পুরান, রামায়ণ, এবং মহাভারত কালের শেষ পর্যন্ত জীবিত থাকার জন্য খ্যাতিসম্পন্ন আট চিরঞ্জীবি সমূহের বিবরণ দেয় I এই মিথগুলি যদি ঐতিহাসিক হয় তবে এই চিরঞ্জীবিগুলি আজিও পৃথিবীতে বেঁচে থাকত, এইরকম করতে আরও কয়েক হাজার বছর ধরে চলতে থাকত I
এই চিরঞ্জীবিগুলি হ’ল:
- বেদ ব্যাস, যিনি মহাভারত রচনা করেছিলেন, যিনি ত্রেতা যুগের শেষ দিকে জন্মগ্রহণ করেছিলেন I
- হনুমান, একজন ব্রহ্মচারী, রামের সেবা করেছিল যেমন রামায়ণে ব্যাখ্যা করা হয়েছে I
- পরশুরাম, পুরোহিত যোদ্ধা এবং বিষ্ণুর ষষ্ট অবতার, সমস্ত যুদ্ধে নিপুণ I
- বিভীষণ, রাবণের ভাই, যিনি রামের কাছে সমর্পণ করেন I রাবণকে মারার পরে রাম বিভীষণকে লঙ্কার রাজা করেছিলেন I মহাযুগের শেষ পর্যন্ত বেঁচে থাকার জন্য তার দীর্ঘায়ুর বর ছিল I
- অশ্বথামা, এবং কৃপা কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের একমাত্র বেঁচে থাকা লোক ছিল I অশ্বথামা অবৈধভাবে কয়েকজন লোকদের হত্যা করেছিল তাই কৃষ্ণ তাকে শ্রাপ দিয়েছিলেন যে সে দুরারোগ্য ক্ষত নিয়ে পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরে বেড়াবে I
- মহাবলী (রাজা বালী চক্রবর্তী) কেরলের আশেপাশে কোনো জায়গায় একজন দৈত্য-রাজা ছিল I সে এতটাই ক্ষমতাশালী ছিল যে দেবতারা তার থেকে ভয় পেত I তাই বামন, বিষ্ণুর খর্বাকৃত অবতার, তার সাথে ছলনা করে তাকে পাতালে পাঠিয়ে দিল I
- কৃপা, মহাভারতের রাজপুত্রদের গুরু, কুরুক্ষেত্র যুদ্ধের কৌরবদের তিনজন জীবিতদের মধ্যে একজন ছিলেন, এই ধরণের আশ্চর্যজনক গুরু হওয়াতে কৃষ্ণ, তাকে অমরত্ব প্রদান করলেন এবং তিনি আজও জীবিত আছেন I
- মার্কন্ডেয় মহাভারতে উল্লিখিত একজন প্রাচীন ঋষি, যাকে তাঁর প্রতি নিষ্ঠার কারণে শিব তাকে অমরত্ব দান করলেন I
চিরঞ্জীবিগুলি কি ঐতিহাসিক?
যদিও অনুপ্রেরণা হিসাবে শ্রদ্ধাশীল, চিরঞ্জীবির ঐতিহাসিক স্বীকৃতি অসমর্থিত I কোনো ঐতিহাসিকের কাছে তাদের সঙ্গে চাক্ষুষ সাক্ষাতকারের কথা লিপিবদ্ধ নেই I পুরাণগুলির মধ্যে উল্লিখিত অনেক জায়গাগুলিকে ভৌগলিকভাবে স্থিত করা যেতে পারে না I লিখিত স্রোতগুলির পক্ষে, যেমন মহাভারত, রামায়ণ এবং পুরাণগুলি, ঐতহাসিকভাবে যাচাই করা কঠিন I পন্ডিতরা মূল্যায়ন করেন, উদাহরণস্বরূপ, যে খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পঞ্চম শতাব্দীতে রামায়ণ লেখা হয়েছিল I কিন্তু পরিদৃশ্যটি\ ৮৭০০০০ পূর্বে ত্রেতাযুগে মেলে, যা এই ঘটনাগুলির জন্য কদাচিৎ কোনো চাক্ষুষ সুত্র প্রস্তুত করে I অনুরূপভাবে খ্রীষ্টপূর্বাব্দ ৩ এবং খ্রীষ্টাব্দ ৩ এর মহামাঝি কোনো সময়ে মহাভারত রচনা করা হয়েছিল, অথচ ঘটনাগুলির বিবরণ সম্ভবত ৮ থেকে ৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের মধ্যে পাওয়া যায় I রচয়িতাগণ তাদের দ্বারা বর্ণিত ঘটনাগুলি প্রতক্ষ্য করেন নি যেহেতু সেগুলি কয়েকশত বছর পূর্বে ঘটেছিল I
যীশুর পুনরুত্থান ঐতিহাসিকভাবে পরীক্ষিত
যীশুর পুনরুত্থান এবং নতুন জীবন সম্বন্ধে বাইবেলের দাবি কি বলে? যীশুর পুনরুত্থান কি চিরঞ্জীবির মতন পৌরাণিক, বা এটি কি ঐতিহাসিক?
যেহেতু এটি আমাদেরকে প্রত্যক্ষভাবে প্রভাবিত করে সেইহেতু এটি পরীক্ষা করার যোগ্য I আমরা সবাই মারা যাব, এতে কিছু এসে যায় না কত টাকা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং অন্যান্য লক্ষ্যগুলিকে আমরা অর্জন করি I যদি যীশু মৃত্যুকে পরাজিত করে থাকেন তাহলে এটি আমাদের নিজের নিকটস্থ মৃত্যুর সম্মুখে আশা জাগায় I এখানে আমরা কতিপয় ঐতিহাসিক তথ্যকে দেখব যা তাঁর পুনরুত্থানকে সমর্থন করে I
যীশুর ঐতিহাসিক পৃষ্ঠভূমি
যীশুর যে অস্তিত্ব ছিল এবং ইতিহাসের গতিকে পরিবর্তন করে এক প্রকাশ্য মৃত্যু বরণ করেছিলেন তা নিশ্চিত I ধর্মনিরপেক্ষ ইতিহাস যীশু এবং তাঁর সময়ের জগতের উপরে তাঁর প্রভাব সম্বন্ধে বিভিন্ন উল্লেখ সমূহকে লিপিবদ্ধ করে I দুটির প্রতি দেখা যাক I
রোমীয় রাজ্যপাল তথা ঐতিহাসিক ট্যাসিটাস এক আকর্ষনীয় উল্লেখ লিখেছিলেন যখন প্রথম শতাব্দীতে রোমীয় সম্রাট নীরো খ্রীষ্টানদের (৬৫ খ্রীষ্টাব্দে) প্রাণদণ্ড দিয়েছিলেন I ট্যাসিটাস যা লিখেছিলেন তা এখানে রয়েছে:
‘নীরো… অত্যন্ত নিদারূণ অত্যাচারের সাথে ব্যক্তিদের শাস্তি দিতেন, যাদের সাধারণত খ্রীষ্টান বলা হত, যাদেরকে তাদের বিশালত্বর জন্য ঘৃনা করা হত I নামটির প্রতিষ্ঠাতা খ্রিস্তোসকে, তিবিরিয় অঞ্চলের যিহূদিয়ার ক্ষমতা সম্পন্ন প্রতিনিধি পন্তিয়াস পীলাতের দ্বারা মৃত্যু দণ্ড দেওয়া হয়েছিল; তবে এক সময়ের জন্য দমন করা ক্ষতিকারক কুসংস্কার, না কেবল যিহূদিয়ার মধ্য দিয়ে প্রাদুর্ভাব ঘটেছিল, যেখানে অপকর্মের উৎপত্তি হয়েছিল, বরং রোমীয় শহরের মধ্য দিয়েও ছড়িয়ে পড়েছিল’
ট্যাসিটাস I আন্নালস XV. 44. 112 CE
ট্যাসিটাস নিশ্চিত করেন যে যীশু ছিলেন:
- এক ঐতিহাসিক ব্যক্তি;
- পন্তিয়াস পীলাতের দ্বারা প্রাণদণ্ডে দণ্ডিত;
- যিহূদিয়া/যিরূশালেম
- ৬৫ খ্রীষ্টাব্দের মধ্যে, যীশুর প্রতি বিশ্বাস ভূমধ্যসাগর অতিক্রান্ত করে রোম পর্যন্ত এমন শক্তির সাথে ছড়িয়ে পড়েছিল যে রোমের সম্রাট অনুভব করলেন যে তাকে এর বিহিত করতে হবে I
লক্ষ্য করুন যে ট্যাসিটাস এই বিষয়গুলি একটি প্রতিকূল সাক্ষী হিসাবে বলছেন, যেহেতু তিনি বিবেচনা করেন যীশু একটি ‘দুষ্ট কুসংস্কার’ আন্দোলন শুরু করেছিলেন I তিনি এর বিরোধিতা করেন, তবে এর ঐতিহাসিকতা অস্বীকার করেন না I
যোশেফাস
যোশেফাস, এক যিহূদি সামরিক নেতা/ঐতিহাসিক প্রথম শতাব্দীতে লিখতে গিয়ে, যিহূদি ইতিহাস তাদের শুরু থেকে তার সময় পর্যন্ত সংক্ষিপ্ত করেছিলেন I এইরকম করতে গিয়ে তিনি এই বাক্যগুলির সাহায্যে যীশুর সময় এবং জীবনীকে আবৃত করেছিলেন I
‘এই সময়ে সেখানে একজন এক জ্ঞানী ব্যক্তি ছিলেন … যীশু …ভাল এবং … ধার্মিক I এবং যিহূদি ও অন্যান্য জাতিদের মধ্য থেকে অনেক লোক তাঁর শিষ্য হয়েছিল I পীলাত তাকে ক্রুশবিদ্ধ হয়ে মারা যেতে দণ্ডিত করেছিলেন I এবং যারা তাঁর শিষ্য হলেন তারা তাঁর শিষ্যত্ব পরিত্যাগ করে নি I তারা জানিয়েছিল যে তিনি তার ক্রুশবিদ্ধ হওয়ার তিনদিন পরে আবির্ভূত হয়েছিলেন এবং তিনি জীবিত ছিলেন’
যোশেফাস ৯০ খ্রীষ্টাব্দ আন্টিকুইটিস xviii. ৩৩
যোশেফাস নিশ্চিত করেন যে:
- যীশু ছিলেন,
- তিনি একজন ধার্মিক শিক্ষক ছিলেন,
- তাঁর শিষ্যগণ মৃত্যু থেকে যীশুর পুনরুত্থানকে প্রকাশ্যে ঘোষণা করেছিলেন I
এই ঐতিহাসিক ঝলকগুলি দেখায় যে খ্রীষ্টের মৃত্যু এক সু-পরিচিত ঘটনা এবং তাঁর শিষ্যরা তাঁর পুনরুত্থানের বিষয়টিকে গ্রীকো-রোমীয় জগতের উপরে জোর দিয়েছিল I
বাইবেল থেকে ঐতিহাসিক পৃষ্ঠভূমি
লুক, একজন ঐতিহাসিক, আরও ব্যাখ্যা করেন কিভাবে এই বিশ্বাসটি প্রাচীন জগতে বিকশিত হয়েছিল I বাইবেলের প্রেরিতের বইয়ের থেকে এখানে তার অংশ দেওয়া হয়েছে:
1পিতর ও যোহন যখন জনসাধারণের সঙ্গে কথা বলছিলেন, সেই সময় যাজকেরা, মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও সদ্দূকীরা তাদের কাছে এল। 2তারা অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিল, কারণ প্রেরিতশিষ্যেরা লোকদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং যীশুর মাধ্যমেই মৃতলোক থেকে পুনরুত্থানের কথা প্রচার করছিলেন। 3তারা পিতর ও যোহনকে গ্রেপ্তার করল, আর সন্ধ্যা হয়েছিল বলে তারা পরদিন পর্যন্ত তাঁদের কারাগার বন্দি করে রাখল। 4কিন্তু যারা বাক্য শুনেছিল, তাদের মধ্যে অনেকে বিশ্বাস করল এবং পুরুষদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়ে হল প্রায় পাঁচ হাজার।
5পরের দিন শাসকেরা, প্রাচীনবর্গ ও শাস্ত্রবিদরা জেরুশালেমে মিলিত হল। 6মহাযাজক হানন সেখানে উপস্থিত ছিলেন, আর ছিলেন কায়াফা, যোহন, আলেকজান্ডার ও মহাযাজকের পরিবারের অন্যান্য ব্যক্তিরাও। 7তাঁরা পিতর ও যোহনকে তাঁদের কাছে তলব করে প্রশ্ন করতে শুরু করলেন, “কোন শক্তিতে বা কী নামে তোমরা এই কাজ করেছ?”
8তখন পিতর, পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে তাঁদের বললেন, “শাসকেরা ও সমাজের প্রাচীনবর্গ! 9একজন পঙ্গু মানুষের প্রতি করুণা দেখানোর জন্য যদি আজ আমাদের জবাবদিহি করতে বলা হচ্ছে এবং জিজ্ঞেস করা হচ্ছে যে, সে কীভাবে সুস্থ হল, 10তাহলে আপনারা ও ইস্রায়েলের সব মানুষ একথা জেনে নিন: যাঁকে আপনারা ক্রুশার্পিত করেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর যাঁকে মৃতদের মধ্য থেকে উত্থাপিত করেছেন, নাসরতের সেই যীশু খ্রীষ্টের নামে এই ব্যক্তি সুস্থ হয়ে আপনাদের সামনে দাঁড়িয়ে আছে। 11তিনিই
“ ‘সেই পাথর যাঁকে গাঁথকেরা অগ্রাহ্য করেছিলেন, তিনিই হয়ে উঠেছেন কোণের প্রধান পাথর।’ 12আর অন্য কারও কাছে পরিত্রাণ পাওয়া যায় না, কারণ আকাশের নিচে, মানুষের মধ্যে এমন আর কোনো নাম দেওয়া হয়নি, যার দ্বারা আমরা পরিত্রাণ পেতে পারি।” 13তাঁরা যখন পিতর ও যোহনের সাহসিকতা দেখলেন ও উপলব্ধি করলেন যে তাঁরা ছিলেন অশিক্ষিত, সাধারণ মানুষ, তখন তাঁরা বিস্মিত হলেন। তাঁরা বুঝতে পারলেন যে এঁরা যীশুর সঙ্গে ছিলেন। 14কিন্তু যে ব্যক্তি সুস্থ করেছিল, তাকে তাঁদের সঙ্গে সেখানে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে, তাঁদের বলার মতো আর কিছুই ছিল না। 15সেই কারণে তাঁরা তাঁদের মহাসভা থেকে বাইরে যেতে বললেন এবং তারপর একত্রে শলাপরামর্শ করতে লাগলেন। 16তাঁরা বলাবলি করলেন, “এই লোকগুলিকে নিয়ে আমরা কী ব্যবস্থা গ্রহণ করব? জেরুশালেমে বসবাসকারী প্রত্যেক ব্যক্তিই জানে যে, তাঁরা এক নজিরবিহীন অলৌকিক চিহ্নকাজ সম্পন্ন করেছে, আর আমরা তা অস্বীকার করতে পারি না।
প্রেরিত 4
কর্ত্তৃপক্ষ সমূহের থেকে আরও বিরোধিতা
17এরপর মহাযাজক ও তাঁর সমস্ত সহযোগী, যারা সদ্দূকী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন, তাঁরা ঈর্ষায় পূর্ণ হয়ে উঠলেন। 18তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের গ্রেপ্তার করে সরকারি কারাগারে রেখে দিলেন। 19কিন্তু রাত্রিবেলা প্রভুর এক দূত কারাগারের দরজাগুলি খুলে দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এলেন। 20তিনি বললেন, “তোমরা যাও, গিয়ে মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়াও এবং জনসাধারণের কাছে এই নতুন জীবনের পূর্ণ বার্তা প্রকাশ করো।” 21তাঁদের যেমন বলা হয়েছিল, ভোরবেলা তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেন এবং লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন। মহাযাজক ও তাঁর সহযোগীরা যখন উপস্থিত হলেন, তাঁরা ইস্রায়েলীদের প্রাচীনবর্গের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণ জমায়েত বা মহাসভাকে একত্র করলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালেন। 22কিন্তু কারাগারে উপস্থিত হয়ে কর্মচারীরা তাঁদের সেখানে খুঁজে পেল না। তাই তারা ফেরত গিয়ে সংবাদ দিল, 23“আমরা গিয়ে দেখলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে তালাবন্ধ, রক্ষীরাও দরজায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি খুলে ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না।” 24এই সংবাদ শুনে মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও মহাযাজক বিস্ময়বিমূঢ় হলেন। তাঁরা অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন যে, এর পরিণাম কী হতে পারে। 25তখন একজন ব্যক্তি এসে বলল, “দেখুন! যাঁদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছে।” 26এতে রক্ষী-প্রধান তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এলেন। তাঁরা বলপ্রয়োগ করলেন না, কারণ লোকেরা তাঁদের উপর পাথর মারতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন। 27প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এসে, তাঁরা তাঁদের মহাসভার সামনে উপস্থিত করলেন, যেন মহাযাজক তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। 28তিনি বললেন, “আমরা তোমাদের এই নামে শিক্ষা না দেওয়ার জন্য কঠোর আদেশ দিয়েছিলাম, তবুও তোমরা তোমাদের উপদেশে জেরুশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের জন্য আমাদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে দৃঢ়সংকল্প হয়েছ।” 29পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “মানুষের চেয়ে আমরা বরং ঈশ্বরের আদেশই পালন করব! 30আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন—যাঁকে আপনারা একটি গাছের উপরে টাঙিয়ে হত্যা করেছিলেন। 31ঈশ্বর তাঁকে অধিপতি ও উদ্ধারকর্তা করে তাঁর ডানদিকে উন্নীত করেছেন, যেন তিনি ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তনের পথে চালনা করতে ও পাপের ক্ষমা দিতে পারেন। 32আমরা এই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী, আর পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যাঁকে ঈশ্বর, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, তাদের দান করেছেন।” 33একথা শুনে তাঁরা ক্রোধে উন্মত্ত হলেন এবং তাঁদের মৃত্যুদণ্ড দিতে চাইলেন। 34কিন্তু গমলীয়েল নামে একজন ফরিশী, যিনি শাস্ত্রবিদ ও সর্বসাধারণের কাছে একজন গণ্যমান্য ব্যক্তি ছিলেন, তিনি উঠে দাঁড়ালেন ও আদেশ দিলেন, যেন কিছুক্ষণের জন্য ওদেরকে বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়। 35এরপর তিনি মহাসভাকে সম্বোধন করে বললেন, “হে ইস্রায়েলী জনগণ, এই লোকেদের নিয়ে আপনারা যা করতে চলেছেন, সে সম্পর্কে সতর্কতার সঙ্গে বিবেচনা করুন। 36কিছুদিন আগে, থুদা উপস্থিত হয়ে নিজেকে এক মহাপুরুষ বলে দাবি করেছিল এবং প্রায় চারশো মানুষ তার পাশে জড়ো হয়েছিল। সে নিহত হল ও তার অনুগামীরা ছত্রভঙ্গ হওয়ায় সবকিছুই ব্যর্থ হয়েছিল; কারো আর অস্তিত্ব রইল না। 37তারপরে গালীলীয় যিহূদা জনগণনার সময়ে উপস্থিত হয়ে কিছু মানুষকে বিদ্রোহের পথে চালিত করল। সেও নিহত হল ও তার সমস্ত অনুগামী ছিন্নভিন্ন হয়ে পড়ল। 38সেই কারণে, বর্তমান বিষয়টি সম্পর্কে আমি তোমাদের পরামর্শ দিই, এই লোকেরা যেমন আছে, থাকতে দাও! ওদের চলে যেতে দাও! কারণ ওদের অভিপ্রায় বা কাজকর্ম যদি মানুষ থেকে হয়, তবে তা ব্যর্থ হবে। 39কিন্তু তা যদি ঈশ্বর থেকে হয়, তোমরা এদের আটকাতে পারবে না; তোমরা কেবলমাত্র দেখতে পাবে যে, তোমরা নিজেরাই ঈশ্বরের বিরুদ্ধে সংগ্রামে লিপ্ত হয়েছ।” 40তাঁরা তখন তাঁর পরামর্শ গ্রহণ করল। তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের ভিতরে ডেকে এনে চাবুক মারলেন। তাঁরা তাঁদের আদেশ দিলেন, তাঁরা যেন যীশুর নামে কোনো কথা না বলেন। তারপর তাঁরা তাঁদের চলে যেতে দিলেন।
প্রেরিত 5
পর্যবেক্ষণ করুন কিভাবে যিহূদি নেতারা এই নতুন বিশ্বাসকে বন্ধ করতে বিরাট পর্যায় পর্যন্ত গিয়েছিল I এই প্রাথমিক বিতর্কগুলি যিরূশালেমে ঘটেছিল, সেই একই নগরে যেখানে মাত্র কয়েক সপ্তাহ পূর্বে তারা যীশুকে প্রকাশ্যে প্রাণদণ্ড দিয়েছিলI
এই ঐতিহাসিক তথ্য থেকে আমরা বিকল্পকে তুলনা করে পুনরুত্থানটিকে পরীক্ষা করতে পারি; দেখি এর অর্থ কি দাঁড়ায় I
যীশুর দেহ এবং সমাধি
মৃত খ্রীষ্টের সমাধি সম্পর্কে কেবল দুটি বিকল্প সমূহ বিদ্যমান I হয় সমাধিটি খালি ছিল সেই ইস্টার রবিবারের সকালে বা এটিতে তাঁর দেহ রয়েছিল I সেখানে আর কোনো বিকল্প ছিল না I
যিহূদি নেতারা পুনরুত্থানের বার্তার বিরোধিতা করেছিল তবে একটি দেহের সাহায্যে এটিকে খন্ডন করে নি
সমাধিটি যেখানে যীশুর দেহ ছিল মন্দির থেকে বেশি দুরে ছিল না যেখানে তাঁর শিষ্যরা জনতার ভীড়ের উদ্দেশ্যে চিত্কার করছিল যে তিনি মৃত থেকে উঠেছেন I ইহূদি নেতাদের পক্ষে এটি সহজ হত তাদের পুনরুত্থানের বার্তাকে অস্বীকার করতে শুধুমাত্র সমাধিটির মধ্যে দেহটিকে দেখানোর দ্বারা I ইতিহাস দেখায় যে পুনরুত্থানের বার্তা (যেটিকে মিথ্যা প্রমান করা যায় তখনও সমাধির মধ্যে একটি দেহের সাথে) সমাধির কাছেই শুরু হয়েছিল, যেখানে প্রত্যেকের কাছে প্রমাণটি সহজেই উপলব্ধ ছিল I যেহেতু ইহূদি নেতারা একটি দেহ দেখিয়ে তাদের বার্তাকে খন্ডন করেনি কারণ সমাধির মধ্যে দেখানোর জন্য কোনো দেহ ছিল না I
জেরুজালেমে কয়েক হাজার লোক পুনরুত্থানের বার্তাকে বিশ্বাস করেছিল
এই সময়ে জেরুজালেমে হাজার হাজার লোক যীশুর শারীরিক পুনরুত্থানে বিশ্বাস করতে ধর্মান্তরিত হয়েছিল I আপনি যদি ভীড়ের মধ্যে একজন হয়ে পিতরকে শুনতেন, অবাক হতেন বার্তাটি সত্য কিনা, তাহলে আপনি কি কমপক্ষে একটি মধ্যাহ্নভোজের বিরাম নিয়ে সমাধিতে গিয়ে দেখতেন না সমাধিতে তখনও দেহটা আছে কি না? যীশুর দেহটি যদি সমাধির মধ্যে তখনও থাকত তাহলে প্রেরিতদের বার্তাটিকে কেউ বিশ্বাস করত না I কিন্তু ইতিহাস লিপিবদ্ধ করে যে তারা যিরূশালেমে শুরু করে কয়েক হাজার লোকদের লাভ করেছিলেন I জেরুজালেমের মধ্যে চারিদিকে তখনও একটি দেহের সাথে সেটা অসম্ভব হত I সমাধির মধ্যে যীশুর দেহ থাকা অবাস্তবতার দিকে নিয়ে যায় I এটার কোনো অর্থ হয় না I
শিষ্যরা কি দেহটি চুরি করেছিল?
সুতরাং দেহটির কি হল? সর্বাধিক চিন্তিত ব্যাখ্যা ছিল যে শিষ্যরা দেহটিকে সমাধি থেকে চুরি করে নিয়ে গিয়েছিল, কোথাও এটিকে লুকিয়ে রেখেছিল এবং পরে অন্যদের বিভ্রান্ত করতে সক্ষম হয়েছিল I
ধরে নিন তারা এটিকে করতে সফল হয়েছিল এবং তারা তাদের প্রবঞ্চনার উপর ভিত্তি করে একটি ধর্মীয় বিশ্বাস শুরু করেছিল I তবে প্রেরিত্গণ এবং যোশেফাসের বিবরণের দিকে ফিরে তাকালে আমরা লক্ষ্য করি যে বিতর্কটি ছিল “প্রেরিতগণ লোকেদের শিক্ষা দিচ্ছিলেন এবং মৃত থেকে যীশুর পুনরুত্থানের কথা ঘোষণা করছিলেন” I এই থিমটি তাদের লেখাগুলির মধ্যে সর্বত্র রয়েছে I লক্ষ্য করুন কিভাবে অন্য আর একজন প্রেরিত পৌল, খ্রীষ্টের পুনরুত্থানের গুরুত্বকে মূল্য দিয়েছেন:
3তখন পিতর বললেন, “অননিয়, এ কী রকম হল, শয়তান তোমার অন্তরকে এমন পূর্ণ করল যে, তুমি পবিত্র আত্মার কাছে মিথ্যা বললে এবং জমির বিক্রি করা অর্থের কিছু অংশ নিজের জন্য রেখে দিলে? 4বিক্রি করার আগে তা কি তোমারই ছিল না? আর বিক্রি করার পরেও সেই অর্থ কি তোমারই অধিকারে ছিল না? এরকম একটি কাজ করার কথা তুমি কী করে চিন্তা করলে? তুমি মানুষের কাছে নয়, কিন্তু ঈশ্বরেরই কাছে মিথ্যা বললে।”
5অননিয় একথা শোনামাত্র মাটিতে পড়ে গেল ও প্রাণত্যাগ করল। ওই ঘটনার কথা যারা শুনল, তারা সকলেই মহা আতঙ্কে কবলিত হল। 6তখন যুবকেরা এগিয়ে এল, তার শরীরে কাপড় জড়ালো এবং তাকে বাইরে নিয়ে গিয়ে কবর দিল।
7প্রায় তিন ঘণ্টা পরে তার স্ত্রী উপস্থিত হল। কী ঘটনা ঘটেছে, সে তা জানত না। 8পিতর তাকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমাকে বলো তো, জমি বিক্রি করে তুমি ও অননিয় কি এই পরিমাণ অর্থ পেয়েছিলে?”
সে বলল, “হ্যাঁ, এই তার দাম।”
9পিতর তাকে বললেন, “প্রভুর আত্মাকে পরীক্ষা করার জন্য কীভাবে তোমরা একমত হলে? দেখো! যারা তোমার স্বামীকে কবর দিয়েছে, তারা দুয়ারে এসে পড়েছে, তারা তোমাকেও বাইরে নিয়ে যাবে।”
10সেই মুহূর্তে সে তাঁর চরণে পড়ে প্রাণত্যাগ করল। তখন যুবকেরা ভিতরে এসে দেখল সেও মারা গেছে। তারা তাকে বাইরে বয়ে নিয়ে গেল ও তার স্বামীর পাশে তাকে কবর দিল। 11সমস্ত মণ্ডলী ও যারাই এই ঘটনার কথা শুনল, সকলেই অত্যন্ত আতঙ্কিত হয়ে উঠল।
প্রেরিতশিষ্যরা অনেককে সুস্থ করলেন
12প্রেরিতশিষ্যেরা জনসাধারণের মধ্যে অনেক অলৌকিক নিদর্শন ও বিস্ময়কর কাজ সম্পন্ন করলেন। বিশ্বাসীরা সকলে শলোমনের বারান্দায় একযোগে মিলিত হত। 13অন্য কেউই তাদের সঙ্গে যোগ দিতে সাহস করত না, যদিও লোকেরা তাদের অত্যন্ত সমাদর করত। 14তা সত্ত্বেও, বহু পুরুষ ও মহিলা, উত্তরোত্তর প্রভুতে বিশ্বাস করে তাদের সংখ্যা বৃদ্ধি করল। 15শেষে এমন হল যে, লোকেরা অসুস্থ মানুষদের রাস্তার ধারে বয়ে নিয়ে গিয়ে তাদের বিছানা ও মাদুরে শুইয়ে রাখত, যেন পিতর রাস্তা দিয়ে যাওয়ার সময় তাঁর ছায়া অন্তত কারও কারও উপরে পড়ে। 16জেরুশালেমের চারপাশের নগরগুলি থেকেও জনতা ভিড় করতে লাগল। তারা তাদের অসুস্থ মানুষদের ও যারা মন্দ-আত্মা দ্বারা যন্ত্রণা পাচ্ছিল, তাদের নিয়ে আসত এবং তারা সকলেই সুস্থ হয়ে উঠত।
প্রেরিতশিষ্যরা নির্যাতিত হলেন
17এরপর মহাযাজক ও তাঁর সমস্ত সহযোগী, যারা সদ্দূকী সম্প্রদায়ের সদস্য ছিলেন, তাঁরা ঈর্ষায় পূর্ণ হয়ে উঠলেন। 18তাঁরা প্রেরিতশিষ্যদের গ্রেপ্তার করে সরকারি কারাগারে রেখে দিলেন। 19কিন্তু রাত্রিবেলা প্রভুর এক দূত কারাগারের দরজাগুলি খুলে দিয়ে তাঁদের বাইরে নিয়ে এলেন। 20তিনি বললেন, “তোমরা যাও, গিয়ে মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়াও এবং জনসাধারণের কাছে এই নতুন জীবনের পূর্ণ বার্তা প্রকাশ করো।”
21তাঁদের যেমন বলা হয়েছিল, ভোরবেলা তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে প্রবেশ করলেন এবং লোকদের শিক্ষা দিতে লাগলেন।
মহাযাজক ও তাঁর সহযোগীরা যখন উপস্থিত হলেন, তাঁরা ইস্রায়েলীদের প্রাচীনবর্গের সমন্বয়ে গঠিত পূর্ণ জমায়েত বা মহাসভাকে একত্র করলেন ও প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে আসার জন্য কারাগারে লোক পাঠালেন। 22কিন্তু কারাগারে উপস্থিত হয়ে কর্মচারীরা তাঁদের সেখানে খুঁজে পেল না। তাই তারা ফেরত গিয়ে সংবাদ দিল, 23“আমরা গিয়ে দেখলাম, কারাগার সুদৃঢ়রূপে তালাবন্ধ, রক্ষীরাও দরজায় দরজায় দাঁড়িয়ে আছে, কিন্তু আমরা সেগুলি খুলে ভিতরে কাউকে দেখতে পেলাম না।” 24এই সংবাদ শুনে মন্দিরের রক্ষী-প্রধান ও মহাযাজক বিস্ময়বিমূঢ় হলেন। তাঁরা অবাক হয়ে ভাবতে লাগলেন যে, এর পরিণাম কী হতে পারে।
25তখন একজন ব্যক্তি এসে বলল, “দেখুন! যাঁদের আপনারা কারাগারে রেখেছিলেন, তাঁরা মন্দির-প্রাঙ্গণে দাঁড়িয়ে লোকদের শিক্ষা দিচ্ছে।” 26এতে রক্ষী-প্রধান তাঁর কর্মচারীদের সঙ্গে গিয়ে প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এলেন। তাঁরা বলপ্রয়োগ করলেন না, কারণ লোকেরা তাঁদের উপর পাথর মারতে পারে ভেবে তাঁরা ভয় পেয়েছিলেন।
27প্রেরিতশিষ্যদের নিয়ে এসে, তাঁরা তাঁদের মহাসভার সামনে উপস্থিত করলেন, যেন মহাযাজক তাঁদের জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন। 28তিনি বললেন, “আমরা তোমাদের এই নামে শিক্ষা না দেওয়ার জন্য কঠোর আদেশ দিয়েছিলাম, তবুও তোমরা তোমাদের উপদেশে জেরুশালেম পূর্ণ করেছ এবং সেই ব্যক্তির রক্তের জন্য আমাদেরই অপরাধী সাব্যস্ত করার উদ্দেশ্যে দৃঢ়সংকল্প হয়েছ।”
29পিতর ও অন্য প্রেরিতশিষ্যেরা উত্তর দিলেন, “মানুষের চেয়ে আমরা বরং ঈশ্বরের আদেশই পালন করব! 30আমাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সেই যীশুকে মৃতলোক থেকে উত্থাপিত করেছেন—যাঁকে আপনারা একটি গাছের উপরে টাঙিয়ে হত্যা করেছিলেন। 31ঈশ্বর তাঁকে অধিপতি ও উদ্ধারকর্তা করে তাঁর ডানদিকে উন্নীত করেছেন, যেন তিনি ইস্রায়েলকে মন পরিবর্তনের পথে চালনা করতে ও পাপের ক্ষমা দিতে পারেন। 32আমরা এই সমস্ত বিষয়ের সাক্ষী, আর পবিত্র আত্মাও সাক্ষী, যাঁকে ঈশ্বর, যারা তাঁর আজ্ঞা পালন করে, তাদের দান করেছেন।”
প্রেরিত
6কারণ যে ঈশ্বর বলেছিলেন, “অন্ধকারের মধ্য থেকে জ্যোতি উদ্ভাসিত হোক,” তিনি তাঁর জ্যোতি আমাদের হৃদয়ে উদ্দীপিত করলেন, যেন খ্রীষ্টের মুখমণ্ডলে বিরাজিত ঈশ্বরের যে মহিমা, তার জ্ঞানের আলো আমাদের প্রদান করেন। 7কিন্তু এই সম্পদ আমরা মাটির পাত্রে ধারণ করছি, যেন এরকম প্রত্যক্ষ হয় যে সর্বগুণে উৎকৃষ্টতর এই পরাক্রম আমাদের থেকে নয়, কিন্তু ঈশ্বরের কাছ থেকে আসে। 8আমরা চতুর্দিক থেকেই প্রবলরূপে নিষ্পেষিত হচ্ছি, কিন্তু চূর্ণ হচ্ছি না; হতবুদ্ধি হচ্ছি, কিন্তু নিরাশ হচ্ছি না; 10আমরা সবসময়ই, আমাদের শরীরে যীশুর মৃত্যুকে বহন করে চলেছি, যেন আমাদের শরীরে যীশুর জীবনও প্রকাশ পায়।
১ করিন্থীয়ান ১৫:৩০-৩২
24ইহুদিদের কাছ থেকে আমি পাঁচ দফায় ঊনচল্লিশ ঘা করে চাবুক খেয়েছি। 25তিনবার আমাকে বেত দিয়ে মারা হয়েছে, একবার পাথর দিয়ে, তিনবার আমি জাহাজডুবিতে পড়েছি, অগাধ সমুদ্রের জলে আমি এক রাত ও একদিন কাটিয়েছি, 26আমি অবিরত এক স্থান থেকে অন্যত্র গিয়েছি। আমি কতবার নদীতে বিপদে পড়েছি, দস্যুদের কাছে বিপদে, স্বদেশবাসীদের কাছে, অইহুদি জাতির কাছে বিপদে পড়েছি, নগরের মধ্যে, মরুপ্রান্তরে, সমুদ্রের মধ্যে ও ভণ্ড ভাইদের মধ্যে আমি বিপদে পড়েছি। 27আমি পরিশ্রম ও কষ্ট করেছি এবং প্রায়ই অনিদ্রায় কাটিয়েছি, আমি ক্ষুধাতৃষ্ণার সঙ্গে পরিচিত হয়েছি ও কতবারই অনাহারে কাটিয়েছি, শীতে ও নগ্নতায় দিনযাপন করেছি। 28এর সবকিছু ছাড়া, প্রতিদিন একটি বিষয় আমার উপর চাপ সৃষ্টি করে, তা হল, সব মণ্ডলীর চিন্তা। 29কেউ দুর্বল হলে আমি দুর্বলতা অনুভব করি না? কেউ পাপপথে চালিত হলে আমার অন্তর রাগে জ্বলে ওঠে না?
একটি মিথ্যা বলে আপনি যা জানলেন তার জন্য মরা কেন?
স্পষ্টভাবে, শিষ্যরা খ্রীষ্টের পুনরুত্থানকে তাদের বার্তার কেন্দ্রের মধ্যে রেখেছিল I ধরে নিন যে এটি প্রকৃতপক্ষে মিথ্যা ছিল – যে এই শিষ্যরা দেহটিকে সত্যিকারের চুরি করেছিল সুতরাং তাদের পাল্টা প্রমানটি তাদের প্রকাশ করতে পারেনি I তাহলে তারা সফলতাপূর্বক জগতকে মুর্খ বানিয়ে থাকবে, তবে তারা জেনে থাকবে যে তারা যা প্রচার করছিল, লিখছিল এবং অভুথ্যান সৃষ্টি করছিল তা মিথ্যা ছিল I তথাপি তারা এই মিশনের জন্য তাদের জীবন দিয়েছিল (আক্ষরিকভাবে) I কেন তারা এটি করত – যদি তারা জানত এটি মিথ্যা ছিল?
লোকেরা উদ্দেশ্যের প্রতি জীবন দেয় কেননা তারা উদ্দেশ্যতে বিশ্বাস করে যার জন্য তারা লড়াই করে বা তারা উদ্দেশ্যেটির থেকে কিছু উপকার আশা করে I শিষ্যরা যদি দেহটি চুরি করে থাকত এবং এটিকে লুকিয়ে রাখত, সকল লোকেদের মধ্যে তারা জানত যে পুনরুত্থানটি সত্য ছিল না I তাদের নিজেদের বাক্য থেকে বিবেচনা করুন তাদের বার্তা প্রসার করার জন্য শিষ্যরা কি মূল্য দিয়েছিল I নিজেকে জিজ্ঞাসা করুন আপনি এমনকিছুর জন্য যাকে মিথ্যা বলে জানতেন তার জন্য আপনি ব্যক্তিগত মূল্য দিতেন কি না:
৮ আমরা সব দিক দিয়ে কষ্টে আছি কিন্তু আমরা ভেঙে পড়ি নি; দিশেহারা হলেও আমরা হতাশ হয়ে পড়ছি না,
2 করিন্থীয়ান ৪:৮-৯
৯ অত্যাচারিত হলেও ঈশ্বর আমাদের ত্যাগ করেননি, মাটিতে ছুঁড়ে ফেললেও আমরা নষ্ট হয়ে যাইনি।
৪ বরং ঈশ্বরের দাস বলে সব বিষয়ে আমরা নিজেদের যোগ্য প্রমাণ করি, ধৈর্য্য, মাণুষিক অত্যাচার, কষ্ট, দুঃখ কষ্ট ইত্যাদির মধ্যেও আমরা তাঁর দাস বলে প্রমাণ দিচ্ছি,
২ করিন্থীয়ান ৬:৪-৫
৫ অনেক ধৈর্য্যে, বিভিন্ন প্রকার ক্লেশে, অভাবের মধ্যে, সঙ্কটে, প্রহারে, কারাবাসে, কত দাঙ্গায়, পরিশ্রমে, কতদিন না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি, কতদিন না খেয়ে কাটিয়েছি;
২৪ ইহূদিরা আমাকে পাঁচ বার চাবুক দিয়ে ঊনচল্লিশ বার মেরেছিল।
২ করিন্থুয়ান ১১:২৪-২৭
২৫ তিনবার বেত দিয়ে মেরেছে, একবার তারা আমাকে পাথর দিয়ে মেরেছে, তিনবার জাহাজ ডুবি হয়েছিল এবং আমি এক রাত ও এক দিন জলের মধ্যে কাটিয়েছি।
২৬ যাত্রায় অনেকবার, নদীর ভয়াবহতা, ডাকাতদের কাছ থেকে বিপদ এসেছে, আমার নিজের লোকদের কাছ থেকে বিপদ এসেছে, ইহূদিদের ও অইহূদিদের কাছ থেকে বিপদ এসেছে, নগরের কাছ থেকে বিপদ এসেছে, বন্য জায়গা থেকে বিপদ এসেছে, সাগর থেকে বিপদ এসেছে, ভণ্ড ভাইদের কাছ থেকে বিপদ এসেছে যারা আমাদের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করেছে
২৭ আমি কষ্টের মধ্যেও কঠিন পরিশ্রম করেছি, কখনো না ঘুমিয়ে কাটিয়েছি; কিছু না খেয়ে থেকেছি খিদেয় এবং পিপাসায় কষ্ট পেয়েছি, শীতে ও যথেষ্ট কাপড়ের অভাবে কষ্ট পেয়েছি।
প্রেরিতদের অবিচল সাহস
বাগানের সমাধি: প্রায় ১৩০ বছর আগে ধ্বংসস্তূপ থেকে অনাবৃত সম্ভাব্য যীশুর সমাধি
শিষ্যদের অটল সাহসিকতা এবং প্রতিকূল কর্ত্তৃপক্ষদের নীরবতা এক শক্তিশালী সত্যকে প্রস্তুত করে যে আসল ইতিহাসে যীশু উত্থিত হয়েছিলেন I তাঁর পুনরুত্থানের মধ্যে আমরা আমাদের বিশ্বাস রাখতে পারি I