Skip to content
Home » হারুণের চিহ্ন: একটি গাভী, দুটি পাঁঠা

হারুণের চিহ্ন: একটি গাভী, দুটি পাঁঠা

  • by

মুসার ২ ন. চিহ্নতে আমরা দেখলাম যে সীনয় পর্বতে যে আজ্ঞা গুলো দেওয়া হলতা খুব কঠিন ছিল I আমি আপনাকে আমন্ত্রণ দিয়েছিলাম নিজী জিজ্ঞাসা করতে (কারণ এটাই ব্যবস্থার ইচ্ছা ছিল) আপনি আজ্ঞাগুলো সর্বদা পালন করেন কি না I যদি আপনি আজ্ঞাগুলো সর্বদা পালন না করেন আপনার সাথে আমিও, গুরুতর বিপদে হব – বিচার আসন্ন হয় I কিন্তু যদি তাই হয় তবে কি করতে পারা যায়? ইনি হারুণ (মুসার ভাই, আরোনও বলা হয়), এবং তার বংশধররা যারা বলি উৎসর্গ করার দ্বারা এটিকে প্রশ্ন করে সম্বোধন করলেন – এই বলির উৎসর্গগুলো কি পাপের প্রায়শ্চিত্ত করেছে বা আচ্ছাদন করেছে I হারূণ দুটি বিশেষ বলির উৎসর্গ করলেন যেগুলো চিহ্ন ছিল বুঝতে আল্লাহ কিভাবে ব্যবস্থা ভঙ্গের মধ্যে সংঘটিত পাপগুলোর উপরে আচ্ছাদন  করবে I এগুলো গাভী (বকনা বাছুর) এবং দুটি পাঁঠার বলি ছিল I হারুণের গাভীর বলির উৎসর্গ থেকে সুরাহ বাকরাহ নামকরণ করা হয়েছে I কিন্তু আমাদের ছাগল দিয়ে শুরু করা যাক I       

বলির পাঁঠা এবং প্রায়শ্চিত্তর দিন

মশির ১ ন. চিহ্ন থেকে নিস্তারপর্ব ছিল (এবং এখনও আছে!) ফেরাওণের থেকে উদ্ধারের স্মৃতিতে ইহূদি লোকেদের দ্বারা উদযাপন করা হয় I কিন্তু তাওরাত এর পাশাপাশি অন্যান্য পর্ব সমূহের সম্বন্ধেও আজ্ঞা দিয়েছিল I বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ একটিকে প্রায়শ্চিত্তর দিন বলা হত I তাওতের মধ্যে পূর্ণ বিবরণটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন I

প্রায়শ্চিত্তর দিনের জন্য কেন এই ধরণের সতর্কতাপূর্ণ এবং বিস্তারিত নির্দেশগুলো দেওয়া হল? আমরা দেখি কিভাবে তাদের শুরু হয়:

 ১ হারোণের দুই পুত্র সদাপ্রভুর নিকটে উপস্থিত হইয়া মারা পড়িলে পর, সদাপ্রভু মোশির সহিত আলাপ করিলেন। ২ সদাপ্রভু মোশিকে এই কথা কহিলেন, তুমি আপন ভ্রাতা হারোণকে বল, যেন সে অতি পবিত্র স্থানে তিরস্করিণীর ভিতরে, সিন্দুকের উপরিস্থ পাপাবরণের সম্মুখে সর্ব্ব সময়ে প্রবেশ না করে, পাছে তাহার মৃত্যু হয়; কেননা আমি পাপাবরণের উপরে মেঘে দর্শন দিব।

লেবীয় ১৬:১-২

যা আগে ঘটল তা ছিল যে হারোণের দুই পুত্র মারা গেল যখন তারা হঠাৎ করে তাঁবুতে প্রবেশ করল যেখানে সদাপ্রভুর উপস্থিতি ছিল I কিন্তু তাঁর পবিত্র উপস্থিতিতে, ব্যবস্থাকে (যেমন আমরা এখানে দেখলাম) সর্বতোভাবে পালন করার ক্ষেত্রে তাদের ব্যর্থতা তাদের মৃত্যুর কারণ হল I কেন? তাঁবুতে নিয়ম সিন্দুক ছিল I কোরানও এই নিয়ম সিন্দুকের উল্লেখ করে I এটি বলে  

বনী-ইসরাঈলদেরকে তাদের নবী আরো বললেন, তালূতের নেতৃত্বের চিহ্ন হলো এই যে, তোমাদের কাছে একটা সিন্দুক আসবে তোমাদের পালকর্তার পক্ষ থেকে তোমাদের মনের সন্তুষ্টির নিমিত্তে। আর তাতে থাকবে মূসা, হারুন এবং তাঁদের সন্তানবর্গের পরিত্যক্ত কিছু সামগ্রী। সিন্দুকটিকে বয়ে আনবে ফেরেশতারা। তোমরা যদি ঈমানদার হয়ে থাক, তাহলে এতে তোমাদের জন্য নিশ্চিতই পরিপূর্ণ নিদর্শন রয়েছে।

সূরা আল বাক্বারাহ ২:২৪৮(গাভী )

এটি যেমন বলে ‘নিয়ম সিন্দুক’ কর্তৃত্বের একটি চিহ্ন ছিল কারণ সিন্দুক মুসার ব্যবস্থার নিয়মের প্রতীক ছিল I দশ আজ্ঞা সহ প্রস্তর ফলককে এই সিন্দুকের মধ্যে রাখা হয়েছিল I সমস্ত ব্যবস্থা যে কেউ পালন করতে ব্যর্থ হলে – এই সিন্দুকের সামনে – মারা যাবে I হারুণের প্রথম দুই পুত্র মারা গেল যখন তারা তাঁবুতে প্রবেশ করল I তাই সতর্কতামূলক নির্দেশগুলো দেওয়া হয়েছিল, যা সমগ্র বছরের এক দিনকে অন্তর্ভুক্ত করেছিল যখন হারোণের তাঁবুতে প্রবেশ করা উচিত – এই প্রায়শ্চিত্তর দিনে I যদি সে অন্য কোন দিনে প্রবেশ করত তবে সেও মারা যেত I কিন্তু এমনকি এই একটি দিনেও, নিয়ম সিন্দুকের উপস্থিতিতে হারোণের প্রবেশ করতে পারার পূর্বে, তাকে করতে হত:  

আর হারোণ আপনার জন্য পাপার্থক বলির গোবৎস আনয়ন করিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্ত প্রায়শ্চিত্ত করিবে। 7পরে সেই দুইটী ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে। 8পরে হারোণ ঐ দুইটী ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। 9গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে। ১০ কিন্তু গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ ত্যাগের নিমিত্তে হয়, সে যেন ত্যাগের নিমিত্তে প্রান্তরে প্রেরিত হইতে পারে, তন্নিমিত্ত তাহার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করণার্থে সদাপ্রভুর সম্মুখে তাহাকে জীবিত উপস্থিত করিতে হইবে। ১১ পরে হারোণ আপনার পাপার্থক বলির গোবৎস আনিয়া নিজের ও নিজ কুলের নিমিত্তে প্রায়শ্চিত্ত করিবে, ফলতঃ সে আপনার পাপার্থক বলি সেই গোবৎসকে হনন করিবে;; ১২ আর সদাপ্রভুর সম্মুখ হইতে, বেদির উপর হইতে, প্রজ্বলিত অঙ্গারে পূর্ণ অঙ্গারধানী ও এক মুষ্টি চূর্ণীকৃত সুগন্ধি ধূপ লইয়া তিরস্করিণীর ভিতরে যাইবে। ১৩ আর ঐ ধূপ সদাপ্রভুর সম্মুখে অগ্নিতে দিবে; তাহাতে সাক্ষ্য-সিন্দুকের উপরিস্থ পাপাবরণ ধূপের ধূমমেঘে আচ্ছন্ন হইলে সে মরিবে না। 

(লেবীয় ১৬:৬:১৩)

তাই একটি ষাঁড়কে বলি দেওয়া হ’ল, হারোণের নিজের পাপকে আচ্ছাদন করতে যা সে ব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংঘটিত করেছিল I আর তখন অবিলম্বে, হারোণ দুই ছাগলের উল্লেখযোগ্য অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত করল I

৭ পরে সেই দুইটী ছাগ লইয়া সমাগম-তাম্বুর দ্বারসমীপে সদাপ্রভুর সম্মুখে উপস্থিত করিবে। ৮ পরে হারোণ ঐ দুইটী ছাগের বিষয়ে গুলিবাঁট করিবে; এক গুলি সদাপ্রভুর নিমিত্তে, ও অন্য গুলি ত্যাগের নিমিত্তে হইবে। ৯ গুলিবাঁট দ্বারা যে ছাগ সদাপ্রভুর নিমিত্তে হয়, হারোণ তাহাকে লইয়া পাপার্থে বলিদান করিবে।

লেবীয় ১৬:৭-৯

একবার তার নিজের পাপের জন্য ষাঁড় বলি হওয়ার পরে, হারোণ ছাগল দুটিকে নিয়ে যেত আর গুলিবাট করত I একটি ছাগল বলির পাঁঠা রূপে মনোনীত  হত I অন্য ছাগলটিকে পাপ বলিরূপে উৎসর্গ করা হত I কেন?   

১৫ পরে সে লোকদের পাপার্থক বলির ছাগটী হনন করিয়া তাহার রক্ত তিরস্করিণীর ভিতরে আনিয়া যেমন গোবৎসের রক্ত ছিটাইয়া দিয়াছিল, সেইরূপ তাহারও রক্ত লইয়া করিবে, পাপাবরণের উপরে ও পাপাবরণের সম্মুখে তাহা ছিটাইয়া দিবে। ১৬ আর ইস্রায়েল-সন্তানগণের নানাবিধ অশুচিতা ও অধর্ম্ম, অর্থাৎ সর্ব্ববিধ পাপপ্রযুক্ত সে পবিত্র স্থানের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করিবে, এবং যে সমাগম-তাম্বু তাহাদের সহিত, তাহাদের নানাবিধ অশৌচের মধ্যে বসতি করে, তাহার নিমিত্তে সে তদ্রূপ করিবে। 

লেবীয় ১৬:১৫-১৬

আর বলির পাঁঠাটির কি হ’ল? 

২০ এইরূপে সে পবিত্র স্থানের, সমাগম-তাম্বুর ও বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্তকার্য্য সমাপ্ত করিলে পর সেই জীবিত ছাগটী আনিবে; ২১ পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগের মস্তকে আপনার দুই হস্ত অর্পণ করিবে, এবং ইস্রায়েল সন্তানগণের সমস্ত অপরাধ ও তাহাদের সমস্ত অধর্ম্ম অর্থাৎ তাহাদের সর্ব্ববিধ পাপ তাহার উপরে স্বীকার করিয়া সে সমস্ত ঐ ছাগের মস্তকে অর্পণ করিবে; পরে যে প্রস্তুত হইয়াছে, এমন লোকের হস্ত দ্বারা তাহাকে প্রান্তরে পাঠাইয়া দিবে। ২২ আর ঐ ছাগ নিজের উপরে তাহাদের সমস্ত অপরাধ বিচ্ছিন্ন ভূমিতে বহিয়া লইয়া যাইবে; আর সেই ব্যক্তি ছাগটীকে প্রান্তরে ছাড়িয়া দিবে। 

লেবীয় ১৬:২০-২২

ষাঁড়ের বলি হারোণের নিজের পাপের জন্য ছিল I প্রথম পাঁঠাটির বলি ইস্রায়েলীয় লোকেদের পাপের জন্য ছিল I হারোণ তখন জীবিত পাঁঠাটির মস্তকের উপর হাত রাখে এবং – একটি চিহ্নস্বরূপ – লোকেদের পাপ সমূহকে পাঁঠাটির উপরে হস্তান্তর করে I পরে পাঁঠাটিকে একটি চিহ্ন রূপে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়া হয় যাতে লোকেদের পাপগুলো লোকেদের থেকে এখন অনেক দুরে সরিয়ে নেওয়া যায় I এই বলিগুলোর সাথে তাদের পাপের প্রায়শ্চিত্ত করা হয় I এটি প্রতি বছর প্রায়শ্চিত্তর দিনে করা হত I  

বাকরাহ এবং তাওরাতের মধ্যে বকনা বাছুর, বা গাভী 

উৎসর্গ দেওয়ার জন্য হারূণের কাছে বকনা বাছুর (পুরুষ ষাঁড়ের বদলে মেয়ে গাভী) সহ আরও অন্য বলি ছিল I এটি সেই বিশেষ বকনা বাছুর এবং এর বলি যেটি ২ ন. সুরার জন্য ‘গাভীটি’ র শিরোনামের কারণ I সুতরাং কোরান এই বলিদানের সম্বন্ধে সরাসরিভাবে কথা বলে I কোরানের বিবরণটি পড়তে এখানে ক্লিক করুন I  যেমন আপনি দেখতে পারেন, লোকেরা হতচকিত এবং বিভ্রান্ত হ’ল যখন এটি আদেশ দেওয়া হ’ল যে এই বলির জন্য একটি গাভীকে  (অর্থাৎ একটি স্ত্রী) ব্যবহার করা হোক এবং সাধারণ পুরুষ প্রাণী নয় I আর এটি আয়াত দিয়ে শেষ হয়    

  অতঃপর হযরত আদম (আঃ) স্বীয় পালনকর্তার কাছ থেকে কয়েকটি কথা শিখে নিলেন, অতঃপর আল্লাহ পাক তাঁর প্রতি (করুণাভরে) লক্ষ্য করলেন। নিশ্চয়ই তিনি মহা-ক্ষমাশীল ও অসীম দয়ালু।

সুরাহ ২:৭৩-গাভী

অতএব এটি অন্যতম একটি চিহ্ন যার প্রতি আমাদের মনোযোগ দেওয়া  প্রয়োজন I কিন্তু কি উপায়ে এই বকনা বাছুর একটি চিহ্ন হয়? আমরা পড়ি যে এটি মৃত্যু এবং জীবনের সাথে সম্পর্কিত I এই বলির সম্বন্ধে হারোণকে দেওয়া তৌরাতের মূল নির্দেশগুলোকে অধ্যয়ন করার সাথে সাথে “দৈবাৎ আমরা বুঝতে পারি” I তাওরাতের সম্পূর্ণ অধ্যায়টিকে পড়তে এখানে ক্লিক করুন I আমরা দেখি যে   

আর তাহার দৃষ্টিগোচরে সেই গাভী পোড়াইয়া দেওয়া যাইবে; তাহার গোময়ের সহিত চর্ম্ম, মাংস ও রক্ত পোড়াইয়া দেওয়া যাইবে। পরে যাজক এরসকাষ্ঠ, এসোব ও লালবর্ণ লোম লইয়া ঐ গোদাহের অগ্নিমধ্যে ফেলিয়া দিবে।

গণনাপুস্তক ১৯:৫-৬

এসোব কোনো পাতাযুক্ত বৃক্ষের একটি শাখা ছিল I নিস্তারপর্বে ইস্রায়েলীয়দের আজ্ঞা দেওয়া হল নিস্তারপর্বের মেষের রক্ত তাদের দরজার উপরে ছিটিয়ে দিতে যাতে মৃত্যু তাদের ছেড়ে বেরিয়ে যায়     

আর এক আটি এসোব লইয়া ডাবরে স্থিত রক্তে ডুবাইয়া দ্বারের কপালীতে ও দুই বাজুতে ডাবরে স্থিত রক্তের কিঞ্চিৎ লাগাইয়া দিবে, এবং প্রভাত পর্য্যন্ত তোমরা কেহই গৃহদ্বারের বাহিরে যাইবে না

যাত্রাপুস্তক ১২:২২

এসোব আবারও বকনা বাছুরের সাথে ব্যবহৃত হত, আর এসোব, লোম, ও কেদারকে পোড়ানো হত যতক্ষণ না কেবল ছাই পড়ে থাকত I পরে

পরে কোন শুচি ব্যক্তি ঐ গাভীর ভস্ম সংগ্রহ করিয়া শিবিরের বাহিরে কোন শুচি স্থানে রাখিবে; তাহা ইস্রায়েল-সন্তানগণের মণ্ডলীর কারণ অশৌচঘ্ন জলের নিমিত্তে রাখা যাইবে; এটী পাপার্থক বলি

গননা পুস্তক ১৯:৯

অতএব ছাইকে ‘পরিশুদ্ধ করার জলের’ সঙ্গে মেশানো হত I একজন অশুচি ব্যক্তি এই ছাই মিশ্রিত জল ব্যবহার করে শুচিতা পুনস্থাপন করতে প্রক্ষালন অনুষ্ঠিত করত (ধোয়ার রীতি বা উধু) I কিন্তু ছাই কোনো অশুচিতার জন্য নয় বরং একটি বিশেষ প্রকারের জন্য I     

১১ যে কেহ কোন মনুষ্যের মৃত দেহ স্পর্শ করে, সে সাত দিন অশুচি থাকিবে। ১২ সে তৃতীয় দিবসে ও সপ্তম দিবসে ঐ জল দ্বারা আপনাকে মুক্তপাপ করিবে, পরে শুচি হইবে; কিন্তু যদি তৃতীয় দিবসে ও সপ্তম দিবসে আপনাকে মুক্তপাপ না করে, তবে শুচি হইবে না। ১৩ যে কেহ কোন মনুষ্যের মৃত দেহ স্পর্শ করিয়া আপনাকে মুক্তপাপ না করে, সে সদাপ্রভুর আবাস অশুচি করে; সেই প্রাণী ইস্রায়েলের মধ্য হইতে উচ্ছিন্ন হইবে; কেননা তাহার উপরে অশৌচঘ্ন জল প্রক্ষিপ্ত হয় নাই, এই নিমিত্তে সে অশুচি হইবে; তাহার অশুচিতা তাহাতে লগ্ন রহিয়াছে।

গণনাপুস্তক ১৯:১১-১৩

অতএব গাভীর এই জল মিশ্রিত ছাইগুলো উধুর (অর্থাৎ প্রক্ষালন) জন্য ছিল যখন কেউ মৃত শরীর ছুঁয়ে অশুচি হত I কিন্তু কেন মৃত শরীর ছুঁলে এই ধরণের ভয়ানক অশুচিতা ফলত? এই সম্বন্ধে ভাবুন! আদমকে তার অবাধ্যতার কারণে মরণশীল করা হল, এবং পাশা পাশি তার সমস্ত সন্তানদেরকে (আপনি এবং আমি!) I অতএব মৃত্যু অশুচির কারণ এটি পাপের পরিণাম – এটি পাপের অশুচির সঙ্গে সম্বন্ধযুক্ত I কেউ মৃত শরীর ছুঁলে তখন সেও অশুচি হয়ে যেত I কিন্তু এই ছাইগুলো একটি চিহ্ন ছিল – যা এই অশুচিতাকে ধৌত করত I তার ‘অশুচিতায়’ মৃত অশুচি ব্যক্তিটি, বকনা বাছুরের ছাই দিয়ে প্রক্ষালনের শোধনের থেকে ‘জীবন’ পেত I    

কেন পুরুষের বদলে একটি স্ত্রী প্রাণী ব্যবহৃত হত? কোনো সরাসরি ব্যাখ্যা দেওয়া হয় নি কিন্তু আমরা শাস্ত্র থেকে যুক্তি পেতে পারি I পুরো তাওরাতের মাধ্যমে (এবং অন্য সমস্ত পবিত্র পুস্তক) আল্লাহ একজন ‘তিনি’ হিসাবে প্রকাশিত হয়েছেন – পুরুষ লিঙ্গে I আর ইস্রায়েলীয় জাতিকে সমষ্টিগতভাবে একজন ‘সে’ বলা হত – স্ত্রী লিঙ্গে I যেমন বিবাহিত পুরুষ-স্ত্রীর সম্পর্কের মধ্যে হয়, আল্লাহ চালিত করলেন এবং তার অনুগামীরা সাড়া দিল I কিন্তু উদ্যোগ সর্বদা আল্লাহর সঙ্গে ছিল I তিন আজ্ঞার সূত্রপাত করলেন ইব্রাহিমকে তার পুত্রের বলি দিতে; তিনি সূত্রপাত করলেন প্রস্তর ফলকের উপরে আজ্ঞা সমূহ দিতে; তিনি সূত্রপাত করলেন নোহের বিচার, ইত্যাদি I এটির সূত্রপাত করা কখনও একজন মানবের (ভাববাদী বা অন্য কেউ) ধারণা ছিল না – তাঁর অনুগামীরা কেবলমাত্র তাঁর নেতৃত্বের কাছে সমর্পণ করছিল I   

বকনা বাছুরের ছাই একটি মানবীয় প্রয়োজন পূরণ করার ছিল – সেই  অশুচিতার I এইরূপে একটি মানবীয় প্রয়োজনের জন্য একটি উপযুক্ত চিহ্ন হতে, বলি দেওয়ার প্রাণী ছিল স্ত্রী I এই অশুচিতা আমাদের লজ্জার অনুভূতির দিকে নির্দেশ করে যখন আমরা পাপ করি, কোনো অপরাধ নয় যা আল্লাহর সামনে আমাদের কাছে আছে I আমি যখন পাপ করি, তখন নাতো কেবল আমি ব্যবস্থা ভগ্ন করেছি এবং বিচারকের সামনে দোষী হয়েছি, বরং এছাড়া আমি লজ্জা এবং অনুশোচনা অনুভব করি I আমাদের লজ্জার জন্য আল্লাহ কিভাবে যোগান দেন? প্রথমত, আল্লাহ আমাদের জন্য এক আচ্ছাদনকারী বস্ত্র যোগান দিয়েছেন I তাদের উলঙ্গতা এবং লজ্জা ঢাকতে প্রথম মানবজাতি চামড়ার বস্ত্র পেয়েছে I আর আদমের সন্তানগণ সেই থেকে বস্ত্র দিয়ে তাদের সর্বদা আচ্ছাদন করেছে – আসলে এটি করা এত স্বাভাবিক যাতে আমরা ‘কেন?’ বলতে কদাচিৎ বন্ধ করি I বকনা বাছুরের ছাইগুলোর সাথে এই প্রক্ষালন সমূহ আর একটি উপায় ছিল যাতে অশুচিকারী জিনিসগুলোর থেকে আমরা ‘শুচি’ অনুভব করতে পারি I বকনা বাছুরের লক্ষ্য ছিল আমাদের শুচিশুদ্ধ করা I            

 এই জন্য আইস, আমরা সত্য হৃদয় সহকারে বিশ্বাসের কৃতনিশ্চয়তায় [ঈশ্বরের] নিকটে উপস্থিত হই; আমরা ত হৃদয়প্রোক্ষণ-পূর্ব্বক মন্দ হইতে মুক্ত, এবং শুচি জলে স্নাত দেহবিশিষ্ট হইয়াছি; 

ইব্রীয় ১০:২২

বিপরীতক্রমে, প্রায়শ্চিত্তর দিনে পুরুষ ছাগলের বলি প্রাথমিকভাবে আল্লহর জন্য ছিল তাই একটি পুরুষ প্রানীকে ব্যবহার করা হত I দশ আজ্ঞা সমূহের চিহ্নর সাথে, আমরা লক্ষ্য করলাম যে অবাধ্যতার দণ্ডকে পুন: পুন: মৃত্যু (অধ্যায়টিকে পরীক্ষা করতে এখানে ক্লিক করুন) রূপে নির্দিষ্ট করা হয়েছিল I আল্লাহ ছিলেন (এবং আছেন) বিচারক এবং বিচারক রূপে মৃত্যুর দাবি করেছিলেন I প্রথম ষাঁড়ের মৃত্যু প্রথমে আল্লাহর প্রয়োজন পূরণ করল যে মৃত্যু ইস্রায়েলীয়দের পাপের জন্য দেওয়া হয়েছিল I পরে ইস্রায়েলীয় সম্প্রদায়ের পাপ প্রতীকাত্মক রূপে হারোণের দ্বারা বলির পাঁঠার উপরে রাখা যেতে পারত, এবং বলির পাঁঠাকে প্রান্তরে ছেড়ে দেওয়ার সাথে সাথে এটি একটি চিহ্ন ছিল যাতে  সম্প্রদায়ের পাপকে মুক্ত করা হল I        

এই বলিগুলো হারোণ এবং তার বংশধরদের দ্বারা উদযাপিত হয়েছিল I তাদের প্রদত্ত দেশের মধ্যে ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের মাধ্যমে; যখন দায়ূদ (বা দাউদ) রাজা হলেন এবং তার সন্তানরা শাসন করল; যখন অনেক ভাববাদী সাবধান বাণীর সঙ্গে এলেন; এমনকি ঈসা আল মসীহর জীবনের (আঃ) মাধ্যমে এই প্রয়োজনগুলো পূরণ করতে এই বলিগুলোকে অনুষ্ঠিত করা হয়েছিল I কিন্তু সেগুলো আসন্ন পরিত্রাণের ছায়ার মতন ছিল, একটি চিহ্ন রূপে এটিকে নির্দেশ করে I

তাই মুসা এবং হারুণের শেষ চিহ্ন সমূহের সাথে, তাওরাত একটি সমাপ্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছিল I শীঘ্র ভাববাদীদের উত্তরাধিকারীরা আসবে এবং যাবুরটি আল্লাহর বার্তাকে চালিয়ে নিয়ে যাবে I কিন্তু তাওরাতে একটি চূড়ান্ত বার্তা ছিল I হযরত মুসা (আঃ) এর ভবিষ্যতের একজন ভাববাদীর আগমনের দিকে পাশাপাশি ইস্রায়েলীয়দের বংশধরদের উপরে ভবিষ্যৎ আশীর্বাদ এবং অভিশাপের দিকে দেখতে যাচ্ছিলেন I      

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *