Skip to content
Home » আসন্ন দাসের চিহ্ন

আসন্ন দাসের চিহ্ন

  • by

আমাদের শেষ পোস্টে, নবী দানিয়েল বলেছিলেন যে মসীহকে ‘বিচ্ছিন্ন’ করা হবে।  এটি অন্যান্য নবীদের বিরোধী বলে মনে হয়েছিল যারা লিখেছিলেন যে মসীহ শাসন করবেন। কিন্তু আমরা দ্বন্দ্বের সমাধান করতে পারি যখন আমরা বুঝতে পারি যে নবীরা মসীহের দুটি ভিন্ন আগমনের দিকে তাকিয়ে ছিলেন। একটি আসে ‘বিচ্ছিন্ন’ হতে এবং অন্যটি ‘শাসন’ করতে। ইহুদি জাতি, সাধারণভাবে, এটি মিস করেছিল কারণ তারা সমস্ত ধর্মগ্রন্থ জানত না। এটি আমাদের জন্য একটি সতর্কতা হওয়া উচিত যে আমরা একই কাজ করি না।

যাবুরের মাধ্যমে আমরা আমাদের যাত্রার শেষে আসি I তবে আমাদেরকে আরও একটু জানতে হবে I হযরত ইশাইয়া (নিচের কালপঞ্জিতে তাকে দেখুন) একটি পল্লবের চিত্রকে ব্যবহার করে মসীহর আগমন সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করলেন

যাবুরের মধ্যে অন্য নবিদের সাথে হযরত ইশাইয়া (আঃ) কে ঐতিহাসিক কালপঞ্জির মধ্যে দেখানো হয়েছে

কিন্তু এছাড়াও তিনি একজন আসন্ন ব্যক্তির সম্বন্ধে লিখলেন যাকে দাস বলা হয় I তিনি এই আসন্ন দাসের সম্বন্ধে একটি দীর্ঘ অনুচ্ছেদ লিখলেন I এই ‘দাস’ কে ছিল? তিনি কি করতে যাচ্ছিলেন? আমরা অনুচ্ছেদটিকে বিস্তৃতভাবে দেখি I আমি কিছু মন্তব্য সহকারে, নিখুঁতভাবে এবং সম্পূর্ণরূপে ব্যাখ্যা করার জন্য এটিকে এখানে নিচে পুনরায় বর্ণনা করছি I 

হযরত ইশাইয়ার দ্বারা আসন্ন
দাস সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী I 

১৩ দেখ, আমার দাস কৃতকার্য্য হইবেন; তিনি উচ্চ ও উন্নত ও মহামহিম হইবেন।

১৪ মনুষ্য অপেক্ষা তাঁহার আকৃতি, মানব-সন্তানগণ অপেক্ষা তাঁহার রূপ বিকারপ্রাপ্ত বলিয়া যেমন অনেকে তাঁহার বিষয়ে হতবুদ্ধি হইত,

১৫ তেমনি তিনি অনেক জাতিকে চকিত করিবেন, তাঁহার সম্মুখে রাজারা মুখ বদ্ধ করিবে; কেননা তাহাদের কাছে যাহা বলা হয় নাই, তাহারা তাহা দেখিতে পাইবে; তাহারা যাহা শুনে নাই, তাহা বুঝিতে পারিবে।

আমরা জানি যে এই দাস একজন মানব পুরুষ হবে কারণ যিশাইয় তাকে পুংলিঙ্গ ‘সে’, ‘তাকে’, ‘তার’ বলে উল্লেখ করেছেন I হারুণ (আঃ) যখন ইস্রায়েলীয়দের জন্য বলি দিতেন তখন তিনি লোকেদের উপরে রক্ত ছিটিয়ে দিতেন – এবং তখন তাদের পাপ ঢেকে দেওয়া হয় এবং তাদের বিরুদ্ধে ধরা পড়ে না। I যখন এটি বলে যে দাসটি  ‘ছিটিয়ে’ দেবে তখন নবী ইশাইয়া বোঝান যে সেই একই উপায়ে এই দাস লোকেদের উপরে তাদের পাপ ছিটিয়ে দেবে যেমন হারুণ (আঃ) তার বলি দেওয়ার সময়ে ইসরায়েলীয়দের জন্য করেছিলেন I

যিশাইয় ৫২:১৩-১৫

তবেদাসটি ‘অনেক জাতির’ উপরে ছেটাবে I অতএব দাস কেবলমাত্র ইহূদিদের জন্য আসছে না I এটি আমাদের ইব্রাহিমকে (আঃ) দেওয়া প্রতিশ্রুতি দেওয়ার কথা মনে করিয়ে দেয় যখন আল্লাহ বললেন (চিহ্ন ১ এবং চিহ্ন ৩) যে ‘সমস্ত জাতি সমূহ’ তার বংশধরদের মাধ্যমে আশির্বাদিত হবে I তবে এই ছিটিয়ে দেওয়ার দ্বারা দাসটির ‘চেহারা’ এবং ‘রূপ’ ‘বিকৃত’ এবং ‘ক্ষতিগ্রস্ত’ হবে I যদিও এটি স্পষ্ট নয় এইরকম বিকৃত হওয়ার জন্য দাসটি কি করবে, একদিন জাতি সমূহ ‘বুঝতে পারবে’ I

1আমাদের দেওয়া সংবাদ কে বিশ্বাস করেছে?

সদাপ্রভুর শক্তি কার কাছেই বা প্রকাশিত হয়েছে?

2তিনি তাঁর সামনে কোমল চারার মতো,

শুকনো মাটিতে উৎপন্ন মূলের মতো বেড়ে উঠলেন।

আমাদের আকৃষ্ট করার মতো তাঁর কোনো সৌন্দর্য বা রূপ ছিল না,

আমরা কামনা করতে পারি, তাঁর চেহারায় এমন কিছুই ছিল না।

3তিনি অবজ্ঞাত, মানুষদের কাছে অগ্রাহ্য হলেন,

তিনি দুঃখভোগকারী মানুষ ও কষ্টভোগকারীরূপে পরিচিত হলেন।

মানুষ যা দেখে তাদের মুখ লুকায়,

তার ন্যায় তিনি অবজ্ঞাত হলেন, আর আমরা তাঁর মর্যাদা তাঁকে দিইনি।

যিশাইয় ৫৩:১-৩

কোনো কারণের জন্য, যদিও দাস সমস্ত জাতিগনের উপরে ছেটাবে, এছাড়াও সে  ‘দুর্ভোগ’ এবং ‘বেদনার সাথে পরিচিত’ পূর্ণ হয়ে ‘তুচ্ছ্য’ এবং ‘প্রত্যাখ্যাত’ হবে I 

4সত্যিই তিনি আমাদের দুর্বলতা সকল তুলে নিয়েছেন

এবং আমাদের সকল দুঃখ বহন করেছেন,

তবুও, আমরা মনে করলাম, ঈশ্বর তাঁকে শাস্তি দিয়েছেন,

তিনি আহত ও নিপীড়িত হয়েছেন।

5কিন্তু তিনি আমাদের অপরাধের জন্য বিদ্ধ,

আমাদের অধর্ম সকলের জন্য চূর্ণ হয়েছেন;

আমাদের শান্তিলাভের জন্য তাঁকে শাস্তি ভোগ করতে হল,

আর তাঁর ক্ষতসকলের দ্বারা আমরা আরোগ্য লাভ করলাম।

যিশাইয়৫৩:৪-৫

6আমরা সবাই মেষদের মতো বিপথগামী হয়েছিলাম,

প্রত্যেকেই নিজের নিজের পথে চলে গিয়েছিলাম;

আর সদাপ্রভু আমাদের সকলের অপরাধ

তাঁর উপরে অর্পণ করেছেন।

যিশাইয়৫৩:৬

আমাদের তৃষ্ণার চিহ্নর মধ্যে আমরা দেখলাম, আমাদের তৃষ্ণা পরিতৃপ্ত করতে আমরা আল্লাহর দিকে ফেরার পরিবর্তে আমরা কত সহজভাবে আমাদের নিজের ‘ভগ্ন কুয়ো’ তে যাইI আমরা ‘বিপথগামী’ হয়েছি আমাদের প্রত্যেকে ‘আমাদের নিজের পথে ফিরেছি’ I এটাই পাপ (অপরাধ) I

৭ তিনি উপদ্রুত হইলেন, তবু দুঃখভোগ স্বীকার করিলেন, তিনি মুখ খুলিলেন না; মেষশাবক যেমন হত হইবার জন্য নীত হয়, মেষী যেমন লোমচ্ছেদকদের সম্মুখে নীরব হয়, সেইরূপ তিনি মুখ খুলিলেন না।

7তিনি অত্যাচারিত হয়ে কষ্টভোগ স্বীকার করলেন,

তবুও, তিনি তাঁর মুখ খোলেননি;

যেমন ঘাতকের কাছে নিয়ে যাওয়া মেষশাবককে,

ও লোমচ্ছেদকদের কাছে নিয়ে যাওয়া মেষ নীরব থাকে,

তেমনই তিনি তাঁর মুখ খোলেননি।

যিশাইয় ৫৩:৭

৮ তিনি উপদ্রব ও বিচার দ্বারা অপনীত হইলেন; তৎকালীয়দের মধ্যে কে ইহা আলোচনা করিল যে, তিনি জীবিতদের দেশ হইতে উচ্ছিন্ন হইলেন? আমার জাতির অধর্ম্ম প্রযুক্তই তাঁহার উপরে আঘাত পড়িল।

8অত্যাচার ও অন্যায় বিচার করে তাঁকে দূর করা হল।

তাঁর বংশধরদের মধ্যে কে এরকম বিবেচনা করল,

যে তিনি জীবিতদের দেশ থেকে উচ্ছিন্ন হলেন;

কারণ আমার জাতির অধর্ম প্রযুক্তই তিনি যন্ত্রণাপ্রাপ্ত হয়েছিলেন।

যিশাইয় ৫৩:৮

9তাঁকে দুষ্টজনেদের সঙ্গে সমাধি দেওয়া হল,

মৃত্যুতে তিনি ধনী ব্যক্তির সঙ্গী হলেন,

যদিও তিনি কোনও অপকর্ম করেননি,

তাঁর মুখে ছলনার কথাও পাওয়া যায়নি।

যিশাইয়53:9

তার জন্য যদি ‘একটি কবর’ নির্ধারণ করা হত তবে এই দাস অবশ্যই মারা যেত I সে এক ‘দুষ্ট’ লোক রূপে নিন্দিত হয়ে মারা গেল যদিও সে ‘কোনো হিংসা করে নি’ এবং ‘তার মুখে কোনো ‘ছলনা’ ছিল’ না I

10তবুও, তাঁকে চূর্ণ করা সদাপ্রভুরই ইচ্ছা ছিল,

তিনি তাঁকে যন্ত্রণাগ্রস্ত হতে দিলেন,

আর যদিও তাঁর প্রাণ দোষার্থক-নৈবেদ্যরূপে উৎসর্গীকৃত হল,

তিনি তাঁর বংশ দেখবেন এবং দীর্ঘায়ু হবেন,

আর তাঁরই হাতে সদাপ্রভুর ইচ্ছা সফলকাম হবে।

যিশাইয় ৫৩:১০

পুরো নিষ্ঠুর মৃত্যুটি কোনো প্রকারের দুর্ঘটনা বা দুর্ভাগ্য ছিল না I এটি স্পষ্টরূপে ‘তাকে চূর্ণ করার’ ‘সদাপ্রভুর ইচ্ছা’ ছিল I কিন্তু কেন? ঠিক যেমন হারুণের বলি ‘পাপের জন্য উৎসর্গ’ ছিল যাতে করে বলি সমর্পণকারী ব্যক্তি নির্দোষ সাব্যস্ত হতে পারতো, এখানে এই দাসের ‘জীবন’ও ‘পাপের জন্য উৎসর্গ’ I কার পাপের জন্য? ভালভাবে বিবেচনা করা হয় যে ‘অনেক জাতিগণের’ উপরে ‘ছেটানো’ হবে (উপরের থেকে) এটি অবশ্যই ‘অনেক জাতিগণের’ মধ্যে লোকেদের পাপ হবে I   

11তাঁর প্রাণের কষ্টভোগের পরিণামে,

তিনি জীবনের জ্যোতি দেখবেন ও পরিতৃপ্ত হবেন;

আমার ধার্মিক দাস তাঁর সম্পর্কিত জ্ঞানের দ্বারা অনেককে নির্দোষ গণ্য করবেন,

কারণ তিনিই তাদের অপরাধসকল বহন করেছেন।

যিশাইয়৫৩:১২

যদিও দাসের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণীটি ভয়াবহ তবুও এটি লয়কে পরিবর্তন করে এবং অত্যন্ত আশাবাদী এবং এমনকি বিজয়ী হয় I এই ভয়ংকর ‘কষ্ট ভোগের’ পরে (‘জীবিতদের দেশ থেকে বিছিন্ন হয়’ এবং ‘একটি কবর’ নির্ধারিত হয়), এই দাস ‘জীবনের জ্যোতি’ দেখবে I সে জীবনে ফিরে আসবে?! আর এইরকম করার মাধ্যমে এই দাস অনেককে ‘ন্যায়সঙ্গত’ করবে I    

‘ন্যায়সঙ্গত’ করা ‘ধার্মিকতা’ দেওয়ার অনুরূপ I মনে করুন মুসার ব্যবস্থা  থেকে ‘ধার্মিকতা’ পেতে একজনকে সর্বদা সমস্ত আজ্ঞা সমূহকে পালন করতে হতো I তবে হযরত ইব্রাহিমের পক্ষে (চিহ্ন ২) ‘ধার্মিকতা’ ‘জমা করা’ বা দেওয়া হয়েছিল I এটি তাকে শুধুমাত্র তার বিশ্বাসের কারণে দেওয়া হয়েছিল I ঠিক একইভাবে এই দাস ন্যায়সঙ্গত করবে, বা ‘অনেকের’ পক্ষে ধার্মিকতা জমা করবে I ধার্মিকতা কি এমনকিছু নয় যাকে আমরা উভয়ই চাই এবং প্রয়োজনবোধ করি?

12সেই কারণে আমি মহৎ ব্যক্তিদের মধ্যে তাঁকে একটি অংশ দেব,

তিনি শক্তিশালী লোকেদের সঙ্গে লুট বিভাগ করবেন,

কারণ তিনি মৃত্যুর জন্য নিজের প্রাণ ঢেলে দিয়েছেন,

এবং অধর্মীদের সঙ্গে গণিত হয়েছেন।

কারণ তিনি অনেকের পাপ বহন করেছেন

এবং অধর্মীদের জন্য অনুরোধ করে চলেছেন।

যিশাইয়৫৩:১

এই দাস ‘মহানদের’ মধ্যে হবে কেননা সে তার জীবনকে স্বেচ্ছায় ‘মৃত্যুর কাছে’ (‘ঢেলে দিয়েছে’) দিয়েছে I আর সে এমন একজন রূপে মারা গেল যেন একজন ‘অপরাধী’ অর্থাৎ একজন ‘পাপী’ রূপে চিহ্নিত হ’ল I দাস এই কারণে এটি করল যাতে সে ‘অপরাধীদের’ হয়ে ‘মধ্যস্থতা’ করতে পারে I একজন মধ্যস্থতাকারী দুই পক্ষের মধ্যে একজন মধ্যবর্তী হয় I দুই পক্ষ এখানে অবশ্যই ‘অনেক লোকেরা’ এবং ‘সদাপ্রভু’ হবেন I এই ‘দাস’ আমাদের হয়ে স্বয়ং আল্লাহর কাছে মধ্যস্থতা বা অনুনয় করতে যথেষ্টরূপে যোগ্য I কে এই দাস? কিভাবে এই সমস্ত জিনিসগুলো ঘটবে? সে কি বিভিন্ন ‘জাতিগণের’ থেকে ‘অনেকের’ হয়ে স্বয়ং আল্লাহর কাছে ‘মধ্যস্থতা’ করতে পারে এবং করবে? আমরা শেষ ভাববাণীকে দেখে যাবুরকে সমাপ্ত করব এবং তারপরে আমরা ইঞ্জিলকে খুলব I  

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *