Skip to content
Home » ঈসা আল মসীহ সঠিক সময়ে, এক ভিন্ন শত্রুর কাছে, এক চমকপদ উপায়ে – জিহাদ ঘোষণা করেন

ঈসা আল মসীহ সঠিক সময়ে, এক ভিন্ন শত্রুর কাছে, এক চমকপদ উপায়ে – জিহাদ ঘোষণা করেন

  • by

সুরা আত-তাওবাহ (সুরা ৯ – অনুতাপ, ছত্রভঙ্গ) আলোচনার জন্ম দেয় যেহেতু এটি জিহাদ, বা প্রচেষ্টা সম্পর্কে আলোচনা করে I আয়াত শারীরিক সংগ্রামের জন্য পথ নির্দেশ দেয় যারফলে সেখানে বিভিন্ন পন্ডিতদের দ্বারা নানান ব্যাখ্যা আছে I সুরা আত-তাওবাহর থেকে আয়াতের এই আলোচনাটি এখানে রয়েছে: 

সুরা আত-তাওবাহ (সুরা ৯– অনুতাপ, ছত্রভঙ্গ)

যুদ্ধাভিযানে বেরিয়ে পড়, অবস্থা হালকাই হোক আর ভারীই হোক (অস্ত্র কম থাকুক আর বেশি থাকুক) আর আল্লাহর রাস্তায় তোমাদের মাল দিয়ে আর তোমাদের জান দিয়ে জিহাদ কর, এটাই তোমাদের জন্য সর্বোত্তম, তোমরা যদি জানতে! দুনিয়াবী কোন স্বার্থ থাকলে আর যাত্রা সহজ হলে তারা অবশ্যই তোমার সাথে যেত। কিন্তু পথ তাদের কাছে দীর্ঘ ও ভারী মনে হয়েছে। অচিরেই তারা আল্লাহর নামে হলফ করে বলবে, ‘আমরা যদি পারতাম তাহলে অবশ্যই তোমাদের সঙ্গে বের হতাম।’ আসলে তারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধ্বংস করছে, আর আল্লাহ জানেন যে, তারা অবশ্যই মিথ্যেবাদী।

সুরা আত-তাওবাহ ৯:৪১-৪২

সুরা আত-তাওবাহের মধ্যে তিরষ্কারটি আসে কারণ যুদ্ধযাত্রা যদি সহজ হত, তাদেরকে অনুসরণ করা যেত, কিন্তু যারা ‘চেষ্টা করতে’ ইচ্ছুক মুস্কিলের সময়ে অন্তর্নিহিত হয়ে যেত I উত্তরসুরী আয়াত এই উৎসাহ-শুন্য অনুগামীদের অজুহাত এবং আলোচনাগুলোকে লিপিবদ্ধ করে I সুরা আত-তাওবাহ তখন এই অনুস্মারকটি দেয় 

বল, ‘তোমরা আমাদের জন্য যে জিনিসের অপেক্ষা করছ তা দু’টো ভালোর একটি ছাড়া আর কিছুই না (শাহাদাত কিংবা বিজয়) আর আমরা অপেক্ষা করছি এজন্য যে, আল্লাহ নিজেই তোমাদেরকে শাস্তি দেন অথবা আমাদের হাত দিয়ে দেয়ান। কাজেই অপেক্ষায় থাক, আমরা তোমাদের সাথে অপেক্ষায় থাকলাম।’

সুরা আত-তাওবাহ ৯:৫২

আপনি বলুন, তোমরা তো তোমাদের জন্যে দুটি কল্যাণের একটি প্রত্যাশা কর; আর আমরা প্রত্যাশায় আছি তোমাদের জন্যে যে, আল্লাহ তোমাদের আযাব দান করুন নিজের পক্ষ থেকে অথবা আমাদের হস্তে। সুতরাং তোমরা অপেক্ষা কর, আমরাও তোমাদের সাথে অপেক্ষমাণ।

তিরষ্কার আসার সাধারণতঃ দুটি সম্ভাব্য পরিনতি থাকে: মৃত্যু (শহীদত্ব) বা বিজয় I তবে সংগ্রাম যদি এত বৃহৎ হয় উভয় ফলাফল আসে – শহীদত্ব এবং বিজয় উভয়ই I নবী ঈসা আল মসীহকে আঃ তাঁর সুদীর্ঘ যিরূশালেম যাত্রায় এই সংগ্রামের মুখোমুখি হয়েছিলেন – সেখানে তাঁর আগমনের সাথে কয়েকশ বছর আগে যাবুরের ভাববাদীদের দ্বারা প্রদত্ত ভবিষ্যদ্বাণীগুলো পূর্ণ করার জন্য অর্ধগোলাকার চাঁদ বা হেলাল চাঁদের দ্বারা সময় নির্ধারিত হয়েছিল I

যিরূশালেমে প্রবেশ

সুরা আল-ইসরা (সুরা ১৭ – রাত্রি যাত্রা) সুপরিচিত যেহেতু এটি নবী মোহম্মদের সাঃ রাত্রি যাত্রাকে বর্ণনা করে, যেখানে তিনি একটি উড়ন্ত বুরাকের উপরে চড়ে মক্কা থেকে একা এসেছিলেন   

পবিত্র ও মহীয়ান তিনি যিনি তাঁর বান্দাহকে রাতের বেলা ভ্রমণ করিয়েছেন মাসজিদুল হারাম থেকে মাসজিদুল আকসা পর্যন্ত, যার চারপাশকে আমি কল্যাণময় করেছি। তাকে আমার নিদর্শনাবলী দেখানোর জন্য, তিনি সর্বশ্রোতা, সর্বদ্রষ্টা।

সূরা বনী ইসরাঈল ১৭:১

ঈসা আল মসীহ আঃ রাত্রি যাত্রা হিসাবে ঠিক একই স্থানে যাচ্ছিলেন I তবে ঈসা আল মসীহ চিহ্ন সমূহ প্রদর্শন করতে প্রবেশ করেছিলেন I তাই তিনি রাত্রির পরিবর্তে প্রকাশ্য দিনের বেলায় এসেছিলেন, এবং একটি বুরাকের বদলে একটি গাধার উপরে চড়েছিলেন I যদিও আমরা সেটিকে একটি পাখি বুরাকের উপরে আসার মতন চিত্তাকর্ষক নাও ভাবতে পারি, যিরূশালেমের মন্দিরে একটি গাধার উপরে তার আবির্ভাব লোকেদের কাছ একটি স্পষ্ট চিহ্ন ছিল I কিভাবে হ’ল আমরা তার ব্যাখ্যা করি I   

নবী ঈসা আল মসীহ (আঃ) লাসারকে তার জীবনে উত্থাপিত করে তাঁর মিশন প্রকাশ করেছিলেন এবং এখন তিনি যিরূশালেম (আল কুদা) অভিমুখে তার যাত্রা পথে ছিলেন I যে পথে তিনি পৌঁছাতেন তার সম্বন্ধে  কয়েকশত বছর পূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল I ইঞ্জিল ব্যাখ্যা করে: 

12পর্বের জন্য যে বিস্তর লোকের সমাগম ঘটেছিল, পরদিন তারা শুনতে পেল যে, যীশু জেরুশালেমের পথে এগিয়ে চলেছেন। 13তারা খেজুর গাছের ডাল নিয়ে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গেল, আর উচ্চকণ্ঠে বলতে লাগল,

“হোশান্না!”

“প্রভুর নামে যিনি আসছেন, তিনি ধন্য!”

“ধন্য ইস্রায়েলের সেই রাজাধিরাজ!”

14তখন একটি গর্দভশাবক দেখতে পেয়ে যীশু তার উপরে বসলেন, যেমন শাস্ত্রে লেখা আছে,

15“হে সিয়োন-কন্যা, তুমি ভীত হোয়ো না,

দেখো, তোমার রাজাধিরাজ আসছেন,

গর্দভশাবকে চড়ে আসছেন।”

16তাঁর শিষ্যেরা প্রথমে এ সমস্ত বুঝতে পারেননি। যীশু মহিমান্বিত হওয়ার পর তাঁরা উপলব্ধি করেছিলেন যে, যীশুর সম্পর্কে শাস্ত্রে উল্লিখিত ঘটনা অনুসারেই তাঁরা তাঁর প্রতি এরূপ আচরণ করেছেন।

17যীশু লাসারকে সমাধি থেকে ডেকে মৃত্যু থেকে উত্থাপিত করার সময় যে সকল লোক তাঁর সঙ্গে ছিল, তারা এসব কথা প্রচার করে চলেছিল। 18বহু মানুষ যীশুর করা এই চিহ্নকাজের কথা শুনে তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে গেল। 19তাই ফরিশীরা পরস্পর বলাবলি করল, “দেখো, আমরা কিছুই করতে পারছি না। চেয়ে দেখো, সমস্ত জগৎ কেমন তাঁর পিছনে ছুটে চলেছে!”

যোহন 12

ঈসা আল মসীহর প্রবেশ – দাউদ অনুসারে

দাউদ (আঃ) এর থেকে শুরু করে, প্রাচীন ইহূদি রাজারা বার্ষিকভাবে তাদের রাজকীয় ঘোড়ায় চড়তেন এবং যিরূশালেমের মধ্যে একটি মিছিলে  নেতৃত্ব দিতেন I ঈসা আল মসীহ তালপাতার রবিবার বলে পরিচিত দিনটিতে একটি গাধার উপরে চড়ে এই ঐতিহ্যটিকে পুনরায় কার্যকর করেছিলেন I লোকেরা ঈসা আল মসীহর জন্য যাবুরের থেকে সেই একই গীত গেয়েছিল যেমনটি তারা দাউদের জন্য গেয়েছিল: 

25হে সদাপ্রভু, আমাদের রক্ষা করো! হে সদাপ্রভু, আমাদের সফলতা দাও। 26ধন্য সেই ব্যক্তি যিনি সদাপ্রভুর নামে আসেন। সদাপ্রভুর গৃহ থেকে আমরা তোমাদের আশীর্বাদ করি। 27সদাপ্রভুই ঈশ্বর, এবং তিনি তাঁর জ্যোতি আমাদের উপর দিয়েছেন। বলির পশু নাও, আর দড়ি দিয়ে তা বেদির উপর বেঁধে রাখো।

গীত 118

লোকেরা রাজাদের জন্য লেখা এই প্রাচীন গীত গেয়েছিলেন কারণ তারা জানত ঈসা লাসারকে উত্থাপিত করেছিলেন এবং তাই তারা যিরূশালেমে তাঁর আগমনে উত্তেজিত হয়েছিল I যে কথাটি তারা চীৎকার করে বলেছিল, ‘হোশান্না’ মানে ‘রক্ষা কর’ – বহু পূর্বে ঠিক তেমনটি গীত সংহিতা ১১৮:২৫ লিখেছিল I তিনি তাদেরকে কিসের থেকে ‘রক্ষা করতে’ যাচ্ছিলেন – (নবী সখরিয় আমাদের বলেন:    

সখরিয় দ্বারা প্রবেশ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল

যদিও ঈসা আল মাসিহ শত শত বছর আগে পূর্বের রাজারা যা করেছিলেন তা পুনঃপ্রণয়ন করেছিলেন, তিনি তা ভিন্নভাবে করেছিলেন।  নবী জাকারিয়া (আঃ) যিনি আসন্ন মাসীহের নামের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তিনিও ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে মসীহ একটি গাধার পিঠে চড়ে জেরুজালেমে প্রবেশ করবেন।  টাইমলাইন ইতিহাসে নবী জাকারিয়াকে দেখায়, অন্যান্য নবীদের সাথে যারা পাম রবিবারের ঘটনাগুলির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন।

যে নবীরা তালপাতার রবিবারে ঈসার যিরূশালেমে প্রবেশ সম্বন্ধে আগে থেকেই দেখেছিলেন

ওই ভবিষ্যদ্বাণীর অংশকে যোহনের সুসমাচারে উদ্ধৃত করা হয়েছিল (নীল পাঠ্যক্রমের মধ্যে)I সখরিয়র সম্পূর্ণ ভবিষ্যদ্বাণীটি এখানে রয়েছে:

9হে সিয়োন-কন্যা, খুব আনন্দ করো! হে জেরুশালেম-কন্যা, জয়ধ্বনি করো! দেখো, তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন, তিনি ধর্মময় ও বিজয়ী, নম্র ও গাধার পিঠে চড়ে আসছেন, গাধির বাচ্চার উপরে চড়ে আসছেন। 10আমি ইফ্রয়িমের কাছ থেকে রথ নিয়ে নেব ও জেরুশালেমের যুদ্ধের ঘোড়া, এবং যুদ্ধের ধনুক ভেঙে ফেলা হবে। তিনি জাতিগণের মধ্যে শান্তি ঘোষণা করবেন। তাঁর শাসন এক সমুদ্র থেকে অপর সমুদ্র পর্যন্ত প্রসারিত হবে এবং নদী থেকে পৃথিবীর শেষ সীমা পর্যন্ত হবে। 11তোমার ক্ষেত্রে, তোমার সঙ্গে স্থাপিত আমার নিয়মের রক্তের কারণে, আমি তোমার বন্দিদের নির্জলা গর্ত থেকে মুক্ত করে দেব।

সখরিয় 9

যে রাজার সম্বন্ধে সখরিয় ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন তিনি অন্য রাজাদের থেকে ভিন্ন হবেন I তিনি এমন রাজা হবেন না যিনি ‘রথ’, যুদ্ধের ঘোড়া’, যুদ্ধের ধনুক’ ব্যবহার করবেন I এই রাজা আসলে এই সমস্ত অস্ত্রগুলো অপসারণ করবেন এবং পরিবর্তে ‘জাতি সমূহের কাছে শান্তি ঘোষণা করবেন’ I যাইহোক, এই রাজাকে তখনও এক শত্রুকে পরাজিত করতে সংগ্রাম করতে হবে I তাকে সবচেয়ে বড় যিহাদের মধ্যে সংগ্রাম করতে হবে I

এটি পরিষ্কার হয় যখন আমরা এই রাজার সম্মুখীন হওয়া শত্রুটিকে চিনতে পারি I সাধারণত, একজন রাজার শত্রু আর একজন রাজা হয় একটি বিরোধী জাতি, বা আর এক সৈন্য বাহিনী, বা তার লোকদের বিদ্রোহ, বা সেই লোকেদের থেকে যারা তার বিরুদ্ধে হয় I কিন্তু নবী সখরিয় লিখলেন যে একটি ‘গাধার’ উপরে প্রকাশিত রাজা এবং শান্তি ঘোষণাকারী ‘জলবিহীন খাই
থেকে বন্দিদের মুক্ত করতে যাচ্ছেন
’ (আয়াত ১১) I ‘খাই’ হ’ল হিব্রু পদ্ধতিতে  কবর বা মৃত্যুর সম্বন্ধে বলা I এই রাজা তাদেরকে মুক্ত করতে যাচ্ছেন না যারা স্বৈরাচারী, দুর্নীতিগ্রস্ত রাজনীতিবিদ এবং মনুষ্য-নির্মিত কারাগারের মধ্যে আটকে পড়া বন্দী, বরং তাদেরকে যারা মৃত্যুর বন্দী ছিলI [১]

যখন আমরা মৃত্যুর থেকে লোকেদের রক্ষার কথা বলি তখন আমরা কাউকে বাঁচানোর কথা বলি যাতে করে মৃত্যু বন্ধ হয় I উদাহরণস্বরূপ, আমরা কাউকে উদ্ধার করতে পারি, যে ডুবে যাচ্ছে বা কিছু ওষুধ দিই যা কারোর জীবনকে রক্ষা করে I এই ‘রক্ষা’ কেবল মৃত্যুকে স্থগিত করে যে ব্যক্তিকে রক্ষা করা হয় সে পরে মারা যাবে I কিন্তু সখরিয় ‘মৃত্যুর থেকে’ লোকেদের রক্ষা করার সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করছিলেন না বরং তাদের উদ্ধারের সম্বন্ধে বলছিলেন যারা মৃত্যুর দ্বারা বন্দী – যারা ইতিমধ্যেই মারা গেছে I সখরিয়র দ্বারা ভবিষ্যদ্বাণী করা একটি গাধার উপরে আসন্ন রাজার দ্বারা মৃত্যুর সম্মুখীন হয়ে এটিকে স্বয়ং পরাজিত করা – এর বন্দীদের মুক্ত করার কথা ছিল I এর জন্য প্রচুর প্রচেষ্টার প্রয়োজন হত – একটি জিহাদ যাকে আগে কখনও দেখা যায়নি I পন্ডিতরা মাঝে মাঝে আমাদের আন্তরিক সংগ্রামের ‘বৃহত্তর জিহাদ’ এবং বাইরের সংগ্রামের ‘ক্ষুদ্রতর জিহাদের’ সম্বন্ধ উল্লেখ করেন I খাইয়ের সম্মুখীন হয়ে এই রাজা এই সংগ্রাম বা যীহাদ উভয়ের মধ্য দিয়ে যাবেন I   

মৃত্যুর সঙ্গে এই সংগ্রাম বা জিহাদের মধ্যে কি অস্ত্র রাজা ব্যবহার করতে যাচ্ছেন? নবী সখরিয় লিখলেন যে এই রাজা খাইয়ের মধ্যে তার এই সংগ্রামে কেবলমাত্র “তোমার সাথে আমার নিয়মের রক্ত” নিয়ে যাবেন I তাঁর নিজের রক্ত অস্ত্র হবে যার সাহায্যে তিনি মৃত্যুর সম্মুখীন হবেন I  

গাধার উপরে যিরূশালেমে প্রবেশ করে ঈসা নিজেকে এই রাজা বলে ঘোষণা করলেন – মসীহI

কেন ঈসা আল মাসীহ (আঃ) দুঃখে কাঁদলেন?

তালপাতার রবিবারের দিনে যখন ঈসা আল মসীহ যিরূশালেমে প্রবেশ করলেন (এছাড়াও বিজয়ী প্রবেশ বলে পরিচিত) ধর্মীয় নেতারা তার বিরোধিতা  করলেন I লুকের সুসমাচার তাদের বিরোধিতায় ঈসা আল মসীহর প্রতিক্রিয়া সম্বন্ধে বর্ণনা করে I 

41জেরুশালেমের কাছাকাছি এসে নগরটিকে দেখে তিনি কেঁদে ফেললেন, আর বললেন, 42“তুমি, শুধুমাত্র তুমি যদি জানতে, আজকের দিনে শান্তির জন্য তোমার কী প্রয়োজন! কিন্তু এখন তা তোমার দৃষ্টির অগোচর হয়ে রইল। 43তোমার উপরে এমন একদিন ঘনিয়ে আসবে, যেদিন তোমার শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে অবরোধের প্রাচীর তুলবে, তোমাকে বেষ্টন করে সবদিক থেকে তোমাকে ঘিরে ধরবে। 44তারা তোমাকে ও তোমার চার দেওয়ালের মধ্যবর্তী সন্তানদের ভূমিসাৎ করবে। তারা একটি পাথরের উপর অন্য পাথর রাখবে না। কারণ তোমার কাছে ঈশ্বরের আগমনকালকে তুমি চিনতে পারোনি।”

লূক 19

ঈসা আল মসীহ নির্দিষ্টভাবে বললেন যে নেতাদের ‘এই দিনে’ ঈশ্বরের আসার সময়কে’ জানা উচিত ছিল I তিনি কি বোঝালেন? তারা কি মিস করল?

নবীরা ‘সেই দিনটি’ সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন  

কয়েক শতাব্দী পূর্বে নবী দানিয়েল (আঃ) ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে যিরূশালেমের পুনর্নির্মাণের আদেশ জারি করার ৪৮৩ বছর মসীহ আসবেন I আমরা দানিয়েলের প্রত্যাশিত বছরকে ৩৩ খ্রীষ্টাব্দ বলে গণনা করেছি – যে বছরে ঈসা আল মসীহ একটি গাধার ওপরে যিরূশালেমে প্রবেশ করেছিলেন I এটি ঘটার কয়েকশত বছর পূর্বে, প্রবেশের বৎসরের ভবিষ্যদ্বাণী করা, আশ্চর্যজনক I তবে সময়টিকে আজকে গণনা করা যেতে পারে I (আমাদের এটি তৈরী করার পরে দয়া করে প্রথমে এখানে পর্যালোচনা করুন) I        

মসীহর প্রকাশনের আগে নবী দানিয়েল ৩৬০-দিনের বছর ধরে ৪৮৩ বছরের ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন I তদনুসারে, দিনগুলোর সংখ্যা হ’ল:

৪৮৩ বছর * ৩৬০ দিন/বছর = ১৭৩৮৮০ দিন সমূহ

৩৬৫.২৪২২ দিন/বছর নিয়ে আধুনিক আন্তর্জাতিক ক্যালেন্ডার অনুসারে এটি ২৫ অতিরিক্ত দিনগুলোর সাথে ৪৭৬ বছর হয় (১৭৩ ৮৮০/৩৬৫.২৪২২১৯৮৭৯ = ৪৭৬ বাকি ২৫)

কখন যিরূশালেম পুনস্থাপনের আদেশ জারি করা হয়েছিল যা এই উল্টো গণনাকে  শুরু করেছিল? এটিকে দেওয়া হয়েছিল:

1রাজা অর্তক্ষস্তের রাজত্বের কুড়ি বছরের নীসন মাসে, যখন তাঁর কাছে দ্রাক্ষারস আনা হল, আমি সেই দ্রাক্ষারস নিয়ে রাজাকে দিলাম। এর আগে আমি তাঁর সামনে কখনও মলিন মুখে থাকিনি,

নহিমিয় 2

নীসনের কোন্ দিন (ইহূদি ক্যালেন্ডারের মধ্যে একটি মাস) দেওয়া হয়নি, তবে নীসনের ১ তারিখ যেহেতু নতুন বছর শুরু করত, সম্ভবতঃ উৎসবের মধ্যে নহিমিয়ের সাথে রাজার কথা বলার কারণ দেয় I মাসগুলো চান্দ্র হওয়ায় এছাড়াও নীসনের ১ তারিখ এক আমাবস্যাকে চিহ্নিত করত (ইসলামিক ক্যালেন্ডারের মতন) I আমাবস্যা ঐতিহ্যবাহী মুসলিম উপায়ে নির্ধারিত হত – সাথে স্বীকৃত মানুষরা চাঁদের নতুন অর্ধচন্দ্রাকার (হেলাল) পর্যবেক্ষণ করত I আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের সাহায্যে আমরা জানি কখন সেই আমাবস্যা চিহ্নিত ৪৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের নীসনের ১ তারিখকে প্রথমে দেখা গিয়েছিল I জানা মুশকিল পর্যবেক্ষকদের দ্বারা নীসনকে কি সেই দিন প্রথমে দেখা গিয়েছিল নাকি মিস হয়ে গিয়েছিল আর নীসনের আরম্ভ হতে ১ দিন দেরী হয়ে গিয়েছিল I জোতির্বিদ্যার গণনাগুলো পারস্য সম্রাট অর্তক্ষস্তরের বিংশতিতম বছরের নীসন ১ তারিখের অর্ধগোলাকার চন্দ্রকে আধুনিক ক্যালেন্ডারের ৪৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের ৪ মার্চ, রাত্রি ১০ টায় স্থাপন করে I[২] অর্ধগোলাকার চন্দ্রের আবির্ভাব যদি লক্ষ্যচ্যুত হয়ে থাকে, তবে নীসন ১ তারিখ পরবর্তী দিন ৫ মার্চ, ৪৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ হত I যেভাবেই হোক যিরূশালেম পুনস্থাপনের পার্সিয়ান হুকুমটি মার্চ ৪ বা ৫, তারিখে ৪৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে জারি করা হয়ে থাকবে I 

এই তারিখে দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী করা সময়ের ৪৭৬ বছর যোগ করলে আমাদের কাছে নিয়ে আসে মার্চ ৪ বা ৫, ৩৩ খ্রীষ্টাব্দ (সেখানে কোনো শুন্য বৎসর নেই, আধুনিক ক্যালেন্ডারটি ১ তারিখ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে ১ তারিখ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত এক বছর চললে পাটিগণিত হয় -৪৪৪ + ৪৭৬ + ১ = ৩৩) I ৩৩ খ্রীষ্টাব্দের ৩ বা ৫ মার্চের সঙ্গে দানিয়েলের ভবিষ্যদ্বাণী করা সময়ের বাকি ২৫ দিন যোগ করলে আমাদেরকে ৩৩ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ ২৯ বা ৩০ দেয়, যাকে নিচের কালপঞ্জির মধ্যে চিত্রিত করা হয়েছে I ৩৩ খ্রীষ্টাব্দের মার্চ ২৯ ছিল রবিবার –  তালপাতার রবিবার  – সেই বিশেষ দিনে মসীহ বলে ঘোষণা করে ঈসা আঃ গাধার উপরে যিরূশালেমে প্রবেশ করেছিলেন I আমরা এটি জানি কারণ আগামী শুক্রবার ছিল নিস্তারপর্ব – নিস্তারপর্ব সর্বদা নীসন ১৪ তারিখ হত I ৩৩ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে নীসনের ১৪ তারিখ এপ্রিল ৩ ছিলI ৩ এপ্রিল শুক্রবারের ৫ দিন আগে হওয়ায় তালপাতার রবিবার মার্চ ২৯ ছিল I        

২৯ মার্চ ৩৩ খ্রীষ্টাব্দে গাধার উপরে উপবিষ্ট হয়ে যিরূশালেমে প্রবেশ করে, নবী ঈসা আল মসীহ আঃ নবী সখরিয় এবং নবী দানিয়েলের উভয় ভবিষ্যদ্বাণীকে পূর্ণ করলেন – আজ পর্যন্তI এটিকে নিচের কালপঞ্জিতে চিত্রিত করা হয়েছে I    

দানিয়েল মসীহর প্রকাশিত হওয়ার ১৭৩ ৮৮০ দিন পূর্বে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন: নহিমিয় সময়টি শুরু করেছিলেন I এটি ২৯ মার্চ ৩৩ খ্রীষ্টাব্দে শেষ হয়েছিল যখন ঈসা তাল পাতার রবিবারের দিনে যিরূশালেমে প্রবেশ করেছিলেন I

এই অনেক ভবিষ্যদ্বাণীগুলো একদিনে পূর্ণ হওয়াতে স্পষ্ট চিহ্নগুলো দেখায় যাকে মসীহ সম্পর্কে আল্লাহ তার পরিকল্পনা প্রকাশ করতে ব্যবহার করেছিলেন I তবে পরে সেই একই ঈসা আল মসীহ আঃ নবী মুসা আঃ আর একটি ভবিষ্যদ্বাণী পূর্ণ করেছিলেন I এটি করার সাথে তিনি এমন ঘটনাগুলোকে গতিশীল করলেন যা তার জিহাদকে ‘খাইয়ের’ দিকে নিয়ে যেত – তার শত্রু মৃত্যুর দিকে I আমরা পরে এটিকে দেখব I  


 [১] কিভাবে ‘খাই’ নবীদের জন্য মৃত্যুকে বোঝায় তার কয়েকটি উদাহরণ:

15কিন্তু তোমাকে নামানো হয়েছে কবরের মধ্যে, পাতালের গভীরতম তলে।

যিশাইয় 14

18কারণ কবর তোমার প্রশংসা করতে পারে না, মৃত্যু করতে পারে না তোমার স্তব; যারা সেই গহ্বরে নেমে যায়, তারা তোমার বিশ্বস্ততার প্রত্যাশা করতে পারে না।

যিশাইয় 38

22তারা খাতের কাছে এগিয়ে যায়, ও তাদের জীবন মৃত্যুদূতদের নিকটবর্তী হয়।

ইয়োব 33

8তারা তোমাকে কুয়োতে নামাবে, এবং তুমি সমুদ্রের গভীরে এক ভয়ংকর মৃত্যু ভোগ করবে।

যিহিষ্কেল 28

23গর্তের গভীরে তাদের কবর দেওয়া হয়েছে এবং তার সৈন্যদল তার কবরের চারপাশে শুয়ে আছে। জীবিতদের দেশে যারা ভয় ছড়িয়েছিল তাদের সকলকে যুদ্ধে মেরে ফেলা হয়েছে।

যিহিষ্কেল 32

3তুমি, হে সদাপ্রভু, আমাকে পাতালের গর্ভ থেকে উত্তোলন করেছ; তুমি আমাকে বাঁচিয়ে রেখেছ যেন মৃত্যুর গর্তে পড়ে না যাই।

গীত 30

 [২] প্রাচীন এবং আধুনিক ক্যালেন্ডারের রূপান্তরগুলোর জন্য (উদাহরণস্বরূপ নীসনের ১ তারিখ = মার্চ ৪, ৪৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) এবং প্রাচীন অমাবস্যার গণনার জন্য আমি ডা. হ্যারল্ড ডবলু. হোএনারের রচনা ক্রনোলজিক্যাল আসপেক্টস অফ দি লাইফ অফ ক্রাইস্ট. ১৯৭৭. পৃষ্ঠা ১৭৭ কে ব্যবহার করেছি I

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *