আমরা দেখলাম ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসে ৭০ খ্রীষ্টাব্দে তাদেরকে পৃথিবীর সমস্ত দেশে নির্বাসিত এবং বিজাতীয় হিসাবে বসবাস করতে প্রতিশ্রুত দেশ থেকে বহিষ্কৃত করা হল I প্রায় 2000 বছর পরে এটাই ছিল কোথায় এবং কিভাবে তারা বাস করত I এই বিভিন্ন রাষ্টগুলোতে তাদের থাকার সাথে সাথে তারা পর্যায়ক্রমে বিরাট নির্যাতন ভোগ করত I এটি খ্রীষ্টান ইউরোপে বিশেষভাবে সত্য ছিল I স্পেন থেকে নিয়ে পাশ্চাত্য ইউরোপে, রাশিয়ার সুসংগঠিত হত্যাসাধন এবং লুটপাট অবধি ইস্রায়েলীরা প্রায়শই একটি এক ভয়ংকর অবস্থার মধ্যে বাস করত I অভিশাপের মধ্যে মশির দেওয়া বাক্য যেমন লেখা ছিল পরিপূর্ণ হয়েছিল I
সেই জাতিদের মধ্যে তোমরা শান্তি পাবে না, আর তোমাদের পায়ের গোড়ালি রাখার কোনও জায়গা থাকবে না। সেখানে সদাপ্রভু তোমাদের মনে দুশ্চিন্তা, আশা করে চেয়ে থাকা চোখ এবং এক হতাশার হৃদয় দেবেন।
দ্বিতীয় বিবরণ 28
নিচের টাইম লাইন দেখায় এই ২০০০ বছর যা বাইবেলের সময় থেকে ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের পরে অনুসরণ করে I এই সময়কালকে একটি দীর্ঘ বারে দেখানো হয়েছে I
আপনারা দেখতে পারেন যে ইস্রায়েলীরা তাদের ইতিহাসের মাধ্যমে নির্বাসনের দুটি সময় কালের মধ্য দিয়ে গিয়েছিল কিন্তু নির্বাসনের দ্বিতীয় সময়কাল নির্বাসনের প্রথম সময়কালের (যা কেবল 600 থেকে 530 খ্রীষ্টপূর্বাব্দ পর্যন্ত ছিল) থেকে অনেক দীর্ঘ ছিল I
যিহূদিরা তাদের সংস্কৃতিক অভিন্নতা বজায় রেখেছিল
আমার কাছে যেটি আকর্ষক তা হল যদিও ইস্রায়েলীদের কাছে সাংস্কৃতিক শিকড় রাখার কোনো কেন্দ্রীয় স্থান ছিল না এবং যদিও তারা প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পায় নি (নির্যাতনে মৃত্যুর কারণে) তবুও ২০০০ বছরের সময়কালের মধ্যে তারা তাদের সাংস্কৃতিক অভিন্নতাকে কখনও হারায় নি I সেটি বাস্তবিকই উল্লেখযোগ্য I এখানে তৌরাতের মধ্যে জাতিগনের একটি তালিকা আছে যারা মুসা আঃ এর ১ ন. চিহ্নর সময়ে প্রতিশ্রুত দেশে বাস করত I
8তাই মিশরীয়দের হাত থেকে তাদের রক্ষা করার জন্য এবং সেদেশ থেকে মনোরম ও প্রশস্ত এক দেশে, দুধ ও মধু প্রবাহিত এক দেশে—কনানীয়, হিত্তীয়, ইমোরীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়দের স্বদেশে তাদের নিয়ে যাওয়ার জন্য আমি নেমে এসেছি।
যাত্রা পুস্তক 3
এবং আশীর্বাদ ও অভিশাপ দেওয়ার সময় থেকে
1তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সেই দেশে নিয়ে যাবেন যেটি তোমরা অধিকার করতে যাচ্ছ এবং তোমাদের সামনে থেকে অনেক জাতিকে তাড়িয়ে দেবেন—হিত্তীয়, গির্গাশীয়, ইমোরীয়, কনানীয়, পরিষীয়, হিব্বীয় ও যিবূষীয়, সাতটি জাতি যারা তোমাদের থেকে বড়ো এবং শক্তিশালী
দ্বিতীয় বিবরণ 7
এই লোকেদের মধ্যে কেউ কি এখনও তাদের সাংস্কৃতিক এবং ভাষাগত অভিন্নতা বজায় রেখে বেঁচে আছে? না তারা অনেক আগেই লুপ্ত হয়ে গেছে I এই প্রাচীন ইতিহাস থেকে আমরা কেবল ‘গির্গাশীয়দের’ জানি I শক্তিশালী বাবিল, পারস্য, গ্রীক এবং পরে রোমীয় সাম্রাজ্যের দ্বারা এই জাতিগুলোর উপর বিজয় লাভ করার সাথে সাথে তারা তাদের ভাষা এবং অভিন্নতা দ্রুত হারিয়ে ফেলল যেমনি তারা এই বিশাল সাম্রাজ্যগুলোর মধ্যে মিশে গেল I কানাডায় বাস করার সময় আমি দেখি সমগ্র পৃথিবী থেকে বহিরাগতরা এখানে আসে I তৃতীয় প্রজন্মের পরে অভিবাসীদের দেশের সংস্কৃতি এবং ভাষা লুপ্ত হয়ে যায় জখম আমি খুব ছোট ছিলাম আমি সুইডেন থেকে কানাডায় অভিবাসী হয়েছিলাম I আমার ছেলে সুইডিশ ভাষায় কথা বলে না I নাতো আমার ভাই বা বোনের সন্তানরা I আমার পূর্বপুরুষদের সুইডিশ অভিন্নতা কানাডীয় সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলের মধ্যে অন্তর্হিত হয়ে যাচ্ছে I এবং এটি প্রায় সমস্ত অভিবাসীদের ক্ষেত্রে সত্য তাতে তারা চীন, জাপান, কোরিয়া, ইরান, দক্ষিন আমেরিকা, আফ্রিকা বা ইউরোপের দেশগুলো থেকে আসুক না কেন – তিন প্রজন্মের মধ্যে তা লুপ্ত হয়ে যায় I
সুতরাং এটি উল্লেখযোগ্য যে ইস্রায়েলীরা, এমন ধরণের শত্রুতার মধ্যে বাস করছে, শতাব্দী ব্যাপী এখানে সেখানে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়, ১৫ মিলিয়নের উপর তাদের পৃথিবীব্যাপী জনসংখ্যা কখনও তাদের অভিন্নতা হারায় নি – ধর্ম, সংস্কৃতি এবং ভাষা – এমনকি যদিও এগুলো ২০০০ বছর ধরে স্থায়ী হয়েছিল I
যিহূদিদের আধুনিক গণহত্যা – ব্যাপক হত্যা
পরে যিহূদিদের বিরুদ্ধে নির্যাতন এবং সুসংগঠিত হত্যাসাধন তাদের চরমে পৌঁছল I দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধে নাৎসী জার্মানির মাধ্যমে ইউরোপে বসবাসকারী সমস্ত যিহূদিদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংশ করতে চেষ্টা করল I আর সে একটি যান্ত্রিক গ্যাস চুল্লী বানিয়ে তাদের সম্পূর্ণরূপে ধ্বংশ করতে প্রায় সফল হল I যাইহোক সে পরাজিত হল এবং অবশিষ্ট যিহূদিরা বেঁচে রইল I
ইস্রায়েলের আধুনিক পুনর্জন্ম
আর পরে 1948 সালে যিহূদিরা, সংযুক্ত রাষ্ট্রের মাধ্যমে, ইস্রায়েলের আধুনিক রাষ্ট্রর উল্লখযোগ্য পুনর্জন্ম হল I এটি কেবলমাত্র এই ঘটনায় উল্লেখযোগ্য, যেমন উপরে উল্লিখিত হয়েছে, যে এখনও চতুর্দিকে লোকেরা ছিল যারা নিজেদেরকে এতগুলো বছর পরে ‘যিহূদি’ বলে সনাক্ত করেছিল I কিন্তু 3500 বছর পূর্বে লিখিত মশির এই কথাগুলো সত্য হওয়ার জন্য সেখানে একটি ‘তোমরা’ বা লোকেদের অবশিষ্ট থাকতে হয়েছিল যারা প্রতিশ্রুতিকে গ্রহণ করতে পারে I তাই তাদের দীর্ঘ নির্বাসনের সময়ের মধ্যেও তারা লোক হিসাবে টিকে রইল I
3তাহলে তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের ধন ফিরিয়ে দেবেন। তিনি তোমাদের প্রতি করুণা করবেন এবং যেসব জাতির মধ্যে তোমাদের ছড়িয়ে দেবেন তাদের মধ্য থেকে তিনি আবার তোমাদের সংগ্রহ করবেন। 4পৃথিবীর শেষ সীমানায়ও যদি তোমাদের দূর করে দেওয়া হয় সেখান থেকেও তোমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাদের সংগ্রহ করবেন।
দ্বিতীয় বিবরণ 30
এটি বাস্তবিকই একটি চিহ্ন যে আল্লাহ তার কথা রেখেছেন I
এছাড়া এটি আবারও তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এই রাষ্ট্রটি বিরোধীদের বিরুদ্ধে স্থাপিত হয়েছিল I সেই অঞ্চলের বেশিরভাগ জাতি ১৯৪৮ … ১৯৫৬ …১৯৬৭ এবং পুনরায় ১৯৭৩ সালে ইস্রায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধে লিপ্ত হল I একটি অত্যন্ত ক্ষুদ্র জাতি ইস্রায়েল প্রায়শই পাঁচটি জাতির সঙ্গে একই সময়ে নিজেকে যুদ্ধের মধ্যে পেল I তবুও না তারা কেবল বেঁচে থাকল, বরং তাদের সীমা বৃদ্ধি পেল I ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে যিহূদিরা দাউদের (ডেভিড) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত তাদের ঐতিহাসিক রাজধানী শহর যিরূশালেমকে পুনরায় ফিরে পেল I
আল্লাহ কেন ইস্রায়েলের পুনর্জন্মের অনুমতি দিলেন
আজকের দিনে, এই সমস্ত আধুনিক অগ্রগতিগুলো অত্যন্ত বিতর্কিত I প্রায় অন্য কোন ঘটনা এত বেশি বিতর্কের উত্থাপন করে নি যতটা ইস্রায়েলের পুনর্জন্ম এবং এখন প্রায় রোজ ইস্রায়েলীয়দের প্রত্যাবর্তন ঘটছে – সমস্ত বিশ্বব্যাপী এই সমস্ত রাষ্ট্রগুলোর থেকে যেখানে তারা নির্বাসনের মধ্যে সহস্রাহিক বছর ধরে বাস করেছে I আর হয়ত আপনারা যত এটি নিজেরা পড়েন ততবেশি ক্রোধে পরিপূর্ণ হন I এটি নিশ্চিত নয় যে আজকের যিহূদিরা হিটলারের প্রায় সফলতাপূর্ণ গণহত্যার ঘটনার কারণে ধার্মিক – বেশিরভাগ অত্যন্ত ধর্মনিরপেক্ষ বা নাস্তিক I আর এই নয় যে তারা যথার্থরূপে সঠিক I কিন্তু উল্লেখযোগ্য ঘটনা হ’ল যে অভিশাপের শেষে মশি যা লিখে গিয়েছিলেন তা ঘটেছে এবং এখনও আমাদের চোখের সামনে ঘটছে I কেন? এর মানে কি? আর এটি কিভাবে ঘটতে পারে তারা যখন এখনও মসীহকে প্রত্যাখ্যান করে? এগুলো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন I তৌরাত এবং যাবুরের মধ্যে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়া যেতে পারে I সবেমাত্র আমি যা লিখেছি আপনারা তা নিয়ে ক্রুদ্ধ, হয়ত তিক্ত হতে পারেন I কিন্তু আমরা হয়ত চূড়ান্ত রায়কে দুরে সরিয়ে রাখতে পারি যতক্ষণ না আমরা এই উল্লেখযোগ্য ঘটনা সম্বন্ধে ভাববাদীদের লেখার কয়েকটিকে বুঝতে পারি I তারা আমাদের উপকারের নিমিত্ত লিখেছিলেন – কারণ এটি সকলকে বিচারের দিকে নিয়ে যাবে – যিহূদি এবং একইভাবে বাকি সকলের জন্য I আমাদের এই ভাববাদীদের লেখা সম্বন্ধে কমপক্ষে জ্ঞাত হওয়া উচিত যাতে সমস্ত লেখা থেকে আমরা আমাদর রায় গঠন করতে পারি I আমরা যাবুরকে নিয়ে চলতে থাকি প্রশ্ন করতে কেন যিহূদিরা মসীহকে প্রত্যাখ্যান করল I