Skip to content

ইউসুফ কে ছিলেন? তার লক্ষণ কি ছিল?

সুরা ইউসুফ (সুরা 12 – যোষেফ) হজরত ইউসুফ/যোষেফের কাহিনী বলে I ইউসুফ হজরত ইয়াকুবের (যাকোব) পুত্র, যে হজরত ইসহাকের (আইসাক) পুত্র, যে হজরত ইব্রাহিমের (আব্রাহাম) পুত্র ছিল I ইয়াকুবের বারো সন্তান ছিল, যাদের মধ্যে একজন ছিল ইউসুফ I ইউসুফের এগারো ভাই তার বিরুদ্ধে  ষড়যন্ত্র করেছিল, আর তাদের পরিকল্পনা ইউসুফের বিবরণকে গঠন করে I এই কাহিনীটি মুসার তাওরাতে 3500 বছর পূর্বে প্রথমে নথিভুক্ত হয়েছিল I তাওরাতের পূর্ণ বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ (সুরা 12 – যোষেফ) বিবরণটি এখানে রয়েছে I সুরা ইউসুফ আমাদের বলে যে এটি কেবলমাত্র একটি  কাহিনী নয় বরং    

অবশ্য ইউসুফ ও তাঁর ভাইদের কাহিনীতে জিজ্ঞাসুদের জন্যে নিদর্শনাবলী রয়েছে।

সুরা ইউসুফ 12:7

ইউসুফ এবং তার ভাইদের কাহিনীর মধ্যে কি রয়েছে যা অন্বেষনকারীদের জন্য ‘লক্ষণসমূহ’ হয়? এই ‘লক্ষণগুলো’ বোঝার জন্য আমরা তাওরাত এবং সুরা ইউসুফ উভয় কাহিনীকে পর্যালোচনা করি I  

সামনে প্রণত করা … ?

একটি স্পষ্ট লক্ষণ হ’ল স্বপ্ন যা ইউসুফ তার পিতা ইয়াকুবকে বলল যেখানে  

যখন ইউসুফ পিতাকে বললঃ পিতা, আমি স্বপ্নে দেখেছি এগারটি নক্ষত্রকে। সুর্যকে এবং চন্দ্রকে। আমি তাদেরকে আমার উদ্দেশে সেজদা করতে দেখেছি।

সুরা ইউসুফ 12:4

কাহিনীর শেষে, আমরা বাস্তবিকই দেখি যে

 এবং তিনি পিতা-মাতাকে সিংহাসনের উপর বসালেন এবং তারা সবাই তাঁর সামনে সেজদাবনত হল। তিনি বললেনঃ পিতা এ হচ্ছে আমার ইতিপূর্বেকার স্বপ্নের বর্ণনা আমার পালনকর্তা একে সত্যে পরিণত করেছেন এবং তিনি আমার প্রতি অনুগ্রহ করেছেন। আমাকে জেল থেকে বের করেছেন এবং আপনাদেরকে গ্রাম থেকে নিয়ে এসেছেন, শয়তান আমার ও আমার ভাইদের মধ্যে কলহ সৃষ্টি করে দেয়ার পর। আমার পালনকর্তা যা চান, কৌশলে সম্পন্ন করেন। নিশ্চয় তিনি বিজ্ঞ, প্রজ্ঞাময়।

সুরা ইউসুফ 12:100

সম্পূর্ণ কোরআনের মধ্যে ‘প্রণত’ কে বহুবার উল্লেখ করা হয়েছে I তবে তারা সকলে সর্বশক্তিমান ঈশ্বরের সামনে প্রার্থনার মধ্যে প্রণত হওয়ার কথা উল্লেখ করে, বা কাবার মধ্যে, বা আল্লাহর অলৌকিক কার্য সমূহের সামনে (মুসার সাথে মিশরের জাদুকরের মতন) I এখানে তার মধ্যে একটি ব্যতিক্রম আছে সেখানে ‘প্রণত হওয়া’ একজন মানুষের (ইউসুফ) সামনে I আর একটি অনুরূপ ঘটনা কেবলমাত্র তখন হয় যখন দেবদূতগণকে হজরত আদমের সামনে ‘প্রণত’ করতে আজ্ঞা দেওয়া হয় (তা-হা 116 এবং আল-আরাফ 11)I তবে দেবদূতগণ মানুষ নয়, সাধারণ নিয়ম হ’ল কেবলমাত্র প্রভুর কাছে মানুষকে প্রণত হতে হয় I    

 হে মুমিনগণ! তোমরা রুকু কর, সেজদা কর, তোমাদের পালনকর্তার এবাদত কর এবং সৎকাজ সম্পাদন কর, যাতে তোমরা সফলকাম হতে পার।

আল-হাজ্জ 22:77

ইউসুফের ক্ষেত্রে কি এমন হ’ল যা ব্যতিক্রম করল যাতে তার পিতা ইয়াকুব এবং তার ভাইরা তার সামনে প্রণত করল?

মনুষ্য পুত্র

Historical Timeline showing Prophet Daniel and other prophets of Zabur

ঐতিহাসিক কালপঞ্জি দেখায় নবী দানিয়েল এবং যাবুরের অন্যান্য নবীদের

অনুরূপভাবে বাইবেলের মধ্যে আমাদেরকে কেবলমাত্র সদাপ্রভুর সামনে প্রণত করতে, বা আরাধনা করতে আজ্ঞা দেওয়া হয়, তবে সেখানেও একটি ব্যতিক্রম আছে I নবী দানিয়েল একটি দর্শন পেয়েছিল অনেক দুরের সময়কে দেখিয়েছিল যখন ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত হবে এবং তার দর্শনে তিনি এক ‘মনুষ্য পুত্র’ কে দেখেছিলেন I  

13 “আমি রাত্রে য়ে স্বপ্নদর্শন করলাম তাতে মানুষের মতো দেখতে এক ব্যক্তি আমার সামনে এলেন| তিনি আকাশের মেঘের মধ্যে থেকে বেরিয়ে এসে সেই প্রাচীন রাজার কাছে এলেন এবং তারা তাঁকে তাঁর সামনে নিয়ে এলো|
14 “সেই মানুষের মতো ব্যক্তিটিকে কর্ত্তৃত্ব, মহিমা ও সম্পূর্ণ শাসন ক্ষমতা দেওয়া হল| সমস্ত দেশ ও সমস্ত ভাষার লোকরা তাঁর উপাসনা করবে| তাঁর শাসন ও রাজত্ব চিরস্থায়ী হবে| তা কখনো ধ্বংস হবে না|

দানিয়েল 7:13-14

দর্শনের মধ্যে লোকেরা ‘মনুষ্য পুত্রের’ সামনে প্রণত করে, যেমনভাবে ইউসুফের পরিবার ইউসুফের সামনে প্রণত করেছিল I

‘মনুষ্য পুত্র’ শিরোনামটিকে ঈসা আল মসীহ পিবিইউএইচ প্রায়শই নিজের জন্য ব্যবহার করতেন I তিনি শিক্ষাদান, নিরাময়ের ক্ষেত্রে এবং প্রকৃতির উপরে মহান কর্ত্তৃত্বের প্রদর্শন করেছিলেন যখন তিনি পৃথিবীতে গমনাগমন করেছিলেন I তবে তিনি ‘আকাশের মেঘে চড়ে’ আসেন নি যেমনটি দানিয়েলের দর্শন তার ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল I এটি এই কারণে যে দর্শনটি আরও ভবিষ্যতের দিকে দেখছিল, তার প্রথম আগমনকে ছাড়িয়ে গিয়ে তার দ্বিতীয় আগমনকে – তার পৃথিবীতে পুনরায় প্রত্যাবর্তন দজ্জালকে ধ্বংস করতে (যেমন হজরত আদমকে ভবিষ্যতবাণী করা হয়েছিল) এবং ঈশ্বরের রাজ্য প্রতিষ্ঠিত করতে I    

কুমারী মরিয়মের মাধ্যমে জন্ম গ্রহণ করে তার প্রথম আগমন, ঈশ্বরের রাজ্যে নাগরিক করার জন্য লোকেদের উদ্ধার করতে ছিল I তবে এমনকি তবুও, তিনি, মনুষ্য পুত্র, মেঘের উপরে তার প্রত্যাবর্তনের পরে কিভাবে লোকেদের পৃথক করবেন তার সম্বন্ধে বলেছিলেন I তিনি সমস্ত জাতি সমূহকে তার সামনে প্রণত অবস্থায় আগে থেকেই দেখেছিলেন ঠিক যেমন ভাবে ইউসুফের ভাইরা মিজেদেরকে ইউসুফের সামনে প্রণত করেছিল I মসীহ যা শিখিয়েছিলেন তা এখানে রয়েছে I  

31 ‘মানবপুত্র যখন নিজ মহিমায় মহিমান্বিত হয়ে তাঁর স্বর্গদূতদেব সঙ্গে নিয়ে এসে মহিমার সিংহাসনে বসবেন,
32 তখন সমস্ত জাতি তাঁর সামনে জড়ো হবে৷ রাখাল য়েমন ভেড়া ও ছাগল আলাদা করে, তেমনি তিনি সব লোককে দুভাগে ভাগ করবেন৷
33 তিনি নিজের ডানদিকে ভেড়াদের রাখবেন আর বাঁদিকে ছাগলদের রাখবেন৷
34 ‘এরপর রাজা তাঁর ডানদিকের যাঁরা তাদের বলবেন, ‘আমার পিতার আশীর্বাদ পেয়েছ, তোমরা এস! জগত সৃষ্টির শুরুতেইয়ে রাজ্য তোমাদের জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে, তার অধিকার গ্রহণ কর৷
35 কারণ আমি ক্ষুধিত ছিলাম, তোমরা আমায় খেতে দিয়েছিলে৷ আমি পিপাসিত ছিলাম আর তোমরা আমাকে পান করবার জল দিয়েছিলে৷ আমি অচেনা আগন্তুক রূপে এসেছিলাম আর তোমর আমায় আশ্রয় দিয়েছিলে৷
36 যখন আমার পরনে কোন কাপড় ছিল না, তখন তোমরা আমায় পোশাক পরিয়েছিলে৷ আমি অসুস্থ ছিলাম, তোমরা আমার সেবা করেছিলে৷ আমি কারাগারে ছিলাম, তোমর আমায় দেখতে এসেছিলে৷’
37 ‘এর উত্তরে যাঁরা ভাল তারা বলবে, ‘প্রভু, কখন আমরা আপনাকে ক্ষুধার্ত দেখে খেতে দিয়েছিলাম, পিপাসিত দেখে জল পান করতে দিয়েছিলাম?
38 কখনই বা আপনাকে অচেনা আগন্তুক দেখে আতিথেয়তা করেছিলাম অথবা আপনার পরনে কাপড় নেই দেখে পোশাক পরিয়েছিলাম?
39 আর কখনই বা অসুস্থ বা কারাগারে আছেন দেখে আপনাকে দেখতে গিয়েছিলাম?
40 ‘এর উত্তরে রাজা তাদের বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, আমার এইতুচ্ছতমদের মধ্যে যখন কোন একজনের প্রতি তোমরা এরূপ করেছিলে, তখন আমারই জন্য তা করেছিলে৷’
41 ‘এরপর রাজা তাঁর বাম দিকের লোকদের বলবেন, ‘ওহে অভিশপ্তরা, তোমরা আমার কাছ থেকে দূর হও, দিয়াবল ও তার দূতদের জন্য য়ে ভযাবহ অনন্ত আগুন প্রস্তুত করা হয়েছে, তার মধ্যে গিয়ে পড়৷
42 কারণ আমি যখন ক্ষুধার্ত ছিলাম, তখন তোমরা আমায় খেতে দাও নি৷ আমার যখন পিপাসা পেয়েছিল, তখন আমায় জল দাও নি৷
43 আমি অচেনা আগন্তুকরূপে এসেছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার আতিথেয়তা করনি৷ আমার পোশাক ছিল না, কিন্তু তোমরা আমায় পোশাক দাও নি৷ আমি অসুস্থ ছিলাম ও কারাগারে গিয়েছিলাম, কিন্তু তোমরা আমার খোঁজ নাও নি৷
44 ‘এর উত্তরে তারা তাঁকে বলবে, ‘প্রভু, কবে আপনাকে ক্ষুধার্ত, কি পিপাসিত, কি আগন্তুকরূপে দেখে অথবা কবেইবা আপনার পরনে কাপড় ছিল না, বা আপনি অসুস্থ ছিলেন ও কারাগারে গিয়েছিলেন বলে আমরা আপনার সাহায্য করিনি?’
45 ‘এ কথার উত্তরে রাজা বলবেন, ‘আমি তোমাদের সত্যি বলছি, তোমরা যখন এই অতি সামান্য যাঁরা তাদের কোন একজনের প্রতি তা করনি, তখন আমারই প্রতি তা কর নি৷’
46 ‘এরপর অধার্মিক লোকেরা যাবে অনন্ত শাস্তি ভোগ করতে, কিন্তু ধার্মিকেরা প্রবেশ করবে অনন্ত জীবনে৷’

মথি 25:31:46

হজরত ইউসুফ এবং ঈসা আল মসীহ

অন্যান্য মানুষরা ছাড় সহকারে নিজেদেরকে তাদের সামনে প্রণত করবে, হজরত ইউসুফ এবং ঈসা আল মসীহ ঘটনা সমূহের এক অনুরূপ নমুনার মধ্য দিয়ে গেলেন I লক্ষ্য করুন কতগুলো উপায়ে তাদের জীবন সাদৃশ্যপূর্ণ I 

হজরত ইউসুফের জীবনের ঘটনাবলী   ঈসা আল মসীহর জীবনের ঘটনাবলী
তার ভাইরা, যারা ইস্রায়েলের 12  উপজাতি হয়ে উঠল, ইউসুফকে ঘৃণা এবং প্রত্যাহ্যান করল উপজাতি সমূহের এক জাতি হিসাবে যিহূদিরা ঈসা আল মসীহকে ঘৃণা করল এবং মসীহ হিসাবে তাকে প্রত্যাখ্যান করল  
ইউসুফ ইস্রায়েলের (ঈশ্বরের দ্বারা ইয়াকুবেব্র নাম)প্রতি তার ভাইদের ভবিষ্যত প্রণতকে ঘোষণা করে ঈসা আল মসীহ ইস্রায়েলের প্রতি তার ভাইদের (সাথী যিহূদিগণ) ভবিষ্যত প্রণতের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন (মার্ক 14:62) 
ইউসুফ তার পিতার দ্বারা তার ভাযদের কাছে প্রেরিত হয়েছিল তবে তারা তাকে প্রত্যাখ্যান করল এবং তার প্রাণ হরণ করতে ষড়যন্ত্র করল ঈসা আল মসীহ তার পিতার দ্বারা তার যিহূদি ভাইদের কাছে প্রেরিত হয়েছিলেন, “তবে তার নিজের লোকেরা তাকে গ্রহণ করল না I” (যোহন 1:11) এবং তারা “তার প্রাণ হরণ করতে ষড়যন্ত্র করল” (যোহন 11:53)
তারা তাকে পৃথিবীর এক কুপের  মধ্যে নিক্ষেপ করে   ঈসা আল মসীহ পৃথিবীর কবরে অবতরণ  করেন
ইউসুফকে বিক্রি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হ’ল ঈসা আল মসীহকে বিক্রি করে বিদেশীদের হাতে তুলে দেওয়া হল  
তাকে অনেক দুরে নিয়ে যাওয়া হয়  যাতে তার ভাইরা এবং পিতা ভাবে  যে সে মারা গেছে ইস্রায়েল এবং তার ভাই যিহূদিরা ভাবে যে ঈসা আল মসীহ এখনও মৃত আছেন
  ইউসুফ একজন দাসের মতন নম্র ঈসা আল মসীহ “একজন দাসের বিশেষ প্রকৃতিকে” অবলম্বন করেছিলেন এবং মৃত্যুর কাছে ‘নিজেকে নত করেছিলেন’ (ফিলিপীয় 2:7) 
ইউসুফকে মিথ্যাভাবে পাপের জন্য অভিযুক্ত করা হয়েছিল যিহূদিরা মিথ্যাভাবে “তাকে বিভিন্ন বিষয় সম্বন্ধে অভিযুক্ত করেছিল’ (মার্ক 15:3)
ইউসুফকে এক দাস হিসাবে কারাগারে পাঠানো হয়েছিল, যেখানে সে অন্ধকূপের (রুটির কারখানা) অন্ধকার থেকে কিছু বন্দীদের মুক্ত করার পূর্বাভাষ পেয়েছিলেন ঈসা আল মসীহকে পাঠানো হয়েছিল” … ভগ্নান্ত:করণদের ক্ষত বেঁধে দিতে, বন্দীদের জন্য স্বাধীনতা ঘোষণা করতে এবং বন্দিদের অন্ধকার থেকে মুক্তি দিতে…” (যিশাইয় 61:1)
ইউসুফ মিশরের সিংহাসনে আরোহন করে, সমস্ত শক্তির উপরে, কেবল ফরৌণের নিজের অধীনে I যে লোকেরা তার কাছে আসে তার সামনে প্রণত হয় I   “ঈশ্বর তাকে মহিমান্বিত করলেন সর্বোচ্চ স্থানে এবং তাকে সেই নাম দান করলে যা প্রত্যেক নামের চেয়ে শ্রেষ্ঠ, যেন যীশুর নামে প্রত্যেকটি জানু নত হয়, স্বর্গ, মর্ত্য ও পাতালে…” (ফিলিপীয় 2:10-11)
যখন তার ভাইদের দ্বারা তখনও প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ইউসুফের কাছে রুটির জন্য আসে যা তাদের জন্য সে সরবরাহ করতে পারত    যখন তার সাথী ভাইদের দ্বারা তখনও প্রত্যখ্যাত এবং মৃত বিশ্বাস করা হ’ল, জাতিগণ ঈসা আল মসীহর কাছে জীবনের রুটির জন্য আসে যা একমাত্র তিনিই তাদেরকে দিতে পারেন 
ইউসুফ তার ভাইদের বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলে (আদিপুস্তক 50:20) ঈসা আল মসীহ তার ভাই যিহূদিদের দ্বারা বিশ্বাসঘাতকতার সম্বন্ধে বলেন যা ঈশ্বরের অভীষ্ট ছিল এবং অনেক জীবনকে রক্ষা করবে (যোহন 5:24)
তার ভাইরা এবং জাতিগণ ইউসুফের সামনে প্রণত করে দানিয়েল মনুষ্য পুত্রের সম্বন্ধে ভবিষ্যদ্বাণী করেন যে “সমস্ত জাতিগণ এবং প্রত্যেক ভাষাভাষী লোকেরা তাঁর আরাধনা করবে”

অনেক নিদর্শন সমূহ – অনেক লক্ষণ সমূহ

তাওরাতের প্রায় সমস্ত প্রাচীন নবীরা তাদের জীবনকে ঈসা আল মসীহর প্রতিরূপ করেছিলেন – তাঁর আগমনের কয়েক শত বছর পূর্বে নিদর্শনগুলো রচনা করা হয়েছিল I এটি করা হয়েছিল আমাদের দেখাতে যে মসীহর আগমন বাস্তবিকই ঈশ্বরের পরিকল্পনা ছিল I, কোনো মানবীয় ধারণা নয়, যেহেতু মানুষেরা এত আগে থেকে ভবিষ্যতকে জানে না I  

হজরত আদম থেকে আরম্ভ করে, মসীহর সম্বন্ধে কোনো না কোনো ভবিষ্যদ্বাণী ছিল I বাইবেল বলে যে হজরত আদম

… একজনের আগমনের একটি নিদর্শন (অর্থাৎ ঈসা আল মসীহ) I

রোমীয় 5:14

যদিও ইউসুফ তার ভাইদের কাছ থেকে প্রণত পেয়ে শেষ করেছেন, এটি প্রত্যাখ্যান, ত্যাগ এবং বিচ্ছিন্নতা যাকে তার জীবনের উপরে গুরুত্ব দেওয়া   হয় I মসীহর ত্যাগের উপরে গুরুত্বকে আবারও নবী ইব্রাহিমের ত্যাগের নিদর্শনের সাথে দেখা হয় I ইউসুফের পরে, ইয়াকুবের বারো পুত্র ইস্রায়েলের বারোটি উপজাতি হয়ে উঠল যাকে নবী মুসা পিবিইউএইচ মিশর থেকে বার করে নিয়ে এলেন I যে উপায়ে তিনি এটি করলেন একটি নিদর্শন ছিল যা মসীহর বলিদান সম্পর্কে বিস্তৃতভাবে ভবিষ্যদ্বাণী করে I প্রকৃত পক্ষে মসীহর আগমনের কয়েক সহস্র বছর পূর্বে অনেক বিস্তৃত লক্ষণ সমূহকে তাওরাতের মধ্যে লেখা হয়েছিল I যাবুর এবং অন্যান্য নবীগণ কষ্টভোগী দাসের ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যে প্রত্যাখ্যানের গুরুত্ব সহ মসীহর কয়েক শত বছর পূর্বে আরও বিস্তৃত বিবরণ সমূহ লিখেছিল I যেহেতু কোনো মানুষ কয়েক শত বছরের আগের ভবিষ্যতকে জানে না, তাহলে এই নবীগণ কিভাবে এই বিবরণগুলো জানতে পেরে ছিল যদি না তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রানিত হয়ে থাকে? যদি তারা ঈশ্বরের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে থাকে তাহলে ঈসা আল মসীহর প্রত্যাখ্যান এবং বলিদান অবশ্যই ঈশ্বরের পরিকল্পনা হয়ে থাকবে I          

এই নিদর্শনগুলো বা ভবিষ্যদ্বাণীগুলোর বেশিরভাগই মসীহর প্রথম আগমন নিয়ে আলোচনা করেছিল যেখানে তিনি নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন যাতে আমরা উদ্ধারিত হতে পারি এবং ঈশ্বরের রাজ্যে প্রবেশ করতে সক্ষম হই I

তবে ইউসুফের নিদর্শনটি কখন রাজ্য শুরু হবে তার আরও আগের দিকে তাকায় এবং সমস্ত জাতিগণ পৃথিবীতে ঈসা আল মসীহর প্রত্যাবর্তনে নিজেদেরকে প্রণত করবে I যেহেতু আমরা এমন সময়ে বেঁচে আছি যখন আমাদেরকে ঈশ্বের রাজ্যে আমন্ত্রণ করা হয়েছে, আমাদেরকে আল-মা’আরিজের নির্বোধ মানুষটির মতন হতে না দিই যে একজন উদ্ধারকর্তাকে খুঁজে পেতে সেই দিন অবধি বিলম্ব করেছিল – আর অনেক দেরী হয়ে গিয়েছিল I আপনার প্রতি মসীহর জীবনের উপহার সম্পর্কে এখন আরও জানুন I      

মসীহ শিখিয়েছিলেন যে তার প্রত্যাবর্তন এইরকম হবে

র্গরাজ্য কেমন হবে, তা দশ জন কনের সঙ্গে তুলনা করা চলে, যাঁরা তাদের প্রদীপ নিয়ে বরের সঙ্গে সাক্ষাত্ করতে বার হল৷
2 তাদের মধ্যে পাঁচজন ছিল নির্বোধ আর অন্য পাঁচজন ছিল বুদ্ধিমতী৷
3 সেই নির্বোধ কনেরা তাদের বাতি নিল বটে কিন্তু সঙ্গে তেল নিল না৷
4 অপরদিকে বুদ্ধিমতী কনেরা তাদের প্রদীপের সঙ্গে পাত্রে তেলও নিল৷
5 বর আসতে দেরী হওযাতে তারা সকলেই তন্দ্রায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ল৷
6 কিন্তু মাঝরাতে চিত্‌কার শোনা গেল, ‘দেখ, বর আসছে! তাকে বরণ করতে এগিয়ে যাও৷’
7 ‘সেই কনেরা তখন উঠে তাদের প্রদীপ ঠিক করল৷
8 কিন্তু নির্বোধ কনেরা বুদ্ধিমতী কনেদের বলল, ‘তোমাদের তেল থেকে আমাদের কিছু তেল দাও, কারণ আমাদের প্রদীপ নিভে যাচ্ছে৷’
9 ‘এর উত্তরে সেই বুদ্ধিমতী কনেরা বলল, ‘না৷ তেল যা আছে তাতে হয়তো আমাদের ও তোমাদের কুলোবে না, তোমরা বরং যাঁরা তেল বিক্রি করে তাদের কাছে গিয়ে নিজেদের জন্য তেল কিনে আনো৷’
10 ‘তারা যখন তেল কেনার জন্য বাইরে যাচ্ছে, এমন সময় বর এসে উপস্থিত হল, তখন য়ে কনেরা প্রস্তুত ছিল তারা বরের সঙ্গে বিয়ে বাড়িতে প্রবেশ করল৷ তারপর দরজা বন্ধ করে দেওযা হল৷
11 ‘শেষে অন্য কনেরা এসে বলল, ‘শুনছেন, আমাদের জন্য দরজা খুলে দিন৷’
12 ‘কিন্তু এর উত্তরে বর বলল, ‘সত্যি বলছি, আমি তোমাদের চিনি না৷’
13 ‘তাইতোমরা সজাগ থেকো, কারণ তোমরা সেই দিন বা মুহূর্ত্তের কথা জান না, কখন মানবপুত্র ফিরে আসবেন৷
14 ‘স্বর্গরাজ্য এমন একজন লোকের মতো, যিনি বিদেশে যাবার আগে চাকরদের ডেকে সম্পত্তির ভার তাদের হাতে দিয়ে গেলেন৷
15 তিনি একজনকে পাঁচ থলি মোহর, আর একজনকে দু থলি মোহর এবং আর একজনকে এক থলি মোহর দিলেন৷ যার য়েমন ক্ষমতা সেই অনুসারে দিয়ে তিনি বিদেশে চলে গেলেন৷
16 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে সঙ্গে সঙ্গে সেই টাকা খাটাতে শুরু করল, আর তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর লাভ করল৷
17 য়ে লোক দু’থলি মোহর পেয়েছিল সেও সেই টাকা খাটিয়ে আরো দু’থলি মোহর রোজগার করল৷
18 কিন্তু য়ে এক থলি মোহর পেয়েছিল, সে গিয়ে মাটিতে গর্ত খুঁড়ে তার মনিবের টাকা সেই গর্তে পুঁতে রাখল৷
19 ‘অনেক দিন পর সেইচাকরদের মনিব ফিরে এসে তাদের কাছে হিসাব চাইলেন৷
20 য়ে পাঁচ থলি মোহর পেয়েছিল, সে আরো পাঁচ থলি মোহর এনে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমাকে পাঁচ থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো পাঁচ থলি মোহর রোজগার করেছি৷’
21 ‘তার মনিব তখন তাকে বললেন, ‘বেশ, তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি এই সামান্য বিষয়ে বিশ্বস্ত থাকাতে আমি তোমার হাতে অনেক বিষয়ের ভার দেব৷ এস, তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷
22 ‘এরপর য়ে দু থলি মোহর পেয়েছিল, সেও তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর, আপনি আমায় দু থলি মোহর দিয়েছিলেন, দেখুন আমি তাই দিয়ে আরো দু থলি মোহর রোজগার করেছি৷’
23 ‘তার মনিব তাকে বললেন, ‘বেশ! তুমি উত্তম ও বিশ্বস্ত দাস৷ তুমি সামান্য বিষয়ের উপর বিশ্বস্ত হলে, তাই আমি আরো অনেক কিছুর ভার তোমার ওপর দেব৷ এস, তুমি তোমার মনিবের আনন্দের সহভাগী হও৷
24 ‘এরপর য়ে লোক এক থলি মোহর পেয়েছিল সে তার মনিবের কাছে এসে বলল, ‘হুজুর আমি জানি আপনি বড় কড়া লোক৷ আপনি য়েখানে বীজ বোনেন নি সেখানে কাটেন; আর য়েখানে কোন বীজ ছড়ান নি সেখান থেকে শস্য সংগ্রহ করেন:
25 তাই আমি ভয়ে আপনার দেওযা মোহরের থলি মাটিতে পুঁতে লুকিয়ে রেখেছিলাম৷ আপনার যা ছিল তা নিন৷’
26 ‘এর উত্তরে তার মনিব তাকে বললেন, ‘তুমি দুষ্ট ও অলস দাস! তুমি তো জানতে আমি য়েখানে বুনি না সেখানেই কাটি; আর তুমি এও জান য়েখানে আমি বীজ ছড়াইনা সেখান থেকেই সংগ্রহ করি৷
27 তাই তোমার উচিত ছিল মহাজনদের কাছে আমার টাকা জমা রাখা, তাহলে আমি এসে আমার টাকার সঙ্গে কিছু সুদও পেতাম৷’
28 ‘তাই তোমরা এর কাছ থেকে, ঐ মোহর নিয়ে যার দশ থলি মোহর আছে তাকে দাও৷
29 হ্যাঁ, যার আছে তাকে আরো দেওযা হবে, তাতে তার প্রচুর হবে৷ কিন্তু যার নেই, তার যা আছে তাও তার কাছে থেকে নিয়ে নেওযা হবে৷’
30 তোমরা ঐ অকর্মন্য দাসকে অন্ধকারে বাইরে ফেলে দাও; সেখানে লোকেরা কান্নাকাটি করে ও যন্ত্রণায় দাঁতে দাঁত ঘষে৷’

মথি 25:1-30

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *