প্রাচীন ইস্রায়েলের নবিদের বই তাওরাত এবং যাবুরের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের পর্যালোচনা সম্পূর্ণ করেছি I আমরা আমাদের যাবুরের সমাপ্তির মধ্যে দেখলাম যে সেখানে ভবিষ্যত প্রত্যাশিত প্রতিশ্রুতিগুলোর পূর্ণতর এক ধরণ ছিল I
তবে যাবুরের সমাপ্তির পরে চার শত বছর পেরিয়ে গেছে I আমরা দেখলাম যে ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের মধ্যে অনেক রাজনৈতিক এবং ধার্মিক ঘটনা ঘটল যখন তারা প্রতিশ্রুতিগুলোর পূরণের জন্য অপেক্কা করছিল, তবে কোনো ভাববাদীদের থেকে কোনো নতুন বার্তা দেওয়া হল না I ইস্রায়েলীয়রা যাইহোক, মহান হেরোদের শাসনের মধ্য দিয়ে মন্দিরের ক্রমাগত বিকাশ করতে থাকল যতক্ষণ না এটি একটি দুর্দান্ত কাঠামোতে পরিণত হল, পুরো রোমীয় সাম্রাজ্য জুড়ে লোকেদেরকে এর আরাধনা, বলিদান এবং প্রার্থনাতে আকৃষ্ট করল I যাইহোক, লোকেদের হৃদয়, যদিও অতিশয় ধার্মিক এবং এখন মুর্তিপূজা থেকে দুরে রয়েছিল যা পূর্ববর্তী ভাববাদীদের সময়ে তাদেরকে এতটাই আটকে রেখেছিল, কঠোর এবং বাহ্যিকভাবে দৃষ্টি নিবদ্ধ হয়ে গিয়েছিল I আজকের দিনে ঠিক আমাদের মধ্যে অনেকের মতই, ধার্মিক ক্রিয়াকলাপ এবং প্রার্থনা সমূহের মাঝে লোকেদের হৃদয় বদলাতে হবে I সুতরাং মহান হেরোদের শাসনের শেষ দিকে, ৫ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের পাশাপাশি, এক অনন্য ভাববাদীকে এক মহান ঘোষণা করতে পাঠানো হল I
সুরা মরিয়ম (সুরা ১৯) মরিয়মকে দেওয়া বার্তার সারাংশ দেয়
এ কিতাবে (উল্লেখিত) মারইয়ামের কাহিনী বর্ণনা কর- যখন সে তার পরিবারবর্গ হতে আলাদা হয়ে পূর্ব দিকে এক জায়গায় আশ্রয় নিয়েছিল। সে তাদের থেকে (আড়াল করার জন্য) পর্দা টানিয়ে দিল। তখন আমি তার কাছে আমার রূহ্কে (অর্থাৎ জিবরীলকে) পাঠিয়ে দিলাম। তখন সে (অর্থাৎ জিবরীল) তার সামনে পূর্ণ মানুষের আকৃতি ধারণ করল। মারইয়াম বলল, ‘আমি তোমা হতে দয়াময় আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করছি যদি তুমি আল্লাহকে ভয় কর’ (তবে আমার নিকট এসো না)।’ সে বলল, ‘আমি তোমার প্রতিপালক কর্তৃক প্রেরিত হয়েছি তোমাকে একটি পুত-পবিত্র পুত্র দানের উদ্দেশ্যে।’ সে বলল, ‘কেমন করে আমার পুত্র হতে পারে, যখন কোন মানুষ আমাকে স্পর্শ করেনি, আর আমি অসতীও নই।’ সে বলল, ‘এভাবেই হবে, তোমার প্রতিপালক বলেছেন- ‘ওটা আমার জন্য সহজ, আমি তাকে মানুষের জন্য নিদর্শন বানাতে চাই আর আমার পক্ষ থেকে এক রহমত, এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়ে গেছে।’
সুরা মরিয়ম ১৯:১৬-২১
জিব্রাঈল বাপ্তিস্মদাতা যোহনের (যাহয়া – আঃ) আগমনের কথা ঘোষণা করেন
বার্তাবাহক ছিলেন জিব্রাঈল, এছাড়াও আল কিতাবে (বাইবেলে) শ্রেষ্ঠ শ্রেনীর দেবদূত জিব্রাঈল বলেও পরিচিত ছিলেন I এই সময় পর্যন্ত তাকে কেবল দানিয়েলের (আঃ) কাছে মসীহর আগমন সম্বন্ধে বার্তা (এখানে দেখুন) দিতে পাঠানো হয়েছিল I এখন জিব্রাঈল (বা জিব্রাঈল) সখরিয় (জাকারিয়া আঃ) নামক এক যাজকের কাছে এলেন যখন তিনি মন্দিরের মধ্যে প্রার্থনা করছিলেন I তিনি এবং তার স্ত্রী ইলীশাবেৎ উভয়ই বৃদ্ধ হয়েছিলেন এবং কোনো সন্তান ছিল না I তবে জিব্রাঈল তার কাছে আবির্ভূত হলেন নিম্নলিখিত বার্তার সাথে যেমনটি ইঞ্জিলে (সুসমাচারে) নথিভুক্ত আছে:
13কিন্তু দূত তাঁকে বললেন, “সখরিয়, ভয় পেয়ো না, ঈশ্বর তোমার প্রার্থনা শুনেছেন। তোমার স্ত্রী ইলিশাবেত তোমার জন্য এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবেন। তুমি তার নাম রাখবে, যোহন। 14সে তোমার আনন্দ ও উল্লাসের কারণ হবে এবং তার জন্মে অনেক মানুষ উল্লসিত হবে, 15কারণ প্রভুর দৃষ্টিতে সে হবে মহান। সে কখনও দ্রাক্ষারস, বা অন্য কোনো উত্তেজক পানীয় গ্রহণ করবে না এবং জন্মমুহূর্ত থেকেই সে পবিত্র আত্মায় পূর্ণ হবে। 16ইস্রায়েলের বহু মানুষকে সে তাদের প্রভু ঈশ্বরের কাছে ফিরিয়ে আনবে। 17ভাববাদী এলিয়ের আত্মা ও পরাক্রমে সে প্রভুর অগ্রগামী হবে; সকল পিতৃহৃদয়কে তাদের সন্তানের দিকে ফিরিয়ে আনবে, অবাধ্যদের ধার্মিকদের প্রজ্ঞাপথে নিয়ে আসবে—প্রভুর জন্য এক প্রজাসমাজকে প্রস্তুত করে তুলবে।”
18সখরিয় দূতকে জিজ্ঞাসা করলেন, “আমি কী করে এ বিষয়ে সুনিশ্চিত হব? কারণ আমি বৃদ্ধ, আমার স্ত্রীরও অনেক বয়স হয়েছে।”
19দূত উত্তর দিলেন, “আমি গ্যাব্রিয়েল, ঈশ্বরের সামনে দাঁড়িয়ে থাকি। এই শুভবার্তা ব্যক্ত করার জন্য ও তোমার সঙ্গে কথা বলার জন্য আমাকে তোমার কাছে পাঠানো হয়েছে। 20কিন্তু তুমি আমার কথা বিশ্বাস করলে না, যদিও সেকথা যথাসময়ে সত্য হয়ে উঠবে। এজন্য তুমি বোবা হয়ে যাবে এবং যতদিন না এই ঘটনা ঘটে, তুমি কথা বলতে পারবে না।”
লুক ১:১৩-২০
যাবুর সেই প্রস্তুতকারীর আগমনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সমাপ্ত করেছিল যিনি ইলিয়াস (আঃ) এর মতন হবেন I জিব্রাঈল এই নির্দিষ্ট প্রতিশ্রুতিকে এই বলে স্মরণ করেন যে সখরিয়র (বা জাকারিয়া – আঃ) পুত্র ‘ইলিয়াস এর আত্মায় এবং পরাক্রমে’ আসবেন I তিনি প্রভুর জন্য ‘লোকেদের প্রস্তুত করতে’ আসছিলেন I এই ঘোষণাটির অর্থ হল যে প্রস্তুতকারীর প্রতিশ্রুতিকে ভুলে যাওয়া হয় নি – এটি সখরিয় (বা জাকারিয়া) এবং ইলীশাবেতের আসন্ন পুত্রের জন্ম এবং জীবনের মধ্য দিয়ে পূর্ণ হবে I যাইহোক, যেহেতু সখরিয় বার্তাটিকে বিশ্বাস করল না তিনি বোবা হয়ে রইলেন I
জিব্রাঈল কুমারীর থেকে আসন্ন জন্মের কথা ঘোষণা করলেন
প্রস্তুতকারীর আগমনের অর্থ হল যে একদল লোকদের প্রস্তুত করা হচ্ছিল – মসীহ বা খ্রীষ্ট বা মেসিয়াহর জন্য – যিনি খুব শীঘ্রই আসবেন I অবশ্যই যথেষ্ট, কয়েক মাস পরে, জিব্রাঈলকে (গাব্রিয়েল) মরিয়ম নামক একজন যুবতী কুমারীর কাছে পাঠানো হ’ল নিম্নলিখিত ঘোষণার সাথে যা ইঞ্জিলে (সুসমাচার) নথিভুক্ত করা হয়েছিল I
28দূত তাঁর কাছে গিয়ে বললেন, “মহান অনুগ্রহের অধিকারিণী, তোমাকে অভিনন্দন! প্রভু তোমার সঙ্গে আছেন।”
29তাঁর কথা শুনে মরিয়ম অত্যন্ত বিচলিত হলেন এবং অবাক হয়ে ভাবলেন, এ কী ধরনের অভিবাদন হতে পারে! 30কিন্তু দূত তাঁকে বললেন, “মরিয়ম, ভয় পেয়ো না। তুমি ঈশ্বরের অনুগ্রহ লাভ করেছ। 31তুমি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে এক পুত্রের জন্ম দেবে, আর তুমি তাঁর নাম রাখবে যীশু। 32তিনি মহান হবেন ও পরাৎপরের পুত্র নামে আখ্যাত হবেন। প্রভু ঈশ্বর তাঁর পিতা দাউদের সিংহাসন তাঁকে দেবেন 33এবং তিনি যাকোব বংশে চিরকাল রাজত্ব করবেন। তাঁর রাজত্বের কখনও অবসান হবে না।”
34মরিয়ম দূতকে জিজ্ঞাসা করলেন, “তা কী করে হবে? আমি যে কুমারী!”
35উত্তর দিয়ে দূত তাঁকে বললেন, “পবিত্র আত্মা তোমার উপরে অবতরণ করবেন ও পরাৎপরের শক্তি তোমাকে আবৃত করবে। তাই যে পবিত্র পুরুষ জন্মগ্রহণ করবেন, তিনি ঈশ্বরের পুত্র বলে আখ্যাত হবেন। 36আর তোমার আত্মীয় ইলিশাবেতও বৃদ্ধ বয়সে সন্তানের মা হতে চলেছেন। যাকে সকলে বন্ধ্যা বলে জানত, এখন তাঁর ছয় মাস চলছে। 37কারণ ঈশ্বর যা বলেন তা সবসময় সত্যি হয়।”
38মরিয়ম উত্তর দিলেন, “আমি প্রভুর দাসী। আপনি যে রকম বললেন, আমার প্রতি সেরকমই হোক।” এরপর দূত তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন।
গেলেন৷ লুক ১:২৮-৩৮
জিব্রাঈলের নিজের ঘোষণার মধ্যে আমরা ‘ঈশ্বরের পুত্র’ এই চমকপ্রদ শিরোনামকে দেখি I আমি এখানে এটিকে আমার নিবন্ধের মধ্যে আরও আলোচনা করি I এই নিবন্ধে জন্ম বিবরণ নিয়ে আমরা চলতে থাকি I
হযরত যাহাহর (বাপ্তিস্মদাতা যোহন –আঃ) জন্ম
ঘটনাগুলো ঠিক সেইভাবে চলছিল যেভাবে যাবুরের ভাববাদীরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন I ভাববাদী মালাখি এলিয়র পরাক্রমে আসার একজন প্রস্তুতকারীর সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন আর এখন জিব্রাঈল তার জন্ম সম্বন্ধে ঘোষণা করলেন I ইঞ্জিল চালিয়ে যায়
57প্রসবের সময় পূর্ণ হলে, ইলিশাবেত এক পুত্রসন্তানের জন্ম দিলেন। 58তাঁর প্রতিবেশী এবং আত্মীয়পরিজনেরা শুনল যে, প্রভু তাঁর প্রতি মহৎ করুণা প্রদর্শন করেছেন, আর তারাও তাঁর আনন্দের অংশীদার হল।
59অষ্টম দিনে তারা শিশুটিকে সুন্নত করার জন্য এসে তার পিতার নাম অনুসারে শিশুটির নাম সখরিয় রাখতে চাইল। 60কিন্তু তার মা বলে উঠলেন, “না, ওর নাম হবে যোহন।”
61তারা তাঁকে বলল, “কেন? আপনার আত্মীয়স্বজনদের মধ্যে কারও তো এই নাম নেই!”
62তখন তারা তার পিতার কাছে ইশারায় জানতে চাইল, তিনি শিশুটির কী নাম রাখতে চান। 63তিনি একটি লিপিফলক চেয়ে নিলেন এবং সবাইকে অবাক করে দিয়ে লিখলেন, “ওর নাম যোহন।” 64সঙ্গে সঙ্গে তাঁর মুখ খুলে গেল, জিভের জড়তা চলে গেল, আর তিনি কথা বলতে লাগলেন ও ঈশ্বরের প্রশংসায় মুখর হলেন। 65প্রতিবেশীরা সবাই ভীত হল এবং যিহূদিয়ার সমস্ত পার্বত্য অঞ্চলের লোকেরা এসব বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে লাগল। 66যারা শুনল, তারা প্রত্যেকেই বিস্মিত হয়ে বলাবলি করল, “এই শিশুটি তাহলে ভবিষ্যতে কী হবে?” কারণ প্রভুর হাত ছিল তার সহায়।
লুক ১:৫৭-৬৬
ঈসা আল মসীহর আঃ জন্ম
হযরত যিশাইয় (আঃ) অনন্য ভাববাণীটির (সম্পূর্ণরূপে এখানে ব্যাখ্যা করা হয়েছে) ভবিষ্যদ্বাণী করলেন যে
14সেই কারণে প্রভু স্বয়ং তোমাদের এক চিহ্ন দেবেন: এক কুমারী-কন্যা গর্ভবতী হবে ও এক পুত্রসন্তানের জন্ম দেবে এবং তাঁর নাম ইম্মানুয়েল রাখবে।
যিশাইয় ৭:১৪
এখন মুখ্য দেবদূত জিব্রাঈল মরিয়মের কাছে তার আসন্ন জন্মের কথা ঘোষণা করলেন, এমনকি যদিও তিনি একজন কুমারী স্ত্রী ছিলেন – সুদীর্ঘ কাল পূর্বে প্রদত্ত এই ভাববাণীর সরাসরি পূর্ণতার মধ্যে I এইভাবেই ইঞ্জিল (সুসমাচার) ঈসা আল মসীহর (যীশু – আঃ) জন্মকে নথিভুক্ত করে I
4যোষেফও দাউদের কুল ও বংশজাত পুরুষ হিসেবে, গালীলের নাসরৎ নগর থেকে যিহূদিয়ার অন্তর্গত দাউদের নগর বেথলেহেমের উদ্দেশে যাত্রা করলেন। 5তিনি তাঁর বাগদত্তা স্ত্রী মরিয়মকে নিয়ে সেখানে নাম তালিকাভুক্তির জন্য গেলেন। মরিয়ম তখন সন্তানের জন্মের প্রতীক্ষায় ছিলেন। 6তাঁরা যখন সেখানে ছিলেন, তখন সন্তানের জন্ম দেওয়ার সময় ঘনিয়ে এল। 7মরিয়ম তাঁর প্রথম সন্তান, এক পুত্রের জন্ম দিলেন এবং শিশুটিকে কাপড়ে জড়িয়ে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখলেন, কারণ পান্থশালায় তাদের জন্য কোনো স্থান ছিল না।
8আশেপাশের মাঠে কয়েকজন মেষপালক অবস্থিতি করছিল। তারা রাত্রিবেলা তাদের মেষপাল পাহারা দিচ্ছিল। 9প্রভুর এক দূত তাদের সামনে আবির্ভূত হলেন, ও প্রভুর প্রতাপ তাদের চারপাশে উজ্জ্বল হওয়ায় তারা ভীতচকিত হয়ে উঠল। 10কিন্তু দূত তাদের বললেন, “ভয় কোরো না, আমি তোমাদের কাছে এক মহা আনন্দের সুসমাচার নিয়ে এসেছি—এই আনন্দ হবে সব মানুষেরই জন্য। 11আজ দাউদের নগরে তোমাদের জন্য এক উদ্ধারকর্তা জন্মগ্রহণ করেছেন, তিনি খ্রীষ্ট প্রভু। 12তোমাদের কাছে এই হবে চিহ্ন: তোমরা কাপড়ে জড়ানো এক শিশুকে জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা অবস্থায় দেখতে পাবে।”
13হঠাৎই বিশাল এক স্বর্গীয় দূতবাহিনী ওই দূতের সঙ্গে সম্মিলিত হয়ে ঈশ্বরের বন্দনা করে বলতে লাগলেন,
14“ঊর্ধ্বতমলোকে ঈশ্বরের মহিমা,
আর পৃথিবীতে তাঁর প্রীতির পাত্র সব মানুষের মাঝে শান্তি।”
15স্বর্গদূতেরা তাদের ছেড়ে স্বর্গে ফিরে যাওয়ার পরে মেষপালকেরা নিজেদের মধ্যে বলাবলি করল, “চলো, প্রভু আমাদের যে ঘটনার কথা জানালেন, আমরা বেথলেহেমে গিয়ে তা দেখে আসি।”
16তারা দ্রুত সেখানে গিয়ে মরিয়ম, যোষেফ ও জাবপাত্রে শুইয়ে রাখা শিশুটিকে দেখতে পেল। 17তারা শিশুটিকে দর্শন করার পর তাঁর সম্পর্কে যে কথা বলা হয়েছিল, সেই কথা চারদিকে ছড়িয়ে দিল। 18যারা মেষপালকদের এই কথা শুনল, তারা সবাই হতচকিত হল। 19কিন্তু মরিয়ম এসব বিষয় তাঁর হৃদয়ের মধ্যে সঞ্চয় করে রাখলেন, আর এ নিয়ে চিন্তা করে গেলেন। 20যেমন তাদের বলা হয়েছিল, তেমনই সব দেখেশুনে মেষপালকেরা ঈশ্বরের গৌরব ও বন্দনা করতে করতে ফিরে গেল।
21আট দিন পরে, শিশুটির সুন্নত অনুষ্ঠানের সময়ে, তাঁর নাম রাখা হল যীশু। শিশুটি মায়ের গর্ভে আসার আগেই স্বর্গদূত তাঁর এই নাম দিয়েছিলেন।
লুক ২: ৪-২১
এই দুই মহান ভাববাদীগণের আসন্ন ভূমিকাসমূহ
দুই মহান ভাববাদীগণ একে অপরের থেকে কয়েক মাসের ব্যবধানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, উভয়ই নির্দিষ্ট ভাববাণী সমূহের পরিপূর্ণতায় যা কয়েক শত বছর পূর্বে দেওয়া হয়েছিল! তাদের জীবন এবং বার্তা সমুহ কেমন হবে? বাপ্তিস্মদাতা যোহন (যাহায়) জাকারিয়া (বা সখরিয় –আঃ), উভয় পুত্রদের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে:
67তখন তার পিতা সখরিয় পবিত্র আত্মায় পরিপূর্ণ হয়ে ভাববাণী করলেন। তিনি বললেন:
68“প্রভু, ইস্রায়েলের ঈশ্বরের নাম প্রশংসিত হোক,
কারণ তিনি এসে তাঁর প্রজাদের মুক্ত করেছেন।
69তিনি তাঁর দাস দাউদের বংশে আমাদের জন্য
এক ত্রাণশৃঙ্গ তুলে ধরেছেন,
70(বহুকাল আগে তাঁর পবিত্র ভাববাদীদের মাধ্যমে তিনি যেমন বলেছিলেন),
71যেন আমরা আমাদের সব শত্রুর কবল থেকে উদ্ধার পাই,
যারা আমাদের ঘৃণা করে,
তাদের হাত থেকে রক্ষা পাই,
72আমাদের পিতৃপুরুষদের প্রতি করুণা প্রদর্শন
এবং তাঁর পবিত্র নিয়ম স্মরণ করার জন্য,
73আমাদের পিতা অব্রাহামের কাছে তিনি যা শপথ করেছিলেন:
74তিনি আমাদের সব শত্রুর হাত থেকে
আমাদের নিস্তার করবেন,
যেন নির্ভয়ে তাঁর সেবা করতে আমাদের সক্ষম করেন,
75যেন তাঁর সামনে পবিত্রতায় ও ধার্মিকতায় আমরা তাঁর সেবা করে যাই।
76“আর তুমি, আমার শিশুসন্তান,
তুমি পরাৎপরের ভাববাদী বলে আখ্যাত হবে,
কারণ প্রভুর পথ প্রস্তুতির জন্য
তুমি তাঁর অগ্রগামী হবে;
77তাঁর প্রজাবৃন্দকে, তাদের পাপসমূহ ক্ষমার মাধ্যমে
পরিত্রাণের জ্ঞান দেওয়ার জন্য।
78আমাদের ঈশ্বরের স্নেহময় করুণার গুণে,
স্বর্গ থেকে আমাদের মাঝে স্বর্গীয় জ্যোতির উদয় হবে।
79যারা অন্ধকারে, মৃত্যুচ্ছায়ায় বসবাস করছে,
তাদের উপর আলো বিকীর্ণ করতে,
আমাদের পা শান্তির পথে চালিত করতে।”
লুক:১:৬৭-৭৯
সখরিয় (আঃ) একটি অনুপ্রাণিত ফিরিস্তি পেয়ে, দাবুদ (আঃ – প্রতিশ্রুতিটিকে এখানে দেখুন) তথা ইব্রাহিমের (আঃ – প্রতিশ্রুতিটিকে এখানে দেখুন) একটি প্রতিশ্রুতির সাথে ঈসার (যীশু) জন্মকে সংযুক্ত করেন I ঈশ্বরের পরিকল্পনাকে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয় এবং শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে বৃদ্ধি পেয়ে এখন এর চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁচচ্ছিল I তবে এই পরিকল্পনায় কি জড়িত থাকবে? এটি কি শত্রু রোমীয়দের থেকে পরিত্রাণ ছিল? এটি কি মশি (আঃ) এর ব্যবস্থার বদলে নতুন ব্যবস্থা ছিল? এটি কি একটি নতুন ধর্ম বা রাজনৈতিক ব্যবস্থা ছিল? এগুলোর মধ্যে কোনটারই (যেগুলোকে আমরা মনুষ্যরা ঘটবে বলে তাকিয়ে থাকি) উল্লেখ নেই I পরিবর্তে উল্লিখিত পরিকল্পনাটি হ’ল ‘তাদের পাপের ক্ষমার মাধ্যমে পরিত্রাণের সাথে’ আমাদের ঈশ্বরের কোমল দয়ার দ্বারা অনুপ্রাণিত তাদের জন্য যারা আমাদের মধ্যে ‘বাস করছে … মৃত্যুর ছায়ায়’ ‘শান্তির পথের মধ্যে আমাদের চরণকে নির্দেশ করতে ‘পবিত্রতা এবং ধার্মিকতার মধ্যে ভীতিহীনভাবে তাঁর সেবা করতে সক্ষম করে তোলে’ I আদমের পর থেকে আমাদের শত্রুতা ও মৃত্যুর নিন্দা করা হয়েছে যখন আমরা ন্যায়পরায়ণতা অর্জন করতে আমাদের পাপের থেকে ক্ষমা পেতে চেষ্টা করি I আর আদম, হবা এবং শয়তানের সামনে, আল্লাহ এক পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করলেন যা ‘স্ত্রীটির’ থেকে উদ্ভূত এক ‘বংশধরের’ উপর কেন্দ্রীভূত ছিল I নিশ্চিতভাবে এই ধরণের পরিকল্পনা আমাদের দৃষ্টিতে যুদ্ধ সমূহ এবং চিন্তাধারা ও আচরণের পদ্ধতিগুলোর চেয়ে বেশি ভাল I এই পরিকল্পনা আমাদের গভীরতম চাহিদাগুলোকে পূরণ করবে, আমাদের উপরিভাগের প্রয়োজনগুলোকে নয় I কিন্তু প্রস্তুতকারী এবং মসীহর জন্য কিভাবে এই পরিকল্পনা উদঘাটিত হবে? আমরা সুসমাচার বা ইঞ্জিল সম্বন্ধে জানতে থাকি I