Skip to content
Home » From Books » Page 2

From Books

ম্যাথিউ 21:23 – 23:39

যীশুর রাজকীয় প্রবেশ।

21 পরে যখন তাঁরা যিরূশালেমের কাছে জৈতুন পাহাড়ে, বৈৎফগী গ্রামে এলেন, তখন যীশু দুই জন শিষ্যকে পাঠিয়ে দিলেন,2 তাঁদের বললেন, “তোমরা সামনের ঐ গ্রামে যাও, আর সেখানে গিয়ে দেখতে পাবে, একটি গর্দ্দভী বাঁধা আছে, আর তার সঙ্গে একটি বাচ্চা তাদের খুলে আমার কাছে আন।3 আর যদি কেউ, তোমাদের কিছু বলে, তবে বলবে, এদেরকে প্রভুর প্রয়োজন আছে, তাতে সে তখনই তাদের পাঠিয়ে দেবে।”4 এমনটি হল যেন এর দ্বারা ভাববাদীর ভাববাণী পূর্ণ হয়,5 “তোমরা সিয়োন-কন্যাকে বল, দেখ, তোমার রাজা তোমার কাছে আসছেন, তিনি নম্র, ও গর্দ্দভ-শাবকের উপরে বসে আসছেন।”6 পরে ঐ শিষ্যেরা গিয়ে যীশুর আদেশ অনুযায়ী কাজ করলেন,7 গর্দ্দভীকে ও শাবকটিকে আনলেন এবং তাদের উপরে নিজেদের বস্ত্র পেতে দিলেন, আর তিনি তাদের উপরে বসলেন।8 আর ভিড়ের মধ্য অধিকাংশ লোক নিজের নিজের কাপড় রাস্তায় পেতে দিল এবং অন্য অন্য লোকেরা গাছের ডাল কেটে রাস্তায় ছড়িয়ে দিল।9 আর যে সমস্ত লোক তাঁর আগে ও পিছনে যাচ্ছিল, তারা চিত্কার করে বলতে লাগল, হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, ধন্য, যিনি প্রভুর নামে আসছেন, স্বর্গেও হোশান্না।10 আর তিনি যিরূশালেমে প্রবেশ করলে সারা শহরে কোলাহল সৃষ্টি হয়ে গেল সবাই বলল, “উনি কে?”11 তাতে লোকেরা বলল, “উনি সেই ভাববাদী, গালীলের নাসরতীয় যীশু।”যীশুর উপাসনা গৃহে প্রবেশ।12 পরে যীশু ঈশ্বরের উপাসনা গৃহে প্রবেশ করলেন এবং যত লোক মন্দিরে কেনা বেচা করছিল, সেই সবাইকে বের করে দিলেন এবং যারা টাকা বদল করার জন্য টেবিল সাজিয়ে বসেছিল ও যারা পায়রা বিক্রি করছিল, তাদের সব কিছু উল্টিয়ে ফেললেন,13 আর তাদের বললেন, “লেখা আছে, আমার ঘরকে প্রার্থনার ঘর বলা হবে,” কিন্তু তোমরা এটাকে “ডাকাতদের গুহায় পরিণত করেছো।”14 পরে অন্ধেরা ও খোঁড়ারা মন্দিরে তাঁর কাছে এলো, আর তিনি তাদের সুস্থ করলেন।15 কিন্তু প্রধান যাজকগণ ও ব্যবস্থার শিক্ষকেরা তাঁর সমস্ত আশ্চর্য্য কাজ দেখে এবং যে ছেলেমেয়েরা হোশান্না দায়ূদ-সন্তান, বলে মন্দিরে চিত্কার করছিল তাদের দেখে রেগে গেল,16 এবং তাঁকে বলল, “শুনছ, এরা কি বলছে?” যীশু তাদের বললেন, “হ্যাঁ, তোমরা কি কখনও পড়নি যে, তুমি ছোট শিশু ও দুধ খাওয়া বাচ্চার মুখ থেকে প্রশংসার ব্যবস্থা করেছ?”17 পরে তিনি তাদের ছেড়ে শহরের বাইরে বৈথনিয়ায় গেলেন, আর সেই জায়গায় রাতে থাকলেন।ডুমুর গাছটি শুকিয়ে গেল।18 সকালে শহরে ফিরে আসার দিন তাঁর খিদে পেল।19 রাস্তার পাশে একটি ডুমুরগাছ দেখে তিনি তার কাছে গেলেন এবং পাতা ছাড়া আর কিছুই দেখতে পেলেন না। তখন তিনি গাছটিকে বললেন, “আর কখনও তোমাতে ফল না ধরুক,” আর হঠাৎ সেই ডুমুরগাছটা শুকিয়ে গেল।20 তা দেখে শিষ্যেরা আশ্চর্য্য হয়ে বললেন, “ডুমুরগাছটা হঠাৎ শুকিয়ে গেল কিভাবে?”21 যীশু এর উত্তরে তাঁদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, যদি তোমাদের বিশ্বাস থাকে, আর সন্দেহ না কর, তবে তোমরা খালি ডুমুরগাছের প্রতি এমন করতে পারবে, তা নয়, কিন্তু এই পাহাড়কেও যদি বল, উপড়িয়ে যাও, আর সমুদ্রে গিয়ে পড়, তাই হবে।”22 আর তোমরা প্রার্থনায় বিশ্বাসের সঙ্গে যা কিছু চাইবে, সে সব কিছু পাবে।যীশুর ক্ষমতার বিষয়ে শিক্ষা।23 পরে যীশু মন্দিরে এলেন এবং যখন তিনি উপদেশ দিচ্ছিলেন, সে দিনের প্রধান যাজকেরা ও লোকদের প্রাচীনেরা তাঁর কাছে এসে বলল, “তুমি কোন ক্ষমতায় এই সব করছ? আর কেই বা তোমাকে এই ক্ষমতা দিয়েছে?”24 যীশু উত্তরে তাদের বললেন, “আমিও তোমাদের একটি কথা জিজ্ঞাসা করব, যদি তোমরা আমাকে উত্তর দাও, তা হলে আমি তোমাদের বলবো, কোন ক্ষমতায় এসব করছি।”25 যোহনের বাপ্তিষ্ম কোথা থেকে হয়েছিল? স্বর্গরাজ্য থেকে না মানুষের থেকে? তখন তারা নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে বলল, “যদি বলি স্বর্গ থেকে, তাহলে এ আমাদেরকে বলবে, তবে তোমরা তাঁকে বিশ্বাস কর নি কেন?”26 আর যদি বলি, “মানুষের মাধ্যমে,” লোকদের থেকে আমার ভয় আছে কারণ সবাই যোহনকে ভাববাদী বলে মানে।27 তখন তারা যীশুকে বলল, “আমরা জানি না।” তিনিও তাদের বললেন, “তবে আমিও কি ক্ষমতায় এসব করছি, তা তোমাদের বলব না।”দুই পুত্রের দৃষ্টান্ত।28 কিন্তু তোমরা কি মনে কর? এক ব্যক্তির দুটি ছেলে ছিল, তিনি প্রথম জনের কাছে গিয়ে বললেন, “পুত্র, যাও, আজ আঙ্গুর ক্ষেতে কাজ কর।”29 সে বলল, “আমি যাব না,” কিন্তু পরে মন পরিবর্তন করে গেল।30 পরে তিনি দ্বিতীয় জনের কাছে গিয়ে তেমনি বললেন। সে বলল, “বাবা আমি যাচ্ছি,” কিন্তু গেল না।31 সেই দুইজনের মধ্যে কে বাবার ইচ্ছা পালন করল? তারা বলল, “প্রথম জন।” যীশু তাদের বললেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, কর আদায়কারীরা ও বেশ্যারা তোমাদের আগে ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করছে।”32 কারণ যোহন ধার্মিকতার পথ দিয়ে তোমাদের কাছে এলেন, আর তোমরা তাঁকে বিশ্বাস করলে না, কিন্তু কর আদায়কারীরাও বেশ্যারা তাঁকে বিশ্বাস করল, আর তোমরা তা দেখেও এই রকম মন পরিবর্তন করলে না যে, তাঁকে বিশ্বাস করবে।আঙ্গুর ক্ষেতের মালিক ও কৃষকদের দৃষ্টান্ত (উদাহরণ)।33 অন্য আর একটি গল্প শোন, একজন আঙুর ক্ষেতের মালিক ছিলেন, তিনি আঙুর ক্ষেত করে তার চারিদিকে বেড়া দিলেন, ও তার মধ্যে আঙুর রস বার করার জন্য একটা আঙুর মাড়াবার জন্য গর্ত খুঁড়লেন এবং দেখাশোনা করার জন্য উঁচু ঘর তৈরী করলেন, পরে কৃষকদের হাতে তা জমা দিয়ে অন্য দেশে চলে গেলেন।34 আর ফল পাবার দিন কাছে এলে তিনি তাঁর ফল সংগ্রহ করার জন্য কৃষকদের কাছে তাঁর দাসদেরকে পাঠালেন।35 তখন কৃষকেরা তাঁর দাসদেরকে ধরে কাউকে মারলো, কাউকে হত্যা করল, কাউকে পাথর মারল।36 আবার তিনি আগের থেকে আরও অনেক দাসকে পাঠালেন, তাদের সঙ্গেও তারা সেই রকম ব্যবহার করল।37 অবশেষে তিনি তাঁর ছেলেকে তাদের কাছে পাঠালেন, বললেন, “তারা আমার ছেলেকে সম্মান করবে।”38 কিন্তু কৃষকেরা মালিকের ছেলেকে দেখে বলল, “এই ব্যক্তিই উত্তরাধিকারী, এসো, আমরা একে মেরে ফেলে এর উত্তরাধিকার কেড়ে নিই।”39 পরে তারা তাঁকে ধরে আঙ্গুর ক্ষেতের বাইরে ফেলে বধ করল।40 অতএব আঙুর ক্ষেতের মালিক যখন আসবেন, তখন সেই চাষীদের কে কি করবেন?41 তারা তাঁকে বলল, “মালিক সেই মন্দ লোকেদেরও একেবারে ধ্বংস করবেন এবং সেই ক্ষেত এমন অন্য কৃষকদেরকে জমা দেবেন, যারা ফলের দিনের তাঁকে ফল দেবে।”42 যীশু তাদের বললেন, “তোমরা কি কখনও শাস্ত্রে পড়নি, যে পাথরটাকে মিস্ত্রীরা অগ্রাহ্য করেছিল, সেই পাথরটাই কোণের প্রধান পাথর হয়ে উঠল, প্রভু ঈশ্বর এই কাজ করেছেন, আর এটা আমাদের চোখে সত্যিই খুব আশ্চর্য্য কাজ?”43 এই জন্য আমি তোমাদের বলছি, “তোমাদের কাছ থেকে ঈশ্বরের রাজ্য কেড়ে নাওয়া যাবে এবং এমন এক জাতিকে দেওয়া হবে, যে জাতি তার ফল দেবে।”44 আর এই পাথরের উপরে যে পড়বে, সে ভগ্ন হবে, কিন্তু এই পাথর যার উপরে পড়বে, তাকে চূরমার করে ফেলবে।45 তাঁর এই সব গল্প শুনে প্রধান যাজকেরা ও ফরীশীরা বুঝল যে, তিনি তাদেরই বিষয় বলছেন।46 আর তারা যীশুকে ধরতে চেয়েছিল, কিন্তু তারা জনগণকে ভয় পেলো, কারণ লোকে তাঁকে ভাববাদী বলে মানত।

বিয়ের ভোজের গল্প।

22 যীশু আবার গল্পের মাধ্যমে কথা বললেন, তিনি তাদের বললেন,2 স্বর্গরাজ্য এমন একজন রাজার মতো, যিনি তাঁর ছেলের বিয়ের ভোজ আয়োজন করলেন।3 সেই ভোজে নিমন্ত্রিত লোকদের ডাকার জন্য তিনি তাঁর দাসদের পাঠালেন, কিন্তু লোকেরা আসতে চাইল না।4 তাতে তিনি আবার অন্য দাসদের পাঠালেন, বললেন, “নিমন্ত্রিত লোকদেরকে বল, দেখ, আমার ভোজ প্রস্তুত করেছি, আমার অনেক বলদ ও হৃষ্টপুষ্ট পশু সব মারা হয়েছে, সব কিছুই প্রস্তুত, তোমরা বিয়ের ভোজে এসো।”5 কিন্তু তারা অবহেলা করে কেউ তার ক্ষেতে, কেউ বা তার নিজের কাজে চলে গেল।6 অবশিষ্ট সবাই তাঁর দাসদের ধরে অপমান করল ও বধ করল।7 তাতে রাজা প্রচন্ড রেগে গেলেন এবং সৈন্যসামন্ত পাঠিয়ে সেই হত্যাকারীদের ধ্বংস করলেন ও তাদের শহর পুড়িয়ে দিলেন।8 পরে তিনি তাঁর দাসদের বললেন, “বিয়ের ভোজ তো প্রস্তুত, কিন্তু ঐ নিমন্ত্রিত লোকেরা এর যোগ্য ছিল না,9 অতএব তোমরা রাজপথের মাথায় মাথায় গিয়ে যত লোকের দেখা পাও, সবাইকে বিয়ের ভোজে ডেকে আন।”10 তাতে ঐ দাসেরা রাজপথে গিয়ে ভাল মন্দ যত লোকের দেখা পেল, সবাইকেই সংগ্রহ করে আনল, তাতে বিয়ে বাড়ি অতিথিতে পরিপূর্ণ হল।11 পরে রাজা অতিথিদের দেখার জন্যে ভিতরে এসে এমন এক ব্যক্তিকে দেখতে পেলেন, যার গায়ে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছিল না,12 তিনি তাকে বললেন, “হে বন্ধু, তুমি কেমন করে বিয়ে বাড়ির পোশাক ছাড়া এখানে প্রবেশ করলে?” সে উত্তর দিতে পারল না।13 তখন রাজা তাঁর চাকরদের বললেন, “ওর হাত পা বেঁধে ওকে বাইরে অন্ধকারে ফেলে দাও, সেখানে লোকেরা কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।14 যদিও অনেককেই ডাকা হয়েছে, কিন্তু অল্পই মনোনীত।”যীশুর শত্রুদের কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর।15 তখন ফরীশীরা গিয়ে পরিকল্পনা করল, কিভাবে তাঁকে কথার ফাঁদে ফেলা যায়।16 আর তারা হেরোদীয়দের সঙ্গে তাদের শিষ্যদের দিয়ে তাঁকে বলে পাঠাল, “গুরু, আমরা জানি, আপনি সত্যবাদী এবং সঠিক ভাবে ঈশ্বরের পথের বিষয় শিক্ষা দিচ্ছেন এবং আপনি কাউকে ভয় পাননা, কারণ আপনি লোকেরা কে কি বলল সে কথায় বিচার করবেন না।17 ভাল, আমাদের বলুন, আপনার মত কি? কৈসরকে কর দেওয়া উচিত কি না?”18 কিন্তু যীশু তাদের ফাঁদ বুঝতে পেরে বললেন, “ভণ্ডরা, আমার পরীক্ষা কেন করছ?19 সেই করের পয়সা আমাকে দেখাও।” তখন তারা তাঁর কাছে একটি দিন দিনার আনল।20 তিনি তাদের বললেন, “এই মূর্ত্তি ও এই নাম কার?” তারা বলল, “কৈসরের।”21 তখন তিনি তাদের বললেন, “তবে কৈসরের যা কিছু, তা কৈসরকে দাও, আর ঈশ্বরের যা কিছু, তা ঈশ্বরকে দাও।”22 এই কথা শুনে তারা আশ্চর্য্য হল এবং তাঁর কাছ থেকে চলে গেল।বিবাহ ও পুনরুত্থানের।23 সেই দিন সদ্দূকীরা, যারা বলে মৃত্যু থেকে জীবিত হয় না, তারা তাঁর কাছে এলো।24 এবং তাঁকে জিজ্ঞাসা করল, “গুরু, মোশি বললেন, কেউ যদি সন্তান ছাড়া মারা যায়, তবে তার ভাই তার স্ত্রীকে বিয়ে করে তার ভাইয়ের জন্য বংশ রক্ষা করবে।25 ভাল, আমাদের মধ্যে কোনো একটি পরিবারে সাতটি ভাই ছিল, প্রথম জন বিয়ের পর মারা গেল এবং সন্তান না হওয়ায় তার ভাইয়ের জন্য নিজের স্ত্রীকে রেখে গেল।26 এইভাবেই দ্বিতীয় জন তৃতীয় জন করে সাত জনই তাকে বিয়ে করল।27 সবার শেষে সেই স্ত্রীও মরে গেল।28 অতএব মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার দিন ঐ সাত জনের মধ্যে সে কার স্ত্রী হবে? সবাই তো তাকে বিয়ে করেছিল।”29 যীশু এর উত্তরে তাদের বললেন, “তোমরা ভুল বুঝছ, কারণ তোমরা না জান শাস্ত্র, না জান ঈশ্বরের ক্ষমতা,30 কারণ মৃত্যু থেকে জীবিত হয়ে লোকে বিয়ে করে না এবং তাদের বিয়ের দেওয়াও হয় না, বরং স্বর্গে ঈশ্বরের দূতদের মতো থাকে।31 কিন্তু মৃতদের মৃত্যু থেকে জীবিত হওয়ার বিষয়ে ঈশ্বর তোমাদের যা বলেছেন, তা কি তোমরা শাস্ত্রে পড়নি?”32 তিনি বলেন, “আমি অব্রাহামের ঈশ্বর, ইসহাকের ঈশ্বর, ও যাকোবের ঈশ্বর,” (এই লোকগুলি মৃত্যুর অনেক পরে ঈশ্বর এই কথা গুলি বলেছেন) ঈশ্বর মৃতদের নন, কিন্তু জীবিতদের।33 এই কথা শুনে লোকেরা তাঁর শিক্ষাতে অবাক হয়ে গেল।শ্রেষ্ট আদেশ।34 ফরীশীরা যখন শুনতে পেল, তিনি সদ্দূকীদের নিরুত্তর করেছেন, তখন তারা একসঙ্গে এসে জুটল।35 আর তাদের মধ্যে এক ব্যক্তি, একজন ব্যবস্থার গুরু, পরীক্ষা করার জন্য তাঁকে জিজ্ঞাসা করল,36 “গুরু, ব্যবস্থার মধ্যে কোন আদেশটি মহান?”37 তিনি তাকে বললেন, “তোমার সমস্ত হৃদয়, তোমার সমস্ত প্রাণ ও তোমার সমস্ত মন দিয়ে তোমার ঈশ্বর প্রভুকে ভালবাসবে,”38 এটা মহান ও প্রথম আদেশ।39 আর দ্বিতীয় আদেশটি হলো, “তোমার প্রতিবেশীকে নিজের মত ভালবাসবে।”40 এই দুটি আদেশেই সমস্ত ব্যবস্থা এবং ভাববাদীদের বই নির্ভর করে।যীশুর শত্রুরা নিরুত্তর।41 আর ফরীশীরা একত্র হলে যীশু তাদের জিজ্ঞাসা করলেন,42 “খ্রীষ্টের বিষয়ে তোমাদের কি মনে হয়, তিনি কার সন্তান?” তারা বলল, “দায়ূদের।”43 তিনি তাদের বললেন, “তবে দায়ূদ কিভাবে আত্মার আবেশে তাঁকে প্রভু বলেন?” তিনি বলেন,44 “প্রভু আমার প্রভুকে বললেন, তুমি আমার ডান পাশে বস, যতক্ষণ না আমি তোমার শত্রুদেরকে তোমার পা রাখার জায়গায় পরিণত করি।”45 অতএব দায়ূদ যখন তাঁকে প্রভু বলেন, তখন তিনি কিভাবে তাঁর সন্তান?46 তখন কেউ তাঁকে কোন উত্তর দিতে পারল না, আর সেই দিন থেকে তাঁকে কোন কথা জিজ্ঞাসা করতে কারও সাহস হল না।

ফরীশীদের ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের প্রতি যীশুর অনুযোগ

23 তখন যীশু লোকদের ও তাঁর শিষ্যদের বললেন,2 “ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা মোশির আসনে বসেন।3 অতএব তাঁরা তোমাদের যা কিছু করতে বললেন, তা পালন করবে এবং তা মেনে চলবে, কিন্তু তাদের কাজের মতো কাজ করবে না, কারণ তারা যা বলে, তারা নিজেরা সেগুলো করে না।4 তারা ভারী ও কঠিন বোঝা বেঁধে লোকদের কাঁধে চাপিয়ে দেয়, কিন্তু নিজেরা আঙ্গুল দিয়েও তা সরাতে চায় না।5 তারা লোককে দেখানোর জন্যই তাদের সমস্ত কাজ করে, তারা নিজেদের জন্য শাস্ত্রের বাক্য লেখা বড় কবচ তৈরী করে এবং বস্ত্রের ঝালর বড় করে,6 আর ভোজে প্রধান স্থান, সমাজঘরে প্রধান প্রধান আসন তারা ভালবাসে,7 হাটে বাজারে শুভেচ্ছা জানায় এবং লোকের কাছে রব্বি (গুরু) বলে সম্মান সূচক অভিবাদন পেতে খুব ভালবাসে।”8 কিন্তু তোমরা শিক্ষক বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু একজন এবং তোমরা সবাই তার ভাই।9 আর পৃথিবীতে কাউকেও পিতা বলে ডেকো না, কারণ তোমাদের পিতা একজন, যিনি স্বর্গে থাকেন।10 তোমরা শিক্ষক বলে সম্ভাষিত হয়ো না, কারণ তোমাদের গুরু একজন, তিনি খ্রীষ্ট।11 কিন্তু তোমাদের মধ্যে যে ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ, সে তোমাদের সেবক হবে।12 আর যে কেউ, নিজেকে উঁচু করে, তাকে নীচু করা হবে, আর যে কেউ নিজেকে নীচু করে, তাকে উঁচু করা হবে।13 কিন্তু ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা লোকেদের জন্য স্বর্গরাজ্যের দরজা বন্ধ করে থাক,14 নিজেরাও তাতে প্রবেশ কর না এবং যারা প্রবেশ করতে আসে, তাদের ও প্রবেশ করতে দাও না।15 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ এক জনকে ইহূদি ধর্মে ধর্মান্তরিত করার জন্য তোমরা সমুদ্রে ও বিভিন্ন জায়গায় গিয়ে থাক, আর যখন কেউ হয়, তখন তাকে তোমাদের থেকেও দ্বিগুন নরকের যোগ্য করে তোলো।16 অন্ধ পথ পরিচালনাকারীরা, ধিক তোমাদের! তোমরা বলে থাক, কেউ মন্দিরের দিব্যি করে তা পালন না করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ মন্দিরের সোনার দিব্যি করলে তাতে সে আবদ্ধ হল।17 তোমরা মূর্খেরা ও অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ? সোনা, না সেই মন্দির, যা সেই সোনাকে পবিত্র করেছে?18 আরও বলে থাক, কেউ যজ্ঞবেদির দিব্যি করলে তা কিছুই নয়, কিন্তু কেউ যদি তার উপরের উপহারের দিব্যি করে, তবে সে তার দিব্যিতে আবদ্ধ হল।19 তোমরা অন্ধেরা, বল দেখি, কোনটি শ্রেষ্ঠ? উপহার না সেই যজ্ঞবেদি, যা উপহারকে পবিত্র করে?20 যে ব্যক্তি যজ্ঞবেদির দিব্যি করে, সে তো বেদির ও তার উপরের সবকিছুরই দিব্যি করে।21 আর যে মন্দিরের দিব্যি করে, সে মন্দিরের, যিনি সেখানে বাস করেন, তাঁরও দিব্যি করে।22 আর যে স্বর্গের দিব্যি করে, সে ঈশ্বরের সিংহাসনের এবং যিনি তাতে বসে আছেন, তাঁরও দিব্যি করে।23 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা পুদিন না, মৌরি ও জিরার দশমাংশ দিয়ে থাক, আর ব্যবস্থার মধ্যে প্রধান বিষয়, ন্যায়বিচার, দয়া ও বিশ্বাস ত্যাগ করেছ, কিন্তু এ সব পালন করা এবং ঐ গুলিও ত্যাগ না করা, তোমাদের উচিত ছিল।24 অন্ধ পথ পরিচালনাকারীরা, তোমরা মশা ছেঁকে ফেল, কিন্তু উট গিলে খাও।25 ধর্মশিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা পান করার পাত্র ও খাওয়ার পাত্রের বাইরে পরিষ্কার করে থাক, কিন্তু সেগুলির ভেতরে দৌরাত্ম্য ও অন্যায়ে ভরা।26 অন্ধ ফরীশী, আগে পান পাত্রের ও খাওয়ার পাত্রের ভেতরেও পরিষ্কার কর, যেন তা বাইরেও পরিষ্কার হয়।27 ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা চুনকাম করা কবরের মতো, যা বাইরে দেখতে খুবই সুন্দর, কিন্তু ভেতরে মরা মানুষের হাড় ও সব রকমের অশুচিতায় ভরা।28 একইভাবে তোমরাও বাইরে লোকদের কাছে নিজেদের ধার্মিক বলে দেখিয়ে থাক, কিন্তু ভিতরে তোমরা ভণ্ড ও পাপে পরিপূর্ণ।29 ব্যবস্থার শিক্ষকেরা ও ফরীশীরা, হে ভণ্ডরা, ধিক তোমাদের! কারণ তোমরা ভাববাদীদের কবর গেঁথে থাক এবং ধার্ম্মিকদের সমাধি স্তম্ভ সাজিয়ে থাক, আর তোমরা বল,30 আমরা যদি আমাদের পূর্বপুরুষদের দিনের থাকতাম, তবে আমরা ভাববাদীদের রক্তপাতে তাঁদের সহভাগী হতাম না।31 অতএব, তোমরা নিজেদের বিষয়ে এই সাক্ষ্য দিচ্ছ যে, যারা ভাববাদীদের বধ করেছিল, তোমরা তাদেরই সন্তান।32 তোমরাও তোমাদের পূর্বপুরুষদের পাপের পরিমাণ পূর্ণ করছ।33 হে সাপের দল, কালসাপের বংশেরা, তোমরা কেমন করে বিচারে নরকদন্ড এড়াবে?34 অতএব, দেখ, আমি তোমাদের কাছে ভাববাদী, জ্ঞানবান ও ব্যবস্থার শিক্ষকদের পাঠাব, তাঁদের মধ্যে কয়েকজনকে তোমরা বধ করবে ও ক্রুশে দেবে, কয়েকজনকে তোমাদের সমাজঘরে চাবুক মারবে এবং এক শহর থেকে আর এক শহরে তাড়া করবে,35 যেন পৃথিবীতে যত ধার্মিক লোকের রক্তপাত হয়ে আসছে, সে সমস্তর দন্ড তোমাদের উপরে আসে, সেই ধার্মিক হেবলের রক্তপাত থেকে, বরখিয়ের ছেলে যে সখরিয়কে তোমরা ঈশ্বরের মন্দিরের ও যজ্ঞবেদির মাঝখানে বধ করেছিলে, তাঁর রক্তপাত পর্যন্ত।36 আমি তোমাদের সত্যি বলছি, এই যুগের লোকদের উপরে এসমস্ত দন্ড আসবে।37 যিরূশালেম, যিরূশালেম, তুমি ভাববাদীদেরকে বধ করেছ ও তোমার কাছে যাদের পাঠানো হয়, তাদের তোমরা পাথর মেরে থাক! মুরগি যেমন তার বাচ্চাদের ডানার নীচে একত্র করে, তেমন আমিও কত বার তোমার সন্তানদের একত্র করতে ইচ্ছা করেছি, কিন্তু তোমরা রাজি হলে না।38 দেখ, তোমাদের বাড়ি, তোমাদের জন্য খালি হয়ে পড়ে থাকবে।39 কারণ আমি তোমাদের বলছি, তোমরা এখন থেকে আমাকে আর দেখতে পাবে না, যত দিন পর্যন্ত তোমরা না বলবে, “ধন্য তিনি, যিনি প্রভুর নামে আসছেন।”

বিচার দিনের বিষয়ে উদাহরণ ও শিক্ষা।

25 তখন স্বর্গরাজ্য এমন দশটি কুমারীর মতো হবে, যারা নিজের নিজের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হল।2 তাদের মধ্যে পাঁচ জন বোকা, আর পাঁচ জন বুদ্ধিমতী ছিল।3 কারণ যারা বোকা ছিল, তারা নিজের নিজের প্রদীপ নিল, কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না,4 কিন্তু যারা বুদ্ধিমতী তারা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল।5 আর বড় আসতে দেরি হওয়ায় সবাই ঢুলতে ঢুলতে ঘুমিয়ে পড়ল।6 পরে মাঝ রাতে এই আওয়াজ হল, দেখ, বর! তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে বের হও।7 তাতে সেই কুমারীরা সবাই উঠল এবং নিজের নিজের প্রদীপ সাজালো।8 আর বোকা কুমারীরা বুদ্ধিমতিদের বলল, তোমাদের তেল থেকে আমাদেরকে কিছু দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে।9 কিন্তু বুদ্ধিমতীরা বলল, হয়তো তোমাদের ও আমাদের জন্য এই তেলে কুলাবে না, তোমরা বরং বিক্রেতাদের কাছে গিয়ে তোমাদের জন্য তেল কিনে নাও।10 তারা তেল কিনতে যাচ্ছে, সেই দিন বর এলো এবং যারা তৈরী ছিল, তারা তাঁর সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল,11 শেষে অন্য সমস্ত কুমারীরাও এলো এবং বলতে লাগল, প্রভু, প্রভু, আমাদেরকে দরজা খুলে দিন।12 কিন্তু তিনি বললেন, তোমাদের সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না।13 অতএব জেগে থাক, কারণ তোমরা সেই দিন বা সেই মুহূর্ত জান না।তালন্তের দৃষ্টান্ত।14 এটা সেই রকম, মনে কর, যে কোন ব্যক্তি বিদেশে যাচ্ছেন, তিনি তাঁর দাসদেরকে ডেকে তাঁর সম্পত্তি তাদের হাতে সমর্পণ করলেন।15 তিনি এক জনকে পাঁচ তালন্ত, অন্য জনকে দুই তালন্ত এবং আর এক জনকে এক তালন্ত, যার যেমন যোগ্যতা তাকে সেইভাবে দিলেন, পরে বিদেশে চলে গেলেন।16 যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে তখনই গেল, তা দিয়ে ব্যবসা করল এবং আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করল।17 যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও তেমন করে আরও দুই তালন্ত লাভ করল।18 কিন্তু যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মালিকের টাকা লুকিয়ে রাখল।19 অনেকদিন পরে সেই দাসদের মালিক এলো এবং তাদের কাছে হিসেব নিলেন।20 তখন যে পাঁচ তালন্ত পেয়েছিল, সে এসে আরও পাঁচ তালন্ত এনে বলল, “মালিক, আপনি আমার কাছে পাঁচ তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও পাঁচ তালন্ত লাভ করেছি।”21 তার মালিক তাকে বললেন, “বেশ, উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার মালিকের আনন্দের সহভাগী হও।”22 পরে যে দুই তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, “মালিক, আপনি আমার কাছে দুই তালন্ত দিয়েছিলেন, দেখুন, তা দিয়ে আমি আরও দুই তালন্ত লাভ করেছি।”23 তার মালিক তাকে বললেন, “বেশ! উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস, তুমি অল্প বিষয়ে বিশ্বস্ত হয়েছ, আমি তোমাকে অনেক বিষয়ের উপরে নিযুক্ত করব, তুমি তোমার মালিকের আনন্দের সহভাগী হও।”24 পরে যে এক তালন্ত পেয়েছিল, সেও এসে বলল, “মালিক, আমি জানতাম, আপনি খুবই কঠিন লোক, যেখানে বীজ রোপণ করেননি, সেখানে ফসল কেটে থাকেন ও যেখানে বীজ ছড়ান নি, সেখানে ফসল কুড়িয়ে থাকেন।”25 তাই আমি ভয়ে আপনার তালন্ত মাটির নিচে লুকিয়ে রেখেছিলাম, দেখুন, আপনার যা ছিল তাই আপনি পেলেন।26 কিন্তু তার মালিক উত্তর করে তাকে বললেন, “দুষ্টু অলস দাস, তুমি নাকি জানতে, আমি যেখানে বুনিনা, সেখানে কাটি এবং যেখানে ছড়াই না, সেখানে কুড়াই?27 তবে মহাজনদের হাতে আমার টাকা রেখে দাওয়া তোমার উচিত ছিল, তা করলে আমি এসে আমার যা তা সুদের সঙ্গে পেতাম।28 অতএব তোমরা এর কাছ থেকে ঐ তালন্ত নিয়ে নাও এবং যার দশ তালন্ত আছে, তাকে দাও,29 কারণ যে ব্যক্তির কাছে আছে, তাকে দাওয়া হবে, তাতে তার আরো বেশি হবে, কিন্তু যার নেই, তার যা আছে, তাও তার কাছ থেকে নিয়ে নাওয়া হবে।30 আর তোমরা ঐ অনুপযোগী দাসকে বাইরের অন্ধকারে ফেলে দাও, সেই জায়গায় সে কাঁদবে ও দাঁতে দাঁত ঘষবে।”মেষ এবং ছাগল।31 আর যখন মনুষ্যপুত্র সমস্ত দূতদের সঙ্গে নিয়ে নিজের মহিমায় আসবেন, তখন তিনি তাঁর প্রতাপের সিংহাসনে বসবেন।32 আর সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জমায়েত হবে, পরে তিনি তাদের একজন থেকে অন্য জনকে আলাদা করবেন, যেমন পালরক্ষক ছাগলের পাল থেকে ভেড়া আলাদা করে,33 আর তিনি ভেড়াদের তাঁর ডানদিকে ও ছাগলদেরকে বাঁদিকে রাখবেন।34 তখন রাজা তাঁর ডানদিকের লোকদেরকে বলবেন, “এস, আমার পিতার আশীর্বাদ ধন্য পাত্রেরা, জগত সৃষ্টির প্রথম থেকে যে রাজ্য তোমাদের জন্য তৈরী করা হয়েছে, তার অধিকারী হও।35 কারণ যখন আমি ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমাকে খাবার দিয়েছিলে, আর যখন আমি পিপাসিত ছিলাম, তখন আমাকে পান করিয়েছিলে, অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে থাকার আশ্রয় দিয়েছিলে,36 বস্ত্রহীন হয়েছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরিয়েছিলে, অসুস্থ হয়েছিলাম, আর আমার যত্ন নিয়েছিলে, জেলখানায় বন্দী ছিলাম, আর আমার কাছে এসেছিলে,”37 তখন ধার্ম্মিকেরা তাঁকে বলবে, “প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, কিম্বা পিপাসিত দেখে পান করিয়েছিলাম?38 কবেই বা আপনাকে অতিথিরূপে আশ্রয় দিয়েছিলাম, কিম্বা বস্ত্রহীন দেখে বস্ত্র পরিয়েছিলাম?39 কবেই বা আপনাকে অসুস্থ, কিম্বা জেলখানায় আপনাকে দেখে আপনার কাছে গিয়েছিলাম?”40 তখন রাজা এর উত্তরে তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এই ভাইদের, এই ক্ষুদ্রতমদের মধ্যে এক জনের প্রতি যখন এই সব করেছিলে, তখন আমারই প্রতি করেছিলে।”41 পরে তিনি বাঁদিকের লোকদেরকেও বলবেন, তোমরা শাপগ্রস্ত সবাই, আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবলের ও তার দূতদের জন্য যে অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে যাও।42 কারণ আমি ক্ষুধার্ত হয়েছিলাম, আর তোমরা আমাকে খাবার দাও নি, পিপাসিত হয়েছিলাম, আর আমাকে পান করাও নি,43 অতিথি হয়েছিলাম, আর আমাকে আশ্রয় দাও নি, বস্ত্রহীন ছিলাম, আর আমাকে বস্ত্র পরাও নি, অসুস্থ ও জেলখানায় ছিলাম, আর আমার যত্ন কর নি।44 তখন তারাও এর উত্তরে বলবে, “প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি অতিথি, কি বস্ত্রহীন, কি অসুস্থ, কি জেলখানায় দেখে আপনার সেবা করিনি?”45 তখন তিনি তাদের বলবেন, “আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা এই ক্ষুদ্রতমদের কোন এক জনের প্রতি যখন এই সব কর নি, তখন আমারই প্রতি কর নি।”46 পরে তারা অনন্তকালের জন্য শাস্তি পেতে, কিন্তু ধার্ম্মিকেরা অনন্ত জীবনে প্রবেশ করবে।

শিষ্যদের জন্য যীশুর প্রার্থনা।

17 যীশু এই সব কথা বললেন; তারপর তিনি তাঁর চোখ স্বর্গের দিকে তুললেন এবং বললেন, “পিতা, দিন এসেছে; তোমার পুত্রকে মহিমান্বিত কর, যেন তোমার পুত্র তোমাকে মহিমান্বিত করে2 যেমন তুমি তাঁকে সব মানুষের উপরে কর্তৃত্ব দিয়েছ, যাদেরকে তুমি তাঁকে দিয়েছ তিনি যেন তাদের অনন্ত জীবন দেন।3 আর এটাই অনন্ত জীবন: যেন তারা তোমাকে জানতে পারে, একমাত্র সত্য ঈশ্বরকে এবং তুমি যাকে পাঠিয়েছ, যীশু খ্রীষ্টকে।4 তুমি আমাকে যে কাজ করতে দিয়েছ, তা শেষ করে আমি পৃথিবীতে তোমাকে মহিমান্বিত করেছি।5 এখন পিতা, তোমার উপস্থিতে আমাকে মহিমান্বিত কর, জগত সৃষ্টি হবার আগে তোমার কাছে আমার যে মহিমা ছিল, তুমি সেই মহিমায় এখন আমাকে মহিমান্বিত কর।”যীশু তাঁর শিষ্যদের জন্য প্রার্থনা করলেন।6 জগতের মধ্য থেকে তুমি যে লোকদের আমাকে দিয়েছ আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রকাশ করেছি। তারা তোমারই ছিল এবং তাদের তুমি আমাকে দিয়েছ এবং তারা তোমার কথা রেখেছে।7 এখন তারা জানে যে, তুমি আমাকে যা কিছু দিয়েছ সে সবই তোমার কাছ থেকে এসেছে,8 তুমি আমাকে যে সব বাক্য দিয়েছ আমি এই বাক্যগুলি তাদের দিয়েছি। তারা তাদের গ্রহণ করেছে এবং সত্যি জেনেছে যে আমি তোমার কাছ থেকে এসেছি এবং তারা বিশ্বাস করেছে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।9 আমি তাদের জন্য প্রার্থনা করি। আমি জগতের জন্য প্রার্থনা করি না কিন্তু যাদের তুমি আমাকে দিয়েছ, কারণ তারা তোমারই।10 সব জিনিস যা আমার সবই তোমার এবং তোমার জিনিসই আমার; আমি তাদের মধ্যে মহিমান্বিত হয়েছি।11 আমি আর বেশিক্ষণ জগতে নেই, কিন্তু এই লোকেরা জগতে আছে এবং আমি তোমাদের কাছে আসছি। পবিত্র পিতা, তোমার নামে তাদের রক্ষা কর যা তুমি আমাকে দিয়েছ যেন তারা এক হয়, যেমন আমরা এক।12 যখন আমি তাদের সঙ্গে ছিলাম আমি তোমার নামে তাদের রক্ষা করেছি যা তুমি আমাকে দিয়েছ; আমি তাদের পাহারা দিয়েছি এবং যার বিনষ্ট হওয়ার কথা ছিল সে বিনাশ হয়েছে, যেন শাস্ত্রের কথা পূর্ণ হয়।13 এখন আমি তোমার কাছে আসছি; কিন্তু আমি জগতে থাকতেই এই সব কথা বলেছি যেন তারা আমার আনন্দে নিজেদের পূর্ণ করে।14 আমি তাদের তোমার বাক্য দিযেছি; জগত তাদের ঘৃণা করেছে, কারণ তারা জগতের নয়, যেমন আমি জগতের নই।15 আমি প্রার্থনা করছি না যে তুমি তাদের জগত থেকে নিয়ে নাও, কিন্তু তাদের শয়তানের কাছ থেকে রক্ষা কর।16 তারা জগতের নয়, যেমন আমিও জগতের নই।17 তাদের সত্যে পবিত্র কর; তোমার বাক্য সত্য।18 তুমি আমাকে জগতে পাঠিয়েছো এবং আমি তাদের জগতে পাঠিয়েছি।19 তাদের জন্য আমি নিজেকে পবিত্র করেছি যেন তারা তাদেরকেও সত্যিই পবিত্র করে।যীশু সমস্ত বিশ্বাসীদের জন্য প্রার্থনা করলেন।20 আমি কেবলমাত্র এদের জন্য প্রার্থনা করি না, কিন্তু আরও তাদের জন্য যারা তাদের বাক্যের মধ্য দিয়ে আমাকে বিশ্বাস করবে21 সুতরাং তারা সবাই এক হবে, যেমন তুমি, পিতা, আমার মধ্যে এবং আমি তোমার মধ্যে। আমি প্রার্থনা করি যে তারাও যেন আমাদের মধ্যে থাকে সুতরাং জগত বিশ্বাস করবে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।22 যে মহিমা তুমি আমাকে দিয়েছ তা আমি তাদের দিয়েছি, সুতরাং তারা এক হবে, যেমন আমরা এক।23 আমি তাদের মধ্যে এবং তুমি আমার মধ্যে, যেন তারা সম্পূর্ণভাবে এক হয়; যেন জগত জানতে পারে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো এবং তাদের ভালবেসেছ, যেমন তুমি আমাকে প্রেম করেছ।24 পিতা, যাদের তুমি আমায় দিয়েছ আমি আশাকরি যে তারাও আমার সঙ্গে থাকে যেখানে আমি থাকি, তুমি আমায় যাদের দিয়েছো, তাহারাও যেন সেখানে আমার সঙ্গে থাকে সুতরাং তারা যেন আমার মহিমা দেখে, যা তুমি আমাকে দিয়েছ: কারণ জগত সৃষ্টির আগে তুমি আমাকে প্রেম করেছিলেন।25 ধার্মিক পিতা, জগত তোমাকে জানে নি, কিন্তু আমি তোমাকে জানি; এবং এরা জানে যে তুমি আমাকে পাঠিয়েছো।26 আমি তাদের কাছে তোমার নাম প্রচার করেছি এবং আমি এটা জানাব যে তুমি যে প্রেমে আমাকে প্রেম করেছ, তা তাদের মধ্যে থাকে এবং আমি তাদের মধ্যে থাকি।

কুরআন- সুরত ৩:: ১০-১১১০ (সাফাত) তৌরাত: আদিপুস্তক 22: 1-18
১০২. অতঃপর যখন (পুত্র) তার সাথে (গুরুতর) কাজ করার সময় পৌঁছে গেল, তখন সে বললঃ “হে আমার পুত্র! আমি দর্শন দিয়ে দেখি যে আমি তোমাকে বলি হিসাবে উত্সর্গ করেছি: এখন দেখুন আপনার দৃষ্টিভঙ্গি কি?” (পুত্র) বলেছিলঃ “হে আমার পিতা! আপনার আদেশ অনুসারে কাজ করুন। আল্লাহ আমাকে ইচ্ছা করলে ধৈর্য্য ও অধ্যবসায়ের অভ্যাস করেন।” 104 তাকে তাঁর কপালে সিজদা করে দিয়েছিলেন (কুরবানীর জন্য), আমরা তাকে ডেকেছিলাম “হে ইব্রাহিম! 105.” আপনি ইতিপূর্বে দর্শনটি শেষ করেছেন! “- এভাবেই আমরা সৎকর্মীদেরকে প্রতিদান দিয়ে থাকি। 106. কারণ এটি ছিল স্পষ্টতই একটি পরীক্ষা- ১০7. এবং আমরা তাকে এক ত্যাগের ত্যাগ দিয়ে মুক্তি দিয়েছি: ১০৮. এবং আমরা তার জন্য পরবর্তী কালের মধ্যে প্রজন্মের মধ্যে রেখেছি: ১০৯. “ইব্রাহিমের প্রতি সালাম ও সালাম!” ১১০. এভাবেই আমরা কি সৎকর্মীদেরকে পুরস্কৃত করি?  এই সব ঘটনার পরে ঈশ্বর অব্রাহামের পরীক্ষা করলেন। তিনি তাঁকে বললেন, “অব্রাহাম;” তিনি উত্তর করলেন, “এখানে আমি।”2 তখন তিনি বললেন, “তুমি নিজের ছেলেকে, তোমার একমাত্র ছেলেকে, যাকে তুমি ভালবাস, সেই ইসহাককে নিয়ে মোরিয়া দেশে যাও এবং সেখানকার যে এক পর্বতের কথা আমি তোমাকে বলব, তার উপরে তাকে হোম বলির জন্য বলিদান কর।”3 পরে অব্রাহাম ভোরবেলায় উঠে গাধা সাজিয়ে দুই জন দাস ও তাঁর ছেলে ইসহাককে সঙ্গে নিলেন, হোমের জন্য কাঠ কাটলেন, আর উঠে ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় দিকে গেলেন।4 তৃতীয় দিনের অব্রাহাম চোখ তুলে দূর থেকে সেই জায়গা দেখলেন।5 তখন অব্রাহাম নিজের দাসদেরকে বললেন, “তোমরা এই জায়গায় গাধার সঙ্গে থাক; আমি ও ছেলেটি, আমরা ঐ জায়গায় গিয়ে প্রার্থনা করি, পরে তোমাদের কাছে ফিরে আসব”6 তখন অব্রাহাম হোমের কাঠ নিয়ে নিজের ছেলে ইসহাকের কাঁধে দিলেন এবং নিজের হাতে আগুন ও ছুরি; দুজনেই একসঙ্গে চলে গেলেন।7 ইসহাক নিজের বাবা অব্রাহামকে বললেন, “হে আমার বাবা।” তিনি বললেন, “হে আমার ছেলে, দেখ, এই আমি।” তখন তিনি বললেন, “এই দেখুন, আগুন ও কাঠ, কিন্তু হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া কোথায়?”8 অব্রাহাম বললেন, “বৎস, ঈশ্বর নিজের হোমের জন্য বাচ্চা ভেড়া যোগাবেন।” পরে উভয়ে একসঙ্গে গেলেন।9 ঈশ্বরের নির্দিষ্ট জায়গায় উপস্থিত হলে অব্রাহাম সেখানে যজ্ঞবেদি নির্মাণ করে কাঠ সাজালেন, পরে নিজের ছেলে ইসহাককে বেঁধে বেদিতে কাঠের ওপরে রাখলেন।10 পরে অব্রাহাম হাত বাড়িয়ে নিজের ছেলেকে হত্যা করার জন্য ছুরি গ্রহণ করলেন।11 এমন দিনের আকাশ থেকে সদাপ্রভুর দূত তাঁকে ডাকলেন, বললেন, “অব্রাহাম, অব্রাহাম।” তিনি বললেন, “দেখুন এই আমি।”12 তখন তিনি বললেন, “ছেলেটির প্রতি তোমার হাত বাড়িয়ো না ওর প্রতি কিছুই কর না, কারণ এখন আমি বুঝলাম, তুমি ঈশ্বরকে ভয় কর, আমাকে নিজের একমাত্র ছেলে দিতেও হয়নি।”13 তখন অব্রাহাম চোখ তুলে চাইলেন, আর দেখ, তাঁর পিছন দিকে একটি ভেড়া, তার শিং ঝোপে বাঁধা; পরে অব্রাহাম গিয়ে সেই মেষটি নিয়ে নিজের পুত্রের পরিবর্তে হোমের জন্য বলিদান করলেন।14 আর অব্রাহাম সেই জায়গার নাম যিহোবা -যিরি [সদাপ্রভু যোগাবেন] রাখলেন। এই জন্য আজও লোকে বলে, “সদাপ্রভুর পর্বতে যোগান হবে।”15 পরে সদাপ্রভুর দূত দ্বিতীয় বার আকাশ থেকে অব্রাহামকে ডেকে বললেন,16 সদাপ্রভু বলছেন, “তুমি এই কাজ করলে, আমাকে নিজের একমাত্র পুত্র দিতে অসম্মত হলে না,17 এই জন্য আমি আমারই দিব্য করে বলছি, আমি অবশ্য তোমাকে আশীর্বাদ করব এবং আকাশের তারাদের ও সমুদ্রতীরের বালির মতো তোমার অতিশয় বংশ বৃদ্ধি করব; তোমার বংশ শত্রুদের পুরদ্বার অধিকার করবে;18 আর তোমার বংশে পৃথিবীর সব জাতি আশীর্বাদ প্রাপ্ত হবে; কারণ তুমি আমার বাক্যে পালন করেছ।”
ইব্রাহিমের সাইন – কোরআনইব্রাহিমের চিহ্ন – তৌরাত (আদিপুস্তক 12: 1-7)
বলুন, আমরা ঈমান এনেছি আল্লাহর উপর এবং যা কিছু অবতীর্ণ হয়েছে আমাদের উপর, ইব্রাহীম, ইসমাঈল, ইসহাক, ইয়াকুব এবং তাঁদের সন্তানবর্গের উপর আর যা কিছু পেয়েছেন মূসা ও ঈসা এবং অন্যান্য নবী রসূলগণ তাঁদের পালনকর্তার পক্ষ থেকে। আমরা তাঁদের কারো মধ্যে পার্থক্য করি না। আর আমরা তাঁরই অনুগত। সূরা 3:84 (আল ইমরান)
    নাকি যাকিছু আল্লাহ তাদেরকে স্বীয় অনুগ্রহে দান করেছেন সে বিষয়ের জন্য মানুষকে হিংসা করে। অবশ্যই আমি ইব্রাহীমের বংশধরদেরকে কিতাব ও হেকমত দান করেছিলাম আর তাদেরকে দান করেছিলাম বিশাল রাজ্য। সুরত 4:54 (মহিলা)
আব্রামের প্রতি সদাপ্রভুর আহ্বান।12 সদাপ্রভু অব্রামকে বললেন, “তুমি নিজের দেশ, আত্মীয় ও বাবার বাড়ি ছেড়ে দিয়ে, আমি যে দে শ তোমাকে দেখাই, সেই দেশে চল।2 আমি তোমার থেকে এক মহাজাতি সৃষ্টি করব এবং তোমাকে আশীর্বাদ করে তোমার নাম মহৎ করব, তাতে তুমি আশীর্বাদের আকর হবে।3 যারা তোমাকে আশীর্বাদ করবে, তাদেরকে আমি আশীর্বাদ করব, যে কেউ তোমাকে অভিশাপ দেবে, তাকে আমি অভিশাপ দেব এবং তোমাতে পৃথিবীর যাবতীয় গোষ্ঠী আশীর্বাদ পাবে।”4 পরে অব্রাম সদাপ্রভুর সেই বাক্যানুসারে যাত্রা করলেন এবং লোটও তাঁর সঙ্গে গেলেন। হারন থেকে চলে যাবার দিন অব্রামের পঁচাত্তর বছর বয়স ছিল।5 অব্রাম নিজের স্ত্রী সারীকে ও ভাইয়ের ছেলে লোটকে এবং হারণে তাঁরা যে ধন উপার্জন করেছিলেন ও যে প্রাণীদেরকে লাভ করেছিলেন, সে সমস্ত নিয়ে কনান দেশে যাওয়ার জন্য যাত্রা করলেন এবং কনান দেশে আসলেন।6 আর অব্রাম দেশ দিয়ে যেতে যেতে শিখিমে, মোরির এলোন গাছের কাছে উপস্থিত হলেন। ঐ দিনের কনানীয়েরা সেই দেশে বাস করত।7 পরে সদাপ্রভু অব্রামকে দেখা দিয়ে বললেন, “আমি তোমার বংশকে এই দেশ দেব,” তখন সেই জায়গায় অব্রাম সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে এক যজ্ঞবেদি করলেন, যিনি তাঁকে দর্শন দিয়েছিলেন।

প্রথম নিস্তারপর্ব্ব স্থাপন।12 মিশর দেশে সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে বললেন,2 তোমাদের জন্য এই মাস হবে মাসগুলির শুরু; আর মাসটি বছরের সব মাসের মধ্যে প্রথম হবে।3 সমস্ত ইস্রায়েল মণ্ডলীকে এই কথা বল, তোমরা এই মাসের দশম দিনের তোমাদের বাবার বংশ অনুসারে প্রত্যেক পরিবার এক এক বাড়ির জন্য এক একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে।4 আর ভেড়ার বাচ্চা খাওয়ার জন্য যদি কারও পরিজন কম হয়, তবে সে ও তার পাশের বাড়ির প্রতিবেশীর লোকসংখ্যা অনুসারে একটি ভেড়ার বাচ্চা নেবে। তোমরা এক এক জনের খাওয়ার ক্ষমতা অনুসারে ভেড়ার বাচ্চা নেবে।5 তোমাদের সেই ভেড়ার বাচ্চাটি নির্দোষ ও এক বছরের পুরুষ বাচ্চা শাবক হবে; তোমরা ভেড়ার পালের কিংবা ছাগপালের মধ্যে থেকে তা নেবে;6 আর এই মাসের চৌদ্দ দিন পর্যন্ত রাখবে; পরে ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজ সন্ধ্যাবেলায় সেই ভেড়ার বাচ্চাটি হত্যা করবে।7 আর তারা তার কিছুটা রক্ত নেবে এবং যে যে বাড়ির মধ্যে ভেড়ার বাচ্চা খাবে, সেই বাড়ির দরজার চৌকাঠে ও মাথার ওপর তা লাগিয়ে দেবে।8 পরে সেই রাতে তার মাংস খাবে; আগুনে পুড়িয়ে খামির বিহীন রুটি ও তেতো শাকের সঙ্গে তা খাবে।9 তোমরা তার মাংস কাঁচা কিংবা জলে সেদ্ধ করে খেও না, কিন্তু তার মাথা, পা ও ভিতরের অংশ আগুনে পুড়িও।10 আর সকাল পর্যন্ত তার কিছুই রেখো না; কিন্তু সকাল পর্যন্ত যা বাকি থাকে, তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলো।11 আর তোমরা এই ভাবে তা খাবে; কোমর বাঁধবে, পায়ে জুতো পড়বে, হাতে লাঠি নেবে ও তাড়াতাড়ি খেয়ে নেবে; এটা সদাপ্রভুর নিস্তা রপর্ব।12 কারণ সেই রাতে আমি মিশর দেশের মধ্য দিয়ে যাব এবং মিশর দেশের মানুষের ও পশুর যাবতীয় প্রথমজাতকে আঘাত করব এবং মিশরের সমস্ত দেব তাদের উপরে শাস্তি নিয়ে আসব; আমিই সদাপ্রভু।13 সুতরাং তোমরা যে যে বাড়িতে থাক, তোমাদের পক্ষে ঐ রক্ত চিহ্ন হিসাবে সেই সেই বাড়ির উপরে থাকবে; তাতে আমি যখন মিশর দেশকে আঘাত করব, তখন সেই রক্ত দেখলে তোমাদেরকে ছেড়ে এগিয়ে যাব, মহামারীর আঘাত তোমাদের উপরে পড়বে না।14 আর এই দিন তোমাদের স্মরণীয় হবে এবং তোমরা এই দিন কে সদাপ্রভুর উৎসব বলে পালন করবে; বংশপরম্পরার চিরকালীন নিয়ম অনুসারে এই উৎসব পালন করবে।খামির বিহীন পর্ব15 তোমরা সাত দিন খামির বিহীন রুটি খাবে; প্রথম দিনের ই নিজের নিজের বাড়ি থেকে খামির দূর করবে, কারণ যে কেউ প্রথম দিন থেকে সপ্তম দিন পর্যন্ত খামিরযুক্ত খাবার খাবে, সেই প্রাণী ইস্রায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।16 আর প্রথম দিনের তোমাদের পবিত্র সভা হবে এবং সপ্তম দিনের ও তোমাদের পবিত্র সভা হবে; সেই দুই দিন প্রত্যেক প্রাণীর খাদ্য তৈরী ছাড়া অন্য কোন কাজ করবে না, শুধুমাত্র সেই কাজ করতে পারবে।17 এই ভাবে তোমরা খামির বিহীন রুটির পর্ব পালন করবে, কারণ এই দিনের আমি তোমাদের বাহিনীদেরকে মিশর দেশ থেকে বের করে আনলাম; তাই তোমরা বংশপরম্পরার চিরস্থায়ী বিধি অনুসারে এই দিন পালন করবে।18 তোমরা প্রথম মাসের চৌদ্দতম দিনের র সন্ধ্যাবেলা থেকে একুশতম দিনের র সন্ধ্যাবেলা পর্যন্ত খামির বিহীন রুটি খেও।19 সাত দিন তোমাদের বাড়িতে যেন খামির না থাকে; কারণ কি প্রবাসী কি দেশের, যে কোন প্রাণী খামির মেশানো দ্রব্য খাবে, সে ইস্রায়েল মণ্ডলী থেকে বিচ্ছিন্ন হবে।20 তোমরা খামিরযুক্ত কোনো জিনিস খেও না; তোমরা তোমাদের সমস্ত বাসস্থানে খামির বিহীন রুটি খেও।21 তখন মোশি ইস্রায়েলের সমস্ত প্রাচীনদেরকে ডেকে বললেন, তোমরা নিজেদের গোষ্ঠী অনুসারে এক একটি ভেড়ার বাচ্চা বের করে নাও, নিস্তারপর্ব্বের বলি হত্যা কর।22 আর এক গুচ্ছ এসোব নিয়ে গামলায় থাকা রক্তে ডুবিয়ে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে গামলায় থাকা রক্তের কিছুটা লাগিয়ে দেবে এবং সকাল পর্যন্ত তোমরা কেউই বাড়ির দরজার বাইরে যাবে না।23 কারণ সদাপ্রভু মিশরীয়দেরকে আঘাত করার জন্য তোমাদের কাছ দিয়ে যাবেন, তাতে দরজার মাথায় ও দুই চৌকাঠে সেই রক্ত দেখলে সদাপ্রভু সেই দরজা ছেড়ে আগে যাবেন, তোমাদের বাড়িতে বিনাশকারীকে প্রবেশ করে আঘাত করতে দেবেন না।24 আর তোমরা ও যুগ যুগ ধরে তোমাদের সন্তানেরা নিয়ম হিসাবে এই রীতি পালন করবে।25 আর সদাপ্রভু তাঁর প্রতিজ্ঞা অনুসারে তোমাদেরকে যে দেশ দেবেন, সেই দেশে যখন প্রবেশ করবে, তখনও এই আরাধনার আয়োজন করবে।26 আর তোমাদের সন্তানরা যখন তোমাদেরকে বলবে, তোমাদের এই আরাধনার অর্থ কি?27 তোমরা বলবে, এটা সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে নিস্তারপর্ব্বের যজ্ঞ, কারণ মিশরীয়দেরকে আঘাত করার দিনের তিনি মিশরে ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত বাড়ি ছেড়ে এগিয়ে গিয়েছিলেন, আমাদের বাড়ি রক্ষা করেছিলেন। তখন লোকেরা মাথা নিচু করে আরাধনা করল।28 পরে ইস্রায়েল সন্তানেরা গিয়ে, সদাপ্রভু মোশি ও হারোণকে যেরকম আদেশ দিয়েছিলেন, সেই রকম করল।29 পরে মাঝরাতে এই ঘটনা ঘটল, সদাপ্রভু সিংহাসনে বসা ফরৌণের প্রথমজাত সন্তান থেকে কারাগারে থাকা বন্দির প্রথমজাত সন্তান পর্যন্ত মিশর দেশের সমস্ত প্রথমজাত সন্তানকে ও পশুদের প্রথমজাত শাবকদেরকে আঘাত করলেন।30 তাতে ফরৌণ ও তাঁর দাসেরা এবং সমস্ত মিশরীয় লোক রাতে উঠল এবং মিশরে মহাকোলাহল হল; কারণ যে ঘরে কেউ মরে নি, এমন ঘরই ছিল না।মিশরের থেকে ইস্রায়েলীয়দের প্রস্থান31 তখন রাতের বেলায় ফরৌণ মোশি ও হারোণকে ডেকে বললেন, “তোমরা ওঠ, ইস্রায়েল সন্তানদের নিয়ে আমার প্রজাদের মধ্যে থেকে বের হও, তোমরা যাও, তোমাদের কথা অনুসারে গিয়ে সদাপ্রভুর সেবা কর।32 তোমাদের কথা অনুসারে ভেড়ার পাল ও গরুর পাল সব সঙ্গে নিয়ে চলে যাও এবং আমাকেও আশীর্বাদ কর।”33 তখন লোকদেরকে তাড়াতাড়ি দেশ থেকে বিদায় করার জন্য মিশরীয়েরা ব্যাকুল হয়ে পড়ল; কারণ তারা বলল, “আমরা সকলে মারা পড়লাম।”34 তাতে ময়দার তালে খামির মেশাবার আগে লোকেরা তা নিয়ে পেষাই করার পাত্র নিজেদের বস্ত্রে বেঁধে কাঁধে নিল।35 আর ইস্রায়েল সন্তানেরা মোশির বাক্য অনুসারে কাজ করল; ফলে তারা মিশরীয়দের কাছে রূপা, সোনার গয়না ও পোশাক চাইল;36 আর সদাপ্রভু মিশরীয়দের চোখে তাদেরকে অনুগ্রহপাত্র করলেন, তাই তারা যা চাইল, মিশরীয়েরা তাদেরকে তাই দিল। এই ভাবে তারা মিশরীয়দের ধনসম্পদ লুট করল।37 তখন ইস্রায়েল সন্তানেরা বালক ছাড়া কমবেশি পায়ে হাঁটা ছয় লক্ষ পুরুষ রামিষেষ থেকে সুক্কোতে যাত্রা করল।38 আর তাঁদের সঙ্গে মিশে থাকা সমস্ত লোকেরা এবং ভেড়া ও গরু, প্রচুর সংখ্যক পশু চলে গেল।39 পরে তারা মিশর থেকে আনা ময়দার তাল দিয়ে খামির বিহীন রুটি তৈরী করল, তাতে খামির মেশান হয়নি, কারণ তারা মিশর থেকে বেরিয়ে এসেছিল, সুতরাং দেরী করতে না চাওয়াতে নিজেদের জন্য খাদ্য দ্রব্য তৈরী করে নি।40 ইস্রায়েল সন্তানেরা চারশো ত্রিশ বছর মিশরে বসবাস করেছিল।41 সেই চারশো ত্রিশ বছরের শেষে, ঐ দিনের, সদাপ্রভুর সমস্ত বাহিনী মিশর দেশ থেকে বের হল।42 মিশর দেশ থেকে তাদেরকে বের করে আনার জন্য এটি ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে জেগে থাকার রাত, সেজন্য সমস্ত ইস্রায়েল সন্তানদের বংশ ধরে এই রাত ছিল সদাপ্রভুর উদ্দেশ্যে পালন করা অত্যন্ত পালনীয়।নিস্তার্পর্বের প্রকাশন

যাত্রা 12: 1-42

আজ্ঞাকারিতার জন্য ঈশ্বরের আশীর্বাদ।

28 আমি তোমাকে আজ যে সব আজ্ঞা আদেশ করছি, যত্নসহকারে সেই সব পালন করার জন্য যদি তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মনোযোগ সহকারে কান দাও, তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু পৃথিবীতে অবস্থিত সমস্ত জাতির উপরে তোমাকে ওঠাবেন;2 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিলে এই সব আশীর্বাদ তোমার ওপরে আসবে ও তোমাকে আশ্রয় করবে।3 তুমি শহরে আশীর্বাদযুক্ত হবে ও ক্ষেতে আশীর্বাদযুক্ত হবে।4 তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল, তোমার পশুর ফল, তোমার গরুদের বাচ্চা ও তোমার মেষীদের শাবক আশীর্বাদযুক্ত হবে।5 তোমার (ফলের) ঝুড়ি ও তোমার আটার কাঠের থালার আশীর্বাদযুক্ত হবে।6 ভিতরে আসার দিনের তুমি আশীর্বাদযুক্ত হবে এবং বাইরে যাবার দিনের তুমি আশীর্বাদযুক্ত হবে।7 তোমার যে শত্রুরা তোমার বিরুদ্ধে ওঠে, তাদেরকে সদাপ্রভু তোমার সামনে আঘাত করাবেন; তারা একটি রাস্তা দিয়ে তোমার বিরুদ্ধে আসবে, কিন্তু সপ্তম রাস্তা দিয়ে তোমার সামনে থেকে পালাবে।8 সদাপ্রভু আদেশ দিয়ে তোমার গোলাঘরের বিষয়ে ও তুমি যে কোনো কাজে হাত দাও, তার বিষয়ে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন এবং তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিচ্ছেন, সেখানে তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।9 সদাপ্রভু নিজের শপথ অনুসারে তোমাকে নিজের পবিত্র লোক বলে স্থাপন করবেন; যদি তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর আজ্ঞা পালন কর ও তাঁর পথে চল।10 আর পৃথিবীর সব জাতি দেখতে পাবে যে, তোমার উপরে সদাপ্রভুর নাম কীর্তিত হয়েছে এবং তারা তোমার থেকে ভয় পাবে।11 আর সদাপ্রভু তোমাকে যে দেশ দিতে তোমার পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে তিনি ভালোর জন্যেই তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে উন্নত করবেন।12 সঠিক দিনের তোমার ভূমির জন্য বৃষ্টি দিতে ও তোমার হাতের সব কাজে আশীর্বাদ করতে সদাপ্রভু নিজের আকাশের ধনভান্ডার খুলে দেবেন এবং তুমি অনেক জাতিকে ঋণ দেবে, কিন্তু নিজে ঋণ নেবে না।13 আর সদাপ্রভু তোমাকে প্রধান করবেন, লেজের মতো করবেন না; তুমি নত না হয়ে শুধু উন্নত হবে; যদি তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর এই যে সব আজ্ঞা যত্নসহকারে পালন করতে আমি তোমাকে আজ আদেশ করছি, এই সব কিছুতে কান দিতে হবে;14 এবং আজ আমি তোমাদেরকে যে সব কথা আজ্ঞা করছি, অন্য দেবতাদের সেবা করার জন্যে তাদের অনুগামী হবার জন্য তোমাকে সেই সব কথার ডান দিকে কি বাম দিকে ফিরতে হবে না।অনাজ্ঞাকারিতার জন্য ঈশ্বরের অভিশাপ15 কিন্তু যদি তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান না দাও, আমি আজ তোমাকে তাঁর যে সব আজ্ঞা ও বিধি আদেশ করছি, যত্ন সহকারে সেই সব পালন না কর, তবে এই সমস্ত অভিশাপ তোমার প্রতি আসবে ও তোমার থেকে এগিয়ে যাবে।16 তুমি শহরে শাপগ্রস্ত হবে ও ক্ষেতে শাপগ্রস্ত হবে।17 তোমার (ফলের) ঝুড়ি ও তোমার আটার কাঠের থালা শাপগ্রস্ত হবে।18 তোমার শরীরের ফল, তোমার ভূমির ফল এবং তোমার গরুর বাচ্চা ও তোমার মেষীদের শাবক শাপগ্রস্ত হবে।19 ভিতরে আসার দিনের তুমি শাপগ্রস্ত হবে ও বাইরে যাবার দিনের তুমি শাপগ্রস্ত হবে।20 যে পর্যন্ত তোমার ধ্বংস ও হঠাৎ বিনাশ না হয়, সেই পর্যন্ত যে কোনো কাজে তুমি হাত দাও, সেই কাজে সদাপ্রভু তোমার উপরে অভিশাপ, উদ্বেগ ও তিরস্কার পাঠাবেন; এর কারণ তোমার খারাপ কাজ সব, যার মাধ্যমে তুমি আমাকে পরিত্যাগ করেছ।21 তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেই দেশ থেকে যতক্ষণ উচ্ছেদ না হয়, ততক্ষণ সদাপ্রভু তোমাকে মহামারী দেবেন।22 সদাপ্রভু ছোঁয়াচে রোগ, জ্বর, জ্বালা, প্রচণ্ড উত্তাপ ও খড়্গ এবং শস্যের শোষ ও ম্লানির মাধ্যমে তোমাকে আঘাত করবেন; তোমার বিনাশ না হওয়া পর্যন্ত সে সব তোমার অনুসরণ করবে।23 আর তোমার মাথার উপরে অবস্থিত আকাশ ব্রোঞ্জ ও নীচে অবস্থিত ভূমি লোহার মতো হবে।24 সদাপ্রভু তোমার দেশে জলের পরিবর্তে ধূলো ও বালি বর্ষণ করবেন; যে পর্যন্ত তোমার বিনাশ না হয়, ততক্ষণ তা আকাশ থেকে নেমে তোমার উপরে পড়বে।25 সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের সামনে তোমাকে আঘাত করাবেন; তুমি এক রাস্তা দিয়ে তাদের বিরুদ্ধে যাবে, কিন্তু সপ্তম রাস্তা দিয়ে তাদের সামনে থেকে পালাবে এবং পৃথিবীর সমস্ত রাজ্যের মধ্যে বিরক্তিজনক হবে।26 আর তোমার মৃতদেহ আকাশের পাখিদের ও মাটিতে চরা পশুদের খাদ্য হবে; কেউ তাদেরকে আতঙ্কিত করবে না।27 সদাপ্রভু তোমাকে মিশরীয় ফোঁড়া এবং মহামারীর ঘাত, জঘন্য ও খোঁস পাঁচড়া, এই সব রোগের মাধ্যমে এমন আঘাত করবেন যে, তুমি আরোগ্য পেতে পারবে না।28 সদাপ্রভু উন্মাদ, অন্ধতা ও মানসিক বিভ্রান্তের মাধ্যমে তোমাকে আঘাত করবেন।29 অন্ধ যেমন অন্ধকারে হাঁতড়ে বেড়ায়, সেরকম তুমি দুপুরবেলায় হাঁতড়ে বেড়াবে ও নিজের পথে উন্নতিলাভ হবে না এবং সবদিন শুধু অত্যাচারিত ও লুন্ঠিত হবে, কেউ তোমাকে রক্ষা করবে না।30 তোমার প্রতি মেয়ের বাগ্‌দান হবে, কিন্তু অন্য পুরুষ তারসঙ্গে শোবে; তুমি বাড়ি তৈরী করবে, কিন্তু তাতে বাস করতে পাবে না; আঙ্গুর ক্ষেত রোপণ করবে, কিন্তু তার ফল ভোগ করবে না।31 তোমার গরু তোমার সামনে মারা যাবে, আর তুমি তার মাংস খেতে পারবে না; তোমার গাধা তোমার সামনে থেকে জোর করে নিয়ে যাবে, তা তোমাকে ফিরিয়ে দেওয়া যাবে না; তোমার মেষপাল তোমার শত্রুদেরকে দেওয়া হবে, তোমার জন্যে সাহায্যকারী কেউ থাকবে না।32 তোমার ছেলেমেয়েদেরকে অন্য এক জাতিকে দেওয়া হবে ও সমস্ত দিন তাদের অপেক্ষায় চাইতে চাইতে তোমার চোখ ব্যর্থ হবে এবং তোমার হাতে কোনো শক্তি থাকবে না।33 তোমার অজানা এক জাতি তোমার ভূমির ফল ও তোমার পরিশ্রমের সমস্ত ফল ভোগ করবে এবং তুমি সবদিন শুধু অত্যাচারিত ও চূর্ণ হবে34 আর তোমার চোখ যা দেখবে, তার জন্য তুমি উন্মাদ হবে।35 সদাপ্রভু তোমার হাঁটু, পা ও পায়ের তলা থেকে মাথার তালু পর্যন্ত কঠিন স্ফোটকের মাধ্যমে আঘাত করবেন যা আরোগ্য হবে না।36 সদাপ্রভু তোমাকে এবং যে রাজাকে তুমি নিজের ওপরে নিযুক্ত করবে, তাকে তোমার অজানা এবং তোমার পূর্বপুরুষদের অজানা এক জাতির কাছে নিয়ে যাবেন; সেই জায়গায় তুমি অন্য দেবতাদের, কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।37 আর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব জাতির মধ্যে নিয়ে যাবেন, তাদের কাছে তুমি বিস্ময়ের, প্রবাদের ও উপহাসের পাত্র হবে।38 তুমি বহু বীজ ক্ষেতে বয়ে নিয়ে যাবে, কিন্তু অল্প সংগ্রহ করবে; কারণ পঙ্গপাল তা বিনষ্ট করবে।39 তুমি আঙ্গুর ক্ষেত রোপণ করে তার চাষ করবে, কিন্তু আঙ্গুর রস পান করতে কি আঙ্গুর ফল জড়ো করতে পারবে না; কারণ পোকায় তা খেয়ে ফেলবে।40 তোমার সকল অঞ্চলে জিতগাছ হবে, কিন্তু তুমি তেল ঘষতে পারবে না; কারণ তোমার জিতগাছের ফল ঝরে পড়বে।41 তুমি ছেলে মেয়েদের জন্ম দেবে, কিন্তু তারা তোমার হবে না; কারণ তারা বন্দি হয়ে যাবে।42 পঙ্গপাল তোমার সব গাছ ও ভূমির ফল অধিকার করবে।43 তোমার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী তোমার থেকে আরো উন্নত হবে ও তুমি আরো অবনত হবে।44 সে তোমাকে ঋণ দেবে, কিন্তু তুমি তাকে ঋণ দেবে না; সে মাথার মতো হবে ও তুমি লেজের মতো হবে।45 এই সমস্ত অভিশাপ তোমার ওপরে আসবে, তোমার অনুসরণ করে তোমার ধ্বংস পর্যন্ত তোমার থেকে এগিয়ে যাবে; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে যে সব আজ্ঞা ও বিধি দিয়েছেন, তুমি সে সব পালনের জন্যে তাঁর রবে কান দিলে না।46 এ সব তোমার ও চিরকাল তোমার বংশের উপরে চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণের মতো থাকবে।47 কারণ সমৃদ্ধির জন্য তুমি আনন্দে এবং উল্লাসে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর দাসত্ব করতে না;48 এই জন্য সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে যে শত্রুদেরকে পাঠাবেন, তুমি খিদেতে, তৃষ্ণায়, উলঙ্গতায় ও সব বিষয়ের অভাব ভোগ করতে করতে তাদের দাসত্ব করবে এবং যে পর্যন্ত তিসদাপ্রভু নি তোমার ধ্বংস না করেন, সে পর্যন্ত সদাপ্রভু তিনি তোমার ঘাড়ে লোহার যোঁ য়ালি দিয়ে রাখবেন।49 সদাপ্রভুর তোমার বিরুদ্ধে বহু দূর থেকে, পৃথিবীর শেষ থেকে এক জাতিকে আনবেন; যেমন ঈগল পাখি উড়ে আসে, সে সেইভাবে আসবে; সেই জাতির ভাষা তুমি বুঝতে পারবে না।50 সেই জাতি ভয়ঙ্কর মুখ, সে বয়স্ককে শ্রদ্ধা করবে না ও বালকের প্রতি দয়া করবে না।51 আর যে পর্যন্ত তোমার ধ্বংস না হবে, ততক্ষণ সে তোমার পশুর ফল ও তোমার ভূমির ফল খাবে; যতক্ষণ সে তোমার ধ্বংস সম্পন্ন না করবে, ততক্ষণ তোমার জন্য শস্য, আঙ্গুর রস কিংবা তেল, তোমার গরুর বাচ্চা কিংবা তোমার মেষীর শাবক বাকি রাখবে না।52 আর তোমার সব দেশে যে সব উঁচু ও সুরক্ষিত দেওয়ালে তুমি বিশ্বাস করতে, সে সব যতক্ষণ ভূমিসাৎ না হবে, ততক্ষণ সে তোমার সব শহরের দরজায় তোমাকে অবরোধ করবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া তোমার সমস্ত দেশে সব শহরের দরজায় সে তোমাকে অবরোধ করবে।53 আর যখন তোমার শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে, তখন তুমি নিজের শরীরের ফল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দেওয়া নিজের ছেলে মেয়েদের মাংস খাবে।54 যখন সব শহরের দরজায় শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে, তখন তোমার মধ্যে যে পুরুষ কোমল ও খুব বিলাসী, নিজের ভাইয়ের, তার প্রিয় স্ত্রী ও বাকি ছেলে মেয়েদের প্রতি সে ঈর্ষাপূর্ণ যে,55 সে তাদের কাউকেও নিজের ছেলে মেয়েদের মাংসের কিছুই দেবে না; তার কিছুমাত্র বাকি না থাকার জন্য সে তাদেরকে খাবে।56 যখন সব শহরের দরজায় শত্রুদের মাধ্যমে তুমি অবরুদ্ধ ও কষ্ট পাবে তখন যে স্ত্রী কোমলতা ও বিলাসিতার জন্য নিজের পা মাটিতে রাখতে সাহস করত না, তোমার মাঝে এমন কোমল ও বিলাসী মহিলার চোখ নিজের স্বামীর, নিজের ছেলে ও মেয়ের ওপরে,57 এমন কি, নিজের দুই পায়ের মধ্য থেকে বের হওয়া সদ্যোজাত ও নিজের প্রসবিত শিশুদের ওপরে অত্যাচার করবে; কারণ সব কিছুর অভাবের জন্য সে এদেরকে গোপনে খাবে।58 তুমি যদি এই বইতে লেখা নিয়মের সমস্ত কথা যত্ন সহকারে পালন না কর; এভাবে যদি “তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু” এই গৌরবান্বিত ও ভয়াবহ নামকে ভয় না কর;59 তবে সদাপ্রভু তোমাকে ও তোমার বংশকে ভয়ঙ্কর মহামারী দেবেন; ফলে অনেক দিন স্থায়ী মহাঘাত ও অনেক দিন স্থায়ী কঠিন রোগ দেবেন।60 আর তুমি যা থেকে ভয় পেতে, সেই মিশরীয় সব রোগ আবার তোমার উপরে আনবেন; সে সব তোমার সঙ্গী হবে।61 আর যা এই নিয়মের বইয়ে লেখা নেই, এমন প্রত্যেক রোগ ও আঘাত সদাপ্রভু তোমার ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত তোমার উপরে আনবেন।62 তাতে আকাশের তারার মতো বহুসংখ্যক ছিলে যে তোমরা, তোমরা কিছু সংখ্যক বাকি থাকবে; কারণ তুমি নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে কান দিতে না।63 আর তোমাদের ভালো ও বহুগুণ করতে যেমন সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে আনন্দ করতেন, সেরকম তোমাদের ধ্বংস ও বিনষ্ট করতে সদাপ্রভু তোমাদের বিষয়ে আনন্দ করবেন এবং তুমি যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছ, সেখান থেকে তোমরা অপহৃত হবে।64 আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত থেকে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সব জাতির মধ্যে ছড়িয়ে দেবেন; সেই জায়গায় তুমি নিজের ও নিজের পূর্বপুরুষদের অজানা অন্য দেবতাদের, কাঠ ও পাথরের সেবা করবে।65 আর তুমি সেই জাতিদের মধ্যে কিছু সুখ পাবে না ও তোমার পায়ের জন্য বিশ্রামের জায়গা থাকবে না, কিন্তু সদাপ্রভু সেই জায়গায় তোমাকে হৃদয়ের কম্পতা, চোখের ক্ষীণতা ও প্রাণের শোক দেবেন।66 আর তোমার জীবন তোমার দৃষ্টিতে সংশয়ে ঝুলে থাকবে এবং তুমি দিন রাত ভয় করবে ও নিজের জীবনের বিষয়ে তোমার বিশ্বাস থাকবে না।67 তুমি হৃদয়ে যে ভয় করবে ও চোখে যে ভয়ঙ্কর দৃশ্য দেখবে, তার জন্য সকালে বলবে, হায় হায়, কখন সন্ধ্যা হবে? এবং সন্ধ্যাবেলায় বলবে, হায় হায়, কখন সকাল হবে?68 আর যে পথের বিষয়ে আমি তোমাকে বলেছি, তুমি তা আর দেখবে না, সদাপ্রভু সেই মিশর দেশের পথে জাহাজে করে তোমাকে আবার নিয়ে যাবেন এবং সেই জায়গায় তোমরা দাসদাসীরূপে নিজের শত্রুদের কাছে বিক্রীত হতে চাইবে; কিন্তু কেউ তোমাদেরকে কিনবে না।

নিয়মের নবীকরণ

29 সদাপ্রভু হোরেবে ইস্রায়েলের লোকদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেছিলেন, তাছাড়া মোয়াব দেশে তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করতে মোশিকে আজ্ঞা করলেন, এই সব সেই নিয়মের বাক্য।মোশির চতুর্থ প্রচার।2 মোশি সমস্ত ইস্রায়েলকে ডাকলেন এবং তাদেরকে বললেন, সদাপ্রভু মিশর দেশে ফরৌণের, তাঁর সব দাসের ও সব দেশের প্রতি যে সব কাজ তোমাদের সামনে করেছিলেন, তা তোমরা দেখেছ;3 পরীক্ষাসিদ্ধ সেই সব মহৎ প্রমাণ, সেই সব চিহ্ন ও সেই সব মহৎ অদ্ভুত লক্ষণ তোমরা নিজের চোখে দেখেছ;4 কিন্তু সদাপ্রভু আজ পর্যন্ত তোমাদেরকে জানার হৃদয়, দেখার চোখ ও শোনার কান দেননি।5 আমি চল্লিশ বছর মরুপ্রান্তে তোমাদেরকে চালিয়েছি; তোমাদের গায়ে তোমাদের পোষাক পুরানো হয়নি ও তোমার পায়ে তোমার জুতা পুরাতন হয়নি;6 তোমরা রুটি খাওনি এবং আঙ্গুর রস কি সুরা পান করনি; যেন তোমরা জানতে পার যে, আমিই তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু।7 আর তোমরা যখন এই জায়গায় উপস্থিত হলে, তখন হিষ্‌বোনের রাজা সীহোন ও বাশনের রাজা ওগ আমাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে বের হলে আমরা তাদেরকে আঘাত করলাম;8 আর তাদের দেশ নিয়ে অধিকারের জন্যে রূবেণীয় ও গাদীয়দেরকে এবং মনঃশীয়দের অর্ধেক বংশকে দিলাম।9 অতএব তোমরা যা যা করবে, সমস্ত বিষয়ে যেন উন্নতিলাভ করতে পার, এই জন্য এই নিয়মের কথা সব পালন কোরো এবং সেই অনুসারে কাজ কোরো।10 তোমরা সবাই আজ তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে দাঁড়িয়ে আছ, তোমাদের অধ্যক্ষরা, তোমাদের বংশ সব, তোমাদের প্রাচীনরা, তোমাদের শাসকরা, এমন কি, ইস্রায়েলের সব পুরুষ,11 তোমাদের বালক বালিকারা, তোমাদের স্ত্রীরা এবং তোমার শিবিরের মধ্যে তোমার কাঠ কাটার লোক থেকে জলবাহক পর্যন্ত এবং বিদেশী, সবাই আছ;12 যেন তুমি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই নিয়মে ও সেই শপথে আবদ্ধ হও, যা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু আজ তোমার সঙ্গে করছেন;13 এই জন্য করছেন, যেন তিনি আজ তোমাকে নিজের লোক হিসাবে স্থাপন করেন ও তোমার ঈশ্বর হন, যেমন তিনি তোমাকে বলেছেন, আর যেমন তিনি তোমার পূর্বপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের কাছে শপথ করেছেন।14 এবং আমি এই নিয়ম ও এই শপথ শুধু তোমাদেরই সঙ্গে করছি, তা না;15 বরং আমাদের সঙ্গে আজ এই জায়গায় আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সামনে যে কেউ দাঁড়িয়ে আছে ও আমাদের সঙ্গে আজ যে নেই, সেই সবের সঙ্গে করছি।16 কারণ আমরা মিশর দেশে যেভাবে বাস করেছি এবং জাতিদের মধ্যে দিয়ে যেভাবে এসেছি, তা তোমরা জানো17 এবং তাদের ঘৃণার্হ জিনিস সব, তাদের মধ্যে কাঠের, পাথরের, রূপার ও সোনার মূর্ত্তি সব দেখেছ।18 এই জাতিদের দেবতাদের সেবা করতে যাবার জন্য আজ আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু থেকে যার হৃদয় অন্য পথে ফিরে যায়, এমন কোনো পুরুষ কিংবা স্ত্রী কিংবা গোষ্ঠী কিংবা বংশ তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে, বিষগাছের কি নাগদানার মূল তোমাদের মধ্যে যেন না থাকে19 এবং এই শাপের কথা শোনার দিনের কেউ যেন মনে মনে নিজের ধন্যবাদ করত না বলে, আমি ভিজের সঙ্গে শুকনোর ধ্বংস করার জন্য নিজের হৃদয়ের একগুঁয়েমিতায় চললেও আমার শান্তি হবে।20 সদাপ্রভু তাকে ক্ষমা করতে রাজি হবেন না, কিন্তু সেই মানুষের ওপরে তখন সদাপ্রভুর রাগ ও তাঁর কোপ ধূমায়িত হবে এবং এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ তার ওপরে শুয়ে থাকবে এবং সদাপ্রভু আকাশমণ্ডলের নীচে থেকে তার নাম মুছে দেবেন।21 আর এই নিয়মের বইয়ে লেখা নিয়মের সব শাপ অনুসারে সদা প্রভু তাকে ইস্রায়েলের সব বংশ থেকে বিপর্যয়ের জন্য বিতাড়িত করবেন।22 আর সদাপ্রভু সেই দেশের উপরে যে সব আঘাত ও রোগ আনবেন, তা যখন আগামী বংশ, তোমাদের পরে উৎপন্ন তোমাদের সন্তানরা এবং বিদেশ থেকে আসা বিদেশী দেখবে23 এবং সদাপ্রভু নিজের রাগে ও ক্রোধে যে সদোম, ঘমোরা, অদমা ও সবোয়িম শহর উৎপন্ন করেছিলেন, তার মত এই দেশের সব ভূমি গন্ধক, জলন্ত লবণে পরিপূর্ণ হয়েছে, তাতে কিছুই বোনা যায় না ও তা ফল উৎপন্ন করে না ও তাতে কোনো তৃণ হয় না, এ সব যখন দেখবে; তখন তারা বলবে,24 এমন কি, সব জাতি বলবে, সদাপ্রভু এ দেশের প্রতি কেন এমন করলেন? এমন মহাক্রোধ প্রজ্বলিত হবার কারণ কি?25 তখন লোকে বলবে, কারণ এই, তাদের পূর্বপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিশর দেশ থেকে সেই পূর্বপুরুষদেরকে বের করে আনার দিনের তাদের সঙ্গে যে নিয়ম স্থির করেন, সেই নিয়ম তারা ত্যাগ করেছিল26 আর গিয়ে অন্য দেবতাদের সেবা করেছিল, যে দেবতাদেরকে তারা জানত না, যাদেরকে তিনি তাদের জন্য নির্ধারণ করেননি, সেই দেবতাদের কাছে নত করেছিল;27 তাই এই বইয়ে লেখা সমস্ত শাপ দেশের উপর আনতে এই দেশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর রাগ প্রজ্বলিত হল28 এবং সদাপ্রভু রাগে, ক্রোধে ও মহাকোপে তাদেরকে তাদের দেশ থেকে অন্য দেশে নিক্ষেপ করেছেন, যেমন আজ দেখা যাচ্ছে।29 গোপন বিষয় সব আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর অধিকার; কিন্তু প্রকাশিত বিষয় সব আমাদের ও চিরকাল আমাদের বংশধরদের অধিকার, যেন এই নিয়মের সব কথা আমরা পালন করতে পারি।

সদাপ্রভুর প্রতি ফেরা পরে উন্নতি

30 আমি তোমার সামনে এই যে আশীর্বাদ ও অভিশাপ স্থাপন করলাম, তখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে সব জাতির মধ্যে তোমাকে তাড়িয়ে দেবেন, সেখানে যদি তুমি মনে চেতনা পাও2 এবং তুমি ও তোমার সন্তানরা যদি সম্পূর্ণ হৃদয়ের ও সম্পূর্ণ প্রাণের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর কাছে ফিরে এস এবং আজ আমি তোমাকে যে সব আদেশ দিচ্ছি, সেই অনুসারে যদি তাঁর রবে অবধান কর;3 তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার বন্দিত্ব ফেরাবেন, তোমার প্রতি দয়া করবেন ও যে সব জাতির মধ্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ছড়িয়ে দিয়েছিলেন, সেখান থেকে আবার তোমাকে সংগ্রহ করবেন।4 যদি তোমরা কেউ নির্বাসিত হয়ে আকাশম ণ্ডলের (পৃথিবীর শেষ প্রান্তেও) থাক, তা সত্বেও তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেখান থেকে তোমাকে সংগ্রহ করবেন ও সেখান থেকে নিয়ে আসবেন।5 আর তোমার পূর্বপুরুষেরা যে দেশ অধিকার করেছিল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দেশে তোমাকে আনবেন ও তুমি তা অধিকার করবে এবং তিনি তোমার ভালো করবেন ও তোমার পূর্বপুরুষদের (পিতা) থেকেও তোমার বহুগুণ করবেন।6 আর তুমি যেন সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে নিজের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবেসে জীবন লাভ কর, এই জন্য তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার হৃদয় ও তোমার বংশের হৃদয় ছিন্নত্বক্‌ করবেন।7 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার শত্রুদের ওপরে ও যারা তোমাকে ঘৃণা করে তাড়না করেছে, তাদের ওপরে এই সমস্ত শাপ দেবেন।8 আর তুমি ফিরে সদাপ্রভুর রবে অনুসরণ করবে এবং আমি আজই তোমাকে তাঁর যে সব আদেশ জানাচ্ছি, তা পালন করবে।9 আর তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সমৃদ্ধির জন্যেই তোমার হাতের সব কাজে, তোমার শরীরের ফলে, তোমার পশুর ফলে ও তোমার ভূমির ফলে তোমাকে ঐশ্বর্য্যশালী করবেন; যেহেতু সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদের মধ্যেও যেমন আনন্দ করতেন, সমৃদ্ধির জন্যে আবার তোমার মধ্যেও সেরকম আনন্দ করবেন;10 শুধু যদি তুমি এই নিয়মের বইয়ে লেখা তাঁর আদেশ সব ও তাঁর বিধি সব পালনের জন্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর রবে মেনে চল, যদি সমস্ত হৃদয় ও সমস্ত প্রাণের সঙ্গে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর প্রতি ফের।জীবন ও মৃত্যুর প্রস্তাব11 কারণ আমি আজ তোমাকে এই যে আজ্ঞা দিচ্ছি, তা তোমার বোঝার জন্য কঠিন না এবং দূরেও না।12 তা স্বর্গে না যে, তুমি বলবে, আমরা যেন তা পালন করি, এই জন্য কে আমাদের জন্যে স্বর্গে গিয়ে তা এনে আমাদেরকে শুনাবে?13 আর তা সমুদ্রের পারেও না যে, তুমি বলবে, আমরা যেন তা পালন করি, এই জন্য কে আমাদের জন্যে সমুদ্র পার হয়ে তা এনে আমাদেরকে শোনাবে?14 কিন্তু সেই কথা তোমার খুব কাছে, তা তোমার মুখে ও তোমার হৃদয়ে, যেন তুমি তা পালন করতে পার।15 দেখ, আমি আজই তোমার সামনে জীবন ও ভালো এবং মৃত্যু ও অমঙ্গল রাখলাম;16 যদি আমি আজ তোমাকে এই আজ্ঞা দিচ্ছি যে, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাসতে, তাঁর পথে চলতে এবং তাঁর আজ্ঞা, তাঁর বিধি ও তাঁর শাসন পালন করতে হবে; তা করলে তুমি বাঁচবে ও বহুগুণ হবে এবং যে দেশ অধিকার করতে যাচ্ছে, সেই দেশে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে আশীর্বাদ করবেন।17 কিন্তু যদি তোমার হৃদয় অন্য পথে যায় ও তুমি কথা না শুনে প্রতিসারিত হয়ে অন্য দেবতাদের কাছে নত হও ও তাদের সেবা কর;18 তবে আজ আমি তোমাদেরকে জানাচ্ছি, তোমরা অবশ্যই বিনষ্ট হবে, তোমরা অধিকারের জন্যে যে দেশে প্রবেশ করতে যর্দ্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে তোমাদের জীবনকাল দীর্ঘদিন হবে না।19 আমি আজ তোমাদের বিরুদ্ধে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে সাক্ষী করে বলছি যে, আমি তোমার সামনে জীবন ও মৃত্যু, আশীর্বাদ ও শাপ রাখলাম। অতএব জীবন বেছে নাও, যেন তুমি ও তোমার বংশধর বাঁচতে পার;20 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভালবাস, তাঁর রবে মেনে চল ও তাতে আসক্ত হও; কারণ তিনিই তোমার জীবন ও তোমার দীর্ঘআয়ুর মতো; তা হলে সদাপ্রভু তোমার পূর্বপুরুষদেরকে, অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবকে, যে দেশ দিতে শপথ করেছিলেন, সেই দেশে তুমি বাস করতে পারবে।

মোশির উত্তরাধিকারী যিহোশূয়।

31 পরে মোশি গিয়ে সব ইস্রায়েলকে এই সব কথা বললেন।2 আর তিনি তাদেরকে বললেন, “আজ আমার বয়স একশো কুড়ি বছর, আমি আর বাইরে যেতে ও ভিতরে আসতে পারি না এবং সদাপ্রভু আমাকে বলেছেন, তুমি এই যর্দ্দন (নদী) পার হবে না।3 তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে তোমার আগে গিয়ে পার হয়ে যাবেন; তিনিই তোমার সামনে থেকে সেই জাতিদেরকে ধ্বংস করবেন, তাতে তুমি তাদেরকে তাড়িয়ে দেবে; সদাপ্রভু যেমন বলেছেন, তেমনি যিহোশূয়ই তোমার আগে গিয়ে পার হয়ে যাবে।4 আর সদাপ্রভু ইমোরীয়দের সীহোন ও ওগ নামে দুই রাজাকে ধ্বংস করে তাদের প্রতি ও তাদের দেশের প্রতি যেমন করেছেন, ওদের প্রতিও সেরকম করবেন।5 যখন তোমরা যুদ্ধে তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে সদাপ্রভু তাদের বিরুদ্ধে তোমাদের জয় দেবেন, তখন তোমরা আমার আদেশ দেওয়া সব আদেশ অনুসারে তাদের প্রতি ব্যবহার করবে।6 তোমরা শক্তিশালী হও ও সাহস কর, ভয় কোরো না, তাদের থেকে ভীত হয়ো না; কারণ তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু নিজে তোমার সঙ্গে যাচ্ছেন, তিনি তোমাকে ছাড়বেন না, তোমাকে ত্যাগ করবেন না।”7 আর মোশি যিহোশূয়কে ডেকে পুরো ইস্রায়েলের সামনে বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও ও সাহস কর, কারণ সদাপ্রভু এদেরকে যে দেশ দিতে এদের পূর্বপুরুষদের কাছে শপথ করেছেন, সেই দেশে এই লোকদের সঙ্গে তুমি প্রবেশ করবে এবং তুমি এদেরকে সেই দেশ অধিকার করাবে।8 আর সদাপ্রভু নিজে তোমার আগে আগে যাচ্ছেন; তিনিই তোমার সঙ্গে থাকবেন; তিনি তোমাকে ছাড়বেন না, তোমাকে ত্যাগ করবেন না; ভয় কোরো না, নিরাশ হয়ো না।”ব্যবস্থার অধ্যয়ন9 পরে মোশি এই নিয়ম লিখলেন এবং লেবির ছেলেরা যাজকরা, যারা সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক বহন করত, তাদেরকে ও ইস্রায়েলের সব প্রাচীনদেরকে সমর্পণ করলেন।10 আর মোশি তাদেরকে এই আদেশ দিলেন, “প্রত্যেক সাত বছরের শেষে, ঋণ বাতিলের দিনের কুটিরের পর্বে,11 যখন সমস্ত ইস্রায়েল তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর মনোনীত জায়গায় তাঁর সামনে উপস্থিত হবে, সেই দিনের তুমি সমস্ত ইস্রায়েলের সামনে তাদের কাছে এই নিয়ম পড়বে।12 তুমি লোকদেরকে, পুরুষ, স্ত্রী, বালক বালিকা ও তোমার শহরের দরজার মধ্যবর্ত্তী বিদেশী সবাইকে জড়ো করবে, যেন তারা শুনে শেখে ও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করে এবং এই নিয়মের সব কথা যত্নসহকারে পালন করে13 আর তাদের যে সন্তানরা এই সব জানে না, তারা যেন শুনে এবং যে দেশ অধিকার করতে তোমরা যর্দ্দন পার হয়ে যাচ্ছ, সেই দেশে যতদিন বেঁচে থাকে, তারা ততদিন যেন তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুকে ভয় করতে শেখে।”ইস্রায়েলের বিদ্রোহের ভবিষ্যদ্বাণী14 পরে সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, তোমার মৃত্যুদিন কাছাকাছি, তুমি যিহোশূয়কে ডাক এবং তোমরা উভয়ে সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হও, আমি তাকে আদেশ দেব।” তাতে মোশি ও যিহোশূয় গিয়ে সমাগম তাঁবুতে উপস্থিত হলেন।15 আর সদাপ্রভু সেই তাঁবুতে মেঘের স্তম্ভে দেখা দিলেন; সেই মেঘের স্তম্ভ তাঁবু দরজার ওপরে স্থির থাকল।16 তখন সদাপ্রভু মোশিকে বললেন, “দেখ, তুমি নিজের পূর্বপুরুষদের (পিতা) সঙ্গে শুবে, আর এই লোকেরা উঠবে এবং যে দেশে প্রবেশ করতে যাচ্ছে, সেই দেশের বিদেশী দেবতাদের অনুসরণে ব্যভিচার করবে এবং আমাকে ত্যাগ করবে ও তাদের সঙ্গে করে আমার নিয়ম ভাঙ্গবে।17 সেই দিনের তাদের বিরুদ্ধে আমার রাগ প্রজ্বলিত হবে, আমি তাদেরকে ত্যাগ করব ও তাদের থেকে নিজের মুখ লুকাব আর তারা কবলিত হবে এবং তাদের ওপরে নানা ধরনের অমঙ্গল ও সঙ্কট ঘটবে; সেই দিনের তারা বলবে, ‘আমাদের উপর এই সমস্ত অমঙ্গল ঘটেছে, এর কারণ কি এটাই না, যে আমাদের ঈশ্বর আমাদের মধ্যবর্ত্তী নন?’18 বাস্তবিক তারা অন্য দেবতাদের কাছে ফিরে যে সব খারাপ কাজ করবে, তার জন্য সেই দিনের আমি অবশ্য তাদের থেকে নিজের মুখ ঢাকব।19 এখন তোমরা নিজেদের জন্য এই গান লেখো এবং তুমি ইস্রায়েলের লোকদেরকে এই গান শেখাও ও তাদেরকে মুখস্থ করাও; যেন এই গান ইস্রায়েলের লোকদের বিরুদ্ধে আমার সাক্ষী হয়।20 কারণ আমি যে দেশ দিতে তাদের পূর্বপুরুষদের (পিতা) কাছে শপথ করেছি, সেই দুধ ও মধুপ্রবাহী দে শ তাদেরকে নিয়ে গেলে পর যখন তারা খেয়ে তৃপ্তি ও মোটা হবে, তখন অন্য দেবতাদের কাছে ফিরবে এবং তাদের সেবা করবে, আমাকে অবজ্ঞা করবে ও আমার নিয়ম ভাঙ্গবে।21 আর যখন তাদের ওপরে নানা ধরনের অমঙ্গল ও সঙ্কট ঘটবে, সেই দিনের এই গান সাক্ষী হিসাবে তাদের সামনে সাক্ষ্য দেবে; কারণ তাদের বংশের মুখে এই গান ভুলে যাবে না; প্রকৃত পক্ষে আমি যে দেশের বিষয়ে শপথ করেছি, সেই দেশে তাদেরকে আনার আগেও এখন তারা যে পরিকল্পনা করছে, তা আমি জানি।”22 পরে মোশি সেই দিনের ঐ গান লিখে ইস্রায়েলের লোকদেরকে শেখালেন।23 আর তিনি নূনের ছেলে যিহোশূয়কে আদেশ দিয়ে বললেন, “তুমি শক্তিশালী হও ও সাহস কর; কারণ আমি ইস্রায়েলের লোকদেরকে যে দেশ দিতে শপথ করেছি, সেই দেশে তুমি তাদেরকে নিয়ে যাবে এবং আমি তোমার সঙ্গী হব।”24 আর মোশি শেষ পর্যন্ত এই নিয়মের কথা সব বইয়ে রচনার পর25 সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুক বহনকারী লেবীয়দেরকে এই আদেশ দিলেন,26 “তোমরা এই নিয়মের বই নিয়ে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিয়ম সিন্দুকের পাশে রাখ; এটা তোমাদের বিরুদ্ধে সাক্ষীর জন্য সেই জায়গায় থাকবে।27 কারণ তোমার বিরুদ্ধাচারিতা ও তোমার একগুঁয়েমিতা আমি জানি; দেখ, তোমাদের সঙ্গে আমি জীবিত থাকতেই আজ তোমরা সদাপ্রভুর বিরুদ্ধাচারী হলে, তবে আমার মৃত্যুর পরে কি না করবে?28 তোমরা নিজেদের বংশের সমস্ত প্রাচীনদেরকে ও কর্ম্মচারীকে আমার কাছে জড়ো কর; আমি তাদের কানে এই সব কথা বলি এবং তাদের বিরুদ্ধে আকাশমণ্ডল ও পৃথিবীকে সাক্ষী করি।29 কারণ আমি জানি, আমার মৃত্যুর পরে তোমরা সম্পূর্ণ ভ্রষ্ট হয়ে পড়বে এবং আমার আদেশ দেওয়া পথ হইতে বিপথগামী হবে। আর পরবর্তীকালে তোমাদের অমঙ্গল ঘটবে, কারণ সদাপ্রভুর দৃষ্টিতে যা খারাপ, তা করে তোমরা নিজেদের হাতের কাজের মাধ্যমে তাঁকে অসন্তুষ্ট করবে।”মোশির গান30 পরে মোশি শেষ পর্যন্ত ইস্রায়েলের সমস্ত সমাজের কাছে এই গানের কথা গুলি বলতে লাগলেন।

সদাপ্রভু মোশি ও হারুনকে বলেছিলেন: 2 “সদাপ্রভু যে হুকুম দিয়েছেন তা এই হল: ইস্রায়েলের লোকদের বলো যে, তুমি কোন ত্রুটি বা দোষ ছাড়াই একটি লাল গরু আনতে এবং তা কখনও কোন জোয়াল রাখেনি। 3 যাজক ইলিয়াসরকে দাও; এটিকে শিবিরের বাইরে নিয়ে গিয়ে তার সামনেই জবাই করতে হবে। 4 ইমাম ইলিয়াসর তার রক্তের কিছুটা আঙুলের উপরে নিয়ে সমাগম তাঁবুর সামনের দিকে সাতবার ছিটিয়ে দেবেন | 5 সে যখন দেখছে তখন গরুটিকে পোড়াতে হবে — এর গোপন, মাংস, রক্ত ​​এবং অন্ত্র। The পুরোহিতকে কিছু কাঠের দেবদারু কাঠ, হাইসপ এবং স্কারলেট পশম নিয়ে তা জ্বলন্ত গরুর উপরে ফেলে দেওয়া উচিত। 7 এর পরে যাজককে অবশ্যই নিজের কাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে। পরে সে শিবিরে আসতে পারে, তবে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে অশুচি থাকবে। 8 যে লোকটিকে পোড়ানো হবে সে অবশ্যই তার কাপড় ধোবে এবং জলে স্নান করবে এবং সেও সন্ধ্যা অবধি অশুচি থাকবে।

9 “যে ব্যক্তি শুচি সে অবশ্যই গরুর ছাই সংগ্রহ করবে এবং শিবিরের বাইরে একটি পবিত্র জায়গায় রাখবে। এগুলি ইস্রায়েলীয় সম্প্রদায় দ্বারা পরিষ্কারের জলে ব্যবহারের জন্য রাখতে হবে; এটি পাপ থেকে শুদ্ধির জন্য। 10 যে ব্যক্তি গরুর ছাই সংগ্রহ করে সে অবশ্যই তার জামাকাপড় ধুয়ে ফেলবে এবং সেও সন্ধ্যা অবধি অশুচি থাকবে। ইস্রায়েলের লোকদের এবং তাদের মধ্যে বসবাসকারী বিদেশীদের পক্ষে এটি চিরস্থায়ী অধ্যাদেশ।

11 যে লোকের মৃতদেহ স্পর্শ করে সে সাত দিন অশুচি থাকবে। 12 তারা অবশ্যই তৃতীয় এবং সপ্তম দিনে জলের দ্বারা নিজেকে শুচি করবে; তাহলে তারা পরিষ্কার হবে। তবে তৃতীয় ও সপ্তম দিনে যদি তারা নিজেকে পবিত্র না করে তবে তারা শুচি হবে না। 13 যদি তারা কোনও মানুষের মৃতদেহের স্পর্শ করে নিজেকে শুদ্ধ করতে ব্যর্থ হয় তবে তারা প্রভুর আবাসটিকে অশুচি করে। তাদের অবশ্যই ইস্রায়েল থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত। যেহেতু তাদের গায়ে শুচি করার জল ছিটানো হয়নি সেগুলি অশুচি; তাদের অশুচিতা তাদের উপর থেকে যায়।

14 “তাঁবুতে একজন মারা গেলে এই আইনটি প্রযোজ্য: যদি কেউ তাঁবুতে প্রবেশ করে এবং সেখানকার কেউ এই সাত দিনের জন্য অশুচি থাকবে, 15 এবং openাকনাবিহীন প্রতিটি খোলা পাত্র অশুচি থাকবে |

16 “যদি কেউ খোলা জায়গায় তরবারি দিয়ে মারা গিয়েছে বা প্রাকৃতিক মৃত্যুতে মারা গেছে এমন ব্যক্তিকে স্পর্শ করে বা যদি কেউ মানুষের হাড় বা সমাধি স্পর্শ করে তবে সে সাত দিনের জন্য অশুচি থাকবে।

17 “অশুচি ব্যক্তির জন্য পোড়া শুচি নৈবেদ্যর থেকে কিছু ছাই একটি পাত্রে রাখুন এবং তার উপরে টাটকা জল .ালুন। 18 তারপর যে লোকটি শুচিভাবে শুচি হয় সে কিছুটা হিস্টোপ নিয়ে তা জলে ডুবিয়ে তাবু এবং সমস্ত গৃহসজ্জা এবং সেখানে উপস্থিত লোকদের ছিটিয়ে দেবে। তাকে অবশ্যই কোনও ব্যক্তির ছিটিয়ে দিতে হবে যা মানুষের হাড় বা কবর স্পর্শ করেছে বা যে মারা গেছে বা যে কেউ প্রাকৃতিক মৃত্যুবরণ করেছে। 19 যাঁরা শুচি হয় সে অবশ্যই তৃতীয় ও সপ্তম দিনে অশুচি লোকদের ছিটিয়ে দেবে এবং সপ্তম দিনে তাকে শুচি করবে। যাঁরা শুচি হচ্ছে তাদের অবশ্যই নিজের কাপড় ধুয়ে ফেলবে এবং জলে স্নান করবে এবং সেই সন্ধ্যায় তারা শুচি থাকবে। 20 কিন্তু যদি অশুচি লোকেরা নিজেকে শুচি না করে তবে অবশ্যই তাকে সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করা উচিত, কারণ তারা প্রভুর মন্দির অশুচি করেছে। তাদের গায়ে শুচি করার পানি ছিটানো হয়নি এবং সেগুলি অশুচি। 21 এটি তাদের জন্য স্থায়ী অধ্যাদেশ।

“যে ব্যক্তি শুচি করার জল ছিটিয়ে দেয় সে অবশ্যই তার কাপড় ধোবে এবং যে কেউ শুচি করার জল স্পর্শ করবে সে সন্ধ্যা অবধি অশুচি থাকবে। 22 যে কোন অশুচি লোকের ছোঁয়া যায় সে অশুচি হয়ে যায় এবং যে কেউ এটি স্পর্শ করে সে সন্ধ্যা পর্যন্ত অশুচি হয়ে যায় ”’

মহাপ্রায়শ্চিত্ত দিনের র ব্যবস্থা।

16 হারোণের দুই ছেলে সদাপ্রভুর কাছে উপস্থিত হয়ে মারা গেলে পর, সদাপ্রভু মোশির সঙ্গে আলাপ করলেন।2 সদাপ্রভু মোশিকে এই কথা বললেন, “তুমি নিজের ভাই হারোণকে বল, যেন সে অতি পবিত্র জায়গায় পর্দার ভিতরে, সিন্দুকের ওপরে অবস্থিত পাপাবরণের সামনে সব দিনের প্রবেশ না করে, পাছে তার মৃত্যু হয়; কারণ আমি পাপাবরণের ওপরে মেঘে দেখা দেব।3 হারোণ পাপের জন্যে একটি গোবত্স ও হোমের জন্যে একটি মেষ সঙ্গে নিয়ে, এইরূপে অতি পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করবে।4 সে মসীনার পবিত্র অঙ্গরক্ষিণী পরবে, মসীনার অন্তর্বাস পরবে, মসীনার কোমরবন্ধন এবং মসীনার উষ্ণীষে বিভূষিত হবে; এ সব পবিত্র বস্ত্র; সে জলে নিজের শরীর ধুয়ে এই সব পরবে।5 পরে সে ইস্রায়েল সন্তানদের মণ্ডলীর কাছে পাপের বলিরূপে দুটি ছাগল ও হোমের একটি মেষ নেবে।6 আর হারোণ নিজের জন্য পাপের বলির ষাঁড় এনে নিজের ও নিজ বংশের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে।7 পরে সেই দুটি ছাগল নিয়ে সমাগম তাঁবুর দরজার সামনে সদাপ্রভুর সামনে উপস্থিত করবে।8 পরে হারোণ ঐ দুটি ছাগলের বিষয়ে গুলিবাট করবে; এক গুলি সদাপ্রভুর জন্যে ও অন্য গুলি ত্যাগের জন্যে হবে।9 গুলিবাট দ্বারা যে ছাগল সদাপ্রভুর জন্যে হয়, হারোণ তাকে নিয়ে পাপের বলিদান করবে।10 কিন্তু গুলিবাট দ্বারা যে ছাগল ত্যাগের জন্যে হয়, সে যেন ত্যাগের জন্যে মরুপ্রান্তে, তার জন্য তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য সদাপ্রভুর সামনে তাকে জীবিত উপস্থিত করতে হবে।11 পরে হারোণ নিজের পাপের বলির ষাঁড় এনে নিজের ও নিজ বংশের জন্যে প্রায়শ্চিত্ত করবে, ফলে সে নিজের পাপের বলি সেই ষাঁড়কে হত্যা করবে;12 আর সদাপ্রভুর সামনে থেকে, বেদির ওপর থেকে, প্রজ্বলিত অঙ্গারে পূর্ণ ধুনুচি ও এক মুঠো চূর্ণীকৃত সুগন্ধি ধূপ নিয়ে পর্দার ভিতরে যাবে।13 আর ঐ ধূপ সদাপ্রভুর সামনে আগুনে দেবে; তাতে সাক্ষ্য সিন্দুকের ওপরে অবস্থিত পাপাবরণ ধূপের ধোঁয়ার মেঘে আচ্ছন্ন হলে সে মরবে না।14 পরে সে ঐ গোবৎসের কিছু রক্ত নিয়ে পাপাবরণের পূর্বপার্শ্বে আঙ্গুলের দ্বারা ছিটিয়ে দেবে এবং আঙ্গুলের মাধ্যমে পাপাবরণের সামনে ঐ রক্ত সাত বার ছিটিয়ে দেবে।15 পরে সে লোকদের পাপের বলির ছাগলটি হত্যা করে তার রক্ত পর্দার ভিতরে এনে যেমন গোবৎসের রক্ত ছিটিয়ে দিয়েছিল, সেইরূপ তারও রক্ত নিয়ে করবে, পাপাবরণের ওপরে ও পাপাবরণের সামনে ছিটিয়ে দেবে।16 আর ইস্রায়েল সন্তানদের নানা ধরনের অশুচিতা ও অধর্ম্ম, অর্থাৎ সবধরনের পাপের জন্য সে পবিত্র জায়গার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং যে সমাগম তাঁবু তাদের সঙ্গে, তাদের নানা ধরনের অশুচির মধ্যে বাস করে, তার জন্যে সে সেরকম করবে।17 আর প্রায়শ্চিত্ত করার জন্য পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করা থেকে যে পর্যন্ত সে বের না হয় এবং নিজের ও নিজ বংশের এবং সমস্ত ইস্রায়েল সমাজের জন্যে প্রায়শ্চিত্ত শেষ না করে, সেই পর্যন্ত সমাগম তাঁবুতে কোনো মানুষ থাকবে না।18 সে বের হয়ে সদাপ্রভুর সামনে বেদির কাছে গিয়ে তার জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং সেই ষাঁড়ের কিছু রক্ত ও ছাগলের কিছু রক্ত নিয়ে বেদির চারিদিকে শিংয়ের ওপরে দেবে।19 আর সে রক্তের কিছু নিয়ে নিজের আঙ্গুল দ্বারা তার ওপরে সাত বার ছিটিয়ে দিয়ে তা শুচি করবে ও ইস্রায়েল সন্তানদের অশুচি থেকে তা পবিত্র করবে।20 এই ভাবে সে পবিত্র জায়গার, সমাগম তাঁবুর ও বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত কাজ শেষ করলে পর সেই জীবিত ছাগলটি আনবে;21 পরে হারোণ সেই জীবিত ছাগলের মাথায় নিজের দুই হাত বাড়িয়ে দেবে এবং ইস্রায়েল সন্তানদের সমস্ত অপরাধ ও তাদের সমস্ত অধর্ম্ম অর্থাৎ তাদের সবধরনের পাপ তার ওপরে স্বীকার করে সে সমস্ত ঐ ছাগলের মাথায় দেবে; পরে যে প্রস্তুত হয়েছে, এমন লোকের হাত দ্বারা তাকে মরুপ্রান্তে পাঠিয়ে দেবে।22 আর ঐ ছাগল নিজের ওপরে তাদের সমস্ত অপরাধ বিচ্ছিন্ন ভূমিতে বয়ে নিয়ে যাবে; আর সেই ব্যক্তি ছাগলটিকে মরুপ্রান্তে ছেড়ে দেবে।23 আর হারোণ সমাগম তাঁবুতে প্রবেশ করবে এবং পবিত্র জায়গায় প্রবেশ করার দিনের যে সব মসীনা পোশাক পরেছিল, তা ত্যাগ করে সেই জায়গায় রাখবে।24 পরে সে কোনো পবিত্র জায়গায় নিজের শরীর জলে ধুয়ে নিজের পোশাক পরে বাইরে আসবে এবং নিজের হোমবলি ও লোকদের হোমবলি উৎসর্গ করে নিজের জন্যে ও লোকদের জন্যে প্রায়শ্চিত্ত করবে।25 আর সে পাপের বলির মেদ বেদিতে পোড়াবে।26 আর যে ব্যক্তি ত্যাগের ছাগলটি ছেড়ে দিয়েছিল, সে নিজের পোশাক ধোবে ও নিজের গা জলে ধোবে, তারপরে শিবিরে আসবে।27 আর পাপের বলির গোবৎস ও পাপের বলির ছাগল, যাদের রক্ত প্রায়শ্চিত্ত করার জন্যে পবিত্র জায়গায় আনা হয়েছিল, লোকেরা তাদেরকে শিবিরের বাইরে নিয়ে গিয়ে তাদের চামড়া, মাংস ও মল আগুনে পুড়িয়ে দেবে।28 আর যে লোক তা পুড়িয়ে দেবে, সে নিজের পোশাক ধোবে ও নিজের গা জলে ধোবে, তারপরে শিবিরে আসবে।29 তোমাদের জন্যে এটা চিরস্থায়ী বিধি হবে; সপ্তম মাসের দশম দিনের স্বদেশী কিংবা তোমাদের মধ্যে প্রবাসকারী বিদেশী, তোমরা নিজেদের প্রাণকে দুঃখ দেবে ও কোনো ব্যবসায় কাজ করবে না।30 কারণ সেই দিন তোমাদেরকে শুচি করার জন্যে তোমাদের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করা যাবে; তোমরা সদাপ্রভুর সামনে নিজেদের সব পাপ থেকে শুচি হবে।31 তা তোমাদের বিশ্রামের জন্যে বিশ্রামদিন এবং তোমরা নিজেদের প্রাণকে দুঃখ দেবে; এটা চিরস্থায়ী বিধি।32 বাবার জায়গায় যাজকের কাজ করতে যাকে অভিষেক ও উত্সর্গের দ্বারা নিযুক্ত করা যাবে, সেই যাজক প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং মসীনা পোশাক অর্থাৎ পবিত্র পোশাক সব পরবে।33 আর সে পবিত্র ধর্ম্মধামের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং সমাগম তাঁবুর ও বেদির জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে এবং যাজকদের ও সমাজের সমস্ত লোকের জন্য প্রায়শ্চিত্ত করবে।34 ইস্রায়েল সন্তানদের জন্য তাদের সমস্ত পাপের জন্য বছরের মধ্যে এক বার প্রায়শ্চিত্ত করা তোমাদের জন্যে চিরস্থায়ী বিধি হবে।” তখন [হারোণ] মোশির প্রতি সদাপ্রভুর আদেশ অনুসারে কাজ করলেন।

সুরত ২:-67-7373 (গরু)

কাজ করে ফেল। তারা বলল, তোমার পালনকর্তার কাছে আমাদের জন্য প্রার্থনা কর যে, তার রঙ কিরূপ হবে? মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেছেন যে, গাঢ় পীতবর্ণের গাভী-যা দর্শকদের চমৎকৃত করবে। তারা বলল, আপনি প্রভুর কাছে প্রার্থনা করুন-তিনি বলে দিন যে, সেটা কিরূপ? কেননা, গরু আমাদের কাছে সাদৃশ্যশীল মনে হয়। ইনশাআল্লাহ এবার আমরা অবশ্যই পথপ্রাপ্ত হব। মূসা (আঃ) বললেন, তিনি বলেন যে, এ গাভী ভূকর্ষণ ও জল সেচনের শ্রমে অভ্যস্ত নয়-হবে নিষ্কলঙ্ক, নিখুঁত। তারা বলল, এবার সঠিক তথ্য এনেছ। অতঃপর তারা সেটা জবাই করল, অথচ জবাই করবে বলে মনে হচ্ছিল না। যখন তোমরা একজনকে হত্যা করে পরে সে সম্পর্কে একে অপরকে অভিযুক্ত করেছিলে। যা তোমরা গোপন করছিলে, তা প্রকাশ করে দেয়া ছিল আল্লাহর অভিপ্রায়। অতঃপর আমি বললামঃ গরুর একটি খন্ড দ্বারা মৃতকে আঘাত কর। এভাবে আল্লাহ মৃতকে জীবিত করেন এবং তোমাদেরকে তাঁর নিদর্শণ সমূহ প্রদর্শন করেন-যাতে তোমরা চিন্তা কর।