দিলেন, তাহাতে সে এক সজল কূপ দেখিতে পাইল, আর তথায় গিয়া কুপাতে জল পূরিয়া বালকটিকে পান করাইল। ২০ পরে ঈশ্বর বালকটির সহবর্তী হইলেন, আর সে বড় হইয়া উঠিল, এবং প্রান্তরে থাকিয়া ধনুর্ধর হইল।

আদিপুস্পক ২১:৮-২১

আমরা দেখি যে সারাহ (তার নাম সারাই থেকে পরিবর্তন করা হয়েছে) হাজেরার সাথে এক পরিবারে বাস করতে পারলোনা এবং দাবি করলো যে তাকে দুরে পাঠিয়ে দেওয়া হোক I যদিও ইব্রাহিম (আঃ) অনিচ্ছুক ছিল, আল্লাহ প্রতিশ্রুতি দিলো যে তিনি হাজেরা এবং ইসমাঈল (আঃ) আশীর্বাদ দেবেন I বাস্তবিক তিনি তার সঙ্গে পুনরায় কথা বললেন, মরুভুমির মধ্যে জল দেখতে তার চোখ খুলে দিলেন এবং প্রতিশ্রুতি দিলেন যে ইসমাঈল (আঃ) এক ‘মহান জাতিতে’ পরিণত হবে I    

তাওরাত অবিরত দেখাতে থাকে কিভাবে এই জাতি এর অগ্রগতিতে বাড়তে আরম্ভ করল I আমরা ইব্রাহিমের (আঃ) মৃত্যুর সময়ে ইসমাঈল (আঃ) সম্বন্ধে পড়ি I

আদিপুস্তক ২৫:৮-১৮

৮ পরে অব্রাহাম বৃদ্ধ ও পূর্ণায়ু হইয়া শুভ বৃদ্ধাবস্থায় প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন। ৯ আর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাক ও ইশ্মায়েল মম্রির সম্মুখে হেতীয় সোহরের পুত্র ইফ্রোণের ক্ষেত্রস্থিত মক্‌পেলা গুহাতে তাঁহার কবর দিলেন। ১০ অব্রাহাম হেতের সন্তানদের কাছে সেই ক্ষেত্র ক্রয় করিয়াছিলেন। সেই স্থানে অব্রাহামের ও তাঁহার স্ত্রী সারার কবর দেওয়া হয়।১১ অব্রাহামের মৃত্যু হইলে পর ঈশ্বর তাঁহার পুত্র ইস্‌হাককে আশীর্ব্বাদ করিলেন; এবং ইসহাক বের্-লহয়্‌-রোয়ীর নিকটে বসতি করিলেন।

ইসমাইলের পুত্র

১২ আব্রাহামের পুত্র ইশ্মায়েলের বংশবৃত্তান্ত এই। সারার দাসী মিস্রীয়া হাগার অব্রাহামের জন্য তাঁহাকে প্রসব করিয়াছিল। ১৩ আপন আপন নাম ও গোষ্ঠী আনুসারে ইশ্মায়েলের সন্তানদের নাম এই। ইশ্মায়েলের জ্যেষ্ঠ পুত্র নবায়োৎ, ১৪ পরে কেদর, অদ্‌বেল, মিব্‌সম, 15মিশ্‌ম, দূমা, মসা, হদদ, তেমা, যিটূর, নাফীশ ও কেদমা। ১৬ এই সকল ইশ্মায়েলের সন্তান; এবং তাঁহাদের গ্রাম ও তাম্বুপল্লী অনুসারে তাঁহাদের এই এই নাম; তাঁহারা আপন আপন জাতি অনুসারে দ্বাদশ জন অধ্যক্ষ ছিলেন। ১৭ ইশ্মায়েলের জীবনকাল এক শত সাঁইত্রিশ বৎসর ছিল; পরে তিনি প্রাণত্যাগ করিয়া আপন লোকদের নিকটে সংগৃহীত হইলেন। ১৮ আর তাঁহার সন্তানগণ হবীলা অবধি অশূরিয়ার দিকে মিসরের সম্মুখস্থ শূর পর্য্যন্ত বসতি করিল; তিনি তাঁহার সকল ভ্রাতার সম্মুখে বসতিস্থান পাইলেন।

আদিপুস্তক ২৫:৮-১৮

ইশ্মায়েল বাস্তবিক অনেকদন ধরে জীবিত থাকল এবং তার পুত্ররা ১২ উপজাতির শাসক হল I আল্লাহ তাকে আশ্বীর্বাদ করলেন যেমনটি তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন I আজকের দিনে আরব ঈশ্মায়েলের মাধ্যমে ইব্রাহিমের কাছে তাদের পূর্বপুরুষগণকে সন্ধান করে I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *