Skip to content
Home » তাওরাত আশ্বীর্বাদ এবং অভিশাপের সাথে সমাপ্ত করে

তাওরাত আশ্বীর্বাদ এবং অভিশাপের সাথে সমাপ্ত করে

  • by

আমাদের গত পোস্টে আমরা দেখলাম আল্লাহ এমন মানদণ্ড দিলেন যাতে আমরা প্রকৃত ভাববাদীদের চিনতে পারি – যে তাদের বার্তার অংশ রূপে তারা ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করে I ভাববাদী মুসা (আঃ) স্বয়ং এই নিয়মকে প্রয়োগ করলেন – ইস্রাযেলীয়দের ভবিষ্যত সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী কোরে – যদি তার বার্তা আল্লাহর থেকে এসে থাকে তবে তা সত্য হওয়ার ছিল I এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো ইস্রায়েলীয়দের উপরে অভিশাপ এবং আশীর্বাদ রূপে আসছিল I আপনি এখানে সম্পূর্ণ আশীর্বাদ এবং অভিশাপগুলোকে পড়তে পারেন I মুখ্য বিন্দুগুলো নিচে রয়েছে I   

মুসার আশীর্বাদ

হযরত মুসা (আঃ) চমৎকার আশীর্বাদগুলোকে বর্ণনা করার দ্বারা আরম্ভ করেন যে ইস্রায়েলীয়রা যদি আজ্ঞা সমূহ মেনে চলে তবে তারা সেগুলো পাবে I এই আশীর্বাদগুলো অন্য জাতিগুলোর দৃষ্টিতে হবে যাতে তারা তাঁর আশীর্বাদ সমূহকে জানতে পারে I যেমন এটি লেখা আছে  

  ১০ আর পৃথিবীর সমস্ত জাতি দেখিতে পাইবে যে, তোমার উপরে সদাপ্রভুর নাম কীর্তিত হইয়াছে, এবং তাহারা তোমা হইতে ভীত হইবে। 

দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:১০

যাইহোক, যদি তারা আজ্ঞা সমূহকে মানতে ব্যর্থ হয় তবে তারা অভিশাপ পাবে যা আশীর্বাদের বিপরীতI অভিশাপগুলো আশীর্বাদের সঙ্গে মিল খাবে এবং দর্পণ হবে I এছাড়া এই অভিশাপগুলো পরিবেষ্টিত জাতিগুলোর দ্বারা দেখা যাবে I  

৩৭ আর সদাপ্রভু তোমাকে যে সকল জাতির মধ্যে লইয়া যাইবেন, তাহাদের নিকটে তুমি বিস্ময়ের, প্রবাদের ও উপহাসের পাত্র হইবে। 

দিতীয় বিবরণ ২৮:৩৭

আর অভিশাপগুলো ইস্রায়েলীয়দের নিজেদের জন্য হবে

৪৬ এ সমস্ত তোমার ও যুগে যুগে তোমার বংশের উপরে চিহ্ন ও অদ্ভুত লক্ষণস্বরূপ থাকিবে।

দ্বিতীয় বিবরণ ২৮ঃ৪৬

আর আল্লাহ সাবধান করলেন যে অভিশাপগুলোর সবথেকে খারাপ অংশ অন্যদের থেকে আসবে I    

  ৪৯ সদাপ্রভু তোমার বিরুদ্ধে অতি দূর হইতে, পৃথিবীর প্রান্ত হইতে এক জাতিকে আনিবেন; যেমন ঈগল পক্ষী উড়িয়া আইসে, [সে সেইরূপ আসিবে]; সেই জাতির ভাষা তুমি বুঝিতে পারিবে না। ৫০ সেই জাতি ভয়ঙ্কর-বদন, সে বৃদ্ধের মুখাপেক্ষা করিবে না, ও বালকের প্রতি কৃপা করিবে না। ৫১ আর যে পর্যন্ত তোমার বিনাশ না হইবে, তাবৎ সে তোমার পশুর ফল ও তোমার ভূমির ফল ভোজন করিবে; যাবৎ সে তোমার বিনাশ সাধন না করিবে, তাবৎ তোমার জন্য শস্য, দ্রাক্ষারস কিম্বা তৈল, তোমার গোবৎস কিম্বা তোমার মেষীর শাবক অবশিষ্ট রাখিবে না। ৫২ আর তোমার সমস্ত দেশে যে সকল উচ্চ ও সুরক্ষিত প্রাচীরে তুমি বিশ্বাস করিতে, সেই সকল যাবৎ ভূমিসাৎ না হইবে, তাবৎ সে তোমার সমস্ত নগর-দ্বারে তোমাকে অবরোধ করিবে; তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর দত্ত তোমার সমস্ত দেশে সমস্ত নগর-দ্বারে সে তোমাকে অবরোধ করিবে।

দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:৪৯-৫২

আর এটি খারাপ থেকে আরও খারাপের দিকে যাবে

৬৩ আর তোমাদের মঙ্গল ও বৃদ্ধি করিতে যেমন সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিতেন, সেইরূপ তোমাদের বিনাশ ও লোপ করিতে সদাপ্রভু তোমাদের সম্বন্ধে আনন্দ করিবেন; এবং তুমি যে দেশ অধিকার করিতে যাইতেছ, তথা হইতে তোমরা উন্মূলিত হইবে। ৬৪ আর সদাপ্রভু তোমাকে পৃথিবীর এক প্রান্ত হইতে অপর প্রান্ত পর্যন্ত সমস্ত জাতির মধ্যে ছিন্নভিন্ন করিবেন; সেই স্থানে তুমি আপনার ও আপন পিতৃপুরুষদের অজ্ঞাত অন্য দেবগণের, কাষ্ঠ ও প্রস্তরের, সেবা করিবে। ৬৫ আর তুমি সেই জাতিগণের মধ্যে কোন সুখ পাইবে না ও তোমার পদতলের জন্য বিশ্রামস্থান থাকিবে না, কিন্তু সদাপ্রভু সেই স্থানে তোমাকে হৃৎকম্প, চক্ষুর ক্ষীণতা ও প্রাণের শুষ্কতা দিবেন।

দ্বিতীয় বিবরণ ২৮:৬৩-৬৫

এই আশীর্বাদ এবং অভিশাপগুলো একটি নিয়মের (চুক্তি) দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল I

১২ যেন তুমি আপন ঈশ্বর সদাপ্রভুর সেই নিয়মে ও সেই দিব্যে আবদ্ধ হও, যাহা তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু অদ্য তোমার সহিত করিতেছেন; ১৩এই জন্য করিতেছেন, যেন তিনি অদ্য তোমাকে আপন প্রজারূপে স্থাপন করেন, ও তোমার ঈশ্বর হন, যেমন তিনি তোমাকে বলিয়াছেন, আর যেমন তিনি তোমার পিতৃপুরুষ অব্রাহাম, ইস্‌হাক ও যাকোবের নিকটে দিব্য করিয়াছেন। ১৪আর আমি এই নিয়ম ও এই দিব্য কেবল তোমাদেরই সহিত করিতেছি, তাহা নয়; ১৫ বরং আমাদের সঙ্গে অদ্য এই স্থানে আমাদের ঈশ্বর সদাপ্রভুর সম্মুখে যে কেহ দাঁড়াইয়া আছে, ও আমাদের সঙ্গে অদ্য যে নাই, সেই সকলের সহিত করিতেছি।

দ্বিতীয় বিবরণ ২৯:১২-১৫

অন্য কথায় এই নিয়ম সন্তানদের উপরে, বা ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপরে বাধ্য  হবে I আসলে নিয়মটিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের দিকে নির্দেশ করা হয়েছিল – ইস্রায়েলীয় এবং বিদেশী উভয়দের জন্য   

২১ আর এই ব্যবস্থাপুস্তকে লিখিত নিয়মের সমস্ত শাপানুসারে সদাপ্রভু তাহাকে ইস্রায়েলের সমস্ত বংশ হইতে অমঙ্গলের জন্য পৃথক করিবেন। ২২ আর সদাপ্রভু সেই দেশের উপরে যে সকল আঘাত ও রোগ আনিবেন, তাহা যখন ভাবী বংশ, তোমাদের পরে উৎপন্ন তোমাদের সন্তানগণ, এবং দূরদেশ হইতে আগত বিদেশী দেখিবে; ২৩ ফলতঃ সদাপ্রভু আপন ক্রোধে ও রোষে যে সদোম, ঘমোরা, অদমা ও সবোয়িম নগর উৎসন্ন করিয়াছিলেন, তাহার মত এই দেশের সমস্ত ভূমি গন্ধক, লবণ ও দহনে পরিপূর্ণ হইয়াছে, তাহাতে কিছুই বুনা যায় না ও তাহা ফল উৎপন্ন করে না, ও তাহাতে কোন তৃণ হয় না, এই সকল যখন দেখিবে; তখন তাহারা বলিবে, ২৪ এমন কি, সকল জাতি বলিবে, সদাপ্রভু এই দেশের প্রতি কেন এমন করিলেন? এরূপ মহাক্রোধ প্রজ্বলিত হইবার কারণ কি? ২৫ তখন লোকে বলিবে, কারণ এই, তাহাদের পিতৃপুরুষদের ঈশ্বর সদাপ্রভু মিসর দেশ হইতে সেই পিতৃপুরুষদিগকে বাহির করিয়া আনিবার সময়ে তাহাদের সহিত যে নিয়ম স্থির করেন, সেই নিয়ম তাহারা ত্যাগ করিয়াছিল; 26 আর গিয়া অন্য দেবগণের সেবা করিয়াছিল, যে দেবগণকে তাহারা জানিত না, যাহাদিগকে তিনি তাহাদের জন্য নিরূপণ করেন নাই, সেই দেবগণের কাছে প্রণিপাত করিয়াছিল; ২৭ তাই এই পুস্তকে লিখিত সমস্ত শাপ দেশের উপর আনিতে এই দেশের বিরুদ্ধে সদাপ্রভুর ক্রোধ প্রজ্বলিত হইল, ২৮ এবং সদাপ্রভু ক্রোধে, রোষে ও মহাকোপে তাহাদিগকে তাহাদের দেশ হইতে উৎপাটনপূর্বক অন্য দেশে নিক্ষেপ করিয়াছেন, যেমন অদ্য দেখা যাইতেছে।

দ্বিতীয় বিবরণ ২৯:২১-২৭

মুসার আশীর্বাদ এবং অভিশাপ কি ঘটেছে?

প্রতিশ্রুত আশীর্বাদ সমূহ চমৎকার ছিল, কিন্তু হুমকিভরা অভিশাপগুলো মারাত্মক ছিল I যাইহোক, সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রশ্নটি আমরা জিজ্ঞাসা করতে পারি তা হ’ল ‘এগুলো কি ঘটেছিল?’ এটির উত্তর দিতে গিয়ে আমরা দেখব মুসা (আঃ) একজন প্রকৃত ভাববাদী ছিলেন কি না এবং আমরা আজকের দিনে আমাদের জীবনের জন্য পথ নির্দেশ পাব I     

উত্তরটি আমাদের আয়ত্তের মধ্যে আছে I আল কিতাবের পুরনো নিয়মের অনেকটা ইস্রায়েলীয়দের নথি হয় এবং তার থেকে আমরা দেখতে পারি কি ঘটেছে I এছাড়া আমাদের কাছে পুরনো নিয়মের বাইরে ইহূদি ঐতিহাসিক যোষেফ, গ্রীক-রোমীয় ঐতিহাসিক টাসিটাসের নথিগুলো আছে এবং আমরা অনেক নৃতত্ত্ব সংক্রান্ত স্মৃতিস্তম্ভগুলো দেখেছি I এই সমস্ত স্রোতগুলো সম্মত হয় এবং ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ চিত্র অঙ্কন করে I এটি আমাদের জন্য আর একটি চিহ্ন I এখানে ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসের একটি নিরীক্ষণ টাইমলাইনের সাথে চিত্রিত করা হয়েছে আমাদের আরও ভালভাবে দেখতে সাহায্য করতে তাদের ইতিহাসে কি ঘটেছিল I      

এই ইতিহাস থেকে আমরা কি দেখি? হ্যাঁ বাস্তবিক মশির অভিশাপগুলো, ভয়ানক যেমনভাবে সেগুলো ঘটতে ছিল – আর ঠিক যেমনভাবে তিনি সেগুলোকে সহস্রাধিক বছর আগে লিখেছিলেন – এর পূর্বে সব ঘটেছিল (মনে  রাখুন এই ভবিষ্যদ্বাণীগুলো তাদের ঘটার পরে লেখা হয় নি বরং পূর্বে লেখা হয়েছিল) I 

কিন্তু মশির অভিশাপ সেখানেই শেষ হয় নি I এটি চলতে থাকল I এখানে মশি  এইভাবেই এই অভিশাপগুলো উপসংহারে এনেছেন I 

১ আমি তোমার সম্মুখে এই যে আশীর্ব্বাদ ও অভিশাপ স্থাপন করিলাম, ইহার সমস্ত কথা যখন তোমাতে ফলিবে, তখন তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু যে সকল জাতির মধ্যে তোমাকে দূর করিবেন, ২ সেখানে যদি তুমি মনে চেতনা পাও, এবং তুমি ও তোমার সন্তানগণ যদি সমস্ত হৃদয়ের ও সমস্ত প্রাণের সহিত তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভুর নিকটে ফিরিয়া আইস, এবং অদ্য আমি তোমাকে যে সকল আজ্ঞা দিতেছি, তদনুসারে যদি তাঁহার রবে অবধান কর; ৩ তবে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমার বন্দিত্ব ফিরাইবেন, তোমার প্রতি করুণা করিবেন, ও যে সকল জাতির মধ্যে তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তোমাকে ছিন্নভিন্ন করিয়াছিলেন, তথা হইতে আবার তোমাকে সংগ্রহ করিবেন। ৪ যদ্যপি তোমরা কেহ দূরীকৃত হইয়া আকাশমণ্ডলের প্রান্তে থাক, তথাপি তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু তথা হইতে তোমাকে সংগ্রহ করিবেন, ও তথা হইতে লইয়া আসিবেন। ৫ আর তোমার পিতৃপুরুষেরা যে দেশ অধিকার করিয়াছিল, তোমার ঈশ্বর সদাপ্রভু সেই দেশে তোমাকে আনিবেন, ও তুমি তাহা অধিকার করিবে, এবং তিনি তোমার মঙ্গল করিবেন, ও তোমার পিতৃপুরুষদের অপেক্ষাও তোমার বৃদ্ধি করিবেন।

দ্বিতীয় বিবরণ ৩০:১-৫

একটি সুস্পষ্ট প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করা হয় (পুনরায়): সেগুলো কি ঘটেছিল? তাদের ইতিহাসের ধারাবাহিকতাকে দেখতে এখানে ক্লিক করুন I  

তাওরাতের সমাপ্তি – যাবুর অপেক্ষিত

এই আশীর্বাদ এবং অভিশাপগুলোর সাথে, তৌরাত সমাপ্ত হয় I এটি সম্পূর্ণ হওয়ার পরে হযরত মুসা (আঃ) শীঘ্রই মারা যান I তখন ইস্রায়েলীয়রা, মুসার উত্তরাধিকার – যিহোশুয়র অধীনে – দেশে প্রবেশ করে I ইস্রায়েলীয়দের ইতিহাসে যেমন ঘটল, তারা এক রাজা ছাড়া বসবাস করল এবং কোনো রাজধানী নগর ব্যতীত যতক্ষণ না মহান রাজা দাূদ (বা ডেভিড) ক্ষমতায় উঠলেন I তিনি পুরনো নিয়মের এক নতুন অধ্যায় আরম্ভ করলেন যাকে কোরান যাবুর বলে সুনিশ্চিত করে I আমাদের যাবুরকে বুঝতে হবে কারণ এটি তাওরাতের শুরু হওয়া চিহ্নগুলোকে চালিয়ে নিয়ে যায় – যা আমাদের ইঞ্জিলকে বুঝতে সাহায্য করবে I পরবর্তী পর্যায়ে আমরা দেখব কোরান এবং ঈসা আল মসীহ দাউদ (আঃ) এবং যাবুর সম্বন্ধে কিভাবে কথা বলেন I     

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *